স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত হলে স্ত্রীর করণীয়
প্রশ্নঃ ১৪৬৭৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, স্বামী পরকিয়ায় লিপ্ত থাকলে বউ এর কী করণীয়? অগ্রীম ধন্যবাদ
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি-
(আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই ও তার কাছে তাওবাহ করি)
পৃথিবীর বুকে এটি এমন এক অন্যায়, যা প্রমাণিত হলে জমিনে ঐ অসভ্যের বেঁচে থাকার অধিকার সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়। ইসলামের বিচারব্যবস্থায় প্রস্তরাঘাতে এমন অসভ্য লোকগুলোকে প্রকাশ্যে হত্যা করতে হবে।
পরকীয়া নি:সন্দেহে দাম্পত্য জীবন, সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ এবং সামাজিক সুস্থতা ও স্থিতিশীলতার বিরাট হুমকি। এটি নিজের হালাল স্ত্রীর সাথে আমানতের খিয়ানত, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা। এটি আল্লাহ তাআলা ক্রোধের কারণ।
স্বামী এই ফিতনায় জড়িয়ে গেলে আমরা স্ত্রীকে পরামর্শ দেব-
১. স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে বসবাস করুন। কোন অবস্থাতেই একজন আরেকজন থেকে পৃথক থাকবেন না।
২. কুরআন-হাদীসের আলোকে তাকে পরকীয়া, অবৈধ প্রেমপ্রীতি ও যিনাব্যাভিচারের ভয়াবহতা, ইসলামী আইন অনুযায়ী দুনিয়াতে এর কঠিন শাস্তি, আখিরাতের আযাব, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝানো। এ বিষয়ে কুরআন-হাদীসে পর্যাপ্ত ব্ক্তব্য রয়েছে। তাই এ সংক্রান্ত যেকোন ভালো ইসলামী বই থেকে উপাদান নেয়া যেতে পারে।
* আরো ভালো হয়, কোন আল্লাহ ওয়ালা মুত্তাকী ও আমানতদার আলিমের মাধ্যমে তাকে বোঝানো যেতে পারে। আশা করা যায় এতে ফলপ্রসূ হবে ইনশাআল্লাহ। (তবে লোক নির্ণয়ে খুবই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে)
৩. তার হিদায়াতের জন্য দয়াময় আল্লাহর নিকট দুআ করা।
৪. স্ত্রীর মাঝে স্বামীর নিকট অপছন্দীয় কোন আচার-আচরণ থাকলে তা পরিবর্তন করা এবং যথাসাধ্য তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা। দাম্পত্য জীবনে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক স্বামী-স্ত্রী এ বিষয়ে অজ্ঞতা বা অবহেলার কারণে সময়ের ব্যবধানে তারা দাম্পত্য জীবনের উষ্ণতা ও আবেদন হারায়। ফলে দুজনের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে ঈমানী দূর্বলতা, কুপ্রবৃত্তির তাড়না এবং শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারা ভিন্ন পথ খোঁজা শুরু করে।
৫. প্রয়োজনে স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে আরেকটি বিয়ে করার সম্মতি দেয়া।
উল্লেখ্য, আল্লাহর দেয়া এ বিধানটির ব্যাপারে অনেক স্ত্রীর কঠোর ও ভয়াবহ আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক দুর্বল ইমানদার স্বামী অবৈধ পথের দিকে পা বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীও এই অন্যায়ের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবে।
৬. এরপরেও সঠিক পথে না ফিরলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে পারিবারিক বা সামাজিক সালিশ অথবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৭. এগুলোর মাধ্যমে কোন উপকার না হলে, হয়তো স্ত্রীকে ধৈর্য ধারণ করে স্বামীকে এ পথ থেকে ফিরানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় সবশেষে তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে পৃথক হয়ে যেতে হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও গোটা মুসলিম উম্মাহকে এই ধরনের ভয়াবহ ফিতনা থেকে হেফাজত করুক। আমীন
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন