প্রশ্নঃ ১২৯৮৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
বিয়ে হওয়ার কোন পরীক্ষিত কোন আমল আছে?আর বদনজর এর যে রুকাইয়ার অডিওগুলো কখন কখন শুনতে হয়?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনি নিচের রেফারেন্স উত্তরগুলো দেখে নিন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১০৬৬৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর কিছু দিন আগে ইউটিউবে দ্রুত বিয়ে হওয়ার ২ টি আমল দেখলাম। প্রথমটি হলো প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে সূরা কাসাসের ২৪ নম্বর আয়াত ২১ বার পড়তে হবে, টানা ৪১ দিন। দ্বিতীয়টি হলো ফজর ও মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষে বাম হাতের কব্জির উপর ডান হাতের কব্জি রেখে চাপ দিয়ে ধরে ৪১ বার ইয়া ফাত্তাহু পড়তে হবে। তবে যিনি আমলগুলো আলোচনা করেছিল, তিনি কোনো হাদীসের রেফারেন্স দেননি।এখন আমার প্রশ্ন এই আমলগুলো এবং আমলের নিয়ম গুলো কি সহীহ, এর কি কোনো হাদীস বা রেফারেন্স আছে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এজাতীয় অজিফাগুলো অধিকাংশই অভিজ্ঞতা নির্ভর। হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে। চাইলে করে দেখতে পারেন। নিচের লেখাটিও অনুসরণ করতে পারেন।
দ্রুত বিবাহ করতে কার্যকরি ৭ আমল
************************************
আবদুল্লাহ তামিম:
বিবাহ একটি সুন্নাত আমল। কে কখন বিবাহ করবে আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। আল্লাহ তায়ালা চাইলেই সব কিছু সম্ভব।আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কোনো কিছু সম্ভব না। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যাদের বিবাহের বয়স অতিক্রম করলেও তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারছেন না।
ছেলে বা মেয়ে বিবাহের ক্ষেত্রে তারা যদি প্রস্তাব পেয়েও তাদের বিবাহ না হয় তাহলে তাদের জন্য কার্যকরি ৭টি দোয়া আমরা আমলের জন্য উপস্থাপন করেছি।
কিছু লোক খুব ভাগ্যবান, যারা বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে তাড়াতাড়ি তাদের বিবাহও হয়ে যায়। অনেক মানুষ এমন আছে যারা প্রস্তাবের পর আর বিবাহ হয় না। আর কেউ কেউ বিবাহের প্রস্তাব না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়।
হতাশ হওয়া উচিত নয়, হতাশ হবেন না। প্রতিক্ষা করলে বিলম্বে আল্লাহ তায়ালা ভালোটা ব্যবস্থা করে দিতে পারেন।কারণ আল্লাহ সবসময় আপনার জন্য সেরাটা চান।
আমরা যে ৭টি আমল উল্লেখ করছি, সবসময় নিয়ম মত তা আমল করলে আল্লাহ চাহে তো খুব শীঘ্রই একটি বিয়ের প্রস্তাব পাবেন আপনি।
১. সূরা ইয়াসিন পাঠ করা
সূরা ইয়াসিন কুরআনের অন্তর হিসেবেও পরিচিত। কারণ, তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট। সূরা ইয়াসিন শীঘ্রই বিবাহ বিচ্ছেদের সাথে সম্পর্কিত সব সমস্যার সমাধান করে দেয় ।
০২. সূরা দোহা ও কাসাসের ২৪ আয়াত পাঠ
فَسَقَى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّى إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
সূরা কাসাসের ২৪ আয়াতে মুসা আ. এর বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। মূসা আ. খুব একাকী ও বিষণ্ণতা অনুভব করেছিলেন তখন তিনি এ আয়াতটি বেশি বেশি পাঠ করেছেন।
অনেক আলেমরাই এ আমলটি দিয়ে থাকেন। যদি কোনো ছেলে এই আয়াতটি ১০০ বার পাঠ করে, তাহলে শীঘ্রই তিনি তার জন্য একটি ভালো পাত্রী পাবেন বলে আশা করা যায়।
মেয়েদের সর্বোত্তম বিবাহ প্রস্তাব পেতে ফজরের নামাজে ১১ বার সূরা দোহা পাঠ করে দোয়া করা।
৩. আল্লাহ নামের জিকির
প্রথমে আমলটি করার শুরুতে ১১ বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। তারপর ৩১৩ বার আল্লাহ শব্দটি পাঠ করা।
শেষে আবারো ১১বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। টানা ৪১ দিন বাদ না দিয়ে এ আমলটি করতে হবে।
৪. সূরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
“এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।”
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পর এ আমলটি করতে হবে। সঙ্গে ১৯বার বিসমিল্লাহ, ১১০০ বার সুরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা। এর পর ১০০বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। শেষে ১০০বার আবারো বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।
৫. সূরা মরিয়ম পড়া
সূরা মরিয়ম কোন এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে পড়া। যে মেয়ের বা ছেলের বিবাহ নিয়ে সমস্যা সে পড়বে বা তাদের বাবা মা পড়বে।
৬. হযরত ফাতেমা রা. তাসবিহ পাঠ করা
২ রাকাত নামাজ আদায় করে কুরআন তিলাওয়াত করে ১১ বার দরুদ শরিফ পড়বে। তারপর ফাতেমা রা. এর তাসবিহ পাঠ করবে।
ফাতেমা রা. এর তাসবিহ হলো ৩৪ বার আল্লাহ ও আকবার পড়বে। ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ পড়ে শেষে ১১বার দরুদ শরিফ পড়বে।
তারপর সুরা পাঠ করবে। প্রথমে সুরা দোহা, সুরা শুআরা, সুরা কাসাস, সুরা ইয়াসিন তারপর আবারো সুরা শুআরা পাঠ করবে। উল্লেখ্য এ আমল পাত্রের পিতা -মাতা করতে পারবে বা তারা নিজেরাই।
৭. সূরা মুজাম্মিল পাঠ করা
যদি কোন মেয়ে বড় হয়ে যায়, কোন বিয়ের প্রস্তাব না পায় তাহলে একজন মা বাবা শুক্রবার দিনে জুম্মার নামাযের পর ২ রাকাআত নামাজ আদায়ের পর সূরা মুজাম্মিলের ২১ বার পড়তে হবে।
সূত্র: দ্যা ইসলামিক ইনফরমেশন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রশ্নঃ ৭৯৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম শাইখ আমি শুনেছি যে,বিয়ে ((কারো জন্য ফরজ আবার কারো জন্য ওয়াজিব আবার কারো জন্য সুন্নত আবার কারো জন্য নফল আবার কারো জন্য হারাম।))আমার প্রশ্ন হলো,আমার ৭০০০০ টাকা জমা আছে,আমি একজন ছাত্র।পড়া লেখার পাশাপাশি একটি মসজিদে খেদমত করি।সাত হাজার টাকা হাদিয়া পাই।বিয়ের অভাবে মনের বিভিন্ন গোনাহ হয়।যতটুকু সম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করি। আপনার দৃষ্টিতে ব্যাকেটে লেখা বিষয়গুলোর মধ্যে কোনটা আমার জন্য প্রজোয্য।মেহেরবানি করে উত্তর দিবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিবাহের জন্য দু'টি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত শারীরিক সক্ষমতা। দ্বিতীয়তঃ আর্থিক সঙ্গতি।
আপনার বর্ণনায় বুঝা যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ আপনার আর্থিক সঙ্গতি আছে। এবার রইল আপনার শারীরিক সক্ষমতা। যদি সেটি ঠিক থাকে তাহলে তো ইতোমধ্যে আপনার জন্য বিবাহ করা ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে। যেহেতু বিবাহ না করলে চোখের গুনাহ, মনের ওয়াসওয়াসায় লিপ্ত হয়ে নিজের ঈমান-আমল নষ্ট হওয়ার পথে।
অতএব শরীয়তের শর্ত মেনে পারিবারিকভাবে দ্রুত বিবাহ করে নিন।
আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য উত্তম সঙ্গিনীর সহজ ব্যবস্থা করে দিন। আপনার দাম্পত্য জীবন দুনিয়া ও আখিরাতে সুন্দর করে দিন। আমীন
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রশ্নঃ ৭৯৪৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্ন: ১.দ্রুত বিয়ে সমন্ধে সমস্ত হাদিস জানতে চাই।২.দ্রুত বিবাহের কিছু বুদ্ধি এবং পরামর্শ চাই।৩.আমার আসল বয়স ১৫ বছর।আমার এখনো কোনো মানুষের ভরন-পোষণের ক্ষমতা হয়নি।কিন্তু আমার প্রচন্ড যৌন চাহিদা।নিজেকে খুব কষ্টে হস্তমৈথুন থেকে আটকে রাখি। বাবা-মা কেও বিয়ের কথা বলতে পারি না। (ক) এ আবস্থায় আমার করণীয় কি?? (খ)আমি কি করলে হস্তমৈথুন থেকে বাচবো??(গ)এ অবস্থায় নিজের সামর্থ না হয়া পর্যন্ত কিভাবে যৌন চাহিদা মিটাবো??
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যৌবনের প্রথম ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সলাত জামাতের সাথে সুন্নত তরীকায় আদায় করুন।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করুন।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআনুল কারীমের অনুবাদ ও তাফসীর অধ্যায়ন করুন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ুন।
সমস্ত গুনাহ পরিত্যাগ করুন। বিশেষ করে চোখের গুনাহ থেকে পরিপূর্ন মুক্ত থাকুন।
সর্বদা ভালো লোকদের সান্নিধ্যে থাকুন।
একাকী নিঃসঙ্গ সময় কাটাবেন না।
প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোজা রাখুন।
আরো বেশি রোযা রাখার সাহস থাকলে প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার সওম পালন করুন।
কোন আল্লাহ ওয়ালা মুত্তাকী আলিমের সাহচর্য গ্রহণ করুন। তার উপদেশ শুনুন। উপদেশগুলো বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে তার কাছে কিছু সময় অতিবাহিত করুন।
যেসব পরিবেশে গেলে হস্তমৈথুন বারবার হয়ে যায়, যাদের সঙ্গে থাকলে এই ধরনের ইচ্ছা জাগে, তাদেরকে উপেক্ষা করুন।
যৌনচাহিদা ও শারীরিক সক্ষমতা থাকলেই বিবাহ করা নয়। শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সঙ্গতি না থাকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَلٰى عَبْدِ اللهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّه“ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه“ لَه“ وِجَاءٌ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছু ছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন। হে যুবক সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সাওম পালন করে। কেননা, সাওম তার যৌনতাকে দমন করবে।
টীকা :
হাদীসে ‘যুব সম্প্রদায়’ কাদের বলা হয়েছে, এ সম্পর্কে ইমাম নাবাবী লিখেছেন-
আমাদের লোকদের মতে যুবক-যুবতী বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা বালেগ [পূর্ণ বয়স্ক] হয়েছে এবং ত্রিশ বছর বয়স পার হয়ে যায়নি।
আর এ যুবক-যুবতীদের বিয়ের জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকীদ করলেন কেন, তার কারণ সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী তার বিশ্ববিখ্যাত বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থ “উমদাতুল ক্বারী” গ্রন্থে লিখেছেনঃ
“হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের বিয়ে করতে বলার কারণ এই যে, বুড়োদের অপেক্ষা এ বয়সের লোকদের মধ্যেই বিয়ে করার প্রবণতা ও দাবী অনেক বেশী বর্তমান দেখা যায়।
যুবক-যুবতীদের বিয়ে যৌন সম্ভোগের পক্ষে খুবই স্বাদপূর্ণ হয়। মুখের গন্ধ খুবই মিষ্টি হয়, দাম্পত্য জীবন যাপন খুবই সুখকর হয়, পারস্পরিক কথাবার্তা খুবই আনন্দদায়ক হয়, দেখতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়, স্পর্শ খুব আরামদায়ক হয় এবং স্বামী বা স্ত্রী তার জুড়ির চরিত্রে এমন কতগুলো গুণ সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই পছন্দনীয় হয়, আর এ বয়সের দাম্পত্য ব্যাপার প্রায়ই গোপন রাখা ভাল লাগে। যুবক বয়স যেহেতু যৌন সম্ভোগের জন্য মানুষকে উন্মুখ করে দেয়। এ কারণে তার দৃষ্টি যে কোন মেয়ের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে এবং সে যৌন উচ্ছৃঙ্খলতায় পড়ে যেতে পারে। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে করতে তাকীদ করেছেন এবং বলেছেনঃ বিয়ে করলে চোখ যৌন সুখের সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে না এবং বাহ্যত তার কোন ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদিও কথা শুরু করেছেন যুবক মাত্রকেই সম্বোধন করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের এ তাকীদকে নির্দিষ্ট করেছেন কেবল এমন সব যুবক-যুবতীদের জন্য যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে। আর যারা বিয়ের ব্যয় বহনের সঙ্গতি রাখে না তারা সওম পালন করবে। সওম পালন তাদের যৌন উত্তেজনা দমন করবে। কারণ পানাহারের মাত্রা কম হলে যৌন চাহিদা প্রদমিত হয়।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৬
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
রেফারেন্স উত্তর :
দ্রুত বিবাহের কার্যকরি ৭ আমল
প্রশ্নঃ ১০৬৬৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর কিছু দিন আগে ইউটিউবে দ্রুত বিয়ে হওয়ার ২ টি আমল দেখলাম। প্রথমটি হলো প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে সূরা কাসাসের ২৪ নম্বর আয়াত ২১ বার পড়তে হবে, টানা ৪১ দিন। দ্বিতীয়টি হলো ফজর ও মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষে বাম হাতের কব্জির উপর ডান হাতের কব্জি রেখে চাপ দিয়ে ধরে ৪১ বার ইয়া ফাত্তাহু পড়তে হবে। তবে যিনি আমলগুলো আলোচনা করেছিল, তিনি কোনো হাদীসের রেফারেন্স দেননি।
এখন আমার প্রশ্ন এই আমলগুলো এবং আমলের নিয়ম গুলো কি সহীহ, এর কি কোনো হাদীস বা রেফারেন্স আছে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এজাতীয় অজিফাগুলো অধিকাংশই অভিজ্ঞতা নির্ভর। হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে। চাইলে করে দেখতে পারেন। নিচের লেখাটিও অনুসরণ করতে পারেন।
দ্রুত বিবাহ করতে কার্যকরি ৭ আমল
************************************
আবদুল্লাহ তামিম:
বিবাহ একটি সুন্নাত আমল। কে কখন বিবাহ করবে আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। আল্লাহ তায়ালা চাইলেই সব কিছু সম্ভব।আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কোনো কিছু সম্ভব না। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যাদের বিবাহের বয়স অতিক্রম করলেও তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারছেন না।
ছেলে বা মেয়ে বিবাহের ক্ষেত্রে তারা যদি প্রস্তাব পেয়েও তাদের বিবাহ না হয় তাহলে তাদের জন্য কার্যকরি ৭টি দোয়া আমরা আমলের জন্য উপস্থাপন করেছি।
কিছু লোক খুব ভাগ্যবান, যারা বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে তাড়াতাড়ি তাদের বিবাহও হয়ে যায়। অনেক মানুষ এমন আছে যারা প্রস্তাবের পর আর বিবাহ হয় না। আর কেউ কেউ বিবাহের প্রস্তাব না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়।
হতাশ হওয়া উচিত নয়, হতাশ হবেন না। প্রতিক্ষা করলে বিলম্বে আল্লাহ তায়ালা ভালোটা ব্যবস্থা করে দিতে পারেন।কারণ আল্লাহ সবসময় আপনার জন্য সেরাটা চান।
আমরা যে ৭টি আমল উল্লেখ করছি, সবসময় নিয়ম মত তা আমল করলে আল্লাহ চাহে তো খুব শীঘ্রই একটি বিয়ের প্রস্তাব পাবেন আপনি।
১. সূরা ইয়াসিন পাঠ করা
সূরা ইয়াসিন কুরআনের অন্তর হিসেবেও পরিচিত। কারণ, তার রয়েছে সীমাহীন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট। সূরা ইয়াসিন শীঘ্রই বিবাহ বিচ্ছেদের সাথে সম্পর্কিত সব সমস্যার সমাধান করে দেয় ।
০২. সূরা দোহা ও কাসাসের ২৪ আয়াত পাঠ
فَسَقَى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّى إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
সূরা কাসাসের ২৪ আয়াতে মুসা আ. এর বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। মূসা আ. খুব একাকী ও বিষণ্ণতা অনুভব করেছিলেন তখন তিনি এ আয়াতটি বেশি বেশি পাঠ করেছেন।
অনেক আলেমরাই এ আমলটি দিয়ে থাকেন। যদি কোনো ছেলে এই আয়াতটি ১০০ বার পাঠ করে, তাহলে শীঘ্রই তিনি তার জন্য একটি ভালো পাত্রী পাবেন বলে আশা করা যায়।
মেয়েদের সর্বোত্তম বিবাহ প্রস্তাব পেতে ফজরের নামাজে ১১ বার সূরা দোহা পাঠ করে দোয়া করা।
৩. আল্লাহ নামের জিকির
প্রথমে আমলটি করার শুরুতে ১১ বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। তারপর ৩১৩ বার আল্লাহ শব্দটি পাঠ করা।
শেষে আবারো ১১বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। টানা ৪১ দিন বাদ না দিয়ে এ আমলটি করতে হবে।
৪. সূরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
“এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকে, তবে বলে দাও, আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।”
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পর এ আমলটি করতে হবে। সঙ্গে ১৯বার বিসমিল্লাহ, ১১০০ বার সুরা তাওবার ১২৯ নম্বর আয়াত পাঠ করা। এর পর ১০০বার দরুদ শরিফ পাঠ করা। শেষে ১০০বার আবারো বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।
৫. সূরা মরিয়ম পড়া
সূরা মরিয়ম কোন এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে পড়া। যে মেয়ের বা ছেলের বিবাহ নিয়ে সমস্যা সে পড়বে বা তাদের বাবা মা পড়বে।
৬. হযরত ফাতেমা রা. তাসবিহ পাঠ করা
২ রাকাত নামাজ আদায় করে কুরআন তিলাওয়াত করে ১১ বার দরুদ শরিফ পড়বে। তারপর ফাতেমা রা. এর তাসবিহ পাঠ করবে।
ফাতেমা রা. এর তাসবিহ হলো ৩৪ বার আল্লাহ ও আকবার পড়বে। ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ পড়ে শেষে ১১বার দরুদ শরিফ পড়বে।
তারপর সুরা পাঠ করবে। প্রথমে সুরা দোহা, সুরা শুআরা, সুরা কাসাস, সুরা ইয়াসিন তারপর আবারো সুরা শুআরা পাঠ করবে। উল্লেখ্য এ আমল পাত্রের পিতা -মাতা করতে পারবে বা তারা নিজেরাই।
৭. সূরা মুজাম্মিল পাঠ করা
যদি কোন মেয়ে বড় হয়ে যায়, কোন বিয়ের প্রস্তাব না পায় তাহলে একজন মা বাবা শুক্রবার দিনে জুম্মার নামাযের পর ২ রাকাআত নামাজ আদায়ের পর সূরা মুজাম্মিলের ২১ বার পড়তে হবে।
সূত্র: দ্যা ইসলামিক ইনফরমেশন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রশ্নঃ ৭৯৫৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম শাইখ আমি শুনেছি যে,বিয়ে ((কারো জন্য ফরজ আবার কারো জন্য ওয়াজিব আবার কারো জন্য সুন্নত আবার কারো জন্য নফল আবার কারো জন্য হারাম।))আমার প্রশ্ন হলো,আমার ৭০০০০ টাকা জমা আছে,আমি একজন ছাত্র।পড়া লেখার পাশাপাশি একটি মসজিদে খেদমত করি।সাত হাজার টাকা হাদিয়া পাই।বিয়ের অভাবে মনের বিভিন্ন গোনাহ হয়।যতটুকু সম্ভব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করি। আপনার দৃষ্টিতে ব্যাকেটে লেখা বিষয়গুলোর মধ্যে কোনটা আমার জন্য প্রজোয্য।মেহেরবানি করে উত্তর দিবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিবাহের জন্য দু'টি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত শারীরিক সক্ষমতা। দ্বিতীয়তঃ আর্থিক সঙ্গতি।
আপনার বর্ণনায় বুঝা যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ আপনার আর্থিক সঙ্গতি আছে। এবার রইল আপনার শারীরিক সক্ষমতা। যদি সেটি ঠিক থাকে তাহলে তো ইতোমধ্যে আপনার জন্য বিবাহ করা ওয়াজিব হয়ে গিয়েছে। যেহেতু বিবাহ না করলে চোখের গুনাহ, মনের ওয়াসওয়াসায় লিপ্ত হয়ে নিজের ঈমান-আমল নষ্ট হওয়ার পথে।
অতএব শরীয়তের শর্ত মেনে পারিবারিকভাবে দ্রুত বিবাহ করে নিন।
আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য উত্তম সঙ্গিনীর সহজ ব্যবস্থা করে দিন। আপনার দাম্পত্য জীবন দুনিয়া ও আখিরাতে সুন্দর করে দিন। আমীন
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
১৫ বছর বয়সে কি বিবাহ করা যাবে?
প্রশ্নঃ ৭৯৪৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্ন: ১.দ্রুত বিয়ে সমন্ধে সমস্ত হাদিস জানতে চাই।
২.দ্রুত বিবাহের কিছু বুদ্ধি এবং পরামর্শ চাই।
৩.আমার আসল বয়স ১৫ বছর।আমার এখনো কোনো মানুষের ভরন-পোষণের ক্ষমতা হয়নি।কিন্তু আমার প্রচন্ড যৌন চাহিদা।নিজেকে খুব কষ্টে হস্তমৈথুন থেকে আটকে রাখি। বাবা-মা কেও বিয়ের কথা বলতে পারি না।
(ক) এ আবস্থায় আমার করণীয় কি??
(খ)আমি কি করলে হস্তমৈথুন থেকে বাচবো??
(গ)এ অবস্থায় নিজের সামর্থ না হয়া পর্যন্ত কিভাবে যৌন চাহিদা মিটাবো??
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যৌবনের প্রথম ধাক্কা সামাল দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সলাত জামাতের সাথে সুন্নত তরীকায় আদায় করুন।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করুন।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআনুল কারীমের অনুবাদ ও তাফসীর অধ্যায়ন করুন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ুন।
সমস্ত গুনাহ পরিত্যাগ করুন। বিশেষ করে চোখের গুনাহ থেকে পরিপূর্ন মুক্ত থাকুন।
সর্বদা ভালো লোকদের সান্নিধ্যে থাকুন।
একাকী নিঃসঙ্গ সময় কাটাবেন না।
প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখে রোজা রাখুন।
আরো বেশি রোযা রাখার সাহস থাকলে প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার সওম পালন করুন।
কোন আল্লাহ ওয়ালা মুত্তাকী আলিমের সাহচর্য গ্রহণ করুন। তার উপদেশ শুনুন। উপদেশগুলো বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে তার কাছে কিছু সময় অতিবাহিত করুন।
যেসব পরিবেশে গেলে হস্তমৈথুন বারবার হয়ে যায়, যাদের সঙ্গে থাকলে এই ধরনের ইচ্ছা জাগে, তাদেরকে উপেক্ষা করুন।
যৌনচাহিদা ও শারীরিক সক্ষমতা থাকলেই বিবাহ করা নয়। শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সঙ্গতি না থাকলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَلٰى عَبْدِ اللهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّه“ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه“ لَه“ وِجَاءٌ.
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছু ছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন। হে যুবক সম্প্রদায় ! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সাওম পালন করে। কেননা, সাওম তার যৌনতাকে দমন করবে।
টীকা :
হাদীসে ‘যুব সম্প্রদায়’ কাদের বলা হয়েছে, এ সম্পর্কে ইমাম নাবাবী লিখেছেন-
আমাদের লোকদের মতে যুবক-যুবতী বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা বালেগ [পূর্ণ বয়স্ক] হয়েছে এবং ত্রিশ বছর বয়স পার হয়ে যায়নি।
আর এ যুবক-যুবতীদের বিয়ের জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকীদ করলেন কেন, তার কারণ সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী তার বিশ্ববিখ্যাত বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থ “উমদাতুল ক্বারী” গ্রন্থে লিখেছেনঃ
“হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের বিয়ে করতে বলার কারণ এই যে, বুড়োদের অপেক্ষা এ বয়সের লোকদের মধ্যেই বিয়ে করার প্রবণতা ও দাবী অনেক বেশী বর্তমান দেখা যায়।
যুবক-যুবতীদের বিয়ে যৌন সম্ভোগের পক্ষে খুবই স্বাদপূর্ণ হয়। মুখের গন্ধ খুবই মিষ্টি হয়, দাম্পত্য জীবন যাপন খুবই সুখকর হয়, পারস্পরিক কথাবার্তা খুবই আনন্দদায়ক হয়, দেখতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়, স্পর্শ খুব আরামদায়ক হয় এবং স্বামী বা স্ত্রী তার জুড়ির চরিত্রে এমন কতগুলো গুণ সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই পছন্দনীয় হয়, আর এ বয়সের দাম্পত্য ব্যাপার প্রায়ই গোপন রাখা ভাল লাগে। যুবক বয়স যেহেতু যৌন সম্ভোগের জন্য মানুষকে উন্মুখ করে দেয়। এ কারণে তার দৃষ্টি যে কোন মেয়ের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে এবং সে যৌন উচ্ছৃঙ্খলতায় পড়ে যেতে পারে। এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে করতে তাকীদ করেছেন এবং বলেছেনঃ বিয়ে করলে চোখ যৌন সুখের সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে না এবং বাহ্যত তার কোন ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদিও কথা শুরু করেছেন যুবক মাত্রকেই সম্বোধন করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের এ তাকীদকে নির্দিষ্ট করেছেন কেবল এমন সব যুবক-যুবতীদের জন্য যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে। আর যারা বিয়ের ব্যয় বহনের সঙ্গতি রাখে না তারা সওম পালন করবে। সওম পালন তাদের যৌন উত্তেজনা দমন করবে। কারণ পানাহারের মাত্রা কম হলে যৌন চাহিদা প্রদমিত হয়।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৬
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন