প্রশ্নঃ ১৯৭৮০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আমার ফুফা মারা গেছে এখন অনেকে বলতেচে আমার ফুফু কে ওনার ভাইয়েরা সাদা কাপড় দিতে হবে এটা কি শরিয়ত সম্মত নাকি,! একজন মানুষ মারা জাওয়া থেকে কবর প্রজনতো কি করা দরকার জানাবেন প্লিয তাড়াতাড়ি
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামের বিধান হলো, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় (অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অন্যথায় ৪ মাস ১০ দিন) সব ধরনের সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা। এটা ওয়াজিব। সহিহ বোখারিতে হজরত উম্মে হাবিবা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিনদিনের বেশি সময় হিদাদ (শোক করা ও সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা) বৈধ নয়। আর স্বামীর মৃত্যুতে ৪ মাস ১০ দিন হিদাদ পালন করবে। -সহিহ বোখারি: ৫৩৩৪
হজরত উম্মে সালামা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্ত্রীর স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙিন এবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিজাব ও সুরমা ব্যবহার না করে। -সুনানে আবু দাউদ: ২২৯৮
আল্লামা কুরতুবি (রহ.) তার বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থ ‘আলজামে লিআহকামিল কোরআন’ ও ইদ্দত সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন, হিদাদ পালনের অর্থ হলো- মহিলা তার ইদ্দতকালীন সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদি, অলঙ্কারাদিসহ পোশাক-আশাকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে। -আল জামে লিআহকামিল কোরআন, কুরতুবি: ৩/১১৮
সুতরাং কোনো মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর ৪ মাস ১০ দিন অথবা অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরনের সাজসজ্জা যা উৎসবাদিতে পরা হয় এমন চাকচিক্যপূর্ণ পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ও অন্যান্য সাজসজ্জার প্রসাধনী ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। তদ্রূপ মেহেদি লাগানো, সুরমা দেওয়া থেকেও বিরত থাকা আবশ্যক। অবশ্য ব্যবহৃত রঙিন কাপড় যদি চাকচিক্যপূর্ণ না হয় তাহলে তা পরিধান করতে কোনো অসুবিধা নেই।
মূল কথা হলো, ইদ্দত অবস্থায় সাদা কাপড় পরা আবশ্যক নয়। বরং সাদা কাপড় পরিধান করাকে জরুরি মনে করাও ঠিক নয়।
তবে এই সাদা কাপড় স্ত্রীর ভাইয়েরা দিতে হবে এমন কোন কথা ইসলামে নেই।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, মোহাম্মাদপুর।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন