মহিলাদের ইমামতি। কোন মহিলা কি ইমাম হতে পারবে?
প্রশ্নঃ ১২০২৮৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার জানার বিষয় হলো মেয়েরা মেয়েদের তারাবির ইমামতি করতে পারবে কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মহিলার ইমামতি মাকরূহে তাহরীমী তথা নাজায়েয। তারাবীর নামাযের জামাতেরও একই হুকুম। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বার এক বর্ণনায় এসেছে, হযরত আলী রা. বলেন-
لاَ تَؤُمّ الْمَرْأَةُ.
কোনো মহিলা যেন ইমামতি না করে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৪৯৯৪)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে ইবনে আউন রাহ. বলেন-
كَتَبْتُ إلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ، أَتَؤُمّ الْمَرْأَةُ النِّسَاءَ؟ فَقَالَ : لاَ أَعْلَمُ الْمَرْأَةَ تَؤُمّ النِّسَاءَ.
আমি নাফে রাহ.-কে পত্রলিখে জিজ্ঞেস করলাম- কোনো মহিলা কি অন্য মহিলাদের ইমামতি করতে পারবে? (উত্তরে) নাফে রাহ. বললেন, ‘আমার জানামতে কোনো মহিলা অন্য মহিলাদের ইমামতি করতে পারবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৪৯৯৫)
তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার মেয়ের ইমামতিতে ঐ তারাবীহের জামাতের আয়োজন করা ঠিক হবে না।
প্রকাশ থাকে যে, হাফেযা মহিলা কুরআনুল কারীম ইয়াদ রাখার জন্য নিয়মিত তিলাওয়াত করবে, অন্য হাফেযার সাথে দাওর করবে এবং তারাবীতে একাকী খতম করবে।
-কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ২১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪৮; ফাতহুল কাদীর ১/৩০৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮৭; আলইখতিয়ার ১/২১০; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৬৫
আল কাউসার।
মহিলারা ইমাম হওয়া শরীয়ত সম্মত নয় এটি কোরআন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কোরআন এবং হাদিসের স্পষ্ট ভাবে মহিলাদের ইমামতির কথা না থাকলেও ইঙ্গিত রয়েছে যেমন কোরআন, হাদীসে নেতৃত্বের কথা এসেছে। যেহেতু ইমামতীও একটি নেতৃত্ব। তাই আয়াত অনুপাতে নারীদের ইমামতী করার হুকুমও জানা যায়।
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ [٤:٣٤]
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন [সূরা নিসা-৩৪]
এছাড়া হাদীসে ইরশাদ হয়েছেঃ
عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: لَقَدْ نَفَعَنِي اللَّهُ بِكَلِمَةٍ سَمِعْتُهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيَّامَ الجَمَلِ، بَعْدَ مَا كِدْتُ أَنْ أَلْحَقَ بِأَصْحَابِ الجَمَلِ فَأُقَاتِلَ مَعَهُمْ، قَالَ: لَمَّا بَلَغَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ أَهْلَ فَارِسَ، قَدْ مَلَّكُوا عَلَيْهِمْ بِنْتَ كِسْرَى، قَالَ: «لَنْ يُفْلِحَ قَوْمٌ وَلَّوْا أَمْرَهُمُ امْرَأَةً
আবূ বাকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রুত একটি বাণীর দ্বারা আল্লাহ জঙ্গে জামালের (উষ্ট্রের যুদ্ধ) দিন আমার মহা উপকার করেছেন, যে সময় আমি সাহাবায়ে কিরামের সঙ্গে মিলিত হয়ে জামাল যুদ্ধে শারীক হতে প্রায় প্রস্তুত হয়েছিলাম। আবূ বাকরাহ (রাঃ) বলেন, সে বাণীটি হল, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, পারস্যবাসী কিসরা কন্যাকে তাদের বাদশাহ মনোনীত করেছেন,তখন তিনি বললেন, সে জাতি কক্ষণো সফল হবে না স্ত্রীলোক যাদের প্রশাসক হয়। [বুখারী, হাদীস নং-৪৪২৫]
উক্ত আয়াত এবং হাদীস প্রমাণ করে যে, নারীদের ইমামতী করা ইসলাম সম্মত নয়
عَنْ خَوْلَةَ بِنْتِ الْيَمَانِ، أُخْتِ حُذَيْفَةَ، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا خَيْرَ فِي جَمَاعَةِ النِّسَاءِ، إِلَّا عِنْدَ مَيِّتٍ، فَإنَّهُنَّ إِذَا اجْتَمَعْنَ قُلْنَ وَقُلْنَ» (المعجم الأوسط، رقم-7130)
(و) يكره تحريما (جماعة النساء) ولو التراويح في غير صلاة جنازة (لأنها لم تشرع مكررة) ، (رد المحتار-2\305، هداية-1\123)
(قَوْلُهُ وَجَمَاعَةُ النِّسَاءِ) أَيْ وَكُرِهَ جَمَاعَةُ النِّسَاءِ؛ لِأَنَّهَا لَا تَخْلُو عَنْ ارْتِكَابِ مُحَرَّمٍ وَهُوَ قِيَامُ الْإِمَامِ وَسَطَ الصَّفِّ فَيُكْرَهُ كَالْعُرَاةِ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ وَهُوَ يَدُلُّ عَلَى أَنَّهَا كَرَاهَةُ تَحْرِيمٍ؛ لِأَنَّ التَّقَدُّمَ وَاجِبٌ عَلَى الْإِمَامِ لِلْمُوَاظَبَةِ مِنْ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – عَلَيْهِ وَتَرْكُ الْوَاجِبِ مُوجِبٌ لِكَرَاهَةِ التَّحْرِيمِ الْمُقْتَضِيَةِ لِلْإِثْمِ وَيَدُلُّ عَلَى كَرَاهَةِ التَّحْرِيمِ فِي جَمَاعَةِ الْعُرَاةِ بِالْأَوْلَى وَاسْتَثْنَى الشَّارِحُونَ جَمَاعَتَهُنَّ فِي صَلَاةِ الْجِنَازَةِ فَإِنَّهَا لَا تُكْرَهُ؛ لِأَنَّهَا فَرِيضَةٌ وَتَرْكُ التَّقَدُّمِ مَكْرُوهٌ فَدَارَ الْأَمْرُ بَيْنَ فِعْلِ الْمَكْرُوهِ لِفِعْلِ الْفَرْضِ أَوْ تَرْكِ الْفَرْضِ لِتَرْكِهِ فَوَجَبَ الْأَوَّلُ بِخِلَافِ جَمَاعَتِهِنَّ فِي غَيْرِهَا، (البحر الرائق، كتاب الصلاة، جماعة النساء فى الصلاة-1\372، كرتاشى)
(وَكَذَا) يُكْرَهُ (جَمَاعَةُ النِّسَاءِ وَحْدَهُنَّ) ؛ لِأَنَّهُ يَلْزَمُهُنَّ إحْدَى الْمَحْظُورَيْنِ إمَّا قِيَامُ الْإِمَامِ وَسَطَ الصَّفِّ، أَوْ تَقَدُّمُهُ وَهُمَا مَكْرُوهَانِ فِي حَقِّهِنَّ كَرَاهَةَ تَحْرِيمٍ إلَّا فِي صَلَاةِ الْجِنَازَةِ فَإِنَّهَا لَا تُكْرَهُ فِيهَا؛ لِأَنَّهَا فَرِيضَةٌ وَلَا تُتْرَكُ بِالْمَحْظُورِ (مجمع الأنهر-1\108)
আহলে হক মিডিয়া।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, দারুল কুরআন আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা
মুহাম্মদপুর, ঢাকা
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন