আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৯- আযান-ইকামতের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৭৮
আন্তর্জাতিক নং: ৭১৩
৪৬০. কোন ব্যক্তির ইমামের ইকতিদা করা এবং অন্যদের সেই মুক্তাদীর ইকতিদা করা।
বর্ণিত আছে যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমরা আমার ইকতিদা করবে, তোমাদের পেছনের লোকেরা যেন তোমাদের ইকতিদা করে।
বর্ণিত আছে যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমরা আমার ইকতিদা করবে, তোমাদের পেছনের লোকেরা যেন তোমাদের ইকতিদা করে।
৬৭৮। কুতাইবা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল (রাযিঃ) এসে নামাযের কথা বললেন। নবী (ﷺ) বললেন, আবু বকরকে বল, লোকদের নিয়ে নামায আদায় করতে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আবু বকর অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি উমর (রাযিঃ) কে নির্দেশ দেন (তাহলে ভালো হয়)। তিনি (ﷺ) আবার বললেনঃ লোকদের নিয়ে আবু বকরকে নামায আদায় করতে বল। আমি হাফসা (রাযিঃ) কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবু বকর (রাযিঃ) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার পরিবর্তে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি উমর (রাযিঃ)-কে নির্দেশ দেন (তাহলে ভালো হত)। এ শুনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমরা ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর সাথী রমণীদেরই মত। আবু বকরকে লোকদেরকে নিয়ে নামায আদায় করতে বল। আবু বকর (রাযিঃ) লোকদের নিয়ে নামায আদায় শুরু করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজে একটু সুস্থবোধ করলেন এবং দু’জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মসজিদে গেলেন। তাঁর দু’পা মুবারক মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবু বকর (রাযিঃ) যখন তাঁর আগমন আঁচ করলেন, পেছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর প্রতি ইশারা করলেন (পিছিয়ে না যাওয়ার জন্য)। তারপর তিনি এসে আবু বকর (রাযিঃ) এর বামপাশে বসে গেলেন। অবশেষে আবু বকর (রাযিঃ) দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ আবু বকর (রাযিঃ) এর নামাযের অনুসরণ করছিল।
باب الرَّجُلُ يَأْتَمُّ بِالإِمَامِ وَيَأْتَمُّ النَّاسُ بِالْمَأْمُومِ وَيُذْكَرُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ائْتَمُّوا بِي وَلْيَأْتَمَّ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ
713 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: لَمَّا ثَقُلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَ بِلاَلٌ يُوذِنُهُ بِالصَّلاَةِ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ» ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ وَإِنَّهُ مَتَى مَا يَقُمْ مَقَامَكَ لاَ يُسْمِعُ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ، فَقَالَ: «مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ» فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ: قُولِي لَهُ: إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، وَإِنَّهُ مَتَى يَقُمْ مَقَامَكَ لاَ يُسْمِعُ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ، قَالَ: «إِنَّكُنَّ لَأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ» فَلَمَّا دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ وَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي نَفْسِهِ خِفَّةً، فَقَامَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، وَرِجْلاَهُ يَخُطَّانِ فِي الأَرْضِ، حَتَّى دَخَلَ المَسْجِدَ، فَلَمَّا سَمِعَ أَبُو بَكْرٍ حِسَّهُ، ذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَأَخَّرُ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى جَلَسَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي قَاعِدًا، يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالنَّاسُ مُقْتَدُونَ بِصَلاَةِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় অসুস্থতার কারণে ইমাম বসে নামায পড়ালেও পেছনের সুস্থ মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে ইক্তিদা করবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৫৮৮)
এর বিপরীতে বুখারী-মুসলিমের বেশ কিছু হাদীসে বর্ণিত আছে যে, وَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا فَصَلُّوا قُعُودًا أَجْمَعُونَ ইমাম দাঁড়িয়ে নামায পড়লে তোমরাও দাঁড়িয়ে নামায পড়বে। আর ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও সকলে বসে নামায পড়বে। (বুখারী-৬৫৫, মুসলিম-৮০৬) ইমাম বুখারী রহ. হযরত আনাস রা. থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করার পরে বলেন, قَالَ الْحُمَيْدِيُّ قَوْلُهُ إِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا هُوَ فِي مَرَضِهِ الْقَدِيمِ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا وَالنَّاسُ خَلْفَهُ قِيَامًا لَمْ يَأْمُرْهُمْ بِالْقُعُودِ وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ بِالْآخِرِ فَالْآخِرِ مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আল্লামা হুমাইদী বলেন, ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও বসে নামায পড়বে’ এটা নবী কারীম স.-এর পূর্বেকার অসুস্থতার সময়ের কথা। পরবর্তীতে নবী কারীম স. নামায পড়েছেন বসে আর তাঁর পেছনের মুক্তাদীগণ পড়েছেন দাঁড়িয়ে। রসূল স. তাদেরকে বসতে বলেননি। আর রাসূল সা. এর সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়। (বুখারী-৬৫৫) এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমাম বসে নামায পড়ালে তাঁর পেছনের সুস্থ মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে ইক্তিদা করবে। এ আমলটি রসূল স.-এর শেষ আমল এবং এটাই বহাল। আর বসে ইক্তিদা করার আমলটি পূর্বের যা রহিত হয়ে গেছে।
এর বিপরীতে বুখারী-মুসলিমের বেশ কিছু হাদীসে বর্ণিত আছে যে, وَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا فَصَلُّوا قُعُودًا أَجْمَعُونَ ইমাম দাঁড়িয়ে নামায পড়লে তোমরাও দাঁড়িয়ে নামায পড়বে। আর ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও সকলে বসে নামায পড়বে। (বুখারী-৬৫৫, মুসলিম-৮০৬) ইমাম বুখারী রহ. হযরত আনাস রা. থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করার পরে বলেন, قَالَ الْحُمَيْدِيُّ قَوْلُهُ إِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا هُوَ فِي مَرَضِهِ الْقَدِيمِ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسًا وَالنَّاسُ خَلْفَهُ قِيَامًا لَمْ يَأْمُرْهُمْ بِالْقُعُودِ وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ بِالْآخِرِ فَالْآخِرِ مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘আল্লামা হুমাইদী বলেন, ইমাম বসে নামায পড়লে তোমরাও বসে নামায পড়বে’ এটা নবী কারীম স.-এর পূর্বেকার অসুস্থতার সময়ের কথা। পরবর্তীতে নবী কারীম স. নামায পড়েছেন বসে আর তাঁর পেছনের মুক্তাদীগণ পড়েছেন দাঁড়িয়ে। রসূল স. তাদেরকে বসতে বলেননি। আর রাসূল সা. এর সর্বশেষ আমলই গ্রহণীয়। (বুখারী-৬৫৫) এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমাম বসে নামায পড়ালে তাঁর পেছনের সুস্থ মুক্তাদীগণ দাঁড়িয়ে ইক্তিদা করবে। এ আমলটি রসূল স.-এর শেষ আমল এবং এটাই বহাল। আর বসে ইক্তিদা করার আমলটি পূর্বের যা রহিত হয়ে গেছে।
