ব্যবসায় লাভ
প্রশ্নঃ ৩৮২৬০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার জানার বিষয় হলো ব্যবসার মধ্যে আমি যে লাভ গ্রহন করবো তার কি কোনো সীমা রেখা আছে, আর একদামে বিক্রি করার কি হুকুম
২৪ আগস্ট, ২০২৩
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তাআলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন। কুরআনে এসেছে,
وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلۡبَيۡعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰاْۚ
“আর আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সূদকে হারাম করেছেন।” (সূরা বাকারা: ২৭৫)
আর ব্যবসা-বাণিজ্য সংঘটিত হয় ক্রেতা ও বিক্রেতার পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَأۡكُلُوٓاْ أَمۡوَٰلَكُم بَيۡنَكُم بِٱلۡبَٰطِلِ إِلَّآ أَن تَكُونَ تِجَٰرَةً عَن تَرَاضٖ مِّنكُمۡۚ
“হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; তবে যদি তা তোমাদের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসার মাধ্যমে হয় তাহলে ভিন্ন কথা।” (সূরা নিসা: ২৯)
অর্থাৎ ব্যবসা হবে ক্রেতা ও বিক্রেতার পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে। সে কারণে ইসলাম লাভ এর পার্সেন্টেজ নির্ধারণ করে দেয় নি। বরং তা ক্রেতা ও বিক্রেতার উপর ছেড়ে দিয়েছে। বিক্রেতা তার লাভ-লোকসান বিবেচনায় পণ্যের দাম চাইবে আর ক্রেতা আর দশটা দোকান ঘুরে এবং বাজার দেখেশুনে তার আর্থিক সঙ্গতি ও সুবিধা অনুযায়ী দাম বলবে। অতঃপর তারা উভয়ে যে দামে একমত হবে সে দামে ক্রয়-বিক্রয় সংঘটিত হবে।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবি উরওয়া ইবনে জাদ আর বারেকী রা. দুটি ছাগল এক দিনার দিয়ে ক্রয় করার পর একটি ছাগল এক দিনার দিয়ে বিক্রয় করেছিলেন। এটি নবী সালল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তা জানানো পর তিনি তার ব্যবসায় বরকতের জন্য দুআ করেছেন। (সহিহ বুখারী)
হাদিসটি নিম্নরূপ:
أنَّ النبيَّ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ أعْطَاهُ دِينَارًا يَشْتَرِي له به شَاةً، فَاشْتَرَى له به شَاتَيْنِ، فَبَاعَ إحْدَاهُما بدِينَارٍ، وجَاءَهُ بدِينَارٍ وشَاةٍ، فَدَعَا له بالبَرَكَةِ في بَيْعِهِ، وكانَ لَوِ اشْتَرَى التُّرَابَ لَرَبِحَ فِيهِ (صحيح البخاري)
তার মানে উক্ত সাহাবী একটি ছাগলে ১০০% লাভ করার পরও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন আপত্তি করেন নি বরং তার জন্য দুআ করেছেন।
এ থেকে বুঝা গেল, বিক্রেতা কত পার্সেন্ট লাভ করবে তা তার ইচ্ছা ও স্বাধীনতা। ক্রেতার পণ্য পছন্দ হলে বাজার দর যাচাই-বাছাই করে সে দামে ক্রয় করবে অথবা করবে না।
অবশ্য ফকিহগণ বলেছেন, প্রচণ্ড অভাব-অনটন, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও সংকটময় মূহুর্তে জীবন ধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে সীমাতিরিক্ত লাভ করা বৈধ নয়। (যেমন পানি, খাদ্যদ্রব্য, ঔষধ ইত্যাদি) বরং তা যথাসম্ভ কম লাভে বিক্রয় করবে এবং মানুষের জীবন রক্ষার চেষ্টা করবে
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন:
মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন
মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মোহাম্মাদপুর।
মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মোহাম্মাদপুর।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১