আল আ'রাফ

সূরা নং: ৭, আয়াত নং: ৫৪

তাফসীর
اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ ۟ یُغۡشِی الَّیۡلَ النَّہَارَ یَطۡلُبُہٗ حَثِیۡثًا ۙ وَّالشَّمۡسَ وَالۡقَمَرَ وَالنُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِہٖ ؕ اَلَا لَہُ الۡخَلۡقُ وَالۡاَمۡرُ ؕ تَبٰرَکَ اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ

উচ্চারণ

ইন্না-রাব্বাকুমুল্লা-হুল্লাযী খালাকাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ফী ছিত্তাতি আইইয়া-মিন ছু ম্মাছ তাওয়া-‘আলাল ‘আরশি ইউগশিল লাইলান নাহা-রা ইয়াতলুবুহূহাছীছাওঁ ওয়াশশামছা ওয়াল কামারা ওয়ান নুজূমা মুছাখখারা-তিম বিআমরিহী আলা-লাহুল খালকুওয়াল আমরু তাবা-রাকাল্লা-হু রাব্বুল ‘আ-লামীন।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক সেই আল্লাহ, যিনি সমস্ত আসমান ও যমীন ছয় দিনে ৩৩ সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে ইস্তিওয়া ৩৪ গ্রহণ করেন। তিনি দিনকে রাতের দ্বারা ঢেকে দেন, যা দ্রুতগতিতে ধাবিত হয়ে তাকে ধরে ফেলে। এবং সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি (সৃষ্টি করেছেন), যা সবই তাঁরই আজ্ঞাধীন। স্মরণ রেখ, সৃষ্টি ও আদেশ দান তাঁরই কাজ। আল্লাহ অতি বরকতময়, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৩৩. ইসতিওয়া (استواء) আরবী শব্দ। এর অর্থ সোজা হওয়া, কায়েম হওয়া, আয়ত্তাধীন করা ইত্যাদি। কখনও এ শব্দটি বসা ও সমাসীন হওয়া অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা যেহেতু শরীর ও স্থান থেকে মুক্ত ও পবিত্র, তাই তাঁর ক্ষেত্রে শব্দটি দ্বারা এরূপ অর্থ গ্রহণ সঠিক নয় যে, মানুষ যেভাবে কোনও আসনে সমাসীন হয়, তেমনিভাবে (নাউযুবিল্লাহ) আল্লাহ তাআলাও আরশে উপবিষ্ট ও সমাসীন হন। প্রকৃতপক্ষে ‘ইস্তিওয়া’ আল্লাহ তাআলার একটি গুণ। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের সংখ্যাগরিষ্ঠ উলামায়ে কিরামের মতে এর প্রকৃত ধরণ-ধারণ আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কেউ জানে না। তাদের মতে এটা মুতাশাবিহাত (দ্ব্যর্থবোধক) বিষয়াবলীর অন্তর্ভুক্ত, যার খোড়াখুড়িতে লিপ্ত হওয়া ঠিক নয়। সূরা আলে ইমরানের শুরুভাগে আল্লাহ তাআলা এরূপ মুতাশাবিহ বিষয়ের অনুসন্ধানে লিপ্ত হতে নিষেধ করেছেন। সে হিসেবে এর কোনও তরজমা করাও সমীচীন মনে হয় না। কেননা এর যে-কোনও তরজমাতেই বিভ্রান্তি সৃষ্টির অবকাশ আছে। এ কারণেই আমরা এস্থলে এর তরজমা করিনি। তাছাড়া এর উপর কর্মগত কোনও মাসআলাও নির্ভরশীল নয়। এতটুকু বিশ্বাস রাখাই যথেষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা নিজ শান অনুযায়ী ‘ইসতিওয়া’ গ্রহণ করেছেন, যার স্বরূপ ও প্রকৃতি উপলব্ধি করার মত জ্ঞান-বুদ্ধি মানুষের নেই।
﴾﴿