অতঃপর আমি যখন সুলায়মানের মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিলাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যু বিষয়ে জানাল কেবল মাটির পোকা, যারা তার লাঠি খাচ্ছিল। ১০ সুতরাং যখন সে পড়ে গেল তখন জিনরা বুঝতে পারল, তারা যদি গায়েবের জ্ঞান রাখত তবে এই লাঞ্ছনাকর কষ্টে পড়ে থাকত না।
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
১০. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কার্যে জিনদেরকে নিযুক্ত করেছিলেন। সে জিনগুলো ছিল অত্যন্ত দুষ্টপ্রকৃতির ও অবাধ্য। তারা কেবল হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের তত্ত্বাবধানেই কাজ করত। অন্য কাউকে মানত না। তাই আশঙ্কা ছিল হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের জীবদ্দশায় যদি বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কার্য শেষ না হয়, তবে পরে এ কাজ সম্পূর্ণ করা কঠিন হয়ে যাবে। কেননা জিনরা কাজ ছেড়ে দেবে। অথচ সুলাইমান আলাইহিস সালামের আয়ুও শেষ হয়ে গিয়েছিল। কাজেই তিনি এই কৌশল অবলম্বন করলেন যে, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে তিনি জিনদের চোখের সামনে নিজ ইবাদতখানায় একটি লাঠিতে ভর করে দাঁড়িয়ে গেলেন, যাতে তারা মনে করে তিনি যথারীতি তদারকি করছেন। তাঁর ইবাদতখানা ছিল স্বচ্ছ কাঁচনির্মিত। বাইরে থেকে সব দেখা যেত। দাঁড়ানো অবস্থায়ই তাঁর ওফাত হয়ে গেল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাকে লাঠিতে ভররত অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখলেন। জিনরা মনে করছিল তিনি জীবিতই আছেন এবং তদারকি করছেন। কাজেই তারা একটানা কাজ করতে থাকল এবং নির্মাণকার্য এক সময় সম্পূর্ণ হয়ে গেল। ইতোমধ্যে আল্লাহ তাআলা তাঁর লাঠিতে উইপোকা লাগিয়ে দিলেন। তারা লাঠিটি খেতে থাকল। ফলে সেটি দুর্বল হয়ে ভেঙ্গে গেল এবং সুলাইমান আলাইহিস সালামের দেহ মাটিতে পড়ে গেল। তখন জিনরা উপলব্ধি করতে পারল, তারা যে নিজেদেরকে অদৃশ্যের জান্তা মনে করত তা কত বড় ভুল ছিল! গায়েব জানলে তাদেরকে এতদিন পর্যন্ত ভুলের মধ্যে থেকে নির্মাণকার্যের কষ্ট পোহাতে হত না।