আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কণ্ঠস্বর সুন্দর করার চমৎকার আমল

প্রশ্নঃ ১১০৮৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কন্ঠ খুবই সুন্দর এবং স্পষ্ট করার কী কী আমল আছে?

১২ জুলাই, ২০২৫
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যার পরোতে পরোতে রয়েছে শৃঙ্খলা। যা মানুষকে আগামীদিনের পথ চলতে সাহায্য করে। আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিকূলের সেরা আশরাফুল মাকলুকাত খ্যাত মানুষ। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সুন্দর থেকে সুন্দরতম অবয়ব দিয়ে। এক হাদিসে আছে নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সুন্দর,

সৌন্দর্য তিনি পছন্দ করেন। মানুষ হিসেবে আমরাও সৌন্দর্যকে ভালোবাসি। সুন্দর হতে চাই। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার কাছে রূপের সৌন্দর্য, এবং কণ্ঠের সৌন্দর্যই আসল সৌন্দর্য নয় । বরং ইমান-আমলের সৌন্দর্যই প্রকৃত সৌন্দর্য। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন

إِنَّ الله لا يَنْظُرُ إِلى أَجْسامِكْم، وَلا إِلى صُوَرِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ " رواه مسلم.

নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের দেহাবয়ব এবং রূপের সৌন্দর্য দেখেন না। তিনি দেখেন তোমাদের হৃদয়ের সৌন্দর্য কাজেই আমাদের উচিত চেহারার সৌন্দর্যের প্রতি অধিক মনোনিবেশ না করে অত্মিক সৌন্দর্য হাসিলে ব্রতী হওয়া আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন।

এতদসত্ত্বেও কিছু ‍কিছুআমল করণীয় যেগুলো করলে কণ্ঠ সুন্দর হয়। এবং সেই বিষয়গুলোর সবই অভিজ্ঞতা এবং চিকিৎসা নির্ভর। ইচ্ছে হলে আপনি সেগুলো গ্রহন করতে পারেন। অথবা সরাসরি কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শও করতে পারেন।

নিয়মিত অনুশীলন:
প্রতিদিন কিছু সময় জোরে জোরে কথা বলার এবং কুরআন তেলাওয়াত করার অভ্যাস করুন। এতে আপনার ভোকাল কর্ড শক্তিশালী হবে এবং কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হবে।

গলার ব্যায়াম:
গলার কিছু সাধারণ ব্যায়াম রয়েছে যা কণ্ঠস্বরকে সুরেলা করতে সাহায্য করে। যেমন - "আলিফের উচ্চারণ করা, "বা এর উচ্চারণ করা" ইত্যাদি হরফগুলো এবং সেগুলোর পঙতিমালা বারবার উচ্চারণ করা। সেটা শিখতে আপনি কোনো সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী হাফেজে কুরআনের শরণাপন্ন হোন। হিফজখানার ছাত্রদের প্রতিদিন এই পদ্ধতির মাধ্যমে মশক করিয়ে সুললিত কণ্ঠের অধিকারী বানানো হয়।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা:
পর্যাপ্ত পানি পান করা শরীরকে আর্দ্র রাখে এবং গলার শুষ্কতা দূর করে। এটি কণ্ঠস্বরকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

গরম পানির ভাঁপ নেয়া:
গরম পানির ভাঁপ নিলে গলার পেশি রিলাক্স হয় এবং কণ্ঠস্বর পরিষ্কার হয়।

পান, ধূমপান, মদ্যপান এবং সবধরণের তামাক পরিহার করা:
পান, ধূমপান, মদ্যপান এবং তামাক কণ্ঠস্বরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এগুলো পরিহার করা আবশ্যক।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস:
এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত যা গলার জন্য উপকারী। যেমন - মধু, আদা, গরম পানি।, লবঙ্গ ইত্যাদি। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাবার-পানীয়, আইসক্রিম, শসা, কলা গলার জন্য ক্ষতিকর। তাই এগুলোতে পরিমিত হতে হবে।

মানসিক শান্তি:
মানসিক চাপমুক্ত থাকলে কণ্ঠস্বর আরও সুন্দর ও স্পষ্ট হয়।

ডাক্তারের পরামর্শ:
যদি কণ্ঠস্বরের সমস্যা গুরুতর হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন