আল আ'রাফ

সূরা নং: ৭, আয়াত নং: ৮৫

তাফসীর
وَاِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاہُمۡ شُعَیۡبًا ؕ  قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ  قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَالۡمِیۡزَانَ وَلَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَہُمۡ وَلَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا ؕ  ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ۚ

উচ্চারণ

ওয়া ইলা-মাদইয়ানা আখা-হুম শু‘আইবান কা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা মা-লাকুম মিন ইলা-হিন গাইরুহূ কাদ জাআতকুম বাইয়িনাতুম মিররাব্বিকুম ফাআওফুল কাইলা ওয়াল মীঝা-না ওয়ালা-তাবখাছুন্না-ছা আশইয়াআহুম ওয়ালা-তুফছিদূফিল আরদিবা‘দা ইসলা-হিহা- যা-লিকুম খাইরুল্লাকুম ইন কুনতুম মু’মিনীন।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

আর মাদয়ানের কাছে তাদের ভাই শুআইবকে ৪৬ (পাঠালাম)। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ছাড়া তোমাদের কোন মাবুদ নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে স্পষ্ট প্রমাণ এসে গেছে। সুতরাং মাপ ও ওজন ঠিকভাবে দিবে ও মানুষের মালিকানাধীন বস্তুসমূহে তাদের অধিকার খর্ব করবে না ৪৭ আর দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর অশান্তি বিস্তার করবে না। ৪৮ এটাই তোমাদের পক্ষে কল্যাণকর পথ যদি তোমরা (আমার কথা) মেনে নাও।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৪৬. মাদয়ান একটি গোত্রের নাম। এ নামে একটি জনপদও ছিল, যেখানে হযরত শুআইব আলাইহিস সালামকে নবী বানিয়ে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর আমল ছিল হযরত মূসা আলাইহিস সালামের সামান্য আগে। কোনও কোনও বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, তিনিই হযরত মূসা আলাইহিস সালামের শ্বশুর ছিলেন। মাদয়ান ছিল একটি সবুজ-শ্যামল এলাকা। লোকজন বড় সচ্ছল ও সমৃদ্ধশালী ছিল। কালক্রমে তাদের মধ্যে কুফর ও শিরকসহ বহু দুষ্কর্ম চালু হয়ে যায়। তারা মাপজোখে হেরফের করত। তাদের মধ্যে যাদের পেশিশক্তি ছিল, তারা পথে-পথে টোল বসিয়ে পথচারীদের থেকে জোরপূর্বক কর আদায় করত। অনেকে ডাকাতিও করত। তাছাড়া যাদেরকে দেখত, হযরত শুআইব আলাইহিস সালামের কাছে যাওয়া আসা করে তাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করত ও তাদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন করত। সামনে দুই আয়াতে তাদের দুষ্কর্মের বর্ণনা আসছে। হযরত শুআইব আলাইহিস সালামকে তাদের কাছে নবী করে পাঠান হল। তিনি বিভিন্ন পন্থায় তাদেরকে সঠিক পথে আনার চেষ্টা করলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে বক্তৃতা-বিবৃতির বিশেষ যোগ্যতা দান করেছিলেন, এ কারণেই তিনি খাতীবুল আম্বিয়া (নবীগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বাগ্মী) উপাধিতে খ্যাত। কিন্তু নিজ কওমের উপর তার হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতার কোনও আছর হল না। পরিশেষে তারা আল্লাহ তাআলার আযাবের নিশানা হয়ে গেল। হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম ও তার সম্প্রদায়ের ঘটনা সর্বাপেক্ষা বিস্তারিতভাবে সূরা হুদে (১১ : ৮৪-৯৫) বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া সূরা শুআরা (২৬ : ১৭৭) ও সূরা আনকাবুতে (২৯ : ৩৬) তাদের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। সূরা হিজরে (১৫ : ৭৮) সংক্ষেপে তাদের বরাত দেওয়া হয়েছে।
﴾﴿