শ্রমজীবী মানুষের জন্য হিফজুল কুরআনের পদ্ধতি
প্রশ্নঃ ৯৭১৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কেমন আছেন হুজুর আমি পবিত্র কোরআন মুখস্ত করতে চাই। কিন্ত আমি একজোন শ্রমিক কাজ না করলেও তো চলে না। পরিবার পরিজনের জন্য সকালে কাজে যাই আবার সন্ধায় ফিরে আসি। এখন আমার করোণীয় কি? দয়া কেরে বলুন।
২০ জানুয়ারী, ২০২৫
Abu Dhabi, United Arab Emirates
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় ভাই আল্লাহ তায়ালা আপনার নেক তামান্ন পুরণ করুন। আপনাকে একজন হাফেজ হিসেবে কবুল করুন। আপনি চেষ্ট ও দুয়া অব্যহত রাখুন।
যেকোনো জিনিষই মুখস্ত করার জন্য পড়ার বিকল্প নেই । তাই আপনি রুটিনমাফিক পড়তে থাকুন। যদি আপনার তেলাওয়াত সহিহ না থাকে তাহলে আগে তেলাওয়াত সহিহ করার প্রতি মনোনিবেশ করুন তারপর হিফজের প্রতি মনযোগী হোন।
এর জন্য আপনি নিম্নোক্ত পরমর্শগুলো গ্রহন করতে পারেন।
(১) প্রতিদিন দুই-তিন আয়াত (আয়াতের আকার হিসেবে) করে মুখস্ত করুন। মুখস্তের সবচে’ উত্তম সময় হলো,ফজরের আগে। ওই সময় মস্তিস্ক ঠান্ড যা মুখস্তের জন্য বড়ই জরুরী। সম্ভব হলে আপনি ফজরের আগে অন্তত আধাঘন্টা কুরআন মুখস্ত করুন। তারপর সারা দিন কাজ করার সময় সম্ভব হলে হাতে কাজ করুন আর মুখে তেলাওয়াত করতে থাকুন।
(২) যদি মাগরিবের আগে কাজ থেকে ফিরতে পারেন তাহলে মাগরিবের পরেও কিছু সময় দিন।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কিছু সময় কুরআনের জন্য বরাদ্দ করুন। সবকিছু মিস হলেও যেন সাপ্তাহিক তেলাওয়াত মিস হয়ে না যায়।
(৩) প্রতিদিন সম্ভব না হলে, আন্তত সপ্তাহে একদিন হলেও পুরো সপ্তাহের মুখস্ত আয়াত/সুরাগুলো শুদ্ধ তিলাওয়াতকারী আলেম বা কোনো ইমামা - মুয়াজ্জিনকে শোনাবেন। হিফজকৃত পড়া কাউকে না শোনালে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কাজেই যেকোনো ভাবেই কাউকে শোনাতে হবে।
(৪) ভালো কোনো কারীর হদর তেলাওয়াতে আপনার
হিফজকৃত অংশটুকু বারবার শোনতে থাকুন। বারবার শোনতে থাকাও মুখস্তের জন্য বড় সহায়ক।
(৫) যথাসম্ভব নামাজে কিছুকিছু করে তেলাওয়াত করতে চেষ্টা করুন। কেননা নামাজের তেলাওয়াত সমচে বেশী মুখস্ত থাকে।
(৬) সময় নষ্ট হয় এমন যেকোনো বিষয়, বস্তু এড়িয়ে চলবেন। যেমন দোকানে আড্ডা দেওয়া, গল্প-গুজব করা বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহার করা।
(৭) অতিরিক্ত রাগ পরিহার করবেন। কেননা যারা অতিরিক্ত রাগ করেন তারা অনেক কিছু মুখস্ত করতে এবং স্মরণ রাখতে পারেন না।
সর্বোপরি গুনাহ বর্জন করতঃ আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা, দোয়া ও সাহায্য কামনা করবেন। কারণ গুনাহ বর্জন করা এবং আল্লাহ তায়ালার সাহায্য ছাড়া এই বিশাল গ্রণ্থ হিফজ করা সম্ভব নয়।
আপনি অদম্য চেষ্ট চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ সফল হবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন,
أَحَبُّ الْاَعْمَالِ إِلَى اللهِ تَعَالٰى أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ
‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যা সর্বদা করা হয় যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’ (সহিহ মুসলিম : ১৮৬৬)
আল্লাহ তায়ালাই উত্তম তাওফিকদাতা।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন:
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১