আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৯- আযান-ইকামতের অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৭৭৫
৪৯৭. এক রাক'আতে দু’সূরা মিলিয়ে পড়া, সূরার শেষাংশ পড়া, এক সূরার আগে আরেক সূরা পড়া এবং সূরার প্রথমাংশ পড়া।
আব্দুল্লাহ্ ইবনে সায়িব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) ফজরের নামাযে সূরা মু’মিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মুসা (আলাইহিস সালাম) ও হারূন (আলাইহিস সালাম) বা ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকু’তে চলে গেলেন।
উমর (রাযিঃ) প্রথম রাক'আতে সূরা বাকারার একশ বিশ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাকআতে মাসানী* সূরা সমূহের কোন একটি তিলাওয়াত করেন।
আহনাফ (রঃ) প্রথম রাক'আতে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক'আতে সূরা ইউসুফ বা ইউনুস** তিলাওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি উমর (রাযিঃ)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা দিয়ে ফজরের নামায আদায় করেন।
ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) (প্রথম রাকআতে) সূরা আনফালের চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাক'আতে মুফাসসাল সূরা সমূহের*** একটি পড়েন।
যে ব্যক্তি দু’রাক'আতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’রাকআতে একই সূরা দুহরিয়ে পড়ে, তার সম্পর্কে কাতাদা (রাহঃ) বলেন, সবই মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তাআলার কিতাব। (অর্থাৎ এতে কোন দোষ নেই)।
উবাইদুল্লাহ্ (রাহঃ)........আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক আনসারী সাহাবী**** কুবার মসজিদে তাঁদের ইমামতি করতেন। তিনি সশব্দে কিরাআত পড়া হয় এমন কোন নামাযে যখনই কোন সূরা তিলাওয়াত করতেন, قل هو الله أحد সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক'আতেই তিনি এরূপ করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর কাছে বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামতি করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামতি ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামতি করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী (ﷺ) যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (ﷺ)-কে জানান। তিনি বললেন, হে অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দেয়? আর প্রতি রাক'আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।
*
**
***
****
আব্দুল্লাহ্ ইবনে সায়িব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) ফজরের নামাযে সূরা মু’মিনূন পড়তে শুরু করেন। যখন মুসা (আলাইহিস সালাম) ও হারূন (আলাইহিস সালাম) বা ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আলোচনা এল, তাঁর কাশি উঠল আর তখন তিনি রুকু’তে চলে গেলেন।
উমর (রাযিঃ) প্রথম রাক'আতে সূরা বাকারার একশ বিশ আয়াত তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাকআতে মাসানী* সূরা সমূহের কোন একটি তিলাওয়াত করেন।
আহনাফ (রঃ) প্রথম রাক'আতে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করেন এবং দ্বিতীয় রাক'আতে সূরা ইউসুফ বা ইউনুস** তিলাওয়াত করেন এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি উমর (রাযিঃ)-এর পিছনে এ দু’টি সূরা দিয়ে ফজরের নামায আদায় করেন।
ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) (প্রথম রাকআতে) সূরা আনফালের চল্লিশ আয়াত পড়েন এবং দ্বিতীয় রাক'আতে মুফাসসাল সূরা সমূহের*** একটি পড়েন।
যে ব্যক্তি দু’রাক'আতে একই সূরা ভাগ করে পড়ে বা দু’রাকআতে একই সূরা দুহরিয়ে পড়ে, তার সম্পর্কে কাতাদা (রাহঃ) বলেন, সবই মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তাআলার কিতাব। (অর্থাৎ এতে কোন দোষ নেই)।
উবাইদুল্লাহ্ (রাহঃ)........আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক আনসারী সাহাবী**** কুবার মসজিদে তাঁদের ইমামতি করতেন। তিনি সশব্দে কিরাআত পড়া হয় এমন কোন নামাযে যখনই কোন সূরা তিলাওয়াত করতেন, قل هو الله أحد সূরা দ্বারা শুরু করতেন। তা শেষ করে অন্য একটি সূরা এর সাথে মিলিয়ে পড়তেন। আর প্রতি রাক'আতেই তিনি এরূপ করতেন। তাঁর সঙ্গীরা এ ব্যাপারে তাঁর কাছে বললেন যে, আপনি এ সূরাটি দিয়ে শুরু করেন, এটি যথেষ্ট হয় বলে আপনি মনে করেন না তাই আর একটি সূরা মিলিয়ে পড়েন। হয় আপনি এটিই পড়বেন, না হয় এটি বাদ অন্যটি পড়বেন। তিনি বললেন, আমি এটি কিছুতেই ছাড়তে পারব না। আমার এভাবে ইমামতি করা যদি আপনারা অপছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাদের ইমামতি ছেড়ে দেব। কিন্তু তাঁরা জানতেন যে, তিনি তাদের মাঝে উত্তম। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামতি করুক এটা তাঁরা অপছন্দ করতেন। পরে নবী (ﷺ) যখন তাঁদের এখানে আগমন করেন, তাঁরা বিষয়টি নবী (ﷺ)-কে জানান। তিনি বললেন, হে অমুক! তোমার সঙ্গীগণ যা বলেন তা করতে তোমাকে কিসে বাঁধা দেয়? আর প্রতি রাক'আতে এ সূরাটি বাধ্যতামূলক করে নিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি ভালবাসি। নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ এ সূরার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।
*
**
***
****
৭৩৯। আদম (রাহঃ) ......... আবু ওয়াইল (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) এর নিকট এসে বলল, গতরাতে আমি মুফাসসাল সূরাগুলো এক রাক'আতেই তিলাওয়াত করেছি। তিনি বললেন, তাহলে নিশ্চয়ই কবিতার ন্যায় দ্রুত পড়েছ। নবী (ﷺ) পরস্পর সমতূল্য যে সব সূরা মিলিয়ে পড়তেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি জানি। এ বলে তিনি মুফাসসাল সূরাসমূহের বিশটি সূরার কথা উল্লেখ করে বলেন, নবী (ﷺ) প্রতি রাক'আতে এর দু’টি করে সূরা পড়তেন।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলুল্লাহ স. এক রাকাতে একাধিক সুরা পাঠ করতেন। অবশ্য এ হাদীসে ফরয বা নফল কোন কথা উল্লেখ না থাকায় নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে, এটা ফরযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না। তবে সাহাবায়ে কিরাম ফরয নামাযের একই রাকাতে একাধিক সুরা পড়ার আমল করতেন। তা থেকে অনুমিত হয় যে, এক রাকাতে একাধিক সুরা পড়ার আমলটি হয়তো রসূলুল্লাহ স.-এর ফরয নামাযেও ছিলো। আর সাহাবায়ে কিরাম তাঁর থেকেই এ আমল গ্রহণ করেছেন।
