আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৪৯- নবীজী সাঃ ও সাহাবা রাঃ ; মর্যাদা ও বিবিধ ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২০ টি

হাদীস নং: ৩৩৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৫৬
২০৮৩. নবী কারীম (ﷺ)- এর উক্তিঃ আমি যদি কাউকে অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। আবু সাঈদ (রাযিঃ) এটা বর্ণনা করেছেন
৩৩৯৪। মুসলিম ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (ﷺ) বলেন, আমি আমার উম্মতের কাউকে যদি অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তবে আবু বকরকেই গ্রহণ করতাম। তবে তিনি আমার (দ্বীনি) ভাই ও সাহাবী।
باب قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً " قَالَهُ أَبُو سَعِيدٍ
3656 - حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا مِنْ أُمَّتِي خَلِيلًا، لاَتَّخَذْتُ أَبَا بَكْرٍ، وَلَكِنْ أَخِي وَصَاحِبِي»
হাদীস নং: ৩৩৯৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৫৭
২০৮৩. নবী কারীম (ﷺ)- এর উক্তিঃ আমি যদি কাউকে অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। আবু সাঈদ (রাযিঃ) এটা বর্ণনা করেছেন
৩৩৯৫। মু‘আল্লা ইবনে আসাদ ও মুসা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... আইয়ুব (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আমি কাউকে অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে তাকেই (আবু বকরকেই) অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। কিন্তু ইসলামী ভ্রাতৃত্বই সর্বোত্তম।
কুতায়বা (রাহঃ) .... আইয়ুব (রাহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।
باب قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً " قَالَهُ أَبُو سَعِيدٍ
3657 - حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، وَمُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ التَّبُوذَكِيُّ، قَالاَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ أَيُّوبَ، وَقَالَ: «لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلًا لاَتَّخَذْتُهُ خَلِيلًا، وَلَكِنْ أُخُوَّةُ الإِسْلاَمِ أَفْضَلُ» حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَهَّابِ، عَنْ أَيُّوبَ مِثْلَهُ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৩৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৫৮
২০৮৩. নবী কারীম (ﷺ)- এর উক্তিঃ আমি যদি কাউকে অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম। আবু সাঈদ (রাযিঃ) এটা বর্ণনা করেছেন
৩৩৯৬। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে আবু মুলায়কা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুফাবাসীগণ দাদার (মিরাস) সম্পর্কে জানতে চেয়ে ইবনে যুবাইরের নিকট পত্র পাঠালেন, তিনি বললেন, ঐ মহান ব্যক্তি যার সম্পর্কে নবী কারীম (ﷺ) বলেছেন, এ উম্মতের কাউকে যদি অন্তরং্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তবে তাকেই করতাম, (অর্থাৎ আবু বকর (রাযিঃ)) তিনি দাদাকে মিরাসের ক্ষেত্রে পিতার সমপর্যায়ভুক্ত করেছেন।
باب قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم " لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا خَلِيلاً " قَالَهُ أَبُو سَعِيدٍ
3658 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ [ص:5] بْنُ حَرْبٍ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ: كَتَبَ أَهْلُ الكُوفَةِ إِلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ فِي الجَدِّ، فَقَالَ: أَمَّا الَّذِي قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَوْ كُنْتُ مُتَّخِذًا مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ خَلِيلًا لاَتَّخَذْتُهُ أَنْزَلَهُ أَبًا يَعْنِي أَبَا بَكْرٍ»
হাদীস নং: ৩৩৯৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৫৯
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৩৯৭। হুমাইদী ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... জুবাইর ইবনে মুত‘ঈম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন মহিলা নবী কারীম (ﷺ)- এর খেদমতে এলো। (আলোচনা শেষে যাওয়ার সময়) তিনি তাঁকে আবার আসার জন্য বললেন। মহিলা বলল, আমি এসে যদি আপনাকে না পাই তবে কি করব? একথা দ্বারা মহিলাটি নবী কারীম (ﷺ)- এর ওফাতের প্রতি ইঙ্গিত করেছিল। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, যদি আমাকে না পাও তবে আবু বকরের নিকট আসবে।
باب
3659 - حَدَّثَنَا الحُمَيْدِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالاَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: أَتَتِ امْرَأَةٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَرَهَا أَنْ تَرْجِعَ إِلَيْهِ، قَالَتْ: أَرَأَيْتَ إِنْ جِئْتُ وَلَمْ أَجِدْكَ؟ كَأَنَّهَا تَقُولُ: المَوْتَ، قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ لَمْ تَجِدِينِي فَأْتِي أَبَا بَكْرٍ»
হাদীস নং: ৩৩৯৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬০
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৩৯৮। আহমদ ইবনে আবী তৈয়্যেব (রাহঃ) .... আম্মার (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে এমন অবস্থায় দেখেছি যে তাঁর সাথে মাত্র পাঁচজন গোলাম, (বিলাল, যায়দ ইবনে হারিসা, আমির ইবনে ফুহাইরা, আবু ফুকীহা ও আম্মারের পিতা ইয়াসির) দু’জন মহিলা (খাদীজা ও সুমাইয়া) এবং আবু বকর (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কেউ ছিল না।
باب
3660 - حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ أَبِي الطَّيِّبِ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُجَالِدٍ، حَدَّثَنَا بَيَانُ بْنُ بِشْرٍ، عَنْ وَبَرَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ هَمَّامٍ، قَالَ: سَمِعْتُ عَمَّارًا، يَقُولُ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا مَعَهُ، إِلَّا خَمْسَةُ أَعْبُدٍ، وَامْرَأَتَانِ وَأَبُو بَكْرٍ»
হাদীস নং: ৩৩৯৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬১
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৩৯৯। হিশাম ইবনে আম্মার (রাহঃ) .... আবু দারদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী কারীম (ﷺ) - এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় আবু বকর (রাযিঃ) পরিহিত কাপড়ের একপাশ এমনভাবে ধরে আসলেন যে, তাঁর উভয় হাঁটু বেরিয়ে পড়ছিল। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, তোমাদের এ সাথী এইমাত্র কারো সাথে ঝগড়া করে আসছে। (এমন সময় আবু বকর (রাযিঃ) মজলিসে উপস্থিত হয়ে) তিনি সালাম করলেন এবং বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার এবং উমর ইবনে খাত্তাবের মাঝে একটি বিষয়ে কিছু বচসা হয়ে গেছে। আমিই প্রথম কটু কথা বলেছি। তারপর আমি লজ্জিত হয়ে তাঁর নিকট ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু তিনি ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এখন আমি আপনার খেদমতে হাযির হয়েছি। নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন, হে আবু বকর (রাযিঃ)। একথাটি তিনি তিনবার বললেন।
এরপর উমর (রাযিঃ) লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আবু বকর (রাযিঃ)- এর বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আবু বকর (রাযিঃ) কি বাড়িতে আছেন? তাঁরা বলল না। তখন উমর (রাযিঃ) নবী কারীম (ﷺ)- এর খেদমতে চলে আসলেন। (তাঁকে দেখে) নবী কারীম (ﷺ)- এর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। আবু বকর (রাযিঃ) ভীত হয়ে নতজানু হয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমিই প্রথম অন্যায় করেছি। একথাটি তিনি দু’বার বললেন। তখন নবী কারীম (ﷺ) বললেন, আল্লাহ যখন আমাকে তোমাদের নিকট রাসূলরূপে প্রেরণ করেছেন তখন তোমরা সবাই বলেছ, তুমি মিথ্যা বলছ আর আবু বকর বলেছে, আপনি সত্য বলেছেন। তাঁর জান মাল সর্বস্ব দিয়ে আমার প্রতি যে সহানুভূতি দেখিয়েছে তা নজিরবিহীন। তোমরা কি আমার খাতিরে আমার সাথীকে অব্যাহতি প্রদান করবে? এ কথাটি তিনি দু’বার বলেছেন। এরপর আবু বকর (রাযিঃ)- কে আর কখনও কষ্ট দেয়া হয় নি।
باب
3661 - حَدَّثَنِي هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَاقِدٍ، عَنْ بُسْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَائِذِ اللَّهِ أَبِي إِدْرِيسَ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذْ أَقْبَلَ أَبُو بَكْرٍ آخِذًا بِطَرَفِ ثَوْبِهِ حَتَّى أَبْدَى عَنْ رُكْبَتِهِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَّا صَاحِبُكُمْ فَقَدْ غَامَرَ» فَسَلَّمَ وَقَالَ: إِنِّي كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ ابْنِ الخَطَّابِ شَيْءٌ، فَأَسْرَعْتُ إِلَيْهِ ثُمَّ نَدِمْتُ، فَسَأَلْتُهُ أَنْ يَغْفِرَ لِي فَأَبَى عَلَيَّ، فَأَقْبَلْتُ إِلَيْكَ، فَقَالَ: «يَغْفِرُ اللَّهُ لَكَ يَا أَبَا بَكْرٍ» ثَلاَثًا، ثُمَّ إِنَّ عُمَرَ نَدِمَ، فَأَتَى مَنْزِلَ أَبِي بَكْرٍ، فَسَأَلَ: أَثَّمَ أَبُو بَكْرٍ؟ فَقَالُوا: لاَ، فَأَتَى إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمَ، فَجَعَلَ وَجْهُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَمَعَّرُ، حَتَّى أَشْفَقَ أَبُو بَكْرٍ، فَجَثَا عَلَى رُكْبَتَيْهِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَاللَّهِ أَنَا كُنْتُ أَظْلَمَ، مَرَّتَيْنِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ بَعَثَنِي إِلَيْكُمْ فَقُلْتُمْ كَذَبْتَ، وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ صَدَقَ، وَوَاسَانِي بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، فَهَلْ أَنْتُمْ تَارِكُوا لِي صَاحِبِي» مَرَّتَيْنِ، فَمَا أُوذِيَ بَعْدَهَا
হাদীস নং: ৩৪০০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬২
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০০। মু‘আল্লা ইবনে আসাদ (রাহঃ) .... আমর ইবনে আ‘স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম (ﷺ) তাঁকে যাতুস সালাসিল যুদ্ধের সেনানায়ক করে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাঁর খেদমতে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, মানুষের মধ্যে কে আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয়? তিনি বললেন, আয়েশা। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বললেন, আয়েশার পিতা (আবু বকর)। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তারপর কোন লোকটি! তিনি বললেন, উমর ইবনে খাত্তাব তারপর আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলেন।
باب
3662 - حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ بْنُ المُخْتَارِ، قَالَ: خَالِدٌ الحَذَّاءُ، حَدَّثَنَا عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ العَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بَعَثَهُ عَلَى جَيْشِ ذَاتِ السُّلاَسِلِ، فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ: " أَيُّ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيْكَ؟ قَالَ: «عَائِشَةُ» ، فَقُلْتُ: مِنَ الرِّجَالِ؟ فَقَالَ: «أَبُوهَا» ، قُلْتُ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «ثُمَّ عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ» فَعَدَّ رِجَالًا
হাদীস নং: ৩৪০১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৩
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০১। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি; একদা একজন রাখাল তার বকরীর পালের কাছে ছিল। এমতাবস্থায় একটি নেকড়ে বাঘ আক্রমণ করে পাল থেকে একটি বকরী নিয়ে গেল। রাখাল নেকড়ে বাঘের পিছনে ধাওয়া করে বকরীটি ছিনিয়ে আনল। তখন বাঘটি তাকে লক্ষ্য করে বলল, তুমি বকরীটি ছিনিয়ে নিলে? হিংস্র জন্তুর আক্রমণের দিন কে তাকে রক্ষা করবে, যেদিন তার জন্য আমি ব্যতীত অন্য কোন রাখাল থাকবে না। একদা এক ব্যক্তি একটি গাভীর পিঠে আরোহণ করে সেটিকে হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন গাভীটি তাকে লক্ষ্য করে বলল, আমি এ কাজের জন্য সৃষ্টি হইনি। বরং আমি কৃষি কাজের জন্য সৃষ্ট হয়েছি। একথা শুনে সকলেই বিস্ময়ের সাথে বলতে লাগল ‘‘সুবহানাল্লাহ! (কি আশ্চর্য গাভী কথা বলে! বাঘ কথা বলে) নবী কারীম (ﷺ) বলেন, আমি, আবু বকর এবং উমর ইবনে খাত্তাব এ কথা বিশ্বাস করি (ঐ সময়ে তাঁরা দু’জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।)
باب
3663 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " بَيْنَمَا [ص:6] رَاعٍ فِي غَنَمِهِ عَدَا عَلَيْهِ الذِّئْبُ، فَأَخَذَ مِنْهَا شَاةً فَطَلَبَهُ الرَّاعِي، فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ الذِّئْبُ فَقَالَ: مَنْ لَهَا يَوْمَ السَّبُعِ، يَوْمَ لَيْسَ لَهَا رَاعٍ غَيْرِي؟ وَبَيْنَمَا رَجُلٌ يَسُوقُ بَقَرَةً قَدْ حَمَلَ عَلَيْهَا، فَالْتَفَتَتْ إِلَيْهِ فَكَلَّمَتْهُ، فَقَالَتْ: إِنِّي لَمْ أُخْلَقْ لِهَذَا وَلَكِنِّي خُلِقْتُ لِلْحَرْثِ " قَالَ النَّاسُ: سُبْحَانَ اللَّهِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَإِنِّي أُومِنُ بِذَلِكَ، وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا»
হাদীস নং: ৩৪০২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৪
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০২। আবদান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি, একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। স্বপ্নে আমি আমাকে এমন একটি কূপের কিনারায় দেখতে পেলাম যেখানে বালতিও রয়েছে, আমি কূপ থেকে পানি উঠালাম যে পরিমাণ আল্লাহ্ ইচ্ছা করলেন। তারপর বালতিটি ইবনে আবু কুহাফা (আবু বকর) নিলেন এবং এক বা দু’বালতি পানি উঠালেন। তার উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তার দুর্বলতাকে ক্ষমা করে দিবেন। তারপর উমর ইবনে খাত্তাব বালতিটি তার হাতে নিলেন। তার হাতে বালতিটির আয়তন বেড়ে গেল। আমি কোন দক্ষ, শক্তিশালী বাহাদুর ব্যক্তিকে উমরের ন্যায় পানি উঠাতে দেখিনি। অবশেষ মানুষ (তৃপ্ত হয়ে) নিজ নিজ আবাসে অবস্থান নিল।
باب
3664 - حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ المُسَيِّبِ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي عَلَى قَلِيبٍ عَلَيْهَا دَلْوٌ، فَنَزَعْتُ مِنْهَا مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ أَخَذَهَا ابْنُ أَبِي قُحَافَةَ فَنَزَعَ بِهَا ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ، وَفِي نَزْعِهِ ضَعْفٌ، وَاللَّهُ يَغْفِرُ لَهُ ضَعْفَهُ، ثُمَّ اسْتَحَالَتْ غَرْبًا، فَأَخَذَهَا ابْنُ الخَطَّابِ فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا مِنَ النَّاسِ يَنْزِعُ نَزْعَ عُمَرَ، حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ»
হাদীস নং: ৩৪০৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৫
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৩। মুহাম্মাদ ইবনে মুকাতিল (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি গর্বের সাথে পরিহিত কাপড় টাখনুর নিম্নভাগে ঝুলিয়ে চলাফিরা করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তার প্রতি রহমতের নযর করবেন না। এ শুনে আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, আমার অজ্ঞাতসারে কাপড়ের একপাশ কোন কোন সময় নীচে নেমে যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, তুমি তো গর্বের সাথে তা করছ না। মুসা (রাহঃ) বলেন, আমি সালিমকে জিজ্ঞাসা করলাম, আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) কি ‘যে ব্যক্তি তার লুঙ্গী ঝুলিয়ে চলল’ বলেছেন? সালিম (রাহঃ) বললেন, আমি তাকে শুধু কাপড়ের কথা উল্লেখ করতে শুনেছি।
باب
3665 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ، لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ» فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: إِنَّ أَحَدَ شِقَّيْ ثَوْبِي يَسْتَرْخِي، إِلَّا أَنْ أَتَعَاهَدَ ذَلِكَ مِنْهُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّكَ لَسْتَ تَصْنَعُ ذَلِكَ خُيَلاَءَ» قَالَ مُوسَى: فَقُلْتُ لِسَالِمٍ أَذَكَرَ عَبْدُ اللَّهِ " مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ؟ قَالَ: لَمْ أَسْمَعْهُ ذَكَرَ إِلَّا ثَوْبَهُ "
হাদীস নং: ৩৪০৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৬
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৪। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন জিনিসের জোড়া জোড়া আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে (পরকালে) তাকে জান্নাতে প্রবেশের জন্য সকল দরজা থেকে আহবান করা হবে। বলা হবে, হে আল্লাহর বান্দা, এ দরজাই উত্তম। যে ব্যক্তি (অধিক নফল) নামায আদায়কারী হবে তাঁকে নামাযের দরজা দিয়ে প্রবেশের আহবান জানানো হবে। যেব্যক্তি জিহাদকারী হবে তাকে জিাহাদের দরজা থেকে আহবান করা হবে। যে ব্যক্তি (অধিক নফল) সাদ্‌কাদানকারী হবে, তাকে সাদ্‌কার দরজা দিয়ে ডাকা হবে। যে ব্যক্তি (অধিক নফল) রোযা আদায়কারী হবে তাকে রোযা এর দরজা বাবুর রাইয়ান থেকে আহবান করা হবে। আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, কোন ব্যক্তিকে সকল দরজা দিয়ে ডাকা হবে এমনতো অবশ্য জরুরী নয়, তবে কি এরূপ কাউকে ডাকা হবে? নবী (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ, আছে। আমি আশা করছি তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে, হে আবু বকর।
باب
3666 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ مِنْ شَيْءٍ مِنَ الأَشْيَاءِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، دُعِيَ مِنْ أَبْوَابِ، - يَعْنِي الجَنَّةَ، - يَا عَبْدَ اللَّهِ هَذَا خَيْرٌ، فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الجِهَادِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصِّيَامِ، وَبَابِ الرَّيَّانِ» ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: مَا عَلَى هَذَا الَّذِي يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ، وَقَالَ: هَلْ يُدْعَى مِنْهَا كُلِّهَا أَحَدٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ يَا أَبَا بَكْرٍ»
হাদীস নং: ৩৪০৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৬৭ - ৩৬৭০
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৫। ইসমাঈল ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... নবী সহধর্মিণী আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর যখন ওফাত হয়, তখণ আবু বকর (রাযিঃ) (স্বীয় বাসগৃহ) সুনহ-এ ছিলেন। ইসমাঈল (রাবী) বলেন, সুনহ মদীনার উঁচু এলাকার একটি স্থানের নাম। (ওফাতের সংবাদ শুনার সাথে সাথে) উমর (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ওফাত হয় নাই। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, তখন আমার অন্তরে এ বিশ্বাসই ছিল (তাঁর ওফাত হয় নাই) আল্লাহ্ অবশ্যই তাঁকে পুনরায় জীবিত করবেন। এবং তিনি কিছু সংখ্যক লোকের (মুনাফিকের) হাত-পা কেঁটে ফেলবেন। তারপর আবু বকর (রাযিঃ) এলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর চেহারা মোবারক থেকে আবরণ সরিয়ে তাঁর ললাটে চুমু খেলেন এবং বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান। আপনি জীবনে মরণে পূত পবিত্র। ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহ্ আপনাকে কখনও দু’বার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করাবেন না।
তারপর তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং (উমর (রাযিঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন) হে হলফকারী, ধৈর্যধারণ কর। আবু বকর (রাযিঃ) যখন কথা বলতে লাগলেন, তখন উমর (রাযিঃ) বসে পড়লেন। আবু বকর (রাযিঃ) আল্লাহ্ পাকের হামদ ও সানা বর্ণনা করে বললেন, যারা মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর ইবাদতকারী ছিলে তারা জেনে রাখ, মুহাম্মাদ (ﷺ) ইন্‌তিকাল করেছেন। আর যারা আল্লাহর ইবাদত করতে তারা নিশ্চিত জেনে রাখ আল্লাহ্ চিরঞ্জীব, তিনি অমর। তারপর আবু বকর (রাযিঃ) এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ নিশ্চয়ই আপনি মরণশীল আর তারা সকলও মরণশীল (৩৯ঃ ৩০) আরো তিলওয়াত করলেনঃ মুহাম্মাদ (ﷺ) একজন রাসূল মাত্র। তাঁর পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছেন। তাই যদি তিনি মারা যান অথবা তিনি নিহত হন তবে কি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহর ক্ষতি করতে পারবে না। (৩ঃ১৪৪) আল্লাহ্ তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে পুরস্কৃত করবেন।
রাবী বলেন, আবু বকর (রাযিঃ)-এর এ কথাগুলি শুনে সকলেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন। রাবী বলেন, আনসারগণ সাকীফা বনু সায়িদায়ে সা‘দ ইবনে উবাইদা (রাযিঃ)-এর নিকট সমবেত হলেন এবং বলতে লাগলেন, আমাদের (আনসারদের) মধ্য হতে একজন আমীর হবেন এবং তোমাদের (মুহাজিরদের) মধ্য হতে একজন আমীর হবেন। আবু বকর (রাযিঃ), উমর ইবনে খাত্তাব, আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাযিঃ)-এ তিনজন আনসারদের নিকট গমন করলেন। উমর (রাযিঃ) কথা বলতে চাইলে আবু বকর (রাযিঃ) তাকে থামিয়ে দিলেন। উমর (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, আমি বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলাম এই জন্য যে, আমি আনসারদের মাহফিলে বলার জন্য চিন্তা-ভাবনা করে এমন কিছু চমৎকার ও যুক্তিপূর্ণ কথা তৈরী করেছিলাম। যার প্রেক্ষিতে আমার ধারণা ছিল হয়তঃ আবু বকর (রাযিঃ)-এর চিন্তা ভাবনা এতটা গভীরে নাও পৌছতে পারে।
কিন্তু আবু বকর (রাযিঃ) অত্যন্ত জোরালো ও যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য পেশ করলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বললেন, আমীর আমাদের (মুহাজিরদের) মধ্য হতে একজন হবেন এবং তোমাদের মধ্য হতে (আনসারদের) হবেন উযীর। তখন হুবাব ইবনে মুনযির (আনসারী) (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম। আমরা এরূপ করব না। রবং আমাদের মধ্যে একজন ও আপনাদের মধ্যে একজন আমীর হবেন। আবু বকর (রাযিঃ) বললেন, না, এমন হয় না। আমাদের মধ্য হতে খলীফা এবং তোমাদের মধ্য হতে উযীর হবেন। কেননা কুরাইশ গোত্র অবস্থানের (মক্কা) দিক দিয়ে যেমন আরবের মধ্যস্থানে, বংশ ও রক্তের দিক থেকেও তারা তেমনি শ্রেষ্ঠ। তাঁরা নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতায় সবার শীর্ষে। “তোমরা উমর (রাযিঃ) অথবা আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রাযিঃ)-এর হাতে বায়‘আত করে নাও। উমর (রাযিঃ) বলে উঠলেন, আমরা কিন্তু আপনার হাতেই বায়‘আত করব। আপনিই আমাদের নেতা। আপনিই আমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমাদের মাঝে আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর প্রিয়তম ব্যক্তি। এ বলে উমর (রাযিঃ) তাঁর হাত ধরে বায়‘আত করে নিলেন। সাথে সাথে উপস্থিত সকলেই বায়‘আত করলেন।
তখন জনৈক ব্যক্তি বলে উঠলেন, আপনারা সা‘দ ইবনে উবাইদা (রাযিঃ)-কে মেরে ফেললেন? উমর (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহ্ তাকে মেরে ফেলেছেন।
আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালিম .... আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, ওফাতের সময় নবী কারীম (ﷺ)- এর চোখ দু’টি বার বার উপর দিকে উঠছিল এবং তিনি বার বার বলছিলেন, (হে আল্লাহ্) সর্বোচ্চ বন্ধুর (আল্লাহর) সাক্ষাতের আমি আগ্রহী। আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, আবু বকর ও উমর (রাযিঃ)-এর খুতবা দ্বারা আল্লাহ্ তাআলা এ চরম মুহুর্তে উম্মতকে রক্ষা করেছেন। উমর (রাযিঃ) জনগণকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এমন কিছু মানুষ আছে যাদের অন্তরে কপটতা রয়েছে আল্লাহ্ তাদের ফাঁদ থেকে উম্মতকে রক্ষা করেছেন। এবং আবু বকর (রাযিঃ) লোকদিগকে সত্য সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন। হক ও ন্যায়ের পথে নির্দেশ করেছেন, তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তারপর সাহাবায়ে কেরামও আয়াত পড়তে পড়তে প্রস্থান করেছেনঃ মুহাম্মাদ (ﷺ) একজন রাসূল মাত্র। তাঁর পূর্বে বহু রাসুলগণ গত হয়েছেন .... কৃতজ্ঞ বান্দাদের। (৩ঃ ১৪৪)।
باب
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَاتَ وَأَبُو بَكْرٍ بِالسُّنْحِ ـ قَالَ إِسْمَاعِيلُ يَعْنِي بِالْعَالِيَةِ ـ فَقَامَ عُمَرُ يَقُولُ وَاللَّهِ مَا مَاتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَتْ وَقَالَ عُمَرُ وَاللَّهِ مَا كَانَ يَقَعُ فِي نَفْسِي إِلاَّ ذَاكَ وَلَيَبْعَثَنَّهُ اللَّهُ فَلَيَقْطَعَنَّ أَيْدِيَ رِجَالٍ وَأَرْجُلَهُمْ. فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَكَشَفَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَبَّلَهُ قَالَ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي طِبْتَ حَيًّا وَمَيِّتًا، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يُذِيقُكَ اللَّهُ الْمَوْتَتَيْنِ أَبَدًا. ثُمَّ خَرَجَ فَقَالَ أَيُّهَا الْحَالِفُ عَلَى رِسْلِكَ. فَلَمَّا تَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ جَلَسَ عُمَرُ. فَحَمِدَ اللَّهَ أَبُو بَكْرٍ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ أَلاَ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ مُحَمَّدًا قَدْ مَاتَ، وَمَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللَّهَ فَإِنَّ اللَّهَ حَىٌّ لاَ يَمُوتُ. وَقَالَ (إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ) وَقَالَ (وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَى عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللَّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَ) قَالَ فَنَشَجَ النَّاسُ يَبْكُونَ ـ قَالَ ـ وَاجْتَمَعَتِ الأَنْصَارُ إِلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ فَقَالُوا مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ، فَذَهَبَ إِلَيْهِمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ، فَذَهَبَ عُمَرُ يَتَكَلَّمُ فَأَسْكَتَهُ أَبُو بَكْرٍ، وَكَانَ عُمَرُ يَقُولُ وَاللَّهِ مَا أَرَدْتُ بِذَلِكَ إِلاَّ أَنِّي قَدْ هَيَّأْتُ كَلاَمًا قَدْ أَعْجَبَنِي خَشِيتُ أَنْ لاَ يَبْلُغَهُ أَبُو بَكْرٍ، ثُمَّ تَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ فَتَكَلَّمَ أَبْلَغَ النَّاسِ فَقَالَ فِي كَلاَمِهِ نَحْنُ الأُمَرَاءُ وَأَنْتُمُ الْوُزَرَاءُ. فَقَالَ حُبَابُ بْنُ الْمُنْذِرِ لاَ وَاللَّهِ لاَ نَفْعَلُ، مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ لاَ، وَلَكِنَّا الأُمَرَاءُ وَأَنْتُمُ الْوُزَرَاءُ هُمْ أَوْسَطُ الْعَرَبِ دَارًا، وَأَعْرَبُهُمْ أَحْسَابًا فَبَايِعُوا عُمَرَ أَوْ أَبَا عُبَيْدَةَ. فَقَالَ عُمَرُ بَلْ نُبَايِعُكَ أَنْتَ، فَأَنْتَ سَيِّدُنَا وَخَيْرُنَا وَأَحَبُّنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. فَأَخَذَ عُمَرُ بِيَدِهِ فَبَايَعَهُ، وَبَايَعَهُ النَّاسُ، فَقَالَ قَائِلٌ قَتَلْتُمْ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ. فَقَالَ عُمَرُ قَتَلَهُ اللَّهُ.
وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَالِمٍ عَنِ الزُّبَيْدِيِّ، قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْقَاسِمِ أَخْبَرَنِي الْقَاسِمُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ شَخَصَ بَصَرُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ " فِي الرَّفِيقِ الأَعْلَى ". ثَلاَثًا، وَقَصَّ الْحَدِيثَ، قَالَتْ فَمَا كَانَتْ مِنْ خُطْبَتِهِمَا مِنْ خُطْبَةٍ إِلاَّ نَفَعَ اللَّهُ بِهَا، لَقَدْ خَوَّفَ عُمَرُ النَّاسَ وَإِنَّ فِيهِمْ لَنِفَاقًا، فَرَدَّهُمُ اللَّهُ بِذَلِكَ. ثُمَّ لَقَدْ بَصَّرَ أَبُو بَكْرٍ النَّاسَ الْهُدَى وَعَرَّفَهُمُ الْحَقَّ الَّذِي عَلَيْهِمْ وَخَرَجُوا بِهِ يَتْلُونَ (وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ) إِلَى (الشَّاكِرِينَ)
হাদীস নং: ৩৪০৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭১
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৬। মুহাম্মাদ ইবনে কাসীর (রাহঃ) .... মুহাম্মাদ ইবনে হানাফীয়া (রাহঃ) বলেন, আমি আমার পিতা আলী (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী কারীম (ﷺ)- এর পর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ কে? তিনি বললেন, আবু বকর (রাযিঃ)। আমি বললাম, এর পর কে? তিনি বললেন, উমর (রাযিঃ)। আমার আশঙ্কা হল যে, এরপর তিনি উসমান (রাযিঃ)- এর নাম বলবেন, তাই (তাঁকে জিজ্ঞাসা না করে) আমি বললাম, তারপর আপনি? তিনি বললেন, না, আমি তো মুসলিমদের একজন।
باب
3671 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا جَامِعُ بْنُ أَبِي رَاشِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو يَعْلَى، عَنْ مُحَمَّدِ ابْنِ الحَنَفِيَّةِ، قَالَ: قُلْتُ لِأَبِي أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: «أَبُو بَكْرٍ» ، قُلْتُ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «ثُمَّ عُمَرُ» ، وَخَشِيتُ أَنْ يَقُولَ عُثْمَانُ، قُلْتُ: ثُمَّ أَنْتَ؟ قَالَ: «مَا أَنَا إِلَّا رَجُلٌ مِنَ المُسْلِمِينَ»
হাদীস নং: ৩৪০৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭২
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৭। কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) .... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে এক যুদ্ধ সফরে গিয়েছিলাম। আমরা যখন বায়দা অথবা যাতুল জায়েশ নামক স্থানে গিয়েছিলাম, তখন আমার হারটি গলা থেকে ছিড়ে যায়। হার তালাশ করার জন্য নবী কারীম
(ﷺ) সেখানে অবস্থান করেন। এজন্য সাহাবীগণও তার সঙ্গে সেখানে অবস্থান করেন। যেখানে পানি ছিল না এবং তাদের সাথেও পানি ছিল না। তাই সাহাবীগণ আবু বকর (রাযিঃ)-এর নিকট এসে বললেন, আপনি কি দেখছেন না, আয়েশা (রাযিঃ) কি করলেন? তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং তার সঙ্গে সাহাবীগণকে এমন স্থানে অবস্থান করালেন যেখানে পানি নেই এবং তাদের সাথেও পানি নেই। তখন আবু বকর (রাযিঃ) আমার নিকট আসলেন। আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার উরুর উপর মাথা রেখে ঘুমচ্ছিলেন। তিনি (আবু বকর (রাযিঃ)) আমাকে বলতে লাগলেন, তুমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে এবং সাহাবীগণকে এমন এক স্থানে আটকিয়ে রেখেছ, যেখানে পানি নেই এবং তাদের সাথেও পানি নেই।
আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, তিনি আমাকে অনেক ভৎর্সনা করলেন। এক পর্যায়ে তিনি হাত দ্বারা আমার কোমরে খোচা মারতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার উরুর উপর মাথা রেখে শুয়ে থাকার করণে আমি নড়াচড়াও করতে পারছিলাম না। এরূপ পানি না থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে রইলেন। (ফজরের নামাযের সময় হল অথচ পানির কোন ব্যবস্থা নেই।) তখন আল্লাহ্ পাক তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করলেন এবং সকলেই তাইয়াম্মুম করলেন। উসাইদ ইবনে হুযাইর (রাযিঃ) বলেন, হে আবু বকর (রাযিঃ)- এর পরিবারবর্গ, এটা আপনাদের প্রথম (একমাত্র) বরকত নয়; (ইতিপূর্বেও আমরা এ পরিবার দ্বারা আরো বরকত পেয়েছি।) আয়েশা (রাযিঃ) বলেন, এরপর আমরা সে উটটিকে উঠালাম যে উটের উপর আমি সাওয়ার ছিলাম। তখন হারটি তার নীচে পাওয়া গেল।
باب
3672 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ القَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ: «خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:8] فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ» ، حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ، أَوْ بِذَاتِ الجَيْشِ، انْقَطَعَ عِقْدٌ لِي، فَأَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى التِمَاسِهِ، وَأَقَامَ النَّاسُ مَعَهُ، وَلَيْسُوا عَلَى مَاءٍ، وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ، فَأَتَى النَّاسُ أَبَا بَكْرٍ فَقَالُوا: أَلاَ تَرَى مَا صَنَعَتْ عَائِشَةُ؟ أَقَامَتْ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبِالنَّاسِ مَعَهُ، وَلَيْسُوا عَلَى مَاءٍ، وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ؟ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ «وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاضِعٌ رَأْسَهُ عَلَى فَخِذِي قَدْ نَامَ» ، فَقَالَ: حَبَسْتِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسَ، وَلَيْسُوا عَلَى مَاءٍ، وَلَيْسَ مَعَهُمْ مَاءٌ، قَالَتْ: فَعَاتَبَنِي، وَقَالَ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ، وَجَعَلَ يَطْعُنُنِي بِيَدِهِ فِي خَاصِرَتِي، «فَلاَ يَمْنَعُنِي مِنَ التَّحَرُّكِ إِلَّا مَكَانُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى فَخِذِي، فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَصْبَحَ عَلَى غَيْرِ مَاءٍ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ آيَةَ التَّيَمُّمِ فَتَيَمَّمُوا» فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ الحُضَيْرِ: مَا هِيَ بِأَوَّلِ بَرَكَتِكُمْ يَا آلَ أَبِي بَكْرٍ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ: فَبَعَثْنَا البَعِيرَ الَّذِي كُنْتُ عَلَيْهِ، فَوَجَدْنَا العِقْدَ تَحْتَهُ
হাদীস নং: ৩৪০৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৩
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৮। আদম ইবনে আবী ইয়াস (রাহঃ) .... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (তাঁর উম্মতকে লক্ষ্য করে) বলেছেন, তোমরা আমার সাহাবীগণকে গালমন্দ করো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় সমান স্বর্ণ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর, তবে তাদের একমুদ বা অর্ধমুদ-এর সমপরিমাণ সাওয়াব হবে না।
জারীর, আব্দুল্লাহ ইবনে দাউদ, আবু মুআবিয়া ও মুহাযির (রাহঃ) আমাশ (রাহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় শুবা (রাহঃ)- এর অনুসরণ করেছেন।
باب
3673 - حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ: سَمِعْتُ ذَكْوَانَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِي، فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ، ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ، وَلاَ نَصِيفَهُ» تَابَعَهُ جَرِيرٌ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ، وَمُحَاضِرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ
হাদীস নং: ৩৪০৯
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৪
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪০৯। মুহাম্মাদ ইবনে মিসকীন (রাহঃ) .... আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) বর্ণিত যে, তিনি একদিন ঘরে উযু করে বের হলেন এবং (মনে মনে স্থির করলেন) আমি আজ সারাদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে কাটাব, তার থেকে পৃথক হব না। তিনি মসজিদে গিয়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর খবর নিলেন, সাহাবীগণ বললেন, তিনি এদিকে বেরিয়ে গেছেন। আমিও ঐ পথ ধরে তাঁর অনুগমন করলাম। তাঁর খুঁজে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলাম। তিনি শেষ পর্যন্ত আরীস কূপের নিকট গিয়ে পৌছলেন। আমি (কূপে প্রবেশের) দরজার নিকট বসে পড়লাম। দরজাটি খেজুরের শাখা দিয়ে তৈরী ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন তাঁর প্রয়োজন (ইস্তিনজা) সেরে উযু করলেন। তখন আমি তাঁর নিকটে দাঁড়ালাম এবং দেখতে পেলাম তিনি আরীস কূপের কিনারার বাঁধের মাঝখানে বসে হাঁটু পর্যন্ত পা দু’টি খুলে কূপের ভিতরে ঝুলিয়ে রেখেছেন,আমি তাঁকে সালাম দিলাম এবং ফিরে এসে দরজায় বসে রইলাম এবং মনে মনে স্থির করে নিলাম যে, আজ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর দারোয়ানরূপে (পাহারাদারের) দায়িত্ব পালন করব।
এ সময় আবু বকর (রাযিঃ) এসে দরজায় ধাক্কা দিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আবু বকর! আমি বললাম থামুন, (আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি) আমি গিয়ে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আবু বকর (রাযিঃ) ভিতরে আসার অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, ভিতরে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি ফিরে এসে আবু বকর (রাযিঃ)- কে বললাম, ভিতরে আসুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। আবু বকর (রাযিঃ) ভিতরে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর ডানপাশে কূপের কিনারায় বসে দু’পায়ের কাপড় হাটু পর্যন্ত উঠায়ে নবী কারীম (ﷺ)- এর ন্যায় কূপের ভিতর পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে পড়েন। আমি ফিরে এসে (দরজার পাশে) বসে পড়লাম। আমি (ঘর হতে বের হওয়ার সময়) আমার ভাইকে উযু করছে অবস্থায় রেখে এসেছিলাম। তারও আমার সাথে মিলিত হওয়ার কথা ছিল। তাই আমি (মনে মনে) বলতে লাগলাম, আল্লাহ যদি তার (ভাইয়ের) মঙ্গল চান তবে তাকে নিয়ে আসুন।
এমন সময় এক ব্যক্তি দরজা নাড়তে লাগল। আমি বললাম, কে? তিনি বললেন, আমি উমর ইবনে খাত্তাব। আমি বললাম, অপেক্ষা করুন, (আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর খেদমতে সালাম পেশ করে আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উমর ইবনে খাত্তাব (ভিতরে আসার) অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন তাকে ভিতরে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি এসে তাকে বললাম, ভিতরে আসুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিচ্ছেন। তিনি ভিতরে আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর বামপাশে হাটু পর্যন্ত কাপড় উঠায়ে কূপের ভিতর দিকে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে গেলেন। আমি আবার ফিরে আসলাম এবং বলতে থাকলাম আল্লাহ যদি আমার ভাইয়ের মঙ্গল চান, তবে যেন তাকে নিয়ে আসেন।
এরপর আর এক ব্যক্তি এসে দরজা নাড়তে লাগল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কে? তিনি বললেন, আমি উসমান ইবনে আফফান। আমি বললাম, থামুন (আমি অনুমতি নিয়ে আসছি) নবী কারীম (ﷺ)- এর খেদমতে গিয়ে জানালাম। তিনি বললেন, তাকে ভিতরে আসতে বল এবং তাকেও জান্নাতের সু-সংবাদ দিয়ে দাও। তবে (দুনিয়াতে তার উপর) কঠিন পরীক্ষা হবে। আমি এসে বললাম, ভিতরে আসুন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আপনাকে জান্নাতের সু-সংবাদ দিচ্ছেন; তবে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে। তিনি ভিতরে এসে দেখলেন, কূপের কিনারায় খালি জায়গা নাই। তাই তিনি নবী কারীম (ﷺ)- এর সম্মুখে অপর এক স্থানে বসে পড়লেন।
শরীক (রাহঃ) বলেন, সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব (রাহঃ) বলেছেন, আমি এর দ্বারা (পরবর্তী কালে) তাদের কবর এরূপ হবে এই অর্থ করেছি।
باب
3674 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِسْكِينٍ أَبُو الحَسَنِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، عَنْ شَرِيكِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ، أَنَّهُ تَوَضَّأَ فِي بَيْتِهِ، ثُمَّ خَرَجَ، فَقُلْتُ: لَأَلْزَمَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَأَكُونَنَّ مَعَهُ يَوْمِي هَذَا، قَالَ: فَجَاءَ المَسْجِدَ فَسَأَلَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالُوا: خَرَجَ وَوَجَّهَ هَا هُنَا، فَخَرَجْتُ عَلَى إِثْرِهِ أَسْأَلُ عَنْهُ حَتَّى دَخَلَ بِئْرَ أَرِيسٍ، فَجَلَسْتُ عِنْدَ البَابِ، وَبَابُهَا مِنْ جَرِيدٍ حَتَّى قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاجَتَهُ فَتَوَضَّأَ، فَقُمْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ عَلَى بِئْرِ أَرِيسٍ وَتَوَسَّطَ قُفَّهَا، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلَّاهُمَا فِي البِئْرِ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ ثُمَّ انْصَرَفْتُ فَجَلَسْتُ عِنْدَ البَابِ، فَقُلْتُ لَأَكُونَنَّ بَوَّابَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اليَوْمَ، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَدَفَعَ البَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ: أَبُو بَكْرٍ، فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ ثُمَّ ذَهَبْتُ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذَا أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ؟ فَقَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» . فَأَقْبَلْتُ حَتَّى قُلْتُ لِأَبِي بَكْرٍ: ادْخُلْ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَشِّرُكَ بِالْجَنَّةِ، فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ فَجَلَسَ عَنْ يَمِينِ [ص:9] رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُ فِي القُفِّ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي البِئْرِ كَمَا صَنَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، وَقَدْ تَرَكْتُ أَخِي يَتَوَضَّأُ وَيَلْحَقُنِي، فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللَّهُ بِفُلاَنٍ خَيْرًا - يُرِيدُ أَخَاهُ - يَأْتِ بِهِ، فَإِذَا إِنْسَانٌ يُحَرِّكُ البَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ: عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ، فَقُلْتُ عَلَى رِسْلِكَ، ثُمَّ جِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَقُلْتُ: هَذَا عُمَرُ بْنُ الخَطَّابِ يَسْتَأْذِنُ؟ فَقَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» ، فَجِئْتُ فَقُلْتُ: ادْخُلْ، وَبَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ، فَدَخَلَ فَجَلَسَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي القُفِّ عَنْ يَسَارِهِ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي البِئْرِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللَّهُ بِفُلاَنٍ خَيْرًا يَأْتِ بِهِ، فَجَاءَ إِنْسَانٌ يُحَرِّكُ البَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ: عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ، فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ، فَجِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ، عَلَى بَلْوَى تُصِيبُهُ» فَجِئْتُهُ فَقُلْتُ لَهُ: ادْخُلْ، وَبَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ عَلَى بَلْوَى تُصِيبُكَ، فَدَخَلَ فَوَجَدَ القُفَّ قَدْ مُلِئَ فَجَلَسَ وِجَاهَهُ مِنَ الشَّقِّ الآخَرِ قَالَ شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَعِيدُ بْنُ المُسَيِّبِ «فَأَوَّلْتُهَا قُبُورَهُمْ»
হাদীস নং: ৩৪১০
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৫
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪১০। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, (একবার) নবী কারীম (ﷺ) আবু বকর, উমর, উসমান (রাযিঃ) উহুদ পাহাড়ে আরোহণ করেন। পাহাড়টি (তাঁদেরকে ধারণ করে আনন্দে) নড়ে উঠল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, হে উহুদ, স্থির হও। তোমার উপর একজন নবী কারীম, একজন সিদ্দীক ও দু’জন শহীদ রয়েছেন।
باب
3675 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَعِدَ أُحُدًا، وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، وَعُثْمَانُ فَرَجَفَ بِهِمْ، فَقَالَ: «اثْبُتْ أُحُدُ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ نَبِيٌّ، وَصِدِّيقٌ، وَشَهِيدَانِ»
হাদীস নং: ৩৪১১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৬
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪১১। আহমদ ইবনে সাঈদ আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, একদা (স্বপ্নে দেখতে পেলাম যে,) আমি একটি কূপ থেকে (বালতি দিয়ে) পানি টেনে তুলছি। তখন আবু বকর ও উমর (রাযিঃ) আসলেন। আবু বকর (রাযিঃ) আমার হাত থেকে বালতি তার হাতে নিয়ে এক বালতি কি দু’বালতি পানি টেনে তুললেন। তার উঠানোতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। তারপর (উমর) ইবনে খাত্তাব (রাযিঃ) বালতি আবু বকরের হাত থেকে নিলেন, তার হাতে যাওয়ার সাথে সাথে বালতিটি বৃহদাকার হয়ে গেল। কোন শক্তিশালী বাহাদুরকে তার মত পানি উঠাতে আমি দেখিনি। লোকজন তাদের উটগুলিকে তৃপ্তি ভরে পানি পান করিয়ে উটশালায় নিয়ে গেল। ওয়াহাব (রাবী) বলেন,عطن অর্থ উটশালা। এমনকি উটগুলি পানি পানে তৃপ্ত হয়ে বসে পড়ল।
باب
3676 - حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا صَخْرٌ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَيْنَمَا أَنَا عَلَى بِئْرٍ أَنْزِعُ مِنْهَا، جَاءَنِي أَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، فَأَخَذَ أَبُو بَكْرٍ الدَّلْوَ، فَنَزَعَ ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ، وَفِي نَزْعِهِ ضَعْفٌ، وَاللَّهُ يَغْفِرُ لَهُ، ثُمَّ أَخَذَهَا ابْنُ الخَطَّابِ مِنْ يَدِ أَبِي بَكْرٍ، فَاسْتَحَالَتْ فِي يَدِهِ غَرْبًا، فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا مِنَ النَّاسِ يَفْرِي فَرِيَّهُ، فَنَزَعَ حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ» ، قَالَ وَهْبٌ: " العَطَنُ: مَبْرَكُ الإِبِلِ، يَقُولُ: حَتَّى رَوِيَتِ الإِبِلُ فَأَنَاخَتْ "
হাদীস নং: ৩৪১২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৭
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪১২। অলীদ ইবনে সালিহ (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমিও ঐ দলের সাথে দুআয় রত ছিলাম, যারা উমর ইবনে খাত্তাবের জন্য দুআ করেছিল। তখন তাঁর মরদেহটি খাটের উপর রাখা ছিল। এমন সময় এক ব্যক্তি হঠাৎ আমার পিছন দিক থেকে তার কনুই আমার কাঁধের উপর রেখে উমর (রাযিঃ)- কে লক্ষ্য করে বলল, আল্লাহ্ আপনার প্রতি রহম করুন। আমি অবশ্য এ আশা পোষণ করি যে, আল্লাহ্ আপনাকে আপনার উভয় সঙ্গীর সাথেই রাখবেন। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে বহুবার বলতে শুনেছি, আমি এবং আবু বকর ও উমর এক সাথে ছিলাম, আমি এবং আবু বকর ও উমর এ কাজ করেছি। আমি ও আবু বকর এবং উমর (একসাথে) চলেছি। আমি এ আশাই পোষণ করি যে, আল্লাহ্ তাআলা আপনাকে তাদের উভয়ের সঙ্গেই রাখবেন। আমি পেছনে তাকিয়ে দেখলাম, তিনি হলেন, আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ)।
باب
3677 - حَدَّثَنِي الوَلِيدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَبِي الحُسَيْنِ المَكِّيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: إِنِّي لَوَاقِفٌ فِي قَوْمٍ، فَدَعَوُا اللَّهَ لِعُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ، وَقَدْ وُضِعَ عَلَى سَرِيرِهِ، إِذَا رَجُلٌ مِنْ خَلْفِي قَدْ وَضَعَ مِرْفَقَهُ عَلَى مَنْكِبِي، يَقُولُ: رَحِمَكَ اللَّهُ، إِنْ كُنْتُ لَأَرْجُو أَنْ يَجْعَلَكَ اللَّهُ مَعَ صَاحِبَيْكَ، لِأَنِّي كَثِيرًا مَا كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «كُنْتُ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ، وَفَعَلْتُ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ، وَانْطَلَقْتُ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ» فَإِنْ [ص:10] كُنْتُ لَأَرْجُو أَنْ يَجْعَلَكَ اللَّهُ مَعَهُمَا، فَالْتَفَتُّ فَإِذَا هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ
হাদীস নং: ৩৪১৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৬৭৮
২০৮৪. শিরোনামবিহীন পরিচ্ছেদ
৩৪১৩। মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াযিদ কুফী (রাহঃ) .... উরওয়া ইবনে যুবাইর (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযিঃ)- কে জিজ্ঞাসা করলাম, মক্কার মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর সাথে সর্বাধিক কঠোর আচরণ কি করেছিল? তিনি বললেন, আমি উকবা ইবনে আবু মুআইতকে দেখেছি; সে নবী কারীম (ﷺ)- এর নিকট আসল যখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। সে নিজের চাদর দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর গলদেশে জড়িয়ে শক্তভাবে চেপে ধরল। আবু বকর (রাযিঃ) এসে উকবাকে সরিয়ে দিলেন এবং বললেন, তোমরা কি এমন ব্যক্তিকে হত্যা করতে চাও, যিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহ্ই আমার রব। যিনি তাঁর দাবীর সত্যতার স্বপক্ষে তোমাদের রবের নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি (মুজিযা) সঙ্গে নিয়ে এসেছেন?
باب
3678 - حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا الوَلِيدُ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ: سَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، عَنْ أَشَدِّ مَا صَنَعَ المُشْرِكُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: رَأَيْتُ عُقْبَةَ بْنَ أَبِي مُعَيْطٍ، جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُصَلِّي، " فَوَضَعَ رِدَاءَهُ فِي عُنُقِهِ فَخَنَقَهُ بِهِ خَنْقًا شَدِيدًا، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى دَفَعَهُ عَنْهُ، فَقَالَ: {أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا أَنْ يَقُولَ رَبِّيَ اللَّهُ، وَقَدْ جَاءَكُمْ بِالْبَيِّنَاتِ مِنْ رَبِّكُمْ} [غافر: 28]