یَعۡلَمُوۡنَ ظَاہِرًا مِّنَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚۖ وَہُمۡ عَنِ الۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ غٰفِلُوۡنَ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৩. ‘তারা পার্থিব জীবনের প্রকাশ্য দিকটাই জানে’ অর্থাৎ পার্থিব জীবনকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য যা কিছু দরকার, যথা কৃষি কার্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, গৃহ-নির্মাণ, রান্না-বান্না, পোশাক তৈরি, ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, এসব কিছুর আধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তিকরণ এবং সেই লক্ষ্যে কল-কারখানা তৈরি ও যন্ত্রপাতি আবিষ্কার ইত্যাদি বিষয়গুলো তারা জানে এবং নিজেদের জ্ঞান-বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার আলোকে এসবই আঞ্জাম দিতে পারে। কিন্তু বলা বাহুল্য এসবই ইহজীবনের প্রকাশ্য দিক তথা খোলস মাত্র; সারবস্তু নয়। সারবস্তু হল এর ভেতর দিয়ে সৃষ্টিকর্তার পরিচয় লাভ করা এবং তিনি কী উদ্দেশ্যে মানুষসহ গোটা মহাজগত সৃষ্টি করেছেন তা উপলব্ধি করা। সৃষ্টি নিচয়ের মধ্যে লক্ষ্য করলে উপলব্ধি করা যায় জগতের একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং এ জগত চিরস্থায়ী নয়। এর একটা পরিণতি আছে। ইহজগতে মানুষ প্রেরণ দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে পরীক্ষা করা, সে জগতের বস্তুনিচয়ের মাঝে নিজ জীবনকে কিভাবে পরিচালনা করে। সে কি এই ইহজীবনকেই প্রকৃত জীবন মনে করে তার ভোগ-উপভোগেই নিমজ্জিত থাকে, না এর পরিণতি তথা আখিরাতের জীবনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে সেই অনুযায়ী ইহজীবন নির্বাহ করে। আয়াতের শেষবাক্যে জানানো হয়েছে যে, অবিশ্বাসীগণ পরিণামদর্শী নয়। তারা ইহজীবনে মত্ত থেকে আখিরাত সম্পর্কে গাফিল হয়ে আছে। অর্থাৎ শাঁসের বদলে খোসাতেই তারা সন্তুষ্ট। -অনুবাদক