প্রশ্নঃ ৬৮৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্নঃ স্ত্রীর বীর্য বাহির হওয়ার আগে যদি স্বামীর বীর্য বাহির হয়ে যায়,এবং স্ত্রীর তৃপ্তিও মেটে নাই,তাহলে কি স্বামী তার হাত দিয়ে স্ত্রীর যোনি নাড়াচাড়া দিয়ে বা যোনির ভিতরে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে স্ত্রীর বীর্য বাহির করতে পারবে ? এবং উত্তরে স্বামীর ক্ষেত্রেও একই হুকুম হবে ?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পোশাক স্বরূপ। একজন অন্যজনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
কয়েকটি বিষয় বাদ দিয়ে একেঅপর থেকে নিজেদের পছন্দমতো উপভোগ করতে পারবে।
বর্জনীয় বিষয়গুলো : হায়েয-নিফাসের সময় মিলন, পায়ুপথে মিলন, নিজেদের মধ্যে একান্ত বিষয়াদি কারো সঙ্গে শেয়ার করা হারাম।
স্বামী-স্ত্রীর মিলন বিষয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
نِسَآؤُکُمۡ حَرۡثٌ لَّکُمۡ ۪ فَاۡتُوۡا حَرۡثَکُمۡ اَنّٰی شِئۡتُمۡ ۫ وَقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ ؕ وَاتَّقُوا اللّٰہَ وَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ مُّلٰقُوۡہُ ؕ وَبَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
তোমাদের স্ত্রীগণ তােমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। সুতরাং নিজেদেরশস্যক্ষেত্রে যেখান থেকে ইচ্ছা যাও এবং নিজের জন্য (উৎকৃষ্ট কর্ম) সম্মুখে প্রেরণ কর এবং আল্লাহকে ভয় করে চলাে আর জেনে রেখ, তােমরা অবশ্যই তার সঙ্গে মিলিত হবে এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ শােনাও।
—আল বাকারা - ২২৩
তাফসীরঃ
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা এক তাৎপর্যপূর্ণ রূপকের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর আনন্দঘন মুহূর্ত সম্পর্কে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। প্রথমত স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, স্বামী স্ত্রীর এই মিলন কেবল সুখ ভােগের উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত নয়; বরং একে মানব প্রজন্মের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যম মনে করা উচিত। একজন কৃষক যেমন নিজ শস্যক্ষেত্রে বীজ বপণ করে এবং তাতে তার উদ্দেশ্য থাকে ফসল ফলানাে, তেমনিভাবে এ কাজও মূলত মানব-প্রজন্মকে স্থায়ী করার একটি মাধ্যম। দ্বিতীয়ত জানানাে হয়েছে যে, এটাই যখন মিলনের আসল উদ্দেশ্য তখন তা নারী দেহের সেই অংশেই হওয়া উচিত, যা এর জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। পেছনের যে অংশকে এ কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়নি, স্বভাব-প্রকৃতির বিপরীত তাকে বিকৃত যৌনাচারের জন্য ব্যবহার করা সম্পূর্ণ হারাম। তৃতীয় বিষয় এই জানানাে হয়েছে যে, নারীদেহের সামনের যে অংশকে এ কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তা ব্যবহার করার জন্য পন্থা যে-কোনওটাই অবলম্বন করা যেতে পারে। ইয়াহুদীদের ধারণা ছিল, সে অঙ্গকে ব্যবহার করার জন্য কেবল একটা পদ্ধতিই জায়েয অর্থাৎ সম্মুখ দিক থেকে ব্যবহার করা। মিলন যদি সামনের অঙ্গেই হয়, কিন্তু তা করা হয় পেছন দিক থেকে, তবে তাদের মতে তা জায়েয ছিল না। তাদের ধারণা ছিল, তাতে ট্যারা চোখের সন্তান জন্ম নেয়। এ আয়াত তাদের সে ভুল ধারণা খণ্ডন করেছে।
ব্যাখ্যাঃ
ইয়াহুদীরা বলছিল যে, যদি কেউ স্বীয় স্ত্রীর সাথে এরূপ সঙ্গম করে যে, স্ত্রীর পৃষ্ঠ পুরুষের সম্মুখভাগে থাকে, তবে সন্তান বক্র চোখা জন্ম হয়। একদা হযরত ওমর (রাজিঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে এ জিজ্ঞাস করলে এ আয়াত নাযিল হয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন