আল বাকারা

সূরা নং: ২, আয়াত নং: ১১৫

তাফসীর
وَلِلّٰہِ الۡمَشۡرِقُ وَالۡمَغۡرِبُ ٭ فَاَیۡنَمَا تُوَلُّوۡا فَثَمَّ وَجۡہُ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

উচ্চারণ

ওয়া লিল্লা-হিল মাশরিকু ওয়াল মাগরিবু ফাআইনামা-তুওয়াললূ ফাছাম্মা ওয়াজহুল্লা-হি ইন্নাল্লা-হা ওয়া-ছি‘উন ‘আলীম।

অর্থ

মুফতী তাকী উসমানী

পূর্ব ও পশ্চিম সব আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা যে দিকেই মুখ ফেরাবে সেটা আল্লাহরই দিক। ৮২ নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বব্যাপী ও সর্বজ্ঞ।

তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী

৮২. উপরে যে তিনটি সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে কিবলা নিয়েও বিরোধ ছিল। কিতাবীগণ বায়তুল মুকাদ্দাসকে কিবলা মনে করত আর মুশরিকগণ বাইতুল্লাহকে। মুসলিমগণও বাইতুল্লাহর দিকে ফিরে সালাত আদায় করত আর এটা ইয়াহুদীদের অপছন্দ ছিল। মুসলিমদেরকে একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা বানানোর হুকুম দেওয়া হলে ইয়াহুদীরা এই বলে সন্তোষ প্রকাশ করল যে, দেখ মুসলিমগণ আমাদের কথা মানতে বাধ্য হয়ে গেছে। তারপর আবার বাইতুল্লাহকে চূড়ান্তরূপে কিবলা বানিয়ে দেওয়া হল। দ্বিতীয় পারার শুরুতে ইনশাআল্লাহ এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আসবে। এ আয়াত দৃশ্যত সেই সময় নাযিল হয়েছিল যখন মুসলিমগণ বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে সালাত আদায় করত। জানানো উদ্দেশ্য, কোনও দিকই সত্তাগতভাবে কোনও রকম মর্যাদা ও পবিত্রতার ধারক নয়। পূর্ব ও পশ্চিম সবই আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁরই হুকুম বরদার, আল্লাহ তাআলা কোনও এক দিকে সীমাবদ্ধ নন। তিনি সর্বত্র উপস্থিত। সুতরাং তিনি যে দিকেই মুখ করার হুকুম দেন, বান্দার কাজ সে হুকুম তামিল করা। এ কারণেই কোনও লোক যদি এমন স্থানে থাকে, যেখানে কিবলা ঠিক কোন দিকে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না, সে ব্যক্তি নিজ অনুমানের ভিত্তিতে যে দিককে কিবলা মনে করে সালাত আদায় করবে তার সালাত সহীহ হয়ে যাবে। এমনকি পরে যদি জানা যায় সে যে দিকে ফিরে সালাত আদায় করেছে কিবলা সে দিকে ছিল না, তবু তার সালাত পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন নেই। কেননা সে ব্যক্তি নিজ সাধ্য অনুযায়ী আল্লাহ তাআলার হুকুম তামিল করেছে। বস্তুত কোনও স্থান বা কোনও দিক যে মর্যাদাসম্পন্ন হয়, তা আল্লাহ তাআলার হুকুমের কারণেই হয়। সুতরাং কিবলা নির্দিষ্টকরণের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা যদি নিজ হুকুম পরিবর্তন করে থাকেন, তবে তাতে কোনও সম্প্রদায়ের হার-জিতের কোনও প্রশ্ন নেই। এ রদ-বদল মূলত এ বিষয়টা স্পষ্ট করার জন্যই করা হচ্ছে যে, কোনও দিকই সত্তাগতভাবে পবিত্র ও কাঙ্খিত নয়। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তাআলার হুকুম পালন। ভবিষ্যতে আল্লাহ তাআলা যদি পুনরায় বাইতুল্লাহর দিকে ফেরার হুকুম দেন, তবে তা বিস্ময় বা আপত্তির কোনও কারণ হওয়া উচিত নয়।
﴾﴿