আলফিয়্যাতুল হাদীস

সালাতুল ইসতেসকা (বৃষ্টি কামনার নামাজ) -এর বিষয়সমূহ

টি হাদীস

সুনানে আবু দাউদ

হাদীস নং:১১৭৩
আন্তর্জাতিক নং: ১১৭৩
২৬৫. ইসতিসকার নামায আদায়কালে দুই হাত তুলে দু'আ করা।
১১৭৩. হারুন ইবনে সাইদ আল-আয়লি (রাহঃ) ..... আয়িশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে অনাবৃষ্টির অভিযোগ পেশ করে। তখন তিনি ময়দানে মিম্বর স্থাপনের নির্দেশ দিলে তা স্থাপিত হয়। তিনি দিন ক্ষণ ঠিক করে সকলের নিকট থেকে ময়দানে যাওয়ার ওয়াদা নেন। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, সেদিন সূর্য উঠা আরম্ভ হতেই নবী করীম (ﷺ) ময়দানে গিয়ে উক্ত মিম্বরে আরোহণ করে সর্বপ্রথম তাকবীর বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহর প্রশংসা করেন। অতঃপর তিনি বলেনঃ তোমরা সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে দুর্ভিক্ষের অভিযোগ করেছ। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা দিয়েছেনঃ ″যদি তোমরা তাঁর নিকট দুআ কর, তবে তিনি তা কবুল করবেন″। অতঃপর তিনি বলেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমস্ত বিশ্বজগতের রব। তিনি পরম দাতা মেহেরবান, কিয়ামতের দিনের একচ্ছত্র অধিপতি। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নাই। তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। ইয়া আল্লাহ! তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া আর কেউ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় এবং আমরা ফকির। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর এবং তার সাহায্যে সবসময় খাদ্যশস্য উৎপাদনের ব্যবস্থা কর। অতঃপর তিনি উভয় হাত এত উপরে উত্তোলন করেন যে, তাঁর বগলের সাদা অংশ দৃষ্টিগোচর হয়। অতঃপর তিনি লোকদের প্রতি পীঠ ফিরিয়ে স্বীয় চাদর মুবারক উল্টিয়ে দেন এবং ঐ সময়য়ও তাঁর হাত উপরে ছিল। অবশেষে তিনি লোকদের দিকে ফিরে মিম্বর হতে অবতরণের পর দুই রাকআত নামায আদায় করলেন। এই সময় আল্লাহ তাআলা আকাশে মেঘের সঞ্চার করেন এবং তার গর্জন ও ঘনঘটা শুরু হয়ে যায়। অতঃপর আল্লাহর হুকুমে এমন বৃষ্টিপাত হতে থাকে যে, নবী করীম (ﷺ) মসজিদে নববীতে আসার পূর্বে সমস্ত এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে আদ্রতা হতে আত্মরক্ষার জন্য ব্যস্ত-সমস্ত হতে দেখেন, তখন এমন ভাবে হেসে দেন যে, তাঁর সামনের পাটির দাঁত দৃষ্টিগোচর হয়। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা সব কিছুর উপর অধিক ক্ষমতাবান এবং আমি আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।
باب رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الاِسْتِسْقَاءِ
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ نِزَارٍ، حَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مَبْرُورٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - قَالَتْ شَكَى النَّاسُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُحُوطَ الْمَطَرِ فَأَمَرَ بِمِنْبَرٍ فَوُضِعَ لَهُ فِي الْمُصَلَّى وَوَعَدَ النَّاسَ يَوْمًا يَخْرُجُونَ فِيهِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ بَدَا حَاجِبُ الشَّمْسِ فَقَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَكَبَّرَ صلى الله عليه وسلم وَحَمِدَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ثُمَّ قَالَ " إِنَّكُمْ شَكَوْتُمْ جَدْبَ دِيَارِكُمْ وَاسْتِئْخَارَ الْمَطَرِ عَنْ إِبَّانِ زَمَانِهِ عَنْكُمْ وَقَدْ أَمَرَكُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ تَدْعُوهُ وَوَعَدَكُمْ أَنْ يَسْتَجِيبَ لَكُمْ " . ثُمَّ قَالَ " ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ * الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ * مَلِكِ يَوْمِ الدِّينِ ) لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ اللَّهُمَّ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْغَنِيُّ وَنَحْنُ الْفُقَرَاءُ أَنْزِلْ عَلَيْنَا الْغَيْثَ وَاجْعَلْ مَا أَنْزَلْتَ لَنَا قُوَّةً وَبَلاَغًا إِلَى حِينٍ " . ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَلَمْ يَزَلْ فِي الرَّفْعِ حَتَّى بَدَا بَيَاضُ إِبْطَيْهِ ثُمَّ حَوَّلَ عَلَى النَّاسِ ظَهْرَهُ وَقَلَّبَ أَوْ حَوَّلَ رِدَاءَهُ وَهُوَ رَافِعٌ يَدَيْهِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ وَنَزَلَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فَأَنْشَأَ اللَّهُ سَحَابَةً فَرَعَدَتْ وَبَرَقَتْ ثُمَّ أَمْطَرَتْ بِإِذْنِ اللَّهِ فَلَمْ يَأْتِ مَسْجِدَهُ حَتَّى سَالَتِ السُّيُولُ فَلَمَّا رَأَى سُرْعَتَهُمْ إِلَى الْكِنِّ ضَحِكَ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ فَقَالَ " أَشْهَدُ أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ وَأَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِسْنَادُهُ جَيِّدٌ أَهْلُ الْمَدِينَةِ يَقْرَءُونَ ( مَلِكِ يَوْمِ الدِّينِ ) وَإِنَّ هَذَا الْحَدِيثَ حُجَّةٌ لَهُمْ .

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং:১৪৯৭
৫২. প্রথম অনুচ্ছেদ - বৃষ্টির জন্য সালাত। মূলে ‘ইস্তেস্কা' শব্দ রহিয়াছে। ইহার অর্থ বৃষ্টি চাওয়া, পানি তলব করা। মেঘ-সৃষ্টি ও বৃষ্টি বর্ষণ কতক প্রাকৃতিক নিয়মের অধীন হইলেও সেসকল নিয়ম আল্লাহর কুদরতের অধীন। এ কারণে অনাবৃষ্টির সময় আল্লাহর নিকট বৃষ্টি প্রার্থনা করার ব্যবস্থা রহিয়াছে। অপরাধী বান্দা অপরাধ স্বীকার করিয়া আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাহিলে আল্লাহ্ খুশী হন এবং খুশী হইলে বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। এ জন্য প্রার্থনাকালে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া এবং কিছু নফল নামায পড়া এই সময়ের প্রধান কাজ। এই নামাযকে 'ইস্তেস্কার নামায' বলে। ইমাম আ'যম আবু হানীফার মতে ইস্তেস্কার নামায জামাআতের সহিত পড়ার বিধান নাই— তাঁহার মতে এ সম্পর্কীয় হাদীসগুলি নির্দোষ নহে। কিন্তু তাঁহার শাগরেদ ইমাম মুহাম্মাদ (রঃ) ও অপর ইমামগণের মতে ইহাতে জামাআতের সহিত দুই রাকআত নামায পড়ারও ব্যবস্থা রহিয়াছে। বিস্তারিত বিবরণ ফেকাহর কিতাবে দ্রষ্টব্য।
১৪৯৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে যায়দ (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টি চাওয়ার উদ্দেশ্যে লোকদের লইয়া ঈদগাহের দিকে বাহির হইলেন এবং তাহাদের লইয়া দুই রাকআত নামায পড়িলেন, যাহাতে কেরাআত পড়িলেন বড় করিয়া। এসময় তিনি নিজের হস্তদ্বয় উঠাইলেন এবং কেবলামুখী হইয়া দো'আ করিলেন। আর যখন কেবলামুখী হইলেন আপন চাদর ঘুরাইয়া দিলেন। মোত্তাঃ
بَابُ الْاِسْتِسْقَاءِ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالنَّاسِ إِلَى الْمُصَلَّى يَسْتَسْقِي فَصَلَّى بِهِمْ رَكْعَتَيْنِ جَهَرَ فِيهِمَا بِالْقِرَاءَةِ وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ يَدْعُو وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَحَوَّلَ رِدَاءَهُ حِينَ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং:১৫০৫
৫২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বৃষ্টির জন্য সালাত
১৫০৫। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একবার ইস্তেস্কায় বাহির হইলেন সাধারণ বেশে কাজকর্মের কাপড় পরিয়া; নম্রতা ও বিনয় সহ কারে, আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করিতে করিতে। – তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْنِي فِي الِاسْتِسْقَاءِ مُتَبَذِّلًا مُتَوَاضِعًا مُتَخَشِّعًا مُتَضَرِّعًا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা