اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ قِیۡلَ لَہُمۡ کُفُّوۡۤا اَیۡدِیَکُمۡ وَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتُوا الزَّکٰوۃَ ۚ فَلَمَّا کُتِبَ عَلَیۡہِمُ الۡقِتَالُ اِذَا فَرِیۡقٌ مِّنۡہُمۡ یَخۡشَوۡنَ النَّاسَ کَخَشۡیَۃِ اللّٰہِ اَوۡ اَشَدَّ خَشۡیَۃً ۚ وَقَالُوۡا رَبَّنَا لِمَ کَتَبۡتَ عَلَیۡنَا الۡقِتَالَ ۚ لَوۡلَاۤ اَخَّرۡتَنَاۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ؕ قُلۡ مَتَاعُ الدُّنۡیَا قَلِیۡلٌ ۚ وَالۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّمَنِ اتَّقٰی ۟ وَلَا تُظۡلَمُوۡنَ فَتِیۡلًا
উচ্চারণ
আলাম তারা ইলাল্লাযীনা কীলা লাহুম কুফফূআইদিয়াকুম ওয়াআকীমুস সালা-তা ওয়া আ-তুঝঝাকা-তা ফালাম্মা-কুতিবা ‘আলাইহিমুল কিতা-লুইযা-ফারীকুম মিনহুম ইয়াখশাওনান না-ছা কাখাশইয়াতিল্লা-হি আও আশাদ্দা খাশইয়াতাওঁ ওয়া কা-লূরাব্বানালিমা কাতাবতা ‘আলাইনাল কিতা-লা লাওলাআখখারতানাইলাআজালিন কারীবিন কুল মাতা-‘উদ দুনইয়া-কালীলুওঁ ওয়াল আ-খিরাতুখাইরুল লিমানিত্তাকা- ওয়ালা-তুজলামূনা ফাতীলা-।
মুফতী তাকী উসমানী
তুমি কি তাদেরকে দেখনি, (মক্কী জীবনে) যাদেরকে বলা হত, তোমরা নিজেদের হাত সংযত রাখ, সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও। অতঃপর যখন তাদের প্রতি যুদ্ধ ফরয করা হল, তখন তাদের মধ্য হতে একটি দল মানুষকে (শত্রুদেরকে) এমন ভয় করতে লাগল, যেমন আল্লাহকে ভয় করা হয়ে থাকে, কিংবা তার চেয়েও বেশি ভয়। তারা বলতে লাগল, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের প্রতি যুদ্ধ কেন ফরয করলেন? অল্প কালের জন্য আমাদেরকে অবকাশ দিলেন না কেন? বলে দাও, পার্থিব ভোগ সামান্য। যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে, তার জন্য আখিরাত উৎকৃষ্টতর। ৫৭ তোমাদের প্রতি সুতা পরিমাণও জুলুম করা হবে না।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৫৭. মুসলিমগণ মক্কা মুকাররমায় যখন কাফিরদের পক্ষ হতে কঠিন জুলুম-নির্যাতন ভোগ করছিল, তখন অনেকেরই মনে স্পৃহা সৃষ্টি হয়েছিল কাফিরদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য তারা যুদ্ধ করবে। কিন্তু তখনও পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে জিহাদের হুকুম আসেনি। তখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে মুসলিমদের জন্য সবর ও আত্মসংবরণের মধ্যেই কল্যাণ নিহিত রাখা হয়েছিল, যাতে এর মাধ্যমে তারা উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করতে পারে। কেননা তারপর যুদ্ধ করলে সে যুদ্ধ কেবল ব্যক্তিগত প্রতিশোধ স্পৃহায় হবে না; বরং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে হবে। তাই তখন কোন মুসলিম জিহাদের আকাঙ্ক্ষা করলে তাকে এ কথাই বলা হত যে, এখন নিজের হাত সংবরণ কর এবং জিহাদের পরিবর্তে সালাত, যাকাত ইত্যাদি আহকাম পালনে যত্নবান থাক। অতঃপর তারা যখন হিজরত করে মদীনায় আসলেন, তখন জিহাদ ফরয করা হল। তখন যেহেতু তাদের পুরানো আকাঙ্ক্ষা পূরণ হল, তখন তাদের খুশী হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে কতকের কাছে মনে হল, দীর্ঘ তের বছর পর্যন্ত কাফিরদের অত্যাচার-উৎপীড়ন দ্বারা তাদের ধৈর্যের যে পরীক্ষা চলছিল সবে তার অবসান হল। এখন একটু শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাওয়া গেল। কাজেই জিহাদের নির্দেশ কিছু কাল পরে আসলেই ভালো হত। তাদের এ আকাঙ্ক্ষার অর্থ এ নয় যে, আল্লাহ তাআলার আদেশের উপর তাদের কিছুমাত্রও আপত্তি ছিল; এটা ছিল কেবলই এক মানবীয় চাহিদা। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান সাহাবীদের মর্যাদা বহু ঊর্ধ্বে। পার্থিব কোন আরাম ও স্বস্তিকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া যে, তার কারণে আখিরাতের উপকারিতাকে সামান্য কিছু কালের জন্য হলেও পিছিয়ে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা হবে, এটা অন্তত তাদের পক্ষে শোভা পায় না।