আদম আ. এর ক্ষমা প্রার্থনার প্রক্রিয়া
প্রশ্নঃ ১১৭৯৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আদম আঃ এর ক্ষমা প্রার্থনার প্রক্রিয়া টা জানতে চাই। কি দোয়া করে তিনি ক্ষমা পেলেন। হাদিসের রেফারসহ। কাউকে জানাতে হবে খুব জরুরি।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর তাওবাহ আল্লাহ তাআলা কোন কথার ভিত্তিতে কবুল করেছেন, সেই বাক্য কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা উদ্ধৃত করেছেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
فَتَلَقّٰۤی اٰدَمُ مِنۡ رَّبِّہٖ کَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیۡہِ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ
অতঃপর আদম স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ হতে (তওবার) কিছু শব্দ শিখে নিল (যা দ্বারা সে তওবা করল) ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করলেন। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
—আল বাকারা - ৩৭
কুরআনুল কারীমের সূরা আ'রাফে আল্লাহ তাআলা সেই বাক্য উল্লেখ করেছেন:
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَاِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
তারা বলল হে, আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজ সত্তার উপর জুলুম করে ফেলেছি। আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন আমাদের প্রতি রহম না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অকৃতকার্যদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।
—আল আরাফ - ২৩
যা আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে দেয়া বাক্য ছিল। সেখানে এমন কোন কথা নেই যে, আমাদের পেয়ারা হাবীব মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উসিলা দিয়ে দোয়া করার পর তওবাহ কবুল হয়েছে।
সুতরাং সমাজে প্রচলিত এই সংক্রান্ত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন।
এইভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উসিলা দিয়ে ক্ষমা চাওয়া সুন্নাহ সম্মত নয়। এটি জোর দিয়ে বলা যায়।
বাকি রইল ওয়াসীলা দিয়ে দোয়া করা জায়েয আছে কিনা? এই বিষয়টি দ্বিমত পূর্ণ হলেও তাহকীকি অর্থাৎ গবেষণালব্ধ এবং বাস্তব কথা হলো ওয়াসীলা দিয়ে দুআ করা জায়েয আছে।
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُثَنَّى عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ إِذَا قَحَطُوْا اسْتَسْقَى بِالْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا صلى الله عليه وسلم فَتَسْقِيْنَا وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا قَالَ فَيُسْقَوْنَ
আনাস রাযিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত:
‘উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু অনাবৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ‘আব্বাস ইব্নু ‘আবদুল মুত্তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর ওয়াসীলাহ নিয়ে বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করতেন। তিনি বলতেন, হে আল্লাহ্! আমরা অনাবৃষ্টি দেখা দিলে আমাদের নবীর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়াসীলাহ নিয়ে দু’আ করতাম, তুমি বৃষ্টি বর্ষণ করতে; এখন আমরা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাচা ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ওয়াসীলাহ্য় বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন বৃষ্টি হত।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭১০
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ৬৮২৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম।আমাদের সমাজে কথা প্রচলিত আছে যে আদম আলাইহিস সালাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামের ওসিলা দিয়ে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমা করা হতো না, একথা কি ঠিক?আমাদের সমাজে এভাবে দোআ করা হয় যে, আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওসিলায় আদম আলাইহিস সালাম থেকে আজ পর্যন্ত সকল মুসলিম কে ক্ষমা করে দাও, এভাবে দোআ করা যায়? এভাবে দোআ করা কি সুন্নাহ? ব্যক্তির ওসিলা দিয়ে দোআ করা কুরআন সুন্নাহ তে আছে কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর তাওবাহ আল্লাহ তাআলা কোন কথার ভিত্তিতে কবুল করেছেন, সেই বাক্য কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা উদ্ধৃত করেছেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
فَتَلَقّٰۤی اٰدَمُ مِنۡ رَّبِّہٖ کَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیۡہِ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ
অতঃপর আদম স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ হতে (তওবার) কিছু শব্দ শিখে নিল (যা দ্বারা সে তওবা করল) ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করলেন। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
—আল বাকারা - ৩৭
কুরআনুল কারীমের সূরা আ'রাফে আল্লাহ তাআলা সেই বাক্য উল্লেখ করেছেন:
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَاِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
তারা বলল হে, আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজ সত্তার উপর জুলুম করে ফেলেছি। আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন আমাদের প্রতি রহম না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অকৃতকার্যদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।
—আল আরাফ - ২৩
যা আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে দেয়া বাক্য ছিল। সেখানে এমন কোন কথা নেই যে, আমাদের পেয়ারা হাবীব মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উসিলা দিয়ে দোয়া করার পর তওবাহ কবুল হয়েছে।
সুতরাং সমাজে প্রচলিত এই সংক্রান্ত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন।
এইভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উসিলা দিয়ে ক্ষমা চাওয়া সুন্নাহ সম্মত নয়। এটি জোর দিয়ে বলা যায়।
বাকি রইল ওয়াসীলা দিয়ে দোয়া করা জায়েয আছে কিনা? এই বিষয়টি দ্বিমত পূর্ণ হলেও তাহকীকি অর্থাৎ গবেষণালব্ধ এবং বাস্তব কথা হলো ওয়াসীলা দিয়ে দুআ করা জায়েয আছে।
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُثَنَّى عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ إِذَا قَحَطُوْا اسْتَسْقَى بِالْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا صلى الله عليه وسلم فَتَسْقِيْنَا وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا قَالَ فَيُسْقَوْنَ
আনাস রাযিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত:
‘উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু অনাবৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ‘আব্বাস ইব্নু ‘আবদুল মুত্তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর ওয়াসীলাহ নিয়ে বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করতেন। তিনি বলতেন, হে আল্লাহ্! আমরা অনাবৃষ্টি দেখা দিলে আমাদের নবীর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়াসীলাহ নিয়ে দু’আ করতাম, তুমি বৃষ্টি বর্ষণ করতে; এখন আমরা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাচা ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ওয়াসীলাহ্য় বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন বৃষ্টি হত।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৭১০
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন