মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
১. একত্ববাদ ও দীনের মূল ভিত্তিসমূহের আলোচনা
হাদীস নং: ৪০
আন্তর্জাতিক নং: ১৮২৮৪
একত্ববাদ ও দীনের মূল ভিত্তিসমূহের আলোচনা
(৪) পরিচ্ছেদঃ একত্ববাদী মু’মিনগণের প্রাপ্য নিয়ামতরাজি ও পুরষ্কার এবং মুশরিকদের জন্য নির্ধারিত ভয়াবহ তিরষ্কার ও শাস্তি প্রসঙ্গে
(৪০) সালিম ইবন আমুল, জাআদ থেকে বর্ণিত, তিনি সালমা ইবন নুআইম (রা) থেকে বর্ণনা করেন (তিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর অন্যতম সাহাবী) তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাহ্মাৎ করল এমতাবস্থায় যে, তাঁর সাথে কোন কিছু শরীক করে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে। (তাবারানী)
كتاب التوحيد
(4) باب فيما جاء في نعيم الموحدين وثوابهم ووعيد المشركين وعقابهم
(40) وسالم بن ابى الجعد عن سلمة بن نعيم رضى الله عنه قال وكان من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم قال قال رسول الله من لقى الله لايشرك به شيئا دخل الجنة وان زنى وإن سرق
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারা সাধারণভাবে বোঝা যাচ্ছে যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক না করা অবস্থায় মারা যাবে, তাকে জাহান্নামে যেতে হবে না, সে সরাসরি জান্নাতে চলে যাবে। সন্দেহ নেই অনেক বড় সুসংবাদ। এ সুসংবাদ যে-কোনও মুমিন-মুসলিমকে আপ্লুত করবে। কিন্তু এর উপর প্রশ্নও ওঠে। কেননা কোনও কোনও হাদীছে কোনও কোনও গুনাহ সম্পর্কে স্পষ্টই বলা হয়েছে তাতে লিপ্ত ব্যক্তিকে জাহান্নামে যেতে হবে। সে জান্নাতে যেতে পারবে না। যেমন এক হাদীছে আছে-
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِع
"আত্মীয়তা ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
অপর এক হাদীছে আছে-
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنَّانٌ، وَلَا عَاق، وَلَا مُدْمِنُ خَمْرٍ
"দান করার পর যে ব্যক্তি খোঁটা দেয়, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান এবং মদ পানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
এরকম আরও বহু হাদীছ আছে, যা প্রমাণ করে কোনও কোনও কবীরা গুনাহের কারণে মুমিনদেরকেও জাহান্নামে যেতে হবে। তারা জান্নাতে যেতে পারবে না। হাদীসে আছে, হযরত আবু যার রাযি.তখন প্রশ্ন করলেন- (যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে)? অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি যদি তাওহীদের অবস্থায় মারা যায় এবং সে শিরকে লিপ্ত না হয়ে থাকে, কিন্তু সে ব্যভিচার বা চুরির মত মহাপাপ করে থাকে, তবুও কি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-(যদিও সে ব্যভিচার করে, যদিও সে চুরি করে)। অর্থাৎ এরূপ মহাপাপ করা সত্ত্বেও সে জান্নাতে যাবে। আর এ উভয় কথার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। কেননা শিরকে লিপ্ত না থাকা অবস্থায় মারা গেলে যে জান্নাতে প্রবেশ করবে তার অর্থ তার যদি কোনও কবীরা গুনাহ না থাকে তবে শুরুতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর কবীরা গুনাহ থাকলে প্রথমে জাহান্নামে তার নির্দিষ্ট শাস্তি ভোগ করবে এবং শাস্তির মেয়াদ পূরণ হওয়ার পর সে জান্নাতে যাবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. তাওহীদ আঁকড়ে ধরা চাই। এটাই আখিরাতে মুক্তিলাভের আসল উপায়।
খ. সদা সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত যাতে কোনওক্রমেই শিরকে জড়িয়ে পড়া না হয়। কেননা শিরককারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
গ. কিছুতেই কবীরা গুনাহ করা উচিত নয়। কখনও হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই। অন্যথায় জাহান্নামের শাস্তিভোগের আশঙ্কা রয়েছে।
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِع
"আত্মীয়তা ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
অপর এক হাদীছে আছে-
لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنَّانٌ، وَلَا عَاق، وَلَا مُدْمِنُ خَمْرٍ
"দান করার পর যে ব্যক্তি খোঁটা দেয়, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান এবং মদ পানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"
এরকম আরও বহু হাদীছ আছে, যা প্রমাণ করে কোনও কোনও কবীরা গুনাহের কারণে মুমিনদেরকেও জাহান্নামে যেতে হবে। তারা জান্নাতে যেতে পারবে না। হাদীসে আছে, হযরত আবু যার রাযি.তখন প্রশ্ন করলেন- (যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে)? অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি যদি তাওহীদের অবস্থায় মারা যায় এবং সে শিরকে লিপ্ত না হয়ে থাকে, কিন্তু সে ব্যভিচার বা চুরির মত মহাপাপ করে থাকে, তবুও কি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-(যদিও সে ব্যভিচার করে, যদিও সে চুরি করে)। অর্থাৎ এরূপ মহাপাপ করা সত্ত্বেও সে জান্নাতে যাবে। আর এ উভয় কথার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। কেননা শিরকে লিপ্ত না থাকা অবস্থায় মারা গেলে যে জান্নাতে প্রবেশ করবে তার অর্থ তার যদি কোনও কবীরা গুনাহ না থাকে তবে শুরুতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর কবীরা গুনাহ থাকলে প্রথমে জাহান্নামে তার নির্দিষ্ট শাস্তি ভোগ করবে এবং শাস্তির মেয়াদ পূরণ হওয়ার পর সে জান্নাতে যাবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. তাওহীদ আঁকড়ে ধরা চাই। এটাই আখিরাতে মুক্তিলাভের আসল উপায়।
খ. সদা সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত যাতে কোনওক্রমেই শিরকে জড়িয়ে পড়া না হয়। কেননা শিরককারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
গ. কিছুতেই কবীরা গুনাহ করা উচিত নয়। কখনও হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই। অন্যথায় জাহান্নামের শাস্তিভোগের আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)