আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নারীদের জন্য কোন পীরের মুরিদ হওয়ার বিধান

প্রশ্নঃ ৮৪৫০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম, পরশু রাতে হঠাৎ করেই আমার মনে হতে থাকে আর বাঁচব না। গতকাল সারাদিনও তাই অবস্থা খারাপ থাকে। রাতে একজন হাক্কানী পীর, যার কাছে আমার ভাই মুরিদ হয়েছে তিনি আসেন এবং আমাকে কিছু নসীহাহ করেন। তিনিই বলেন, একজন পীরের মুরিদ হলে ইবাদতের প্রতি আরো বেশি ভালোবাসা জন্মায়। তিনি আমাকে কিছু জিকির পড়ার জন্য দেন। এরপর আমি তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করি। আমি পুরো সময়ই পর্দায় ছিলাম। তিনিই আগেই আমার ভাই আর মা কে বলছিলেন আমার সাথে জ্বিন আছে। তাই প্রায় এক বছরের মত আমি অসুস্থ। আমার প্রশ্নঃ১. মহিলাদের জন্য কোন পীরের মুরিদ হওয়ার বিধান কি?২. আমার শারীরিক বা মানসিক কোন অবস্থাই ঠিক নেই। ওনার কথামতো জিকির করছি। এগুলো আগে থেকেই জানি। পীরের মুরিদ হওয়া কি আত্মিক উন্নতি করতে পারে? ৩. ইসলাম পীর সম্পর্কে কি বলে? তাদের কতটুকু মেনে চলতে হবে? বিস্তারিত জানাবেন

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
টঙ্গী

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মূল উদ্দেশ্য হল আত্মার পরিশুদ্ধায়ন। সব কাজ আল্লাহর জন্য করার মানসিকতা তৈরী। মন থেকে দুনিয়ার মোহাব্বত দূরিকরণ এবং আখেরাতের মোহাব্বত দিলে বসানো। মন থেকে সকল প্রকার আখলাকে রাজিলা তথা মন্দ স্বভাব যেমন হিংসা, বিদ্বেষ, দুনিয়ার লোভ, বংশীয় গৌরব, অহংকার, কৃপণতা ইত্যাদি দূরা। সেই সাথে আখলাকে হামিদা যেমন জিকির, সত্যবাদীতা, সততা, ন্যায়নিষ্ঠতা, ইবাদতে আগ্রহী, আখেরাতের মোহাব্বত, আল্লাহ ও রাসূলের মোহাব্বত, সুন্নতের পাবন্দী ইত্যাদি ধারণ করা জরুরী বিষয়।

সহজ কথায় বললে আত্মাকে পরিশুদ্ধায়ন করা আবশ্যক বিষয়।

এ পরিশুদ্ধায়ন যেভাবে অর্জিত হয় সেভাবেই অর্জিত করবে। যদি কোন হক্কানী, সুন্নতের পাবন্দ, শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী শায়েখের কাছে বাইয়াত হওয়া ছাড়াই এ আত্মশুদ্ধি অর্জিত হয়ে যায়, তাহলে কারো বাইয়াত হওয়ার দরকার নেই। এটি কোন জরুরী বিষয় নয়।

জরুরী বিষয় ছিল আত্মশুদ্ধি। যা অর্জিত হয়ে গেছে। বাইয়াত হওয়া জরুরী বিষয় নয়।

কিন্তু যদি নিজে নিজে তা অর্জিত না হয় তাহলে কোন হক্কানী, সুন্নতের পাবন্দ, শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী শায়েখের কাছে বাইয়াত হয়ে এ মেহনত করবে।

আর স্বাভাবিকভাবে ডাক্তারের সাহচর্য ছাড়া যেমন পূর্ণ ডাক্তার হওয়া যায় না, ইঞ্জিনিয়ারের সাহচর্য ছাড়া ভাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায় না, উস্তাদের নির্দেশনা ছাড়া কোন বিষয়ে পূর্ণ বুৎপত্তি অর্জিত হয় না, তেমনি আল্লাহ ওয়ালার সোহবত ও সাহচর্য এবং পরামর্শ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ আল্লাহ ওয়ালা হওয়া যায় না। তাই যাদের এমনিতে আত্মশুদ্ধি না হয়, তারা হক্কানী কোন পীর মাশায়েখের মুরীদ হয়ে এ মেহনত করবে।

তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কিছুতেই যেন পীর বা মুর্শীদকে শরীয়ত প্রণেতা নির্দিষ্ট করে না বসে। আর উক্ত পীরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দ হতে হবে। হতে হবে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী। বিদআত, রুসুমাত, কুসংস্কার, মাজার, কবরপূজা, ব্যক্তিপুজা, মিলাদ কিয়ামধারী বা এজাতীয় বিদআতি কাজে রত না হতে হবে। পূর্ণাঙ্গ শরীয়তের অনুসারী হওয়া আবশ্যক।

هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ [٦٢:٢

তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত। {সূরা জুমআ-২}

قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ [٨٧:١٤

নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে,যে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। {সূরা আলা-১৪}

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا [٩١:٩

যে নিজেকে শুদ্ধ করে,সেই সফলকাম হয়। {সূরা শামস-৯}

মহিলাদের জন্য হক্কানী ও বৃদ্ধ-মুরুব্বী পীরের মুরিদ হওয়া জায়েয আছে, তবে পর্দার ফরয বিধান যেন কোনভাবেই লঙ্ঘন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে।
ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১৪৫২৫
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
কেমন আছেন?
পুরো লেখাটুকু পড়ার অনুরোধ থাকলো, অনেক আশা নিয়ে পুরো টুকু লিখছি...
আমি একজন সাধারন ছাত্র। আলহামদুলিল্লাহ, আল্ল-হ তায়ালা আমাকে হেদায়েত দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ আমাকে ছাত্র শিবির এর মাধমে হেদায়েত দেন এবং আমি আল্লাহর সকল মেনে চলার চেষ্টা করি ছাত্র শিবির সংগঠন করার মাধমে। শিবির এ থেকে আমি ভালো সংগ পাই যা অন্য কোথাও পাইনা, এদের সাথে মেশার মাধমে সবসময় আল্লাহর কথা মনে হয়,আল্লাহর ভয় জন্মে। কিন্তু, আমার পরিবার বাধা দেয়, তারা আমাকে বলে এইসব রাজনিতি না করতে, হক কথা বলা থেকে বিরত থাকতে ইত্যাদি, এমনকি তারা আমাকে অনেক বড় বড় গুনাহ (ফুফাত, খালাত বোনদের সাথে দেখা সাক্ষাত করা, হাসি তামাশা) করতে বলে,,তারা বলে এইদুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এইগুলা একটু করতে হবে- সামাজিকতা বজায় রাখতে হবে ।অথচ,আমি একজন সাধারন লাইনের ছাত্র বিধায় জানি আজ তরুণ এর কি অবস্থা, তারা সবাই গেম, যেনা নিয়ে ব্যাস্ত, কারন আমি একসময় এই পথে ছিলাম। তাই আমার ইচ্ছা, শিবির এ থেকে আমি মানুষ কে হেদায়াতের পথে আনার চেষ্টা করতে চায়। আল্লাহর কছম, আমার কোন রাজনিতি বা ক্ষমতার লোভ দুনিয়াবি কারনে নেই, আছে শুধু ন্যায়বিচার-ইন্সাফ প্রতিষ্ঠার জন্য।
{> আমি ১ বছর যাবত জামায়াত-শিবির নিয়ে অনেক ঘাটছি, ভালো খারাপ দুওটাই আছে, তারা এমন একটি লক্ষে কাজ করে - যে বড় কোন ভুল ভাংগার জন্য ছোট খাট ভুল হলে সমস্যা নাই---(1)
আমার প্রশ্ন=[১] আমি আমার পরিবারের কথা মানলে ভাল কোন সংগি পায় না, নিজেকে সংযত রাখার ব্যাপার অনেক কঠিন, তাহলে কি আমি সংগঠন ছেড়ে দিব?
[২]৷ (1) এর আলোকে সংগঠন সম্পর্কে কি ধারনা?
[৩] সাধারন ভাবে সংগঠন সম্পর্কে ভালো ও খারাপ দিক কি কি আপনার?
[৪] আমাদের উপর ইস্লামের দাওয়াত দেওয়াকে ফরজ করা হয়েছে, হক কথা বলা ফরজ,,তাই আমি সংগঠনে থাকলে আল্লাহর রহমতে বাতিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হইতে পারি, অনেক দ্রুত দাওয়াতি কাজ করতে পারি,,, আমার আব্বু আম্মুর ইচ্ছা আমি পড়াশোনা করে সমাজে ভালো পর্যায়ে যাব, কিন্তু আগে আমি আব্বু আম্মুর এই কথা শুনতাম না, অবাধ্য ছিলাম,, কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে শিবির এর ভাইদের সাথে থাকার তাওফিক দিছেন, যারা পড়াশোনা সম্পর্কে অনেক উতসাহ দেই এমনকি তাদের একপর্যায় এ গেলে,- ৫ঃ৩০ ঘন্টা পড়াশোনা করা বাধ্যতামূলক। উপরোক্ত ও এই কারনে আমার শিবির ভালো লাগে, তাই আমিও এদের মধ্যে থেকে অন্যদের আলোরপথে ফেরাতে চায়, আমার এই সিদ্ধান্ত কি ভুল? যদি হয় তাহলে কেন ভুল?( আমি সুধারাতে চাই ও অন্যদের এ ভুল ধারনা ভাংতে চেষ্টা করতে চাই)
★স্যার, আমু শুধু ভালো পথে থাকতে চাই, হোক শিবির হোক অন্য কিছু
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৮ মার্চ, ২০২২
ফুলতলা
#১৪২৮৮
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
ভাইয়া আমি ১৫ বছর বয়সী এক পথভ্রষ্ট ছেলে, আগে আল্লাহর আনুগত্য অনেক ছিল, জানতাম না বিয়ের আগের সম্পর্ক হারাম ভাবতাম যে শুধু ধরা ছোঁয়াই বোধ হয় গুনাহ, জেনেরাল ছাত্র বলে, সে রাগ হতো, আল্লাহ কে দোষারূপ করতাম, নামাজ ছাড়লাম, পরে বুঝতে পেরেও যে এটি হারাম, তাকে ছাড়তে পারিনি, নেশা করার পর যে নেশা খারাপ জানলাম ছাড়তে কষ্ট তো নিশ্চয়ই তবে চেষ্টা করি, আল্লাহর পথে একবার ফিরি, আবার ঘুরে যাই, আবার ফিরি আবার ঘুরে যাই, এভাবে চলতে থাকে, চোখের জেনাহে লিপ্ত হই, এই ছোট্ট বয়সে কত ধরনের ভয়ানক পাপ করি, আমি বলতেও ভয় করি, কাউকে শেয়ার ও করা যায়না, যদি আল্লাহ আরও ক্রুদ্ধ হন, আপনাকে বলাও যাবেনা আরও নাজানি কত পাপ করি, ধর্মে ফিরি আবার হারাই আবার ফিরি আবার হারাই, ভাই প্রকাশ্যে অগণিত পাপ করি, আমার অজ্ঞতার কারণে অন্যের কষ্টের কারণ হই, কত জুম্মা মিস করি, চুরি করি মিথ্যে বলি পাপে প্রেরণা দেই ঠকাই। তবে শেষ পর্যন্ত, হারাম সম্পর্ক শেষ করি, গানবাজনা ছাড়ারও চেষ্টাও করতেছি, সকল অসৎ সঙ্গ ত্যাগেরও চেষ্টা করছি তবে দুনিয়ার জীবন যেন আমায় ধাওয়া করছে এমন আর আগের মত করতে পারছিনা বোধ হয় মহান রব মহর মেরে দিয়েছেন অন্তরে, নামাজ পড়তেছি আর পড়তেছি, কিন্তু কেনো যেনো ইমান টা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে, দুনিয়ার মহ আমায় পাগল করেছে কিছুই বুঝতেছিনা নাও এদিক নাও সেদিক। খুবই দিশেহারা আমি হুজুর, আমার মনে হয় আবার পাপ যখন আমার সামনে আসবে আমি নিজেকে হয়তো, ধরে রাখতে পারবনা, কিছুই ভাল্লাগেনা হুজুর, রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও লজ্জাজনক হয়ে গিয়েছে, আখিরি জবানা, আমি আমার জন্যে দুআ করেন হুজুর, বিশ্বাস, কোথায়? কিভাবে। রব কি উনার মহর আমার অন্তর থেকে আর তুলে নিবেন নাহ? কখনোই না? রবের কাছে জান্নাত নহে ঈমান ভিক্ষে চাই, তবে হয়তো কিছু বিষয় মুছে ফেলা যায়না। আমার জন্যে দুআ কইরেন হুজুর আর দয়া করে বলবেন আমি কিকরে আবার নিজের অন্তঃস্থ নফস কে হত্যা করবো কি করে আবার ঈমান সম্পূর্ণ করবো, কি করে অবিশ্বাসী মনকে সান্তনা দিবো? অনেক দিশেহারা হয়ে আপনাদের শরণাপন্ন হলাম, প্রশ্ন বড় আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। জাজাকাল্লাহ খাইরান
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
ঢাকা