প্রশ্নঃ ১২২০১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
হযরত, আমি জানতে চাচ্ছি যে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে বিবাহ দেওয়া বাবা মায়ের কর্তব্য।কিন্তু বিভিন্ন ভাবে বুজানোর পরেও উনারা যদি সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও বিবাহ না দেন শুধু অর্থনৈতিক দিক চিন্তা করে, তাহলে কি সন্তান ইমান রক্ষার্থে নিজ দায়িত্বে বিবাহ করিতে পারবে? বাবা মায়ের ক্ষেত্রে এই অমান্য তাকে ইসলাম কিভাবে দেখে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে উত্তর দেয়া হয়েছে, নিচে সংযুক্ত করা হল।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১০৭২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কোনও ছেলে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরে শারীরিক এবং আর্থিক সক্ষমতা থাকার পরেও বাবা মা ছেলের বিয়ে দিতে না চাই সেক্ষেত্রে ছেলের করনীয় কি? আর যদি ছেলে বিয়ে করেও ফেলে তারপর এই অজুহাতে তার উপর তার বাবা মা নানান ভাবে মানসিক এবং আর্থিক চাপ তৈরি করতে থাকে সেক্ষেত্রে করনীয় কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ছেলে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে উত্তম প্রস্তাব পাওয়া গেলে বিবাহ করাতে দেরি করা কিছুতেই উচিত নয়। যদি দেরি করানো হয়, আর এরই মাঝে ছেলে মেয়ে অন্যায় অপরাধে জড়িত হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু এই গুনাহের দায়ভার পিতা মাতার উপর আসবে।
উপযুক্ত প্রস্তাব এলে বিবাহ করাতে গড়িমশি নয়:
আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِذَا خَطَبَ إِلَيْكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ ، إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ
তোমরা যে ছেলের দ্বীনাদারি ও চরিত্রের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হতে পার সে যদি প্রস্তাব দেয় তাহলে তার কাছে বিয়ে দাও। যদি তা না কর তাহলে পৃথিবীতে মহা ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হবে।
—তিরমিযী ১০৮৪
প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে বাবা-মাকে বুঝাতে থাকবে। নিজেও চেষ্টা করতে থাকবে। সফলতা আল্লাহ তায়ালাই দিবেন।
পরিবারকে না জানিয়ে গোপন বিবাহ পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। যা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না।
শরীয়তের শর্ত মেনে পারিবারিকভাবেই বিবাহ করুন। বিবাহের পর যাবতীয় প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর এবং দৈনিক ন্যূনতম দু'রাকা'আত সলাতুল হাজত পড়ে পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চেয়ে দোয়া করতে থাকুন। তিনি অবশ্যই সাহায্য করবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রাপ্ত বয়স্ক একজন যুবক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হাল ছেড়ে দেবে না। বরং জীবন যুদ্ধে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে তাকে বিজয়ী হতেই হবে। বাবা-মাকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। স্ত্রীর সঙ্গেও খারাপ আচরণ করা যাবে না। পারিবারিক বন্ধন ও স্ত্রীর দায়িত্ব আদায় এর মাঝে দিয়ে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা ও দৃঢ়তার সাথে চলতে হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রশ্নঃ ১১৯৯৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যদি বাবা মা বিয়ে দিতে না চায় তবে হারাম থেকে বেঁচে থাকতে নিজেরা বিয়ে করা যায়? এই ব্যাপারে মাসাইল কি? যদি বলতেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী!
বিবাহ একটি মহৎ ইবাদত। এটা নিছক সামাজিক কোনো রীতিনীতি নয়। নয় কোনো ছেলে খেলাও। যেখানে আমরা জীবনের নূন্যতম বিষয়েও পরিবারের সাথে আলোচনা করে থাকে সেখানে বিবাহের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ, গুরুগম্ভীর ও দূরদৃষ্টি সম্পৃক্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে কিভাবে পরিবারকে না জানিয়ে করার চিন্তা করি বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।
পরিবারের মুরুব্বিদের না জানিয়ে/পালিয়ে বিয়ে করা শরীয়তের নীতি-আদর্শের সম্পূর্ণ খেলাফ। কেননা এখানে আবেগের চেয়ে বাস্তবতা, অভিজ্ঞতা এবং বর-কনের কাফায়াত (বিবাহ প্রত্যাশীদের সমতা) এর পরিমাণ বেশী। এগুলোতে একটি ভুল সিদ্ধান্ত জীবন থেকে ‘‘জীবন’’কে বের করে দিতে পারে।
তাছাড়া পরিবারের লোকজন বিশেষত পিতামাতা কখনোই সন্তানের অমঙ্গল চায় না। সন্তানের মঙ্গল এবং পারিপার্শ্বিকতার কথা চিন্তা করেই অনেক সময় পরিবার ছেলেমেয়েদের পছন্দ মতে এবং তাদের প্রত্যাশিত সময়ে বিবাহ দেন না।
আরেকটি বিষয় যা না বললেই নয়। তাহলো আমাদের অভিজ্ঞতায় বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যারা bf/gf বা এজাতীয় কোনো সম্পর্কে জড়িত পড়ে তাদেরই এজাতীয় বিষয়ের সম্মুখীন হতে হয়। অথচ নারীপুরুষের বিবাহপূর্ব যেকোনো সম্পর্ককে শরীয়ত কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। একারণেই পর্দার বিধান দিয়েছে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, মানুষ হারাম সম্পর্ককে ভালোবাসার ছদ্মাবরণে আপন করে নিয়েছে। এর ফলে যেমনিভাবে ধ্বংস হচ্ছে ব্যক্তিজীবন তেমনি পরিবার, সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে হারাম সম্পর্কের সূচনার মধ্য দিয়ে আসা (যদিও বিয়ে করে বৈধ পদ্ধতিতেই সন্তান গ্রহন করা হয়) আমাদের কোমলমতি সন্তানগুলোও। বাবা মায়ের অবৈধ সম্পর্কে কুপ্রভাব থেকে সন্তানরাও মুক্ত থাকে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন। এর ভয়াবহা উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
কাজেই আবেগ তাড়িত না হয়ে আবেগ কন্ট্রোল করে শরীয়তসম্মত পন্থায় পারিবারের পরামর্শক্রমে বিষয়গুলোর সুরাহা করা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে দীনের সহিহ বুঝ ও সুভবুদ্ধি দান করুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা, মোহাম্মাদপুর, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন