আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ
موطأ الإمام مالك برواية الإمام محمد بن الحسن الشيباني
১৫- ক্রয় - বিক্রয়ের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৭৭৬
ক্রয়-বিক্রয়ে পণ্যের ত্রুটির জন্য দায়িত্বশীল হওয়া।
৭৭৬ । সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ) আট শত দিরহামে তার একটি গোলাম বিক্রি করলেন এবং শর্ত করলেন যে, কোন ত্রুটি দেখা দিলে সেজন্য তিনি দায়ী হবেন না। ক্রয়কারী পরে তার কাছে অভিযোগ করলো যে, গোলামটি রুগ্ন এবং আপনি বিক্রির সময় তা আমাকে বলেননি। তারা উভয়ে নিজেদের বিবাদের মীমাংসার জন্য উছমান ইবনে আফ্ফান (রাযিঃ)-র কাছে উপস্থিত হলেন। ক্রেতা বললো, তিনি আমার কাছে একটি গোলাম বিক্রি করেছেন এবং এর রোগ আছে। ইবনে উমার (রাযিঃ) বললেন, আমি তার কাছে গোলামটি এই শর্তে বিক্রি করেছি যে, দোষ-ত্রুটি দেখা দিলে আমি সেজন্য দায়ী নই। উছমান (রাযিঃ) সিদ্ধান্ত দিলেন, ইবনে উমার (রাযিঃ)-কে এই মর্মে শপথ করতে হবে যে, গোলামটি বিক্রি করার সময় এর রোগ সম্পর্কে তার জানা ছিলো না। কিন্তু তিনি শপথ করতে অস্বীকৃতি জানালেন। অতঃপর গোলাম তার কাছে ফিরে এলো এবং রোগ সেরে গেলো। অতঃপর তিনি তাকে পনের শত দিরহামে বিক্রি করেন।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা যায়েদ ইবনে সাবিত (রাযিঃ)-র সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি এই শর্তে কোন গোলাম বিক্রি করে যে, কোন ত্রুটি দেখা দিলে এজন্য সে দায়ী হবে না, তবে তার কোন দোষের জন্য সে দায়ী হবে না। এ থেকে সে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে। অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ) দোষ-ত্রুটির দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্তে দাস বিক্রি করেছেন এবং এই ধরনের শর্ত আরোপ করাকে তিনি জায়েয মনে করেছেন। অতএব আমরা যায়েদ ইবনে সাবিত (রাযিঃ) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ)-র মত গ্রহণ করেছি। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি গোলাম অথবা অন্য কিছু বিক্রি করার সময় পণ্যের দোষ-ত্রুটির জন্য দায়ী না হওয়ার শর্ত আরোপ করলে এবং ক্রেতা এই শর্ত মেনে নিয়ে তা হস্তগত করলে তা জায়েয হবে। বিক্রি করার সময় এই দোষ সম্পর্কে তার (বিক্রেতার) জানা থাক বা না থাক, উভয় অবস্থায় সে দায়িত্বমুক্ত থাকবে। কেননা ক্রেতা তাকে এই দায়িত্ব থেকে মুক্ত করে দিয়েছে।
কিন্তু মদীনার আলেমদের মতে, কেবল অজানা ত্রুটির দায়িত্ব থেকে বিক্রেতা মুক্ত থাকবে। যে ত্রুটি সম্পর্কে তার জানা ছিল এবং সে তা গোপন রেখেছে, এই ত্রুটি থেকে সে দায়িত্বমুক্ত হতে পারবে না। তারা আরো বলেন, যদি বিক্রির সময় সে বিক্রিত পণ্যের দোষত্রুটি প্রকাশ করে দেয় এবং এর দায়দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্ত আরোপ করে, তবে এক্ষেত্রে সে ত্রুটির জন্য দায়িত্বমুক্ত থাকবে, ত্রুটি সম্পর্কে তার জানা থাক বা না থাক। (অর্থাৎ সে বলে দিলো যে, পণ্যের মধ্যে ত্রুটি আছে, কিন্তু কি ত্রুটি আছে তা বললো না)।
বিক্রেতা বললো, আমি দোষ-ত্রুটির দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্তে পণ্য বিক্রি করছি। অতঃপর যে ব্যক্তি পণ্যের ত্রুটি থেকে দায়িত্বমুক্ত থাকার শর্তে তা বিক্রি করলো এবং ত্রুটিও নির্দেশ করে দিলো এ ক্ষেত্রে সে দায়িত্বমুক্ত থাকবে (ক্রেতা পণ্যের ত্রুটি সম্পর্কে অবহিত হতে পারুক বা না পারুক)। ইমাম আবু হানীফা এবং অধিকাংশ হানাফী ফিকহবিদের এটাই সাধারণ মত।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা যায়েদ ইবনে সাবিত (রাযিঃ)-র সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি এই শর্তে কোন গোলাম বিক্রি করে যে, কোন ত্রুটি দেখা দিলে এজন্য সে দায়ী হবে না, তবে তার কোন দোষের জন্য সে দায়ী হবে না। এ থেকে সে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে। অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ) দোষ-ত্রুটির দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্তে দাস বিক্রি করেছেন এবং এই ধরনের শর্ত আরোপ করাকে তিনি জায়েয মনে করেছেন। অতএব আমরা যায়েদ ইবনে সাবিত (রাযিঃ) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ)-র মত গ্রহণ করেছি। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি গোলাম অথবা অন্য কিছু বিক্রি করার সময় পণ্যের দোষ-ত্রুটির জন্য দায়ী না হওয়ার শর্ত আরোপ করলে এবং ক্রেতা এই শর্ত মেনে নিয়ে তা হস্তগত করলে তা জায়েয হবে। বিক্রি করার সময় এই দোষ সম্পর্কে তার (বিক্রেতার) জানা থাক বা না থাক, উভয় অবস্থায় সে দায়িত্বমুক্ত থাকবে। কেননা ক্রেতা তাকে এই দায়িত্ব থেকে মুক্ত করে দিয়েছে।
কিন্তু মদীনার আলেমদের মতে, কেবল অজানা ত্রুটির দায়িত্ব থেকে বিক্রেতা মুক্ত থাকবে। যে ত্রুটি সম্পর্কে তার জানা ছিল এবং সে তা গোপন রেখেছে, এই ত্রুটি থেকে সে দায়িত্বমুক্ত হতে পারবে না। তারা আরো বলেন, যদি বিক্রির সময় সে বিক্রিত পণ্যের দোষত্রুটি প্রকাশ করে দেয় এবং এর দায়দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্ত আরোপ করে, তবে এক্ষেত্রে সে ত্রুটির জন্য দায়িত্বমুক্ত থাকবে, ত্রুটি সম্পর্কে তার জানা থাক বা না থাক। (অর্থাৎ সে বলে দিলো যে, পণ্যের মধ্যে ত্রুটি আছে, কিন্তু কি ত্রুটি আছে তা বললো না)।
বিক্রেতা বললো, আমি দোষ-ত্রুটির দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকার শর্তে পণ্য বিক্রি করছি। অতঃপর যে ব্যক্তি পণ্যের ত্রুটি থেকে দায়িত্বমুক্ত থাকার শর্তে তা বিক্রি করলো এবং ত্রুটিও নির্দেশ করে দিলো এ ক্ষেত্রে সে দায়িত্বমুক্ত থাকবে (ক্রেতা পণ্যের ত্রুটি সম্পর্কে অবহিত হতে পারুক বা না পারুক)। ইমাম আবু হানীফা এবং অধিকাংশ হানাফী ফিকহবিদের এটাই সাধারণ মত।
بَابُ: بَيْعِ الْبَرَاءَةِ
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ بَاعَ غُلامًا لَهُ بِثَمَانِ مِائَةِ دِرْهَمٍ بِالْبَرَاءَةِ، وَقَالَ الَّذِي ابْتَاعَ الْعَبْدَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: بِالْعَبْدِ دَاءٌ لَمْ تُسَمِّهِ لِي، فَاخْتَصَمَا إِلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، فَقَالَ الرَّجُلُ: بَاعَنِي عَبْدًا وَبِهِ دَاءٌ، فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ: بِعْتُهُ بِالْبَرَاءَةِ، فَقَضَى عُثْمَانُ عَلَى ابْنِ عُمَرَ، أَنْ يَحْلِفَ بِاللَّهِ: لَقَدْ بَاعَهُ وَمَا بِهِ دَاءٌ يَعْلَمُهُ، فَأَبَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ أَنْ يَحْلِفَ، فَارْتَجَعَ الْغُلامَ، فَصَحَّ عِنْدَهُ الْعَبْدُ، فَبَاعَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بَعْدَ ذَلِكَ بِأَلْفٍ وَخَمْسِ مِائَةِ دِرْهَمٍ ".
قَالَ مُحَمَّدٌ: بَلَغَنَا عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّهُ قَالَ: مَنْ بَاعَ غُلامًا بِالْبَرَاءَةِ فَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَكَذَلِكَ بَاعَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بِالْبَرَاءَةِ، وَرَآهَا بَرَاءَةً جَائِزَةً.
فَبِقَوْلِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ نَأْخُذُ، مَنْ بَاعَ غُلامًا، أَوْ شَيْئًا، وَتَبَرَّأَ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَرَضِيَ بِذَلِكَ الْمُشْتَرِي، وَقَبَضَهُ عَلَى ذَلِكَ فَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ عَلِمَهُ، أَوْ لَمْ يَعْلَمْهُ، لأَنَّ الْمُشْتَرِيَ قَدْ برَّأَهُ مِنْ ذَلِكَ.
فَأَمَّا أَهْلُ الْمَدِينَةِ قَالُوا: يَبْرَأُ الْبَائِعُ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ لَمْ يَعْلَمْهُ، فَأَمَّا مَا عَلِمَهُ، وَكَتَمَهُ، فَإِنَّهُ لا يَبْرَأُ مِنْهُ، وَقَالُوا: إِذَا بَاعَهُ بَيْعَ الْمِيرَاثِ بَرِئَ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ عَلِمَهُ، أَوْ لَمْ يَعْلَمْهُ، إِذَا قَالَ: بِعْتُكَ بَيْعَ الْمِيرَاثِ، فَالَّذِي يَقُولُ: أَتَبَرَّأُ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَبَيَّنَ ذَلِكَ أَحْرَى أَنْ يَبْرَأَ لِمَا اشْتَرَطَ مِنْ هَذَا، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ، وَقَوْلُنَا، وَالْعَامَّةِ
قَالَ مُحَمَّدٌ: بَلَغَنَا عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّهُ قَالَ: مَنْ بَاعَ غُلامًا بِالْبَرَاءَةِ فَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَكَذَلِكَ بَاعَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بِالْبَرَاءَةِ، وَرَآهَا بَرَاءَةً جَائِزَةً.
فَبِقَوْلِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ نَأْخُذُ، مَنْ بَاعَ غُلامًا، أَوْ شَيْئًا، وَتَبَرَّأَ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَرَضِيَ بِذَلِكَ الْمُشْتَرِي، وَقَبَضَهُ عَلَى ذَلِكَ فَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ عَلِمَهُ، أَوْ لَمْ يَعْلَمْهُ، لأَنَّ الْمُشْتَرِيَ قَدْ برَّأَهُ مِنْ ذَلِكَ.
فَأَمَّا أَهْلُ الْمَدِينَةِ قَالُوا: يَبْرَأُ الْبَائِعُ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ لَمْ يَعْلَمْهُ، فَأَمَّا مَا عَلِمَهُ، وَكَتَمَهُ، فَإِنَّهُ لا يَبْرَأُ مِنْهُ، وَقَالُوا: إِذَا بَاعَهُ بَيْعَ الْمِيرَاثِ بَرِئَ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ عَلِمَهُ، أَوْ لَمْ يَعْلَمْهُ، إِذَا قَالَ: بِعْتُكَ بَيْعَ الْمِيرَاثِ، فَالَّذِي يَقُولُ: أَتَبَرَّأُ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ، وَبَيَّنَ ذَلِكَ أَحْرَى أَنْ يَبْرَأَ لِمَا اشْتَرَطَ مِنْ هَذَا، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ، وَقَوْلُنَا، وَالْعَامَّةِ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান