নামাজের কাফফারার পরিমাণ ও বিধান
প্রশ্নঃ ৩৭৪৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার মায়ের ইন্তেকাল হয়েছে আজকে ১৫ দিন হয় আমার মা মৃত্যু শয্যায় থাকা অবস্থায় দুই মাসে নামাজ কাজা হয়েছে ওই নামাজের কাফফারা দিতে হবে কিনা? যদি কাফফারা দিতে হয় নিয়ম কি কিভাবে দিতে হবে একটু জানালে খুশি হব।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আল্লাহ তায়ালা আপনার মাকে জান্নাত নসীব করুন।
মুমূর্ষ অবস্থার দিনগুলোতে তিনি কি সম্পূর্ণ অজ্ঞান ছিলেন, না স্বজ্ঞান ছিলেন? যদি সম্পূর্ণ অজ্ঞান থেকে থাকেন তাহলে যে কয়দিন অজ্ঞান ছিলেন সে কয়দিনের নামাজের কাফফারা নাই। আর স্বজ্ঞানে থাকা অবস্থায় যদি সেই দিনগুলোতে মাথা নেড়ে ইশারায় নামায পড়ার সক্ষমতায়ও না থেকে থাকেন তাহলে সে দিনগুলোরও কাফফারা নাই। কিন্তু মাথা নেড়ে নামাজ পড়ার সক্ষমতা থাকলে সেই দিনগুলোর কাফফারা দিতে হবে।
কাফফারার বিধান হলো:
যদি তিনি কাফফারা প্রদানের ব্যাপারে যদি অসিয়ত করে থাকেন তাহলে তার ত্যাজ্য সম্পদ থেকে স্বাভাবিক নিয়মে তার কাফন দাফন করা পর, যদি কোনো ঋণ থাকে তাহলে তা পরিশোধ করার পর অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ দিয়ে প্রতিদিন বিতরসহ মোট ছয় ওয়াক্ত নামাজের কাফফারা আদায় করতে হবে।
কাফফারার পরিমাণ:
কাফফারার পরিমাণ হল, প্রতিদিন বিতরসহ ছয় ওয়াক্ত নামায হিসেব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দেওয়া। অথবা প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পরিবর্তে একজন গরীবকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়নো। {ফতাওয়া শামী-২/৭২}
(وَلَوْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صَلَوَاتٌ فَائِتَةٌ وَأَوْصَى بِالْكَفَّارَةِ يُعْطَى لِكُلِّ صَلَاةٍ نِصْفَ صَاعٍ مِنْ بُرٍّ) كَالْفِطْرَةِ (وَكَذَا حُكْمُ الْوِتْرِ) وَالصَّوْمِ، وَإِنَّمَا يُعْطِي (مِنْ ثُلُثِ مَالِهِ) (الدر المختار-2/72)
وَأَمَّا إذَا لَمْ يُوصِ فَتَطَوَّعَ بِهَا الْوَارِثُ فَقَدْ قَالَ مُحَمَّدٌ فِي الزِّيَادَاتِ إنَّهُ يُجْزِيهِ إنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى، (رد
আর অসিয়ত না করে থাকলে, ওয়ারিশদের জন্য মাইয়্যেতের নামাজের কাফফারা আদায় করা আবশ্যক নয়। তবে ওয়ারিশদের জন্য উচিত তাদের (ব্যক্তিগত মাল থেকে হোক অথবা সকলের সম্মতিক্রমে সম্মিলিত মাল থেকে হোক) আদায় করে দেওয়া। কেননা, মাইয়্যেতের রেখে যাওয়া সম্পত্তি তারা ভোগ করবে অপরদিকে অনাদায়ী নামাজের কারণে তিনি কবরে শাস্তির সম্মুখিন হবেন এটা কোনো বুদ্ধিমান ওয়ারিশ মেনে নিতে পারে না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন