আল হাদীদ

সূরা নং: ৫৭, আয়াত নং: ২০

তাফসীর
اِعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّلَہۡوٌ وَّزِیۡنَۃٌ وَّتَفَاخُرٌۢ بَیۡنَکُمۡ وَتَکَاثُرٌ فِی الۡاَمۡوَالِ وَالۡاَوۡلَادِ ؕ کَمَثَلِ غَیۡثٍ اَعۡجَبَ الۡکُفَّارَ نَبَاتُہٗ ثُمَّ یَہِیۡجُ فَتَرٰىہُ مُصۡفَرًّا ثُمَّ یَکُوۡنُ حُطَامًا ؕ وَفِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ شَدِیۡدٌ ۙ وَّمَغۡفِرَۃٌ مِّنَ اللّٰہِ وَرِضۡوَانٌ ؕ وَمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ

উচ্চারণ

ই‘লামূআন্নামাল হায়া-তুদ্দুনইয়া-লা‘ইবুওঁ ওয়ালাহউওঁ ওয়া ঝীনাতুওঁ ওয়া তাফা-খুরুম বাইনাকুম ওয়া তাকা-ছু রুন ফিল আমওয়া-লি ওয়ালআওলা-দা কামাছালি গাইছিন আ‘জাবাল কুফফা-রা নাবাতুহূছু ম্মা ইয়াহীজুফাতারা-হু মুসফাররান ছুম্মা ইয়াকূনুহুতামাও ওয়া ফিল আ-খিরাতি ‘আযা-বুন শাদীদুওঁ ওয়া মাগফিরাতুম মিনাল্লা-হি ওয়া রিদওয়ানুওঁ ওয়ামাল হায়া-তুদ্দুনইয়াইল্লা মাতা-‘উল গুরূর।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

জেনে রেখ, পার্থিব জীবন তো কেবল খেলাধুলা, বাহ্যিক সাজসজ্জা, তোমাদের পারস্পরিক অহংকার প্রদর্শন এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে একে অন্যের উপরে থাকার প্রতিযোগিতারই নাম। ১৮ তার উপমা হল বৃষ্টি, যা দ্বারা উদগত ফসল কৃষকদেরকে মুগ্ধ করে দেয়, তারপর তা তেজস্বী হয়ে ওঠে। তারপর তুমি দেখতে পাও তা হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। অবশেষে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। আর আখেরাতে (এক তো) আছে কঠিন শাস্তি এবং (আরেক আছে) আল্লাহর পক্ষ হতে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

১৮. এখানে আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন চিত্তাকর্ষক জিনিসের উল্লেখ করেছেন। মানুষ তার জীবনের একেক পর্যায়ে একেকটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, যেমন শৈশবে তার আকর্ষণ থাকে খেলাধুলার দিকে, যৌবনকালে সাজসজ্জা, বেশভূষার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় এবং সেই সাজসজ্জা ও পার্থিব অন্যান্য সাজ-সরঞ্জামে একে অন্যের উপর চলে যাওয়ার ও তা নিয়ে অহমিকা দেখানোর আগ্রহ দেখা দেয়। তারপর আসে বার্ধক্য। তখন মানুষের যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা আবর্তিত হয় সম্পদ ও সন্তানকে কেন্দ্র করে। তখনকার চেষ্টা একটাই কিভাবে সম্পদে অন্যকে ছাড়িয়ে যাবে এবং সন্তানের দিক থেকেও অন্যের উপরে থাকবে। প্রতিটি স্তরে মানুষ যে জিনিসকে তার আকর্ষণ ও চাহিদার সর্বোচ্চ শিখর মনে করে, পরবর্তী স্তরে সেটাই তার কাছে বিলকুল মূল্যহীন হয়ে যায়। বরং অনেক সময় মানুষ এই ভেবে মনে মনে হাসে যে, আমি কোন জিনিসকে জীবনের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিলাম! অবশেষে যখন আখেরাত আসবে, তখন মানুষ উপলব্ধি করবে, আসলে দুনিয়ার আকর্ষণীয় সবকিছুই ছিল মূল্যহীন। প্রকৃত অর্জনীয় জিনিস তো ছিল এই আখেরাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যই।
﴾﴿