আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৬২৩০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি প্রশ্ন করার জন্য নয় জানার জন্য এবং মানার জন্য জানতে ইচ্ছুক যে, কোনে একদিন সময় মতো কোনে ওয়াক্তের নামায পড়তে পাড়লাম না সেটা ফজর হোক কিংবা জোহর, আসর, মাগরীব যেটাই হোক না কেন সময়মত পড়তে না পারলে সে ওয়াক্তের নামায এশার নামায শেষে অথবা বিতরের নামায পড়ার পড়েও কাযা আদায় করতে পারব কিনা....??উদাহরণঃ ধরেন আমি আজকে ফজরের নামায পড়তে পারলাম না এক্ষেত্রে পরবর্তীতে জোহরের ওয়াক্তে যোহর আসর ওয়াক্তে আসর মাগরীব ও এশার নামায ও পড়ে নিয়ে সেই ছুট যাওয়া ফজরের সালাত কাজা পড়তে পারব কি না...??কাজা নামায কি সুন্নত ফরজ উভয়টা আদায় করতে হয় না কি.....??কাজা নামায কি মাসজিদে পড়া যাবেনা..?? কাজা নামায কোথায় পড়া ভাল মসজীদে না কি বাড়িতে...?? উত্ত্বম কোনটা....??আরেকটা জরুরী প্রশ্ন হলোঃ আপন চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে বিবাহ করা যাবে কি না..?? শরিয়ত কি বলে রেফারেন্স সহকারে জানতে চাই এটা....??

২৩ মে, ২০২১
চৌহালি

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

১. কোন কারণে ফরয নামায ওয়াক্ত মত আদায় করতে না পারলে যখনই ঘুম থেকে জাগ্রত হবে অথবা স্মরণে আসবে তখন প্রথম চান্সে সেই নামায অবশ্যই কাযা আদায় করে নেবে। এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ।

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ نَسِيَ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا ‏"‏ ‏.

আনাস ইবনু মালিক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেছেন , কেউ কোন সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে অথবা ঘুমিয়ে পড়লে তার কাফফারাহ্ হলো যখনই স্মরণ হবে তখনই তা আদায় করে নিবে।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪৫৪

কোন কারনে যদি কাযা আদায় করতে বিলম্ব হল, ইতোমধ্যে পরবর্তী ওয়াক্তের নামায পড়া হলো। তবে যে ওয়াক্তের নামায ছুটেছে পরের দিন সেই ওয়াক্তে ঐ নামায আদায় করবে।
অবশ্য যাদের ৫ এর অধিক ওয়াক্ত কাযা হয়ে জিম্মায় রয়েছে। তারা এই নামাযগুলো যেকোন সময়ে কাযা করতে পারবে।

নামায কখন কাযা আদায় করবে তখন শুধু ফরযের কাযা আদায় করবে। সুন্নতের কাযা লাগবে না। শুধুমাত্র আজকের দিনের ফজর নামায সূর্যোদয়ের পূর্বে পড়তে পারেননি, এই নামায যোহরের আগে আগে পড়লে সুন্নতসহ আদায় করবেন। যোহরের পরে পড়লে শুধু ফরয আদায় করবেন।

২. আপন চাচাতো বোনকে বিবাহ করা জায়েয। চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে বহুদূরের বিষয়। অবশ্যই তাকে বিবাহ করা জায়েয।

যাদেরকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ, আল্লাহ তাআলা সূরানিসায় তাদের তালিকা বর্ণনা করার পর ২৪নং আয়াতে বলেছেন, ওরা ছাড়া বাকিদেরকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য হালাল করা হলো।

وَلَا تَنۡکِحُوۡا مَا نَکَحَ اٰبَآؤُکُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ  اِنَّہٗ کَانَ فَاحِشَۃً وَّمَقۡتًا ؕ  وَسَآءَ سَبِیۡلًا ٪

নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃপুরুষ যাদের বিবাহ করেছে, তোমরা তাদের বিবাহ কর না; পূর্বে যা হয়েছে নিশ্চয়ই তা অশ্লীল, অতিশয় ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট আচরণ।
—আন নিসা - ২২

حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّہٰتُکُمۡ وَبَنٰتُکُمۡ وَاَخَوٰتُکُمۡ وَعَمّٰتُکُمۡ وَخٰلٰتُکُمۡ وَبَنٰتُ الۡاَخِ وَبَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَاُمَّہٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَاَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَاُمَّہٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَرَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِہِنَّ ۫  فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِہِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫  وَحَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ  وَاَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ  اِنَّ اللّٰہَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ۙ

তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, কন্যা, ভগ্নী, ফুফু, খালা, ভ্রাতুষ্পুত্রী, ভাগিনেয়ী, দুগ্ধ-মাতা, দুগ্ধ-ভগিনী, শাশুড়ি ও তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সঙ্গে সংগত হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত কন্যা, যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে আছে, তবে যদি তাদের সঙ্গে সংগত না হয়ে থাক, তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নেই। এবং তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী ও দুই ভগ্নীকে একত্র করা, পূর্বে যা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
—আন নিসা - ২৩

وَّالۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ ۚ کِتٰبَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ ۚ وَاُحِلَّ لَکُمۡ مَّا وَرَآءَ ذٰلِکُمۡ اَنۡ تَبۡتَغُوۡا بِاَمۡوَالِکُمۡ مُّحۡصِنِیۡنَ غَیۡرَ مُسٰفِحِیۡنَ ؕ فَمَا اسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِہٖ مِنۡہُنَّ فَاٰتُوۡہُنَّ اُجُوۡرَہُنَّ فَرِیۡضَۃً ؕ وَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ فِیۡمَا تَرٰضَیۡتُمۡ بِہٖ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡفَرِیۡضَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا

আর নারীর মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ব্যতীত সকল সধবা তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্যে এটা আল্লাহ্ র বিধান। উল্লিখিত নারীগণ ব্যতীত অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাওয়া তোমাদের জন্যে বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্যে নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহ্র অর্পণ করবে। মাহ্র নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরস্পর রাজী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
—আন নিসা - ২৪

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন