আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

الجامع الصحيح للبخاري

৯- আযান-ইকামতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৬৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৬৭৮
৪৩৮। বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।
৬৪৪। ইসহাক ইবনে নসর (রাহঃ) ......... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রমে তাঁর অসুস্থতা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, আবু বকরকে লোকদের নিয়ে নামায আদায় করতে বল। আয়িশা (রাযিঃ) বললেন, তিনি তো কোমল হৃদয়ের লোক। যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তিনি লোকদের নিয়ে নামায আদায় করতে পারবেন না। নবী (ﷺ) আবারো বললেন, আবু বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামায আদায় করে। আয়িশা (রাযিঃ) আবার সে কথা বললেন। তখন তিনি আবার বললেন, আবু বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামায আদায় করে। তোমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এর সাথী রমণীদেরই মত। তারপর একজন সংবাদদাতা আবু বকর (রাযিঃ) এর নিকট সংবাদ নিয়ে আসলেন এবং তিনি নবী (ﷺ) এর জীবদ্দশায়ই লোকদের নিয়ে নামায আদায় করলেন।
باب أَهْلُ الْعِلْمِ وَالْفَضْلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ
678 - حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ المَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ: مَرِضَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاشْتَدَّ مَرَضُهُ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: إِنَّهُ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَامَ مَقَامَكَ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، قَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» فَعَادَتْ، فَقَالَ: «مُرِي أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَإِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ» فَأَتَاهُ الرَّسُولُ، فَصَلَّى بِالنَّاسِ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হাদীস নং: ৬৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬৭৯
৪৩৮। বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।
৬৪৫। আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) ......... উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বললেন, আবু বকর (রাযিঃ)-কে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামায আদায় করে। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, আবু বকর (রাযিঃ) যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তাঁর কান্নার দরুন লোকেরা তাঁর কিছুই শুনতে পাবেনা। কাজেই উমর (রাযিঃ)-কে লোকদের নিয়ে নামায আদায়ের নির্দেশ দিন। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, আমি হাফসা (রাযিঃ) কে বললাম, তুমিও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বল যে, আবু বকর (রাযিঃ) আপনার স্থানে দাঁড়ালে কান্নার দরুন লোকেরা তাঁর কিছুই শুনতে পাবেনা। তাই উমর (রাযিঃ) কে লোকদের নিয়ে নামায আদায়ের নির্দেশ দিন। হাফসা (রাযিঃ)-ও তাই করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, থাম, তোমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এর সাথী রমণীদের ন্যায়। আবু বকর (রাযিঃ)-কে লোকদের নিয়ে নামায আদায় করতে বল। হাফসা (রাযিঃ) তখন আয়িশা (রাযিঃ)-কে বললেন, আমি তোমার কাছ থেকে কখনও কল্যাণকর কিছুই পাইনি।
باب أَهْلُ الْعِلْمِ وَالْفَضْلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ
679 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي مَرَضِهِ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ: فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ: قُولِي لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ البُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ، فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَهْ إِنَّكُنَّ لَأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ» فَقَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ: مَا كُنْتُ لِأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا
হাদীস নং: ৬৪৬
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮০
৪৩৮। বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।
৬৪৬। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক আনসারী (রাযিঃ) যিনি নবী (ﷺ) এর অনুসারী, খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন। তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আবু বকর (রাযিঃ) সাহাবীগণকে নিয়ে নামায আদায় করতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা নামাযের জন্য কাতারে দাঁড়ালো, তখন নবী (ﷺ) হুজরার পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর চেহারা যেন কুরআনে কারীমের পৃষ্ঠা (এর ন্যায় ঝলমল করছিল)। তিনি মুচকি হাসলেন। নবী (ﷺ)কে দেখতে পেয়ে আমরা খুশিতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং আবু বকর (রাযিঃ) কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, নবী (ﷺ) হয়তো নামাযে আসবেন। নবী (ﷺ) আমাদেরকে ইশারায় বললেন যে, তোমরা তোমাদের নামায পূর্ণ করে নাও। এরপর তিনি পর্দা ফেলে দিলেন। সেদিনই তিনি ইন্‌তিকাল করেন।
باب أَهْلُ الْعِلْمِ وَالْفَضْلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ
680 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ [ص:137] الأَنْصَارِيُّ - وَكَانَ تَبِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَخَدَمَهُ وَصَحِبَهُ - أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُصَلِّي لَهُمْ فِي وَجَعِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ الِاثْنَيْنِ وَهُمْ صُفُوفٌ فِي الصَّلاَةِ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتْرَ الحُجْرَةِ يَنْظُرُ إِلَيْنَا وَهُوَ قَائِمٌ كَأَنَّ وَجْهَهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ، ثُمَّ تَبَسَّمَ يَضْحَكُ، فَهَمَمْنَا أَنْ نَفْتَتِنَ مِنَ الفَرَحِ بِرُؤْيَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ الصَّفَّ، وَظَنَّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَارِجٌ إِلَى الصَّلاَةِ «فَأَشَارَ إِلَيْنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَتِمُّوا صَلاَتَكُمْ وَأَرْخَى السِّتْرَ فَتُوُفِّيَ مِنْ يَوْمِهِ»
হাদীস নং: ৬৪৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮১
৪৩৮। বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।
৬৪৭। আবু মা’মার (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (রোগশয্যায় থাকার কারণে) তিন দিন পর্যন্ত নবী (ﷺ) বাইরে আসেন নি। এ সময় একবার নামাযের ইকামত দেওয়া হল। আবু বকর (রাযিঃ) ইমামতি করার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। এমন সময় নবী (ﷺ) তাঁর ঘরের পর্দা ধরে উঠালেন। নবী (ﷺ) এর চেহারা যখন আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তখন নবী (ﷺ) হাতের ইশারায় আবু বকর (রাযিঃ) কে (ইমামতির জন্য) এগিয়ে যেতে বললেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তারপর মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
باب أَهْلُ الْعِلْمِ وَالْفَضْلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ
681 - حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ العَزِيزِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: «لَمْ يَخْرُجِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاَثًا» ، فَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ، فَذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَقَدَّمُ، فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بِالحِجَابِ فَرَفَعَهُ، فَلَمَّا وَضَحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا نَظَرْنَا مَنْظَرًا كَانَ أَعْجَبَ إِلَيْنَا مِنْ وَجْهِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ وَضَحَ لَنَا، فَأَوْمَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ إِلَى أَبِي بَكْرٍ أَنْ يَتَقَدَّمَ، وَأَرْخَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الحِجَابَ، فَلَمْ يُقْدَرْ عَلَيْهِ حَتَّى مَاتَ»
হাদীস নং: ৬৪৮
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮২
৪৩৮। বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।
৬৪৮। ইয়াহয়া ইবনে সুলাইমান (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রোগ যখন খুব বেড়ে গেল, তখন তাঁকে নামাযের জামাআত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, আবু বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামায আদায় করে নেয়। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, আবু বকর (রাযিঃ) অত্যন্ত কোমল মনের লোক। কিরাআতের সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়বেন। তিনি বললেন, তাকেই নামায আদায় করতে বল। আয়িশা (রাযিঃ) সে কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনি আবারো বললেন, তাঁকেই নামায আদায় করতে বল। তোমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর সাথী রমণীদেরই মত।
এ হাদীসটি যুহরীর (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করার ব্যাপারে যুবাইদী, যুহরীর ভাতিজা ও ইসহাক ইবনে ইয়াহয়া কালবী (রাহঃ) ইউনুস (রাহঃ) এর অনুসরণ করেছেন এবং মা’মার ও উকায়ল (রাহঃ) যুহরী (রাহঃ) থেকে হামযা (রাহঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে হাদীসটি (মুরসাল হিসাবে) বর্ণনা করেন।
باب أَهْلُ الْعِلْمِ وَالْفَضْلِ أَحَقُّ بِالإِمَامَةِ
682 - حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: لَمَّا اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَعُهُ قِيلَ لَهُ فِي الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ» قَالَتْ عَائِشَةُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَرَأَ غَلَبَهُ البُكَاءُ، قَالَ: «مُرُوهُ فَيُصَلِّي» فَعَاوَدَتْهُ، قَالَ: «مُرُوهُ فَيُصَلِّي، إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ» تَابَعَهُ الزُّبَيْدِيُّ، وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ يَحْيَى الكَلْبِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَالَ عُقَيْلٌ، وَمَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حَمْزَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ