আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১৪- রোযার অধ্যায়
হাদীস নং: ২৫৯৪
আন্তর্জাতিক নং: ৭৮২-৩
৩১. রমযান ব্যতীত অন্য মাসেও নবী (ﷺ) এর রোযা পালন এবং কোন মাস রোযা পালন থেকে খালি না থাকা মুস্তাহাব
২৫৯৪। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শাবান মাস ব্যতীত বছরের অন্য কোন মাসে এত অধিক রোযা পালন করতেন না। তিনি বলতেনঃ ″তোমরা যথাসাধ্য অধিক পরিমাণে ভাল কাজ কর। কারণ আল্লাহ তাআলা সাওয়াব দিতে কখনও ক্লান্ত হন না বরং তোমরাই আমল করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়।″ তিনি আরও বলতেনঃ “বান্দা যে কাজ নিরবিচ্ছিন্নভাবে করতে পারে, তাই আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়- তার পরিমাণ কম হলেও। *”
* কেবল রমযানের পূর্ণ মাস রোযা পালন করার জন্য মুসলমানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহানবী প্রতি মাসেই কয়েক দিন করে নফল রোযা পালন করতেন। কিন্তু শা'বান মাসে সর্বাধিক সংখ্যক রোযা পালন করতেন। কারণ শা'বান মাস হচ্ছে রমযান মাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার মাস ।
* কেবল রমযানের পূর্ণ মাস রোযা পালন করার জন্য মুসলমানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহানবী প্রতি মাসেই কয়েক দিন করে নফল রোযা পালন করতেন। কিন্তু শা'বান মাসে সর্বাধিক সংখ্যক রোযা পালন করতেন। কারণ শা'বান মাস হচ্ছে রমযান মাসের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার মাস ।
بَاب صِيَامِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَيْرِ رَمَضَانَ وَاسْتِحْبَابِ أَنْ لَا يُخْلِيَ شَهْرًا عَنْ صَوْمٍ
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ يَحْيَى بْنِ، أَبِي كَثِيرٍ حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، - رضى الله عنها - قَالَتْ لَمْ يَكُنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الشَّهْرِ مِنَ السَّنَةِ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ وَكَانَ يَقُولُ " خُذُوا مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ فَإِنَّ اللَّهَ لَنْ يَمَلَّ حَتَّى تَمَلُّوا " . وَكَانَ يَقُولُ " أَحَبُّ الْعَمَلِ إِلَى اللَّهِ مَا دَاوَمَ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ وَإِنْ قَلَّ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে একটি মূলনীতি হিসেবে বলেন যে, আল্লাহ তা'আলার কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তাই, যা আমলকারী নিয়মিতভাবে করে। কেননা যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে আমল করে সে ওই ব্যক্তির মত, যে বাদশার দরবারে নিয়মিতভাবে আসা-যাওয়া করে। যে ব্যক্তি কখনও হাজির হয় আবার কখনও গরহাজির থাকে, সে বাদশার অতটা প্রিয় হতে পারে না, যতটা নিয়মিত হাজিরাদাতা হয়ে থাকে। অনুরূপ যে ব্যক্তি নিয়মিত ইবাদত বন্দেগী চালিয়ে যায়, সে যেন মাওলার দরবারের একজন নিয়মিত হাজিরাদাতা। স্বাভাবিকভাবেই সে আল্লাহর বেশি প্রিয়ভাজন হবে। তাছাড়া কোনও ইবাদত কিছুদিন করার পর ছেড়ে দেওয়াটা গরহাজির হয়ে পড়ার মত। এতে কেমন যেন বিমুখতা ও অনীহা ভাব প্রকাশ পায়, যা একরকম বেআদবীও বটে। অনুপস্থিতির সে বেআদবী যাতে না হয়ে যায় এবং ছাওয়াব পাওয়ার সিলসিলা যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য উচিত যতটুকু পরিমাণ আমল নিয়মিত করা যাবে অতটুকুই গ্রহণ করা, তা অল্পই হোক না কেন। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছেঃ-
أحب الأعمال إلى الله أدومها وإن قل
“আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তা-ই, যা স্থায়ী হয়, যদিও সে আমল অল্প পরিমাণ হয়। " সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৮৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৮২। সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ১৩৬৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৮৫৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৭৬২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৪০. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৩০৮
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
আল্লাহর কাছে যেহেতু স্থায়ী আমলই বেশি পসন্দনীয়, তাই নফল ইবাদত এতটুকু পরিমাণেই শুরু করা উচিত, যা নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
أحب الأعمال إلى الله أدومها وإن قل
“আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমল তা-ই, যা স্থায়ী হয়, যদিও সে আমল অল্প পরিমাণ হয়। " সহীহ বুখারী, হাদীছ নং ৫৮৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীছ নং ৭৮২। সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ নং ১৩৬৮; জামে তিরমিযী, হাদীছ নং ২৮৫৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীছ নং ৭৬২; সুনানে ইবন মাজাহ, হাদীছ নং ৪২৪০. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৬৩০৮
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
আল্লাহর কাছে যেহেতু স্থায়ী আমলই বেশি পসন্দনীয়, তাই নফল ইবাদত এতটুকু পরিমাণেই শুরু করা উচিত, যা নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
