মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ১০১৬

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্
১০১৬। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা যোহরের নামায পাঁচ রাকাত পড়লেন। এতে তাঁকে বলা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! যোহরের নামায কি এক রাকাত বর্ধিত করা হয়েছে? তিনি বললেন, তা কিরূপ? লোকগণ বললেন, আপনি নামায যে পাঁচ রাকাত পড়লেন। এটা শুনে তিনি (ﷺ) সালাম ফিরাবার পর দু'টো সিজদাহ করলেন। বর্ণনান্তরে রয়েছে, তিনি বললেন, আমিও তোমাদেরই মত একজন মানুষ তোমাদের ন্যায় আমারও ভুল হয়ে থাকে; সুতরাং কখনও আমি কিছু ভুলে গেলে তা তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিবে। আর তোমাদের কারো নামাযের মধ্যে সন্দেহ হলে, সে যেন সত্য অবস্থা উদঘাটনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে এবং চেষ্টার ফলের উপর ভিত্তি করে বাকী নামায আদায় করে। তারপর সালাম ফিরায়। অতঃপর দু'টো সাহো সিজদাহ করে। —বুখারী, মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০১৭

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্
১০১৭। হযরত ইবনে সীরীন হযরত আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে অপরাহ্নের (যোহর ও আছরের যে কোন একটি) নামায পড়লেন। ইবনে সীরীন বলেন, আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) সেই নামাযের নামোল্লেখ করেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে নিয়ে দুই রাকাত পড়লেন তারপর সালাম ফিরিয়ে দিলেন। তারপর মসজিদে এলোমেলোভাবে রাখা একটি কাঠের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁকে খুবই রাগান্বিত মনে হচ্ছিল। তিনি স্বীয় ডানহাত বামহাতের পিঠের উপর রেখে অঙ্গুলিসমূহ পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করালেন এবং নিজের মুখমণ্ডলের ডান অংশকে বামহাতের পিঠের উপর রাখলেন। ইতোমধ্যে তাড়াহুড়াকারী লোকজন মসজিদের বিভিন্ন দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল। আর লোকজন ভাবতে লাগল যে, নামায সম্ভবতঃ আল্লাহর তরফ হতে সংক্ষেপ করে দেয়া হল। লোকদের মধ্যে হযরত আবুবকর (রাযিঃ) এবং হযরত ওমর (রাযিঃ)-ও ছিলেন; কিন্তু তারাও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে সংকোচ করছিলেন। তবে উপস্থিত লোকদের মধ্যে লম্বা হাতবিশিষ্ট এক ব্যক্তি ছিল, যাকে যুলইয়াদাইন (অর্থাৎ লম্বা হাতওয়ালা) বলা হত। সে হিম্মত করে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আপনি কি ভুল করেছেন, নাকি নামাযই সংক্ষেপ করে দেয়া হয়েছে? তিনি (ﷺ) বললেন, আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপ করাও হয় নি। অতঃপর তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, যুলইয়াদাইন যা বলছে ব্যাপার কি তাই ঘটেছে? তারা বলল যে, হ্যাঁ, তাই ঘটেছে। এটা শুনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং যা ছুটে গিয়েছিল তা পূর্ণ করে নিলেন। তারপর যথারীতি সালাম ফেরালেন। তারপর পুনরায় তাকবীর বললেন এবং পূর্বের সিজদার ন্যায় সিজদাহ করলেন। অথবা সিজদাহ কিছুটা দীর্ঘ করলেন। তারপর তাঁর মস্তক উত্তোলন করলেন এবং তাকবীর বললেন। এরপর পুনরায় তাকবীর বলে সিজদায় গেলেন। সিজদা করলেন পূর্বের সিজদার মতো কিংবা তদপেক্ষা দীর্ঘ। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বললেন। বর্ণনাকারী এই ঘটনা বর্ণনা করার পর লোকজন ইবনে সীরীনকে জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরায়রাহ (রাযিঃ) কি বলেছিলেন যে, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাম ফেরালেন? জবাবে ইবনে সীরীন বললেন, আমি এই সংবাদ জেনেছি যে, সাহাবী ইমরান ইবনে হোছাইন বলেছেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাম ফেরালেন। -বুখারী, মুসলিম
কিন্তু তাদের বর্ণনান্তরে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর “আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপও করা হয় নি” বাক্যের স্থলে তিনি বলেছেন, এই দু'টির কোনটিই হয় নি। তখন যুলইয়াদাইন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এই দু'টির যে কোন একটি অবশ্যই হয়েছে।
কিন্তু তাদের বর্ণনান্তরে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর “আমি ভুল করি নি এবং নামায সংক্ষেপও করা হয় নি” বাক্যের স্থলে তিনি বলেছেন, এই দু'টির কোনটিই হয় নি। তখন যুলইয়াদাইন বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এই দু'টির যে কোন একটি অবশ্যই হয়েছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১০১৮

পরিচ্ছেদঃ ২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাহু সিজদা্
১০১৮। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুহাইনাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নবী পাক (ﷺ) তাদেরকে যোহরের নামায পড়ালেন; কিন্তু প্রথম দুই রাকাতের পর না বসেই দাঁড়িয়ে গেলেন এবং লোকজনও তাঁর সাথে উঠে দাঁড়াল। যখন তিনি নামায প্রায় পূর্ণ করলেন এবং লোকজন সালাম ফিরাবার অপেক্ষা করতে লাগল। তখন তিনি উপবিষ্ট অবস্থায়ই (সোহ সিজদার) তাকবীর বললেন। তারপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দু'টো সিজদাহ করলেন। তারপর সালাম ফেরালেন। -বুখারী, মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান