وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللّٰہِ اَنۡ یُّذۡکَرَ فِیۡہَا اسۡمُہٗ وَسَعٰی فِیۡ خَرَابِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ مَا کَانَ لَہُمۡ اَنۡ یَّدۡخُلُوۡہَاۤ اِلَّا خَآئِفِیۡنَ ۬ؕ لَہُمۡ فِی الدُّنۡیَا خِزۡیٌ وَّلَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ عَذَابٌ عَظِیۡمٌ
তাফসীরে মুফতি তাকি উসমানী
৮১. পূর্বে ইয়াহুদী, নাসারা ও আরব মুশরিক- এ তিনও সম্প্রদায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ তিনও সম্প্রদায় কোনও না কোনও কালে এবং কোনও না কোনও রূপে আল্লাহ তাআলার ইবাদতখানাসমূহের মর্যাদা নষ্ট করেছে। উদাহরণত খ্রিস্টান সম্প্রদায় বাদশাহ তায়তূসের (Titus খৃ. ৩৯-৮১) আমলে বায়তুল মুকাদ্দাসের উপর আক্রমণ করে তাতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। বাদশাহ আবরাহা, যে কিনা নিজেকে একজন খ্রিস্টান বলে দাবী করত, বাইতুল্লাহর উপর হামলা চালিয়ে তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়েছে। মক্কার মুশরিকগণ মুসলিমদেরকে মসজিদুল হারামে সালাত আদায়ে বাধা প্রদান করত। আর ইয়াহুদীরা বাইতুল্লাহর পবিত্রতা অস্বীকার করে কার্যত মানুষকে তার অভিমুখী হওয়া থেকে নিবৃত্ত করেছিল। কুরআন মাজীদ বলছে, এক দিকে তো এসব সম্প্রদায়ের প্রত্যেকটির দাবী হচ্ছে, কেবল তারাই জান্নাতে প্রবেশের হকদার, অন্যদিকে তাদের অবস্থা এই যে, তারা আল্লাহর ইবাদতে বাধা প্রদান কিংবা ইবাদতখানাসমূহকে ধ্বংস করার তৎপরতায় লিপ্ত। এ আয়াতের পরবর্তী বাক্যটি তাৎপর্যপূর্ণ। তার বাহ্যিক অর্থ তো এই যে, তাদের তো উচিত ছিল আল্লাহর ঘরে অত্যন্ত বিনীত ও ভীত অবস্থায় প্রবেশ করা; দর্পিতভাবে তাকে বিরান করা বা মানুষকে তার ভেতর ইবাদত করতে বাধা দেওয়া কিছুতেই সমীচীন ছিল না। এতদসঙ্গে এর ভেতর এই সূক্ষ্ম ইশারাও থাকতে পারে যে, অচিরেই সে দিন আসবে, যখন এই অহংকারী লোকেরা, যারা মানুষকে আল্লাহর ঘরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, সত্যপন্থীদের সামনে সম্পূর্ণরূপে পরাভূত হবে। এমনকি সত্যপন্থীদের যেসব স্থানে প্রবেশে বাধা দেয়, সে সকল স্থানে তাদের নিজেদেরই ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় প্রবেশ করতে হবে। সুতরাং মক্কা বিজয়ের পর মক্কাবাসী কাফিরদের এ রকম পরিস্থিতিরই সম্মুখীন হতে হয়েছিল।