یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ قَدۡ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکُمۡ لِبَاسًا یُّوَارِیۡ سَوۡاٰتِکُمۡ وَرِیۡشًا ؕ وَلِبَاسُ التَّقۡوٰی ۙ ذٰلِکَ خَیۡرٌ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১৪. ২৬ থেকে ৩২ পর্যন্ত আয়াতসমূহ আরবদের একটা অদ্ভুত রেওয়াজের প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে। রেওয়াজটি নিম্নরূপ, কুরাইশ গোত্র এবং মক্কা মুকাররমার আশপাশের আরও কিছু গোত্র হুম্স (কঠোর ধর্মপরায়ণ) নামে পরিচিত ছিল। হারাম শরীফের সেবায়েত হওয়ার কারণে আরবের অন্যান্য গোত্র তাদেরকে বড় সম্মান করত। এক্ষেত্রে আরবদের বাড়াবাড়ি এ পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তাদের বিশ্বাস ছিল কাপড় পরে তাওয়াফ করার অধিকার কেবল তাদেরই (হুমস্দেরই) জন্য সংরক্ষিত। তারা (অন্যান্য আরবগণ) বলত, আমরা যে কাপড় পরে গুনাহও করে থাকি, তা নিয়ে কাবা ঘরের তাওয়াফ করতে পারি না। সুতরাং তারা যখন তাওয়াফ করতে আসত, তখন ‘হুম্স’-এর কোনও লোকের কাছে কাপড় চাইত, তার কাছে কাপড় পাওয়া গেলে তাই পরে বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করত। যদি কোনও হুমসের কাছে কাপড় পাওয়া না যেত, তবে তারা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়েই তাওয়াফ করত। তাদের এই বেহুদা রসমের মূলোৎপাটনের জন্যই এ আয়াতসমূহ নাযিল হয়েছে। এর ভেতর মানুষের জন্য পোশাক যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, পোশাকের মূল উদ্দেশ্য দেহ আবৃত করা। সেই সঙ্গে পোশাক মানব দেহের ভূষণ ও সৌন্দর্যের উপকরণও বটে। যে পোশাকের ভেতর এই উভয়বিধ গুণ পাওয়া যায়, সেটাই উৎকৃষ্ট পোশাক। আর যে পোশাক দ্বারা মানব দেহ যথাযথভাবে আবৃত হয় না, তা মানব-স্বভাবেরই পরিপন্থী।