আন নিসা

সূরা নং: ৪, আয়াত নং: ৪৬

তাফসীর
مِنَ الَّذِیۡنَ ہَادُوۡا یُحَرِّفُوۡنَ الۡکَلِمَ عَنۡ مَّوَاضِعِہٖ وَیَقُوۡلُوۡنَ سَمِعۡنَا وَعَصَیۡنَا وَاسۡمَعۡ غَیۡرَ مُسۡمَعٍ وَّرَاعِنَا لَـیًّۢا بِاَلۡسِنَتِہِمۡ وَطَعۡنًا فِی الدِّیۡنِ ؕ وَلَوۡ اَنَّہُمۡ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَاَطَعۡنَا وَاسۡمَعۡ وَانۡظُرۡنَا لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ وَاَقۡوَمَ ۙ وَلٰکِنۡ لَّعَنَہُمُ اللّٰہُ بِکُفۡرِہِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُوۡنَ اِلَّا قَلِیۡلًا

উচ্চারণ

মিনাল্লাযীনা হা-দূইউহাররিফূনাল কালিমা ‘আম্মাওয়া-দি‘ইহী ওয়া ইয়াকূলূনা ছামি‘নাওয়া আসাইনা-ওয়াছমা‘ গাইরা মুছমা‘ইওঁ ওয়ারা‘ইনা-লাইইয়াম বিআলছিনাতিহিম ওয়া তা‘নান ফিদ্দীনি ওয়া লাও আন্নাহুম কা-লূছামি‘না ওয়া আতা‘না-ওয়াছমা‘ ওয়ানজু রনালাকা-না খাইরাল্লাহুম ওয়া আকওয়ামা ওয়ালা-কিল লা‘আনাহুমুল্লা-হু বিকুফরিহিম ফালা- ইউ’মিনূনা ইল্লা-কালীলা-।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

ইয়াহুদীদের মধ্যে (কিছু লোক এমন আছে), যারা (তাওরাতের) শব্দাবলীকে তার প্রকৃত স্থান থেকে সরিয়ে দেয় এবং নিজেদের জিহ্বা বাঁকিয়ে ও দীনকে নিন্দা করে বলে, ‘সামি‘না ওয়া আসায়না’ এবং ‘ইসমা’ গায়রা মুসমা‘ইন’ এবং ‘রা‘ইনা’, অথচ তারা যদি বলত ‘সামি‘না ওয়া আতা‘না’ এবং ‘ইসমা’ ওয়ানজুরনা’ তবে সেটাই তাদের পক্ষে উত্তম ও সঠিক পন্থা হত। ৩৯ বস্তুত তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ তাদের প্রতি লানত করেছেন। সুতরাং অল্প সংখ্যক লোক ছাড়া তারা ঈমান আনবে না।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৩৯. এ আয়াতে ইয়াহুদীদের দু’টি দুষ্কর্মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি দুষ্কর্ম তো এই যে, তারা তাওরাতের শব্দাবলীকে তার প্রকৃত স্থান থেকে সরিয়ে তার মধ্যে শাব্দিক বা অর্থগত বিকৃতি সাধন করত। অর্থাৎ কখনও তার শব্দকেই অন্য কোন শব্দ দ্বারা বদলে দিত এবং কখনও শব্দের উপর ভুল অর্থ আরোপ করে মনগড়া ব্যাখ্যা দান করত। তাদের দ্বিতীয় দুষ্কর্ম ছিল এই যে, তারা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসত তখন এমন অস্পষ্ট ও কপটতাপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করত, যার বাহ্যিক অর্থ দুষণীয় হত না, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তারা এমন মন্দ অর্থ বোঝাতো, যা সেই ভাষার ভেতর প্রচ্ছন্ন থাকত। কুরআনমাজীদ এ আয়াতে তার তিনটি দৃষ্টান্ত পেশ করেছে। (ক) তারা বলত سمعناو عصينا (সামি‘না ওয়া ‘আসাইনা)-এর অর্থ ‘আমরা আপনার কথা শুনলাম এবং অবাধ্যতা করলাম’। তারা এর ব্যাখ্যা করত যে, আমরা আপনার কথা শুনলাম এবং আপনার বিরোধীদের অবাধ্যতা করলাম। প্রকৃতপক্ষে তারা বোঝাতে চাইত, আমরা আপনার কথা শুনলাম ঠিক, কিন্তু তা মানলামই না। (খ) এমনিভাবে তারা বলত, اسمع غيرمسمع (ইসমা‘ গায়রা মুসমা‘ইন)-এর শাব্দিক অর্থ হল ‘আপনি আমাদের কথা শুনুন, আল্লাহ করুন, আপনাকে যেন কোন কথা শোনানো না হয়। বাহ্যত তারা যেন এর দ্বারা দু‘আ করছে যে, আপনাকে যেন কোন অপ্রীতিকর কথা শুনতে না হয়। কিন্তু আসলে তারা বোঝাতে চাচ্ছিল, আল্লাহ করুন আপনাকে যেন প্রীতিকর কোন কথা শোনানো না হয়। (গ) তাদের তৃতীয় ব্যবহৃত শব্দ ছিল راعنا (রা‘ইনা), আরবীতে এর অর্থ ‘আমাদের প্রতি লক্ষ রাখুন’। কিন্তু হিব্রু ভাষায় এটা ছিল একটি গালি এবং তারা সেটাই বোঝাতে চাইত।
﴾﴿