আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ

موطأ الإمام مالك برواية الإمام محمد بن الحسن الشيباني

৫- রোযার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৩৫০
সহবাসজনিত নাপাক অবস্থায় ভোর হলে।
৩৫০। আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ -কে বললো, 'সহবাস জনিত নাপাক অবস্থায় আমার ভোর হয়ে গেছে এবং আমি রোযা রাখতে ইচ্ছুক। এ সময় তিনি ঘরের দরজায় দাঁড়ানো ছিলেন এবং আমি তাদের আলাপ শুনলাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ (তাকে) বলেনঃ “সহবাস জনিত নাপাক অবস্থায় আমারও ভোর হয়ে যায়। অতঃপর আমি গোসল করি এবং রোযা রাখি”। লোকটি বললো, আপনি তো আমাদের মতো নন। আল্লাহ তাআলা আপনার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। এতে রাসূলুল্লাহ ﷺ অসন্তুষ্ট হন এবং বলেনঃ “আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই মহামহিম আল্লাহকে তোমার চেয়ে অধিক বেশী ভয় করার আশা পোষণ করি এবং পরহেযগারীর কথা তোমাদের চেয়ে অধিক বেশী জানি”।
بَابُ: الرَّجُلِ يَطْلُعُ لَهُ الْفَجْرُ فِي رَمَضَانَ وَهُوَ جُنُبٌ
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَعْمَرٍ، عَنْ أَبِي يُونُسَ مَوْلَى عَائِشَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَجُلا قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ وَاقِفٌ عَلَى الْبَابِ وَأَنَا أَسْمَعُ: إِنِّي أَصْبَحْتُ جُنُبًا وَأَنَا أُرِيدُ الصَّوْمَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَأَنَا أُصْبِحُ جُنُبًا، ثُمَّ أَغْتَسِلُ فَأَصُومُ» ، فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنَّكَ لَسْتَ مِثْلَنَا، فَقَدْ غَفَرَ اللَّهُ لَكَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ، وَمَا تَأَخَّرَ، فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: وَاللَّهِ إِنِّي «لأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَخْشَاكُمْ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَأَعْلَمَكُمْ بِمَا أَتَّقِي»
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৫১
সহবাসজনিত নাপাক অবস্থায় ভোর হলে।
৩৫১। আবু বাকর ইবনে আব্দুর রহমান (রাহঃ) বলেন, আমি এবং আমার পিতা (আব্দুর রহমান) মারওয়ান ইবনুল হাকামের কাছে বসা ছিলাম। তিনি তখন মদীনার গভর্নর ছিলেন। এ সময় কথা উঠলো যে, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি নাপাক অবস্থায় ভোরে উপনীত হয় তার রোযা হবে না”। তখন মারওয়ান বলেন, হে আব্দুর রহমান! আমি আপনাকে দোহাই দিয়ে বলছি, আপনি অবশ্যই উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাযিঃ) এবং হযরত উম্মু সালামা (রাযিঃ)-র কাছে গিয়ে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন। রাবী বলেন, আমার পিতা রওয়ানা হলেন এবং আমিও তার অনুসরণ করলাম। আমরা আয়েশা (রাযিঃ)-র বাড়িতে পৌঁছে তাকে সালাম জানালাম। অতঃপর আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেন, হে মুমিন-জননী! আমরা এতোক্ষণ মারওয়ান ইবনুল হাকামের কাছে বসা ছিলাম। সেখানে কথা উঠলো যে, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, নাপাক অবস্থায় কোন ব্যক্তির ভোর হয়ে গেলে তার রোযা হয় না। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, হে আব্দুর রহমান! আবু হুরায়রা যা বলে, ব্যাপারটি তদ্রুপ নয়। এরূপ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর যে কর্মনীতি ছিলো তা কি তুমি অপছন্দ করবে? তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! অবশ্যই না। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আমি শপথ করে বলছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ সহবাস জনিত নাপাক অবস্থায় ভোরে উপনীত হতেন, স্বপ্নদোষ জনিত নাপাক অবস্থায় নয়। অতঃপর তিনি ঐ দিনের রোযা রাখতেন। রাবী বলেন, অতঃপর আমরা তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উম্মু সালামা (রাযিঃ)-র বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হই। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) তার কাছেও এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তিনিও আয়েশা (রাযিঃ)-র অনুরূপ জওয়াব দিলেন। অতঃপর আমরা ফিরে গিয়ে মারওয়ানের কাছে উপস্থিত হলাম। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) তাকে তাদের উভয়ের বক্তব্য সম্পর্কে অবহিত করলেন। মারওয়ান বলেন, হে আবু মুহাম্মাদ! আমি আপনাকে দোহাই দিয়ে বলছি, অবশ্যই আপনি দরজার সামনে দাঁড়ানো আমার জম্ভুযানে চড়ে আবু হুরায়রার কাছে যান। তিনি বর্তমানে আকীক নামক স্থানে অবস্থান করছেন। তাকে এই বিষয়টি অবহিত করুন। আব্দুর রহমান (রাযিঃ) সওয়ারীতে আরোহণ করলেন এবং আমি তার অনুসরণ করলাম। অতঃপর আমরা আবু হুরায়রার কাছে পৌঁছে গেলাম। আব্দুর রহমান কিছুক্ষণ তার সাথে কথাবার্তা বলেন, অতঃপর আসল বিষয় উত্থাপন করেন। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, এ ব্যাপারে সরাসরি আমার কিছু জানা ছিলো না। এক ব্যক্তি আমাকে এরূপ বলেছিল।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা এই মত গ্রহণ করেছি। রমযান মাসে কোন ব্যক্তি সহবাস জনিত নাপাক অবস্থায় ভোরে উপনিত হলো, অতঃপর সুবহে সাদেক হওয়ার পর গোসল করলো, এতে তার রোযার কোন ক্ষতি হবে না। স্বপ্নদোষে রোযা নষ্ট হয় না। মহান আল্লাহ বলেনঃ

أحل لكم ليلة الصيام الرفث إلى نسائكم هن لباس لكم وانتم لباس لهن علم الله انكم كنتم تختانون انفسكم فتاب عليكم وعفا عنكم فالأن
بشروهن (یعنی الجماع) وابتغوا ما كتب الله لكم (يعني الولد) وكلوا واشربوا حتى يتبين لكم الخيط الأبيض من الخيط الأسود من الفجر

“রোযার সময় রাতের বেলা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হলো। তারা তোমাদের জন্য পোশাক স্বরূপ এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক স্বরূপ। আল্লাহ জানতে পেরেছেন যে, তোমরাও গোপনে গোপনে নিজেদের সাথে নিজেরাই বিশ্বাসঘাতকতা করেছ। তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এখন তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা (সন্তান) নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা অন্বেষণ করো। আর রাতের অন্ধকার রেখার বুক চিরে ভোরের শুভ্র রেখা উজ্জ্বল হয়ে উঠা পর্যন্ত তোমরা পানাহার করো” (সূরা বাকারাঃ ১৮৭)।
অর্থাৎ ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত পানাহার এবং সহবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অতএব ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত যখন পানাহার ও সহবাসের অনুমতি দেয়া হলো, তখন গোসল কেবল ফজরের পরেই হতে পারে। আর এতে দোষের কিছু নেই। ইমাম আবু হানীফা এবং সাধারণ ফিকহবিদদেরও এই মত।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا سُمَيٌّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، يَقُولُ: كُنْتُ أَنَا، وَأَبِي عِنْدَ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ وَهُوَ أَمِيرُ الْمَدِينَةِ، فَذَكَرَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ: مَنْ أَصْبَحَ جُنُبًا أَفْطَرَ، فَقَالَ مَرْوَانُ: أَقْسَمْتُ عَلَيْكَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ لِتَذْهَبَنَّ إِلَى أُمَّيِ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ، فَتَسْأَلْهُمَا عَنْ ذَلِكَ، قَالَ: فَذَهَبَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ، وَذَهَبْتُ مَعَهُ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ، فَسَلَّمْنَا عَلَى عَائِشَةَ، ثُمَّ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ، كُنَّا عِنْدَ مَرْوَانَ بْنِ الْحَكَمِ، فَذَكَرَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ: مَنْ أَصْبَحَ جُنُبًا أَفْطَرَ ذَلِكَ الْيَوْمِ، قَالَتْ: لَيْسَ كَمَا قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ، أَتَرْغَبُ عَمَّا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ؟ قَالَ: لا وَاللَّهِ، قَالَتْ: «فَأَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرَ احْتِلامٍ، ثُمَّ يَصُومُ ذَلِكَ الْيَوْمِ» ، قَالَ: ثُمَّ خَرَجْنَا حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ، فَسَأَلَهَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَتْ كَمَا قَالَتْ عَائِشَةُ، فَخَرَجْنَا حَتَّى جِئْنَا مَرْوَانَ، فَذَكَرَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ مَا قَالَتَا، فَقَالَ: أَقْسَمْتُ عَلَيْكَ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ لَتَرْكَبَنَّ دَابَّتِي، فَإِنَّهَا بِالْبَابِ، فَلَتَذْهَبَنَّ إِلَى أَبِي هُرَيْرَةَ، فَإِنَّهُ بِأَرْضِهِ بِالْعَقِيقِ، فَلَتُخْبِرَنَّهُ ذَلِكَ، قَالَ: فَرَكِبَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَرَكِبْتُ مَعَهُ حَتَّى أَتَيْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ، فَتَحَدَّثَ مَعَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ سَاعَةً ثُمَّ ذَكَرَ لَهُ ذَلِكَ، فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: لا عِلْمُ لِي بِذَلِكَ، إِنَّمَا أَخْبَرَنِيهِ مُخْبِرٌ، قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهَذَا نَأْخُذُ، مَنْ أَصْبَحَ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ مِنْ غَيْرِ احْتِلامٍ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ، ثُمَّ اغْتَسَلَ بَعْدَ مَا طَلَعَ الْفَجْرُ، فَلا بَأْسَ بِذَلِكَ، وَكِتَابُ اللَّهِ تَعَالَى يَدُلُّ عَلَى ذَلِكَ، قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ} [البقرة: 187] يَعْنِي الْجِمَاعَ {مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ} [البقرة: 187] يَعْنِي الْوَلَدَ {وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ} [البقرة: 187] يَعْنِي حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ، فَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ قَدْ رُخِّصَ لَهُ أَنْ يُجَامِعَ، وَيَبْتَغِي الْوَلَدَ، وَيَأْكُلَ، وَيَشْرَبَ حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ فَمَتَى يَكُونُ الْغُسْلُ إِلا بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ، فَهَذَا لا بَأْسَ بِهِ، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَالْعَامَّةِ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান