مَاۤ اَصَابَکَ مِنۡ حَسَنَۃٍ فَمِنَ اللّٰہِ ۫ وَمَاۤ اَصَابَکَ مِنۡ سَیِّئَۃٍ فَمِنۡ نَّفۡسِکَ ؕ وَاَرۡسَلۡنٰکَ لِلنَّاسِ رَسُوۡلًا ؕ وَکَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًا
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৫৮. এ আয়াতসমূহে দুটি সত্য তুলে ধরা হয়েছে। (এক) এ জগতে যা-কিছু হয়, তা আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা ও হুকুমেই হয়। কারও কোন উপকার লাভ হলে তাও আল্লাহর হুকুমেই হয় এবং কারও কোন ক্ষতি হলে তাও আল্লাহর হুকুমেই হয়। (দুই) দ্বিতীয়ত জানানো হয়েছে, কারও কোন উপকার বা ক্ষতির হুকুম আল্লাহ তাআলা কখন দেন ও কিসের ভিত্তিতে দেন। এ সম্পর্কে ৭৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, কারও কোন উপকার ও কল্যাণ লাভের যে ব্যাপারটা, তা কেবলই আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ। কেননা কোন মাখলুকেরই আল্লাহ তাআলার কাছে কোন পাওনা নেই যে, আল্লাহ তাআলার তাকে তা দিতেই হবে। মানুষের কোন কর্মকে যদি আপাতদৃষ্টিতে তার কোন কল্যাণের কারণ বলে মনেও হয়, তবে এটা তো সত্য যে, তার সে কর্ম আল্লাহ তাআলার দেওয়া তাওফীকেরই ফল। কাজেই সে কল্যাণ আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ ছাড়া কিছু নয়। সেটা তার প্রাপ্য ও হক নয় কিছুতেই। অন্যদিকে মানুষের যদি কোন অকল্যাণ দেখা দেয়, তবে যদিও তা আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়, কিন্তু আল্লাহ তাআলা এ হুকুম কেবল তখনই দেন, যখন সে ব্যক্তি নিজ এখতিয়ার ও ইচ্ছাক্রমে কোন অন্যায় বা ভুল করে থাকে। মুনাফিকদের চরিত্র ছিল যে, তাদের কোন কল্যাণ লাভ হলে সেটাকে তো আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পৃক্ত করত, কিন্তু কোনও রকম ক্ষতি হয়ে গেলে তার দায়-দায়িত্ব চাপাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। এর দ্বারা যদি তাদের বোঝানো উদ্দেশ্য হয়, সে ক্ষতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হুকুমে হয়েছে, তবে তো এটা বিলকুল গলত। কেননা বিশ্ব জগতের সকল কাজ কেবল আল্লাহ তাআলার হুকুমেই হয়। অন্য কারও হুকুমে নয়। আর যদি বোঝানো উদ্দেশ্য হয় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনও ভুলের কারণে সে ক্ষতি হয়েছে, তবে নিঃসন্দেহে এটাও গলত কথা। কেননা প্রতিটি মানুষের যা-কিছু অকল্যাণ দেখা দেয়, তা তার নিজেরই কর্মফল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তো রাসূল বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। কাজেই জগতে লাভ-লোকসান ও সৃষ্টি-লয় সংক্রান্ত যা-কিছু ঘটে তার দায়-দায়িত্ব যেমন তাঁর উপর বর্তায় না, তেমনি রিসালাতের দায়িত্ব পালনেও তাঁর দ্বারা কোনও ত্রুটি ঘটা সম্ভব নয়, যার খেসারত তাঁর উম্মতকে দিতে হবে।