প্রশ্নঃ ১৭৮৯১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আমার দুলাভাই এর ইনকাম হালাল কিন্তু উনি রাজারবাগ পীরের মুরিদ। এখন উনি ইফতারিতে দাওয়াত দিলে তা কবুল করা যাবে কি? এমন পরিস্থিতিতে দাওয়াত কবুল না করলে মান অভিমান সম্পর্ক নষ্টের সম্ভাবনাও থাকে। কিভাবে এই দাওয়াত বা হারাম ইনকামের দাওয়াত গুলো এড়িয়ে যাবো জানাবেন দয়া করে। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে চিন্তা করে বুঝে উঠতে পারছি না।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো যদি ওই ব্যক্তির উপার্জন হালাল হয় তাহলে তার দাওয়াত গ্রহনে কোনো বাধা নেই। আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘﺒﻞُ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻭﻳُﺜﻴﺐُ ﻋﻠﻴﻬﺎ
রাসূলুল্লাহ সাঃ হাদিয়া গ্রহণ করতেন।এবং তার প্রতিদানও দিতেন। (সহিহুল বুখারী-২৪৪৫)
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,
ﻟﻮ ﺃُﻫـﺪﻳـﺖ ﺇﻟـﻲَّ ﺫﺭﺍﻉٌ ﻟﻘﺒـﻠﺖُ، ﻭﻟﻮ ﺩُﻋﻴﺖُ ﺇﻟﻰ ﻛُﺮﺍﻉٍ ﻷَﺟﺒﺖُ
যদি কেউ আমার নিকট কোনো প্রাণীর বাহু হাদিয়া পাঠায় তাহলে আমি তা কবুল করব।আর যদি কেউ আমাকে পায়ের খুরা রেঁধেও দাওয়াত দেয় তাহলেও আমি জবাব দিবো।(সহীহ বুখারী-৪৮৮৩)
কাজেই আপনি আপানার দুলাভাইয়ের বাসায় দাওয়াত বা ইফতারি গ্রহন করতে পারবেন। তবে তাঁকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। যে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসৃত পথে পরিচালিত হয়ে তিনিও জান্নাতের ভাগিদার হতে পারেন।
#হারাম উপার্জনকারীর দাওয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১২২৬১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার অনেক আত্মীয় ব্যাংকে কর্মরত এবং অনেকের সুদের ব্যাবসা আছে আত্মীয়, প্রতিবেশী বা মেহমান হিসাবে উনাদের ঘরের খাবার খাওয়া কি আমার জন্য জায়েজ?আর কোনো ব্যাক্তি হারাম উপার্জন করে এটা না জেনে তার ঘরে খাবার খেলে কি হারাম হবে?জাযাকাল্লাহ খাইরান।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মানবজাতি দুনিয়াতে জীবন ধারণের জন্য কোন ধরণের খাবার গ্রহণ করবে তার একটি মূলনীতি বলে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
{يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: 172]
অর্থাৎ, হে মুমিনগণ! আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিজিক দান করেছি, তা হতে ভক্ষণ করো। [আল-বাকারা : ১৭২]
সুতরাং হালাল ছাড়া হারাম খাবার গ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নেল্লেখিত অবস্থায় যদি স্পষ্ট জানা তারা পুরো সম্পদই হারাম উপার্জনের, তাহলে কোনভাবেই তার বাড়িতে খাবার খাওয়া জায়েয নেই। আর যদি তার সম্পদের হালাল হারামের মিশ্রন থাকে কিন্তু এটা জানা থাকে যে, তিনি হারাম মাল থেকে আপনাকে খাওয়াচ্ছে, তাহলেও সে খাবার খাওয়া জায়েয নেই। আর যদি তার হালাল ও হারাম সম্পদ এমনভাবে মিশ্রিত থাকে যে, আলাদা করা সম্ভব নয় তবে হালাল সম্পদের পরিমাণ বেশি, তাহলে এমতাবস্থায় খাওয়ার বৈধতা থাকবে, তবে না খাওয়াটাই উত্তম।
আর যদি এমন হয়, সে স্পষ্টভাবে হালাল সম্পদ থেকে আপনার খাবারের ব্যবস্থা করেছে, তাহলে কোন সমস্যা নেই।
الفتاوى الهندية (5/ 342)
أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل، كذا في الينابيع.
আর যদি না জেনে কারও ঘরে হারাম খাবার খেয়ে ফেলে সেটি ভিন্ন কথা। তবে অবশ্যই খাবারের আগে যাচাই করে নেওয়া উচিত। মুমিনের প্রতিটি কাজ যাচাইয়ের পরই হওয়া উচিত। ভুলে হয়ে গেলে তার জন্য তাওবা করা এবং ভবিষ্যতে তেমনটি না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। والله أعلم بالصواب।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
উস্তাযুত তাফসির, মারকাযুল বুহুসিল ইসলামিয়া, বাড্ডা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন