বদনজর থেকে বাঁচতে সোনা রুপার পানির ব্যবহার
প্রশ্নঃ ৩৯৯৪৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের সমাজে যে একটা প্রচলন আছে চোখ উঠলে বা ঘায় পেকে গেলে সোনা রুপা পানিতে ভিজিয়ে চোখে বা ঘায়ে দেয় এটা কত টুকু যায়েজ এটা কি সিরিকের অনভুক্ত
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আমাদের সমাজে সোনা রুপার পানি দিয়ে সাধারণত ওই সকল জিনিসই ধোয়া হয় যেগুলোতে বদনজর লেগেছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবে এগুলো বাদনজর রোধ করার কোনো সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি নয়। এগুলোর প্রায় সবগুলোই অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের শেখানো এবং তাদের ধর্মীয় রীতি। বরং অনেকাংশে এগুলো মানুষকে শিরকের দিকে নিয়ে যায় তাই এর থেকে বিরত থাকতে হবে ।
পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে জানা যায়, কুদৃষ্টি বা বদনজর লেগে যাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত সত্য। আর তার থেকে বাঁচতেও সুন্নাহসম্মত আমল করতে হবে।
বদ নজর ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য কী করতে হবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তা শিক্ষা দিয়েছেন।
১. হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ও হুসাইন রা. এর জন্য এই দোয়া পড়ে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করতেন-
أُعِيْذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَّهَامَّةٍ وَّمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ.
অর্থ : সকল শয়তান, কীটপতঙ্গ ও বদনজর হতে তোমাদেরকে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমাসমূহের আশ্রয়ে দিচ্ছি।
(দোয়াটি এক সন্তানের জন্য পড়লে ‘উয়ীযুকা’, দুইজনের জন্য ‘উয়ীযুকুমা’ আর দুইয়ের অধিক হলে ‘উয়ীযুকুম’ বলতে হবে। ) (বুখারীঃ ৩৩৭১)
২. বদ নজর ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য এই দোয়াটি পড়েও ফু দেয়া যেতে পারে। হাদীসে এসেছে, জিবরীল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে এই দোয়ার মাধ্যমে ঝাড়তেন।
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
“আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিষ হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নজর হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি।” (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সালাম)
পাশাপাশি আয়াতুল কুরসী, তিন কুল ও হাদীসের অন্যান্য দোয়াও এক্ষেত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে ।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৩৭৩০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বদনজর হতে বাচার কি কোন নির্দিষ্ট ফজিলত পূর্ণ দুয়া হাদিছে আছে
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা ফালাক, সূরা নাস, দুরুদ শরীফ এর আমল করলে বদ নজর থেকে আল্লাহ তাআলা হেফাজত করেন।
বদ নজর থেকে বাচার জন্য সুরা কলাম এর শেষ দুটি আয়াত খুবই ফলপ্রসূ আমল।
وَاِنۡ یَّکَادُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَیُزۡلِقُوۡنَکَ بِاَبۡصَارِہِمۡ لَمَّا سَمِعُوا الذِّکۡرَ وَیَقُوۡلُوۡنَ اِنَّہٗ لَمَجۡنُوۡنٌ ۘ
وَمَا ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ
কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।
অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।
সূরা ক্বলম ৫১-৫২
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন