প্রশ্নঃ ১১৭০৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
হুজুর আমারর যখন কষ্ট লাগে বা মন খারাপ হয় এমনকি মাঝে মাঝে মন খারাপ না হলোও নামাজ পড়লে হুজুর যখন কেরাত পরে তখন কান্না চলে আসে। এতে কী নামাজ ভঙ্গ হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সালাতরত অবস্থায় যদি আল্লাহর ভয়, কবরের আযাব, জাহান্নামের শাস্তি, মৃত্যু যন্ত্রণা, আখিরাতের ভয়াবহ দৃশ্য ইত্যাদি স্মরণ করে অথবা কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন শাস্তির হুমকি ও করুণ পরিণতির কথায় প্রভাবিত হয়ে যদি কেউ কান্না করে তাহলে তা মুস্তাহাব (উত্তম) বরং তা মুত্তাকীন ও সালেহীনদের বৈশিষ্ট্য।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّىْ وَلِجَوْفِه أَزِيْزٌ كَأَزِيزِ الْمِرْجَلِ يَعْنِىْ: يَبْكِىْ
মুত্বররিফ ইবনে ‘আবদুল্লাহ ইবনে শিখখীর (রহঃ) নিজের পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি সলাত আদায় করছিলেন এবং তাঁর ভিতর ডেগের ফুটন্ত পানির মত আওয়াজ হচ্ছিল। অর্থাৎ তিনি কান্নাকাটি করছিলেন।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, বর্ণনাকারী বলেছেন,
رَأَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ يُصَلِّىْ وَفِىْ صَدْرِه أَزِيزٌ كَأَزِيزِ الرَّحَا مِنَ الْبُكَاءِ
“আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সলাত আদায় করতে দেখছি। এমতাবস্থায় তাঁর সিনার মধ্যে চাক্কির আওয়াজের ন্যায় কান্নার আওয়াজ থাকত।” (আহমদ; নাসায়ী প্রথমাংশটুকু, আবু দাউদ দ্বিতীয়াংশটুকু বর্ণনা করেছেন)
[আবু দাউদ ৯০৪, নাসায়ী ১২১৪, সহীহ আত্ তারগীব ৫৪৪, আহমদ ১৬৩১২, সহীহ ইবনে হিব্বান ৭৫৩। শাইখ আলবানী এটিকে সহীহ বলেছেন]
আল্লামা মুবারকপূরী বলেন: ”অত্র হাদিসের প্রকাশমান অর্থ এই যে, আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন সলাত বিনষ্ট করে না-চাই তার মুখে কোনো শব্দ উচ্চারিত হোক বা না হোক। ইমাম তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ হাদিস থেকে এটাই বুঝেছেন। তাদের গ্রন্থে এ হাদিসের ভিত্তিতে ‘অধ্যায়’ রচনা করা দ্বারা তাই সাব্যস্ত হয়।”
তবে যদি অসুখ-বিসুখ, শারীরিক ব্যথা-বেদনা, মানসিক কষ্ট বা দুনিয়াবি বিপদ-মুসিবতের কথা স্মরণ করে কান্না আসে তাহলে তা যথাসম্ভব প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। কিন্তু যদি চেষ্টা থাকা স্বত্বেও কান্না প্রতিহত করা সম্ভব না হয় তাহলে সালাত নষ্ট হবে না ইনশাআল্লাহ। কেননা তা তার সাধ্যের বাইরে।
কিন্তু যদি কান্না বন্ধ করার ক্ষমতা থাকা স্বত্বেও আওয়াজ করে কান্না অব্যাহত রাখে তাহলে তাতে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা, তা সালাত বহির্ভূত বিষয়। অধিকাংশ ফিকাহবীদ এ বিষয়ে একমত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন