আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

শুধু বৃহস্পতিবার রোযা রাখা/আশুরার রোযা

প্রশ্নঃ ১১০২০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি বেশিরভাগ সময়ই প্রতি বৃহস্পতিবার নফল রোজা রেখে থাকি। মাঝে মাঝে রাখা হয় না। এখন আমার মা বললেন ইহুদিরা একটা রোজা করতে আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন দুইটা রোজা করতে। ইহুদিদের মতো যেনো না হয়। আমার বাবা ও ঠিক একই কথা বলেছেন। কিন্তু আমি প্রতি বৃহস্পতিবার রোজা রাখি তাহলে তো আমার মাসে ১টা রোজা রাখা হলো না। এখন কি আমি শুধু বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে পারবো? নাকি আমার আমার দুইটা রোজা রাখতে হবে? আমার মা-বাবা বলেছে এইটা কি যথাযর্থ?

৩০ নভেম্বর, ২০২১
Dhaka

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন।

حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْفَلاَّسُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَحَرَّى صَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ حَفْصَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏

আইশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি বেশি খেয়াল রাখতেন।
—জামে' আত-তিরমিজী, হাদীস নং ৭৪৫

প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা গোটা জীবন রোজা রাখার সমতুল্য। প্রতিমাসে এই তিনটি রোজা রাখার চেষ্টা করবেন।

আলহামদুলিল্লাহ বিগত কয়েক মাস থেকে আমাদের অ্যাপে এই রোজার নোটিফিকেশন দেয়া হচ্ছে।

আপনার আব্বু আম্মু যে বিষয়টি বলতে চেয়েছেন, কথাটি ঠিক আছে। জায়গা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
কথাটি হল: হিজরী বর্ষের প্রথম মাস মুহররম, এর ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। আশুরার রোজা ইসলামের শুরুর দিকে ফরজ ছিল। এই রোজার প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। ইহুদীরা এই দিনে রোজা রেখে আসছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, আমি আগামী বছর বেঁচে থাকলে আশুরার সাথে ৯ তারিখেও রোযা রাখবো। তাহলে আমাদের আমল ইয়াহুদীদের আমল থেকে ভিন্নতর হবে। এই হিসেবে শুধুমাত্র আশুরার দিন রোজা রাখা অনুচিত। আশুরার আগের দিনসহ মিলিয়ে মোট দুইটি রোজা রাখা উত্তম।

وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ أُمَيَّةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا غَطَفَانَ بْنَ طَرِيفٍ الْمُرِّيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ، بْنَ عَبَّاسٍ - رضى الله عنهما - يَقُولُ حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ - إِنْ شَاءَ اللَّهُ - صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ‘আশূরার দিন সিয়াম পালন করেন এবং লোকদের সিয়াম পালনের নির্দেশ দেন, তখন সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়াহুদ এবং নাসারা এই দিনের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে থাকে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ইনশাআল্লাহ আগামী বছর আমরা নবম তারিখেও সিয়াম পালন করব। বর্ণনাকারী বললেন, এখনো আগামী বছর আসেনি, এমতাবস্হায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইন্তেকাল হয়ে যায়।
—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৫৬

প্রশ্নে উল্লেখিত বৃহস্পতিবার রোজা কিছুতেই মাকরুহ নয়। বরং জুমার দিন ফজিলতের দিন মনে করে এককভাবে জুমার দিন রোজা রাখা মাকরুহ।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেন:

ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন