وَاِلٰی عَادٍ اَخَاہُمۡ ہُوۡدًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اَفَلَا تَتَّقُوۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৪২. আদ ছিল আরবদের প্রাথমিক যুগের একটি জাতি। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের আনুমানিক দু’ হাজার বছর পূর্বে ইয়ামানের হাজরামাওত অঞ্চলে তাদের বসবাস ছিল। দৈহিক শক্তি ও পাথর-ছেদনশিল্পে তাদের বিশেষ খ্যাতি ছিল। কালক্রমে তারা মূর্তি বানিয়ে তার পূজা শুরু করে দেয়। দৈহিক শক্তির কারণেও তারা মদমত্ত হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে হযরত হুদ আলাইহিস সালামকে তাদের কাছে নবী বানিয়ে পাঠানো হল। তিনি অত্যন্ত দরদের সাথে নিজ কওমকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং তাদের সামনে তাওহীদের শিক্ষা পেশ করে আল্লাহ তাআলার শোকরগোজার বান্দা হওয়ার আহ্বান জানালেন। কিন্তু সৎ স্বভাবের সামান্য কিছু লোক ছাড়া বাকি সকলে তার কথা প্রত্যাখ্যান করল। এ অবস্থায় প্রথমে তাদেরকে খরায় আক্রান্ত করা হল। হযরত হুদ আলাইহিস সালাম তাদেরকে বললেন, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তোমাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে। এখনও যদি তোমরা তোমাদের অসৎ কর্ম ছেড়ে দাও, তবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন (১১ : ৫২)। কিন্তু কওমের উপর এ কথার কোন আছর হল না। উত্তরোত্তর তারা কুফর ও শিরকের পথেই এগিয়ে চলল। পরিশেষে তাদের প্রতি প্রচণ্ড ঝড়-ঝঞ্ঝা পাঠানো হল। এ আযাব একাধারে আট দিন তাদের উপর প্রবাহিত থাকল এবং তাতে গোটা কওম ধ্বংস হয়ে গেল। এ জাতির ঘটনা আলোচ্য সূরা ছাড়াও সূরা হুদ (১১ : ৫০-৮৯), সূরা মুমিনুন (২৩ : ৩২), সূরা শুআরা (২৬ : ১২৪), সূরা হা-মীম-সাজদা (৪১ : ১৫), সূরা আহকাফ (৪৬ : ২১), সূরা কামার (৫৪ : ১৮), সূরা হাক্কা (৬৯ : ৬) ও সূরা ফাজরে (৮৯ : ৬) বর্ণিত হয়েছে। ইনশাআল্লাহ এসব সূরায় তাদের ঘটনার বিভিন্ন দিক বিস্তারিত আসবে।