আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
الجامع الصحيح للبخاري
৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১ টি
হাদীস নং: ৩৪৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৭০০
২০৮৭. উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ)- এর প্রতি বায়‘আত ও তার উপর (জনগণের) ঐকমত্য হওয়ার ঘটনা এবং এতে উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ)- এর শাহাদাতের বর্ণনা
৩৪৩৫। মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আমর ইবনে মায়মুন (রাহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ)- কে আহত হওয়ার কিছুদিন পূর্বে মদীনায় দেখেছি যে, তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাযিঃ) ও উসমান ইবনে হুনায়ফ (রাযিঃ)- এর নিকট দাঁড়িয়ে তাঁদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন, (ইরাক বাসীর উপর কর ধার্যের ব্যাপারে) তোমরা এটা কী করলে? তোমরা কী আশঙ্কা করছ যে তোমরা ইরাক ভূমির উপর যে কর ধার্য করেছ তা বহনে ঐ ভূখণ্ড অক্ষম? তারা বললেন, আমরা যে পরিমাণ কর ধার্য করেছি, ঐ ভূখণ্ড তা বহনে সক্ষম। এতে অতিরিক্ত কোন বোঝা চাপান হয়নি। তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, তোমরা পুনঃচিন্তা করে দেখ যে তোমরা এ ভূখণ্ডের উপর যে কর আরোপ করেছ তা বহনে সক্ষম নয়? বর্ণনাকারী বলেন, তাঁরা বললেন, না (সাধ্যাতীত কর আরোপ করা হয় নি) এরপর উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থ রাখেন তবে ইরাকের বিধবাগণকে এমন অবস্থায় রেখে যাব যে তারা আমার পরে কখনো অন্য কারো মুখাপেক্ষী না হয়।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর চতুর্থ দিন তিনি (ঘাতকের আঘাতে) আহত হলেন। যেদিন প্রত্যুষে তিনি আহত হন, আমি তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম এবং তাঁর ও আমার মাঝে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কেউ ছিল না। উমর (রাযিঃ) (নামায শুরু করার প্রাক্কালে) দু’কাতারের মধ্য দিয়ে চলার সময় বলতেন, কাতার সোজা করে নাও। যখন দেখতেন কাতারে কোন ত্রুটি নেই তখন তাকবীর বলতেন। তিনি অধিকাংশ সময় সূরা ইউসূফ, সূরা নাহল অথবা এ ধরনের (দীর্ঘ) সূরা (ফজরের) প্রথম রাক’আতে তিলাওয়াত করতেন, যেন অধিক পরিমাণে লোক প্রথম রাকআতে শরীক হতে পারেন। (সেদিন) তাকবীর বলার পরেই আমি তাঁকে বলতে শুনলাম, একটি কুকুর আমাকে আঘাত করেছে অথবা বললেন, আমাকে আক্রমণ করেছে। ঘাতক “ইলজ” দ্রুত পলায়নের সময় দু’ধারী খঞ্জর দিয়ে ডানে বামে আঘাত করে চলছে। এভাবে তের জনকে আহত করল। এদের মধ্যে সাতজন শহীদ হলেন।
এ অবস্থা দৃষ্টে এক মুসলিম তার লম্বা চাঁদরটি ঘাতকের উপর ফেলে দিলেন। ঘাতক যখন বুঝতে পারল সে ধরা পড়ে যাবে তখন সে আত্মহত্যা করল। উমর (রাযিঃ) আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ)- এর হাত ধরে তাকে আগে এগিয়ে দিলেন। উমর (রাযিঃ)- এর নিকটবর্তী যারা ছিল শুধুমাত্র তারাই ব্যাপারটি দেখতে পেল। আর মসজিদের প্রান্তে যারা ছিল তারা ব্যাপারটি এর বেশী বুঝতে পারল না যে উমর (রাযিঃ)- এর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে না। তাই তারা “সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ” বলতে লাগলেন। আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) তাঁদেরকে নিয়ে সংক্ষেপে নামায আদায় করলেন। যখন মুসল্লীগণ চলে গেলেন, তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, হে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) দেখ তো কে আমাকে আঘাত করল। তিনি কিছুক্ষণ অনুসন্ধান করে এসে বললেন, মুগীরা ইবনে শো‘বা (রাযিঃ)- এর গোলাম (আবু লুলু)। উমর (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ঐ কারীগর গোলামটি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ তার সর্বনাশ করুন। আমি তার সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আমার মৃত্যু ইসলামের দাবীদার কোন ব্যক্তির হাতে ঘটান নি। হে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) তুমি এবং তোমার পিতা মদীনায় কাফির গোলামের সংখ্যা বৃদ্ধি পছন্দ করতে। আব্বাস (রাযিঃ)- এর নিকট অনেক অমুসলিম গোলাম ছিল।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, যদি আপনি চান তবে আমি কাজ করে ফেলি অর্থাৎ আমি তাদেরকে হত্যা করে ফেলি। উমর (রাযিঃ) বললেন, তুমি ভুল বলছ। (তুমি তা করতে পার না) কেননা তারা তোমাদের ভাষায় কথা বলে তোমাদের কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করে, তোমাদের ন্যায় হজ্জ করে। তারপর তাঁকে তাঁর ঘরে নেয়া হল। আমরা তাঁর সাথে চললাম। মানুষের অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছিল, ইতিপূর্বে তাদের উপর এতবড় মুসীবত আর আসেনি। কেউ কেউ বলছিলেন, ভয়ের কিছু নেই। আবার কেউ বলছিলেন, আমি তাঁর সম্পর্কে আশঙ্কাবোধ করছি। তারপর খেজুরের শরবত আনা হল তিনি তা পান করলেন। কিন্তু তা তার পেট থেকে বেরিয়ে পড়ল। এরপর দুধ আনা হল, তিনি তা পান করলেন; তাও তার পেট থেকে বেরিয়ে পড়ল। তখন সকলই বুঝতে পারলেন, মৃত্যু তাঁর অবশ্যম্ভাবী। আমরা তাঁর নিকট উপস্থিত হলাম। অন্যান্য লোকজনও আসতে শুরু করল। সকলেই তার প্রশংসা করতে লাগল।
তখন যুবক বয়সী একটি লোক এসে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন। আপনার জন্য আল্লাহর সু-সংবাদ রয়েছে; আপনি তা গ্রহণ করুন। আপনি নবী কারীম (ﷺ)- এর সাহচর্য গ্রহণ করেছেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগেই আপনি তা গ্রহণ করেছেন, যে সম্পর্কে আপনি নিজেই অবগত আছেন তারপর আপনি খলীফা হয়ে ন্যায় বিচার করেছেন। তারপর আপনি শাহাদাত লাভ করেছেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি পছন্দ করি যে তা আমার জন্য ক্ষতিকর বা লাভজনক না হয়ে সমান সমান হয়ে যাক। যখন যুবকটি চলে যেতে উদ্যত হল তখন তার (পরিহিত) লঙ্গিটি মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছিল। (এ দেখে) উমর (রাযিঃ) বললেন, যুবকটিকে আমার নিকট ডেকে আন। (ছেলেটি আসল) তিনি বললেন- হে ভাতিজা, তোমার কাপড়টি উঠিয়ে নাও। এটা তোমার কাপড়ের পরিচ্ছিন্নতার উপর এবং তোমার রবের নিকটও অপছন্দনীয়।
(তারপর তিনি বললেন) হে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর তুমি হিসাব করে দেখ আমার ঋণের পরিমাণ কত। তাঁরা হিসাব করে দেখতে পেলেন ছিয়াশি হাজার (দিরহাম) বা এর কাছাকাছি। তিনি বললেন, যদি উমরের পরিবার পরিজনের মাল দ্বারা তা পরিশোধ হয়ে যায়, তবে তা দিয়ে পরিশোধ করে দাও। অন্যথায় আদি ইবনে কা‘ব এর বংশধরদের নিকট থেকে সাহায্য গ্রহণ কর। তাদের মাল দিয়েও যদি ঋণ পরিশোধ না হয় তবে কুরাইশ কবিলা থেকে সাহায্য গ্রহণ করবে এর বাহিরে কারো সাহায্য গ্রহণ করবে না। আমার পক্ষ থেকে তাড়াতাড়ি ঋণ আদায় করে দাও। উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাযিঃ)- এর খেদমতে তুমি যাও এবং বল উমর আপনাকে সালাম পাঠিয়েছে। আমীরুল মু’মিনীন, শব্দটি বলবে না। কেননা এখন আমি মু’মিনগণের আমীর নই। তাঁকে বল উমর ইবনে খাত্তাব তাঁর সাথীদ্বয়ের পাশে দাফন হওয়ার অনুমতি চাচ্ছেন।
ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ)- এর খেদমতে গিয়ে সালাম জানিয়ে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, প্রবেশ কর, তিনি দেখলেন, আয়েশা (রাযিঃ) বসে বসে কাঁদছেন। তিনি গিয়ে বললেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং তাঁর সাথীদ্বয়ের পাশে দাফন হওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, তা আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু আজ আমি এ ব্যাপারে আমার উপরে তাঁকে অগ্রাধিকার প্রদান করছি। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) যখন ফিরে আসছেন তখন বলা হল- এই যে আব্দুল্লাহ ফিরে আসছে। তিনি বললেন আমাকে উঠিয়ে বসাও। তখন এক ব্যক্তি তাকে ঠেস দিয়ে বসিয়ে ধরে রাখলেন। উমর (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কি সংবাদ? তিনি বললেন, আমীরুল মু’মিনীন, আপনি যা আকাঙ্ক্ষা করেছেন, তাই হয়েছে, তিনি অনুমতি দিয়েছেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, আলহামদুল্লিাহ। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় আমার নিকট ছিল না। যখন আমার ওফাত হয়ে যাবে তখন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে, তাঁকে (আয়েশা (রাযিঃ) আমার সালাম জানিয়ে বলবে, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) আপনার অনুমতি চাচ্ছেন। যদি তিনি অনুমতি দেন, তবে আমাকে প্রবেশ করাবে আর যদি তিনি অনুমতি না দেন তবে আমাকে সাধারণ মুসলমানদের গোরস্থানে নিয়ে যাবে।
এ সময় উম্মুল মু’মিনীন হাফসা (রাযিঃ)- কে কতিপয় মহিলাসহ আসতে দেখে আমরা উঠে পড়লাম। হাফসা (রাযিঃ) তাঁর কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ কাঁদলেন। তারপর পুরুষগণ এসে প্রবেশের অনুমতি চাইলে, তিনি ঘরের ভিতর চলে (গেলেন) ঘরের ভেতর হতেও আমরা তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। তাঁরা (সাহাবীগণ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন, আপনি অসিয়্যাত করুন এবং খলীফা মনোনীত করুন। উমর (রাযিঃ) বললেন, খিলাফতের জন্য এ কয়েকজন ব্যতীত অন্য কাউকে আমি যোগ্যতম পাচ্ছিনা, যাঁদের প্রতি নবী কারীম (ﷺ) তার ইন্তিকালের সময় রাযী ও খুশী ছিলেন। তারপর তিনি তাদের নাম বললেন, আলী, উসমান, যুবাইর, তালহা, সা‘দ ও আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) এবং বললেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) তোমাদের সাথে থাকবে। কিন্তু সে খিলাফত লাভ করতে পারবে না। তা ছিল শুধু সান্ত্বনা হিসাবে।
যদি খিদলাফতের দায়িত্ব সা‘দের (রাযিঃ) উপর ন্যস্ত করা হয় তবে তিনি এর জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি।আর যদি তোমাদের মধ্যে অন্য কেউ খলীফা নির্বাচিত হন তবে তিনি যেন সর্ব বিষয়ে সা‘দের সাহায্য ও পরামর্শ গ্রহণ করেন। আমি তাঁকে (কুফার গভর্নরের পদ থেকে) অযোগ্যতা বা খিয়ানতের কারণে অপসারণ করিনি। আমার পরে (নির্বাচিত) খলীফাকে আমি অসিয়্যাত করছি, তিনি যেন প্রথম যুগের মুহাজিরগণের হক সম্পর্কে সচেতন থাকেন, তাদের মান-সম্মান রক্ষায় সচেষ্ট থাকেন। এবং আমি তাঁকে আনসার সাহাবীগণের যাঁরা মুহাজিরগণের আগমনের পূর্বে এই নগরীতে (মদীনায়) বসবাস করে আসছিলেন এবং ঈমান এনেছেন, তাঁদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার অসিয়্যাত করছি যে তাঁদের মধ্যে নেককারগণের ওযর আপত্তি যেন গ্রহণ করা হয় এবং তাঁদের মধ্যে কারো ভুলত্রুটি হলে তা যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়।
আমি তাঁকে এ অসিয়্যাতও করছি যে, তিনি যেন রাজ্যের বিভিন্ন শহরের আধিবাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করেন। কেননা তাঁরাও ইসলামের হেফাযতকারী। এবং তারাই ধন-সম্পদের যোগানদাতা। তারাই শত্রুদের চোখের কাঁটা। তাদের থেকে তাদের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে কেবলমাত্র তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ যাকাত আদায় করা হয়। আমি তাঁকে পল্লীবাসীদের সহিত সদ্ব্যবহার করারও অসিয়্যাত করছি। কেননা তারাই আরবের ভিত্তি এবং ইসলামের মূল শক্তি। তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ এনে তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হয়। আমি তাঁকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (ﷺ)-এর জিম্মীদের (অর্থাৎ সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়) বিষয়ে অসিয়্যাত করছি যে, তাদের সাথে কৃত অঙ্গীকার যেন পুরা করা হয়। (তারা কোন শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে) তাদের পক্ষাবলম্বনে যেন যুদ্ধ করা হয়, তাদের শক্তি সামর্থ্যের অধিক জিযিয়া (কর) যেন চাপানো না হয়।
উমর (রাযিঃ)- এর ইন্তিকাল হয়ে গেলে আমরা তাঁর লাশ নিয়ে পায়ে হেঁটে চললাম। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ)- কে সালাম করলেন এবং বললেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি (আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, তাকে প্রবেশ করাও। এরপর তাঁকে প্রবেশ করানো হল এবং তাঁর সঙ্গীদ্বয়ের পার্শ্বে দাফন করা হল। যখন তাঁর দাফন কার্য সম্পন্ন হল, তখন ঐ ব্যক্তিবর্গ একত্রিত হলেন। তখন আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বললেন, তোমরা তোমাদের বিষয়টি তোমাদের মধ্য থেকে তিনজনের উপর ছেড়ে দাও। তখন যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, আমি, আমরা বিষয়টি আলী (রাযিঃ)- এর উপর অর্পণ করলাম। তালহা (রাযিঃ) বললেন, আমার বিষয়টি উসমান (রাযিঃ)- এর উপর ন্যস্ত করলাম। সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, আমার বিষয়টি আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ)- এর উপর ন্যস্ত করলাম। তারপর আব্দুর রহমান (রাযিঃ), উসমান ও আলী (রাযিঃ)- কে বললেন, আপনাদের দু’জনের মধ্য থেকে কে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে ইচ্ছা করেন? (একজন অব্যাহতি দিলে) এ দায়িত্ব অপর জনের উপর অর্পণ করব। আল্লাহ ও ইসলামের হক আদায় করা তাঁর অন্যতম দায়িত্ব হবে। কে অধিকতর যোগ্য সে সম্পর্কে দু’জনেরই চিন্তা করা উচিৎ। ব্যক্তিদ্বয় (উসমান ও আলী (রাযিঃ) নীরব থাকলেন।
তখন আব্দুর রহমান (রাযিঃ) নিজেই বললেন, আপনারা এ দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করতে পরেন কি? আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি আপনাদের মধ্যকার যোগ্যতম ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে একটুও ত্রুটি করব না। তাঁরা উভয়ে বললেন, হ্যাঁ। তাদের একজনের (আলী (রাযিঃ)- এর) হাত ধরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে আপনার যে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা এবং ইসলাম গ্রহণে অগ্রগামীতা রয়েছে তা আপনিও ভালভাবে জানেন। আল্লাহর ওয়াস্তে এটা আপনার জন্য জরুরী হবে যে যদি আপনাকে খলীফা মনোনীত করি তাহলে আপনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। আর যদি উসমান (রাযিঃ)- কে মনোনিত করি তবে আপনি তাঁর কথা শুনবেন এবং তাঁর প্রতি অনুগত থাকবেন। তারপর তিনি অপরজনের (উসমানের (রাযিঃ) সঙ্গে একান্তে অনুরূপ কথা বললেন। এভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করে, তিনি বললেন, হে উসমান (রাযিঃ) আপনার হাত বাড়িয়ে দিন। তিনি (আব্দুর রহমান (রাযিঃ)), তাঁর হাতে বায়‘আত করলেন। তারপর আলী (রাযিঃ) তাঁর (উসমান (রাযিঃ)- এর বায়‘আত করলেন)। এরপর মদীনাবাসীগণ অগ্রসর হয়ে সকলেই বায়‘আত করলেন।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর চতুর্থ দিন তিনি (ঘাতকের আঘাতে) আহত হলেন। যেদিন প্রত্যুষে তিনি আহত হন, আমি তাঁর কাছে দাঁড়িয়েছিলাম এবং তাঁর ও আমার মাঝে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কেউ ছিল না। উমর (রাযিঃ) (নামায শুরু করার প্রাক্কালে) দু’কাতারের মধ্য দিয়ে চলার সময় বলতেন, কাতার সোজা করে নাও। যখন দেখতেন কাতারে কোন ত্রুটি নেই তখন তাকবীর বলতেন। তিনি অধিকাংশ সময় সূরা ইউসূফ, সূরা নাহল অথবা এ ধরনের (দীর্ঘ) সূরা (ফজরের) প্রথম রাক’আতে তিলাওয়াত করতেন, যেন অধিক পরিমাণে লোক প্রথম রাকআতে শরীক হতে পারেন। (সেদিন) তাকবীর বলার পরেই আমি তাঁকে বলতে শুনলাম, একটি কুকুর আমাকে আঘাত করেছে অথবা বললেন, আমাকে আক্রমণ করেছে। ঘাতক “ইলজ” দ্রুত পলায়নের সময় দু’ধারী খঞ্জর দিয়ে ডানে বামে আঘাত করে চলছে। এভাবে তের জনকে আহত করল। এদের মধ্যে সাতজন শহীদ হলেন।
এ অবস্থা দৃষ্টে এক মুসলিম তার লম্বা চাঁদরটি ঘাতকের উপর ফেলে দিলেন। ঘাতক যখন বুঝতে পারল সে ধরা পড়ে যাবে তখন সে আত্মহত্যা করল। উমর (রাযিঃ) আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ)- এর হাত ধরে তাকে আগে এগিয়ে দিলেন। উমর (রাযিঃ)- এর নিকটবর্তী যারা ছিল শুধুমাত্র তারাই ব্যাপারটি দেখতে পেল। আর মসজিদের প্রান্তে যারা ছিল তারা ব্যাপারটি এর বেশী বুঝতে পারল না যে উমর (রাযিঃ)- এর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে না। তাই তারা “সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ” বলতে লাগলেন। আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) তাঁদেরকে নিয়ে সংক্ষেপে নামায আদায় করলেন। যখন মুসল্লীগণ চলে গেলেন, তখন উমর (রাযিঃ) বললেন, হে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) দেখ তো কে আমাকে আঘাত করল। তিনি কিছুক্ষণ অনুসন্ধান করে এসে বললেন, মুগীরা ইবনে শো‘বা (রাযিঃ)- এর গোলাম (আবু লুলু)। উমর (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ঐ কারীগর গোলামটি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ তার সর্বনাশ করুন। আমি তার সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আমার মৃত্যু ইসলামের দাবীদার কোন ব্যক্তির হাতে ঘটান নি। হে ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) তুমি এবং তোমার পিতা মদীনায় কাফির গোলামের সংখ্যা বৃদ্ধি পছন্দ করতে। আব্বাস (রাযিঃ)- এর নিকট অনেক অমুসলিম গোলাম ছিল।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, যদি আপনি চান তবে আমি কাজ করে ফেলি অর্থাৎ আমি তাদেরকে হত্যা করে ফেলি। উমর (রাযিঃ) বললেন, তুমি ভুল বলছ। (তুমি তা করতে পার না) কেননা তারা তোমাদের ভাষায় কথা বলে তোমাদের কিবলামুখী হয়ে নামায আদায় করে, তোমাদের ন্যায় হজ্জ করে। তারপর তাঁকে তাঁর ঘরে নেয়া হল। আমরা তাঁর সাথে চললাম। মানুষের অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছিল, ইতিপূর্বে তাদের উপর এতবড় মুসীবত আর আসেনি। কেউ কেউ বলছিলেন, ভয়ের কিছু নেই। আবার কেউ বলছিলেন, আমি তাঁর সম্পর্কে আশঙ্কাবোধ করছি। তারপর খেজুরের শরবত আনা হল তিনি তা পান করলেন। কিন্তু তা তার পেট থেকে বেরিয়ে পড়ল। এরপর দুধ আনা হল, তিনি তা পান করলেন; তাও তার পেট থেকে বেরিয়ে পড়ল। তখন সকলই বুঝতে পারলেন, মৃত্যু তাঁর অবশ্যম্ভাবী। আমরা তাঁর নিকট উপস্থিত হলাম। অন্যান্য লোকজনও আসতে শুরু করল। সকলেই তার প্রশংসা করতে লাগল।
তখন যুবক বয়সী একটি লোক এসে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন। আপনার জন্য আল্লাহর সু-সংবাদ রয়েছে; আপনি তা গ্রহণ করুন। আপনি নবী কারীম (ﷺ)- এর সাহচর্য গ্রহণ করেছেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগেই আপনি তা গ্রহণ করেছেন, যে সম্পর্কে আপনি নিজেই অবগত আছেন তারপর আপনি খলীফা হয়ে ন্যায় বিচার করেছেন। তারপর আপনি শাহাদাত লাভ করেছেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, আমি পছন্দ করি যে তা আমার জন্য ক্ষতিকর বা লাভজনক না হয়ে সমান সমান হয়ে যাক। যখন যুবকটি চলে যেতে উদ্যত হল তখন তার (পরিহিত) লঙ্গিটি মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছিল। (এ দেখে) উমর (রাযিঃ) বললেন, যুবকটিকে আমার নিকট ডেকে আন। (ছেলেটি আসল) তিনি বললেন- হে ভাতিজা, তোমার কাপড়টি উঠিয়ে নাও। এটা তোমার কাপড়ের পরিচ্ছিন্নতার উপর এবং তোমার রবের নিকটও অপছন্দনীয়।
(তারপর তিনি বললেন) হে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর তুমি হিসাব করে দেখ আমার ঋণের পরিমাণ কত। তাঁরা হিসাব করে দেখতে পেলেন ছিয়াশি হাজার (দিরহাম) বা এর কাছাকাছি। তিনি বললেন, যদি উমরের পরিবার পরিজনের মাল দ্বারা তা পরিশোধ হয়ে যায়, তবে তা দিয়ে পরিশোধ করে দাও। অন্যথায় আদি ইবনে কা‘ব এর বংশধরদের নিকট থেকে সাহায্য গ্রহণ কর। তাদের মাল দিয়েও যদি ঋণ পরিশোধ না হয় তবে কুরাইশ কবিলা থেকে সাহায্য গ্রহণ করবে এর বাহিরে কারো সাহায্য গ্রহণ করবে না। আমার পক্ষ থেকে তাড়াতাড়ি ঋণ আদায় করে দাও। উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রাযিঃ)- এর খেদমতে তুমি যাও এবং বল উমর আপনাকে সালাম পাঠিয়েছে। আমীরুল মু’মিনীন, শব্দটি বলবে না। কেননা এখন আমি মু’মিনগণের আমীর নই। তাঁকে বল উমর ইবনে খাত্তাব তাঁর সাথীদ্বয়ের পাশে দাফন হওয়ার অনুমতি চাচ্ছেন।
ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ)- এর খেদমতে গিয়ে সালাম জানিয়ে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, প্রবেশ কর, তিনি দেখলেন, আয়েশা (রাযিঃ) বসে বসে কাঁদছেন। তিনি গিয়ে বললেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন এবং তাঁর সাথীদ্বয়ের পাশে দাফন হওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, তা আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু আজ আমি এ ব্যাপারে আমার উপরে তাঁকে অগ্রাধিকার প্রদান করছি। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) যখন ফিরে আসছেন তখন বলা হল- এই যে আব্দুল্লাহ ফিরে আসছে। তিনি বললেন আমাকে উঠিয়ে বসাও। তখন এক ব্যক্তি তাকে ঠেস দিয়ে বসিয়ে ধরে রাখলেন। উমর (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কি সংবাদ? তিনি বললেন, আমীরুল মু’মিনীন, আপনি যা আকাঙ্ক্ষা করেছেন, তাই হয়েছে, তিনি অনুমতি দিয়েছেন। উমর (রাযিঃ) বললেন, আলহামদুল্লিাহ। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় আমার নিকট ছিল না। যখন আমার ওফাত হয়ে যাবে তখন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে, তাঁকে (আয়েশা (রাযিঃ) আমার সালাম জানিয়ে বলবে, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) আপনার অনুমতি চাচ্ছেন। যদি তিনি অনুমতি দেন, তবে আমাকে প্রবেশ করাবে আর যদি তিনি অনুমতি না দেন তবে আমাকে সাধারণ মুসলমানদের গোরস্থানে নিয়ে যাবে।
এ সময় উম্মুল মু’মিনীন হাফসা (রাযিঃ)- কে কতিপয় মহিলাসহ আসতে দেখে আমরা উঠে পড়লাম। হাফসা (রাযিঃ) তাঁর কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ কাঁদলেন। তারপর পুরুষগণ এসে প্রবেশের অনুমতি চাইলে, তিনি ঘরের ভিতর চলে (গেলেন) ঘরের ভেতর হতেও আমরা তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। তাঁরা (সাহাবীগণ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন, আপনি অসিয়্যাত করুন এবং খলীফা মনোনীত করুন। উমর (রাযিঃ) বললেন, খিলাফতের জন্য এ কয়েকজন ব্যতীত অন্য কাউকে আমি যোগ্যতম পাচ্ছিনা, যাঁদের প্রতি নবী কারীম (ﷺ) তার ইন্তিকালের সময় রাযী ও খুশী ছিলেন। তারপর তিনি তাদের নাম বললেন, আলী, উসমান, যুবাইর, তালহা, সা‘দ ও আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ) এবং বললেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) তোমাদের সাথে থাকবে। কিন্তু সে খিলাফত লাভ করতে পারবে না। তা ছিল শুধু সান্ত্বনা হিসাবে।
যদি খিদলাফতের দায়িত্ব সা‘দের (রাযিঃ) উপর ন্যস্ত করা হয় তবে তিনি এর জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি।আর যদি তোমাদের মধ্যে অন্য কেউ খলীফা নির্বাচিত হন তবে তিনি যেন সর্ব বিষয়ে সা‘দের সাহায্য ও পরামর্শ গ্রহণ করেন। আমি তাঁকে (কুফার গভর্নরের পদ থেকে) অযোগ্যতা বা খিয়ানতের কারণে অপসারণ করিনি। আমার পরে (নির্বাচিত) খলীফাকে আমি অসিয়্যাত করছি, তিনি যেন প্রথম যুগের মুহাজিরগণের হক সম্পর্কে সচেতন থাকেন, তাদের মান-সম্মান রক্ষায় সচেষ্ট থাকেন। এবং আমি তাঁকে আনসার সাহাবীগণের যাঁরা মুহাজিরগণের আগমনের পূর্বে এই নগরীতে (মদীনায়) বসবাস করে আসছিলেন এবং ঈমান এনেছেন, তাঁদের প্রতি সদ্ব্যবহার করার অসিয়্যাত করছি যে তাঁদের মধ্যে নেককারগণের ওযর আপত্তি যেন গ্রহণ করা হয় এবং তাঁদের মধ্যে কারো ভুলত্রুটি হলে তা যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়।
আমি তাঁকে এ অসিয়্যাতও করছি যে, তিনি যেন রাজ্যের বিভিন্ন শহরের আধিবাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করেন। কেননা তাঁরাও ইসলামের হেফাযতকারী। এবং তারাই ধন-সম্পদের যোগানদাতা। তারাই শত্রুদের চোখের কাঁটা। তাদের থেকে তাদের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে কেবলমাত্র তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ যাকাত আদায় করা হয়। আমি তাঁকে পল্লীবাসীদের সহিত সদ্ব্যবহার করারও অসিয়্যাত করছি। কেননা তারাই আরবের ভিত্তি এবং ইসলামের মূল শক্তি। তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ এনে তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হয়। আমি তাঁকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (ﷺ)-এর জিম্মীদের (অর্থাৎ সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়) বিষয়ে অসিয়্যাত করছি যে, তাদের সাথে কৃত অঙ্গীকার যেন পুরা করা হয়। (তারা কোন শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে) তাদের পক্ষাবলম্বনে যেন যুদ্ধ করা হয়, তাদের শক্তি সামর্থ্যের অধিক জিযিয়া (কর) যেন চাপানো না হয়।
উমর (রাযিঃ)- এর ইন্তিকাল হয়ে গেলে আমরা তাঁর লাশ নিয়ে পায়ে হেঁটে চললাম। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ)- কে সালাম করলেন এবং বললেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি (আয়েশা (রাযিঃ) বললেন, তাকে প্রবেশ করাও। এরপর তাঁকে প্রবেশ করানো হল এবং তাঁর সঙ্গীদ্বয়ের পার্শ্বে দাফন করা হল। যখন তাঁর দাফন কার্য সম্পন্ন হল, তখন ঐ ব্যক্তিবর্গ একত্রিত হলেন। তখন আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বললেন, তোমরা তোমাদের বিষয়টি তোমাদের মধ্য থেকে তিনজনের উপর ছেড়ে দাও। তখন যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, আমি, আমরা বিষয়টি আলী (রাযিঃ)- এর উপর অর্পণ করলাম। তালহা (রাযিঃ) বললেন, আমার বিষয়টি উসমান (রাযিঃ)- এর উপর ন্যস্ত করলাম। সা‘দ (রাযিঃ) বললেন, আমার বিষয়টি আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাযিঃ)- এর উপর ন্যস্ত করলাম। তারপর আব্দুর রহমান (রাযিঃ), উসমান ও আলী (রাযিঃ)- কে বললেন, আপনাদের দু’জনের মধ্য থেকে কে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে ইচ্ছা করেন? (একজন অব্যাহতি দিলে) এ দায়িত্ব অপর জনের উপর অর্পণ করব। আল্লাহ ও ইসলামের হক আদায় করা তাঁর অন্যতম দায়িত্ব হবে। কে অধিকতর যোগ্য সে সম্পর্কে দু’জনেরই চিন্তা করা উচিৎ। ব্যক্তিদ্বয় (উসমান ও আলী (রাযিঃ) নীরব থাকলেন।
তখন আব্দুর রহমান (রাযিঃ) নিজেই বললেন, আপনারা এ দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করতে পরেন কি? আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি আপনাদের মধ্যকার যোগ্যতম ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে একটুও ত্রুটি করব না। তাঁরা উভয়ে বললেন, হ্যাঁ। তাদের একজনের (আলী (রাযিঃ)- এর) হাত ধরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে আপনার যে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা এবং ইসলাম গ্রহণে অগ্রগামীতা রয়েছে তা আপনিও ভালভাবে জানেন। আল্লাহর ওয়াস্তে এটা আপনার জন্য জরুরী হবে যে যদি আপনাকে খলীফা মনোনীত করি তাহলে আপনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। আর যদি উসমান (রাযিঃ)- কে মনোনিত করি তবে আপনি তাঁর কথা শুনবেন এবং তাঁর প্রতি অনুগত থাকবেন। তারপর তিনি অপরজনের (উসমানের (রাযিঃ) সঙ্গে একান্তে অনুরূপ কথা বললেন। এভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করে, তিনি বললেন, হে উসমান (রাযিঃ) আপনার হাত বাড়িয়ে দিন। তিনি (আব্দুর রহমান (রাযিঃ)), তাঁর হাতে বায়‘আত করলেন। তারপর আলী (রাযিঃ) তাঁর (উসমান (রাযিঃ)- এর বায়‘আত করলেন)। এরপর মদীনাবাসীগণ অগ্রসর হয়ে সকলেই বায়‘আত করলেন।
بَابُ قِصَّةُ الْبَيْعَةِ، وَالاِتِّفَاقُ عَلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ وَفِيهِ مَقْتَلُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
3700 - حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، قَالَ: رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَبْلَ أَنْ يُصَابَ بِأَيَّامٍ بِالْمَدِينَةِ، وَقَفَ عَلَى حُذَيْفَةَ بْنِ اليَمَانِ، وَعُثْمَانَ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ: " كَيْفَ فَعَلْتُمَا، أَتَخَافَانِ أَنْ تَكُونَا قَدْ حَمَّلْتُمَا الأَرْضَ مَا لاَ تُطِيقُ؟ قَالاَ: حَمَّلْنَاهَا أَمْرًا هِيَ لَهُ مُطِيقَةٌ، مَا فِيهَا كَبِيرُ فَضْلٍ، قَالَ: انْظُرَا أَنْ تَكُونَا حَمَّلْتُمَا الأَرْضَ مَا لاَ تُطِيقُ، قَالَ: قَالاَ: لاَ، فَقَالَ عُمَرُ: لَئِنْ سَلَّمَنِي اللَّهُ، لَأَدَعَنَّ أَرَامِلَ أَهْلِ العِرَاقِ لاَ يَحْتَجْنَ إِلَى رَجُلٍ بَعْدِي أَبَدًا، قَالَ: فَمَا أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا رَابِعَةٌ [ص:16] حَتَّى أُصِيبَ، قَالَ: إِنِّي لَقَائِمٌ مَا بَيْنِي وَبَيْنَهُ، إِلَّا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ غَدَاةَ أُصِيبَ، وَكَانَ إِذَا مَرَّ بَيْنَ الصَّفَّيْنِ، قَالَ: اسْتَوُوا، حَتَّى إِذَا لَمْ يَرَ فِيهِنَّ خَلَلًا تَقَدَّمَ فَكَبَّرَ، وَرُبَّمَا قَرَأَ سُورَةَ يُوسُفَ، أَوِ النَّحْلَ، أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ , فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى حَتَّى يَجْتَمِعَ النَّاسُ، فَمَا هُوَ إِلَّا أَنْ كَبَّرَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: قَتَلَنِي - أَوْ أَكَلَنِي - الكَلْبُ، حِينَ طَعَنَهُ، فَطَارَ العِلْجُ بِسِكِّينٍ ذَاتِ طَرَفَيْنِ، لاَ يَمُرُّ عَلَى أَحَدٍ يَمِينًا وَلاَ شِمَالًا إِلَّا طَعَنَهُ، حَتَّى طَعَنَ ثَلاَثَةَ عَشَرَ رَجُلًا، مَاتَ مِنْهُمْ سَبْعَةٌ، فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ رَجُلٌ مِنَ المُسْلِمِينَ طَرَحَ عَلَيْهِ بُرْنُسًا، فَلَمَّا ظَنَّ العِلْجُ أَنَّهُ مَأْخُوذٌ نَحَرَ نَفْسَهُ، وَتَنَاوَلَ عُمَرُ يَدَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ فَقَدَّمَهُ، فَمَنْ يَلِي عُمَرَ فَقَدْ رَأَى الَّذِي أَرَى، وَأَمَّا نَوَاحِي المَسْجِدِ فَإِنَّهُمْ لاَ يَدْرُونَ، غَيْرَ أَنَّهُمْ قَدْ فَقَدُوا صَوْتَ عُمَرَ، وَهُمْ يَقُولُونَ: سُبْحَانَ اللَّهِ سُبْحَانَ اللَّهِ، فَصَلَّى بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ صَلاَةً خَفِيفَةً، فَلَمَّا انْصَرَفُوا قَالَ: يَا ابْنَ عَبَّاسٍ، انْظُرْ مَنْ قَتَلَنِي، فَجَالَ سَاعَةً ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ: غُلاَمُ المُغِيرَةِ، قَالَ: الصَّنَعُ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: قَاتَلَهُ اللَّهُ، لَقَدْ أَمَرْتُ بِهِ مَعْرُوفًا، الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي لَمْ يَجْعَلْ مِيتَتِي بِيَدِ رَجُلٍ يَدَّعِي الإِسْلاَمَ، قَدْ كُنْتَ أَنْتَ وَأَبُوكَ تُحِبَّانِ أَنْ تَكْثُرَ العُلُوجُ بِالْمَدِينَةِ، - وَكَانَ العَبَّاسُ أَكْثَرَهُمْ رَقِيقًا - فَقَالَ: إِنْ شِئْتَ فَعَلْتُ، أَيْ: إِنْ شِئْتَ قَتَلْنَا؟ قَالَ: كَذَبْتَ بَعْدَ مَا تَكَلَّمُوا بِلِسَانِكُمْ، وَصَلَّوْا قِبْلَتَكُمْ، وَحَجُّوا حَجَّكُمْ. فَاحْتُمِلَ إِلَى بَيْتِهِ فَانْطَلَقْنَا مَعَهُ، وَكَأَنَّ النَّاسَ لَمْ تُصِبْهُمْ مُصِيبَةٌ قَبْلَ يَوْمَئِذٍ، فَقَائِلٌ يَقُولُ: لاَ بَأْسَ، وَقَائِلٌ يَقُولُ: أَخَافُ عَلَيْهِ، فَأُتِيَ بِنَبِيذٍ فَشَرِبَهُ، فَخَرَجَ مِنْ جَوْفِهِ، ثُمَّ أُتِيَ بِلَبَنٍ فَشَرِبَهُ فَخَرَجَ مِنْ جُرْحِهِ، فَعَلِمُوا أَنَّهُ مَيِّتٌ، فَدَخَلْنَا عَلَيْهِ، وَجَاءَ النَّاسُ، فَجَعَلُوا يُثْنُونَ عَلَيْهِ، وَجَاءَ رَجُلٌ شَابٌّ، فَقَالَ: أَبْشِرْ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ بِبُشْرَى اللَّهِ لَكَ، مِنْ صُحْبَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَدَمٍ فِي الإِسْلاَمِ مَا قَدْ عَلِمْتَ، ثُمَّ وَلِيتَ فَعَدَلْتَ، ثُمَّ شَهَادَةٌ، قَالَ: وَدِدْتُ أَنَّ ذَلِكَ كَفَافٌ لاَ عَلَيَّ وَلاَ لِي، فَلَمَّا أَدْبَرَ إِذَا إِزَارُهُ يَمَسُّ الأَرْضَ، قَالَ: رُدُّوا عَلَيَّ الغُلاَمَ، قَالَ: يَا ابْنَ أَخِي ارْفَعْ ثَوْبَكَ، فَإِنَّهُ أَبْقَى لِثَوْبِكَ، وَأَتْقَى لِرَبِّكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، انْظُرْ مَا عَلَيَّ مِنَ الدَّيْنِ، فَحَسَبُوهُ فَوَجَدُوهُ سِتَّةً وَثَمَانِينَ أَلْفًا أَوْ نَحْوَهُ، قَالَ: إِنْ وَفَى لَهُ، مَالُ آلِ عُمَرَ فَأَدِّهِ مِنْ أَمْوَالِهِمْ، وَإِلَّا فَسَلْ فِي بَنِي عَدِيِّ بْنِ كَعْبٍ، فَإِنْ لَمْ تَفِ أَمْوَالُهُمْ فَسَلْ فِي قُرَيْشٍ، وَلاَ تَعْدُهُمْ إِلَى غَيْرِهِمْ، فَأَدِّ عَنِّي هَذَا المَالَ انْطَلِقْ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ، فَقُلْ: يَقْرَأُ عَلَيْكِ عُمَرُ السَّلاَمَ، وَلاَ تَقُلْ أَمِيرُ المُؤْمِنِينَ، فَإِنِّي لَسْتُ اليَوْمَ لِلْمُؤْمِنِينَ أَمِيرًا، وَقُلْ: يَسْتَأْذِنُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ أَنْ يُدْفَنَ مَعَ صَاحِبَيْهِ، فَسَلَّمَ وَاسْتَأْذَنَ، ثُمَّ دَخَلَ عَلَيْهَا، فَوَجَدَهَا قَاعِدَةً تَبْكِي، فَقَالَ [ص:17]: يَقْرَأُ عَلَيْكِ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ السَّلاَمَ، وَيَسْتَأْذِنُ أَنْ يُدْفَنَ مَعَ صَاحِبَيْهِ، فَقَالَتْ: كُنْتُ أُرِيدُهُ لِنَفْسِي، وَلَأُوثِرَنَّ بِهِ اليَوْمَ عَلَى نَفْسِي، فَلَمَّا أَقْبَلَ، قِيلَ: هَذَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَدْ جَاءَ، قَالَ: ارْفَعُونِي، فَأَسْنَدَهُ رَجُلٌ إِلَيْهِ، فَقَالَ: مَا لَدَيْكَ؟ قَالَ: الَّذِي تُحِبُّ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ أَذِنَتْ، قَالَ: الحَمْدُ لِلَّهِ، مَا كَانَ مِنْ شَيْءٍ أَهَمُّ إِلَيَّ مِنْ ذَلِكَ، فَإِذَا أَنَا قَضَيْتُ فَاحْمِلُونِي، ثُمَّ سَلِّمْ، فَقُلْ: يَسْتَأْذِنُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، فَإِنْ أَذِنَتْ لِي فَأَدْخِلُونِي، وَإِنْ رَدَّتْنِي رُدُّونِي إِلَى مَقَابِرِ المُسْلِمِينَ، وَجَاءَتْ أُمُّ المُؤْمِنِينَ حَفْصَةُ وَالنِّسَاءُ تَسِيرُ مَعَهَا، فَلَمَّا رَأَيْنَاهَا قُمْنَا، فَوَلَجَتْ عَلَيْهِ، فَبَكَتْ عِنْدَهُ سَاعَةً، وَاسْتَأْذَنَ الرِّجَالُ، فَوَلَجَتْ دَاخِلًا لَهُمْ، فَسَمِعْنَا بُكَاءَهَا مِنَ الدَّاخِلِ، فَقَالُوا: أَوْصِ يَا أَمِيرَ المُؤْمِنِينَ اسْتَخْلِفْ، قَالَ: مَا أَجِدُ أَحَدًا أَحَقَّ بِهَذَا الأَمْرِ مِنْ هَؤُلاَءِ النَّفَرِ، أَوِ الرَّهْطِ، الَّذِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَنْهُمْ رَاضٍ، فَسَمَّى عَلِيًّا، وَعُثْمَانَ، وَالزُّبَيْرَ، وَطَلْحَةَ، وَسَعْدًا، وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ، وَقَالَ: يَشْهَدُكُمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، وَلَيْسَ لَهُ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ - كَهَيْئَةِ التَّعْزِيَةِ لَهُ - فَإِنْ أَصَابَتِ الإِمْرَةُ سَعْدًا فَهُوَ ذَاكَ، وَإِلَّا فَلْيَسْتَعِنْ بِهِ أَيُّكُمْ مَا أُمِّرَ، فَإِنِّي لَمْ أَعْزِلْهُ عَنْ عَجْزٍ، وَلاَ خِيَانَةٍ، وَقَالَ: أُوصِي الخَلِيفَةَ مِنْ بَعْدِي، بِالْمُهَاجِرِينَ الأَوَّلِينَ، أَنْ يَعْرِفَ لَهُمْ حَقَّهُمْ، وَيَحْفَظَ لَهُمْ حُرْمَتَهُمْ، وَأُوصِيهِ بِالأَنْصَارِ خَيْرًا، {الَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ} ، أَنْ يُقْبَلَ مِنْ مُحْسِنِهِمْ، وَأَنْ يُعْفَى عَنْ مُسِيئِهِمْ، وَأُوصِيهِ بِأَهْلِ الأَمْصَارِ خَيْرًا، فَإِنَّهُمْ رِدْءُ الإِسْلاَمِ، وَجُبَاةُ المَالِ، وَغَيْظُ العَدُوِّ، وَأَنْ لاَ يُؤْخَذَ مِنْهُمْ إِلَّا فَضْلُهُمْ عَنْ رِضَاهُمْ. وَأُوصِيهِ بِالأَعْرَابِ خَيْرًا، فَإِنَّهُمْ أَصْلُ العَرَبِ، وَمَادَّةُ الإِسْلاَمِ، أَنْ يُؤْخَذَ مِنْ حَوَاشِي أَمْوَالِهِمْ، وَيُرَدَّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ، وَأُوصِيهِ بِذِمَّةِ اللَّهِ، وَذِمَّةِ رَسُولِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُوفَى لَهُمْ بِعَهْدِهِمْ، وَأَنْ يُقَاتَلَ مِنْ وَرَائِهِمْ، وَلاَ يُكَلَّفُوا إِلَّا طَاقَتَهُمْ، فَلَمَّا قُبِضَ خَرَجْنَا بِهِ، فَانْطَلَقْنَا نَمْشِي، فَسَلَّمَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ: يَسْتَأْذِنُ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، قَالَتْ: أَدْخِلُوهُ، فَأُدْخِلَ، فَوُضِعَ هُنَالِكَ مَعَ صَاحِبَيْهِ، فَلَمَّا فُرِغَ مِنْ دَفْنِهِ اجْتَمَعَ هَؤُلاَءِ الرَّهْطُ، فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: اجْعَلُوا أَمْرَكُمْ إِلَى ثَلاَثَةٍ مِنْكُمْ، فَقَالَ الزُّبَيْرُ: قَدْ جَعَلْتُ أَمْرِي إِلَى عَلِيٍّ، فَقَالَ طَلْحَةُ: قَدْ جَعَلْتُ أَمْرِي إِلَى عُثْمَانَ، وَقَالَ سَعْدٌ: قَدْ جَعَلْتُ أَمْرِي إِلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: أَيُّكُمَا تَبَرَّأَ مِنْ هَذَا الأَمْرِ، فَنَجْعَلُهُ إِلَيْهِ وَاللَّهُ عَلَيْهِ وَالإِسْلاَمُ، لَيَنْظُرَنَّ أَفْضَلَهُمْ فِي نَفْسِهِ؟ فَأُسْكِتَ الشَّيْخَانِ، فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: أَفَتَجْعَلُونَهُ إِلَيَّ وَاللَّهُ عَلَيَّ أَنْ لاَ آلُ عَنْ أَفْضَلِكُمْ قَالاَ: نَعَمْ، فَأَخَذَ بِيَدِ أَحَدِهِمَا فَقَالَ: لَكَ قَرَابَةٌ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالقَدَمُ فِي [ص:18] الإِسْلاَمِ مَا قَدْ عَلِمْتَ، فَاللَّهُ عَلَيْكَ لَئِنْ أَمَّرْتُكَ لَتَعْدِلَنَّ، وَلَئِنْ أَمَّرْتُ عُثْمَانَ لَتَسْمَعَنَّ، وَلَتُطِيعَنَّ، ثُمَّ خَلاَ بِالْآخَرِ فَقَالَ لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ، فَلَمَّا أَخَذَ المِيثَاقَ قَالَ: ارْفَعْ يَدَكَ يَا عُثْمَانُ فَبَايَعَهُ، فَبَايَعَ لَهُ عَلِيٌّ، وَوَلَجَ أَهْلُ الدَّارِ فَبَايَعُوهُ "

তাহকীক: