মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

১. একত্ববাদ ও দীনের মূল ভিত্তিসমূহের আলোচনা

হাদীস নং: ২৪
আন্তর্জাতিক নং: ২৩৫৯৪
একত্ববাদ ও দীনের মূল ভিত্তিসমূহের আলোচনা
(৪) পরিচ্ছেদঃ একত্ববাদী মু’মিনগণের প্রাপ্য নিয়ামতরাজি ও পুরষ্কার এবং মুশরিকদের জন্য নির্ধারিত ভয়াবহ তিরষ্কার ও শাস্তি প্রসঙ্গে
(২৪) আবূ আইয়ুব আল-আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি; যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক না করা আবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(আহমদ আব্দুর রহমান আল বান্না বলেন, এ হাদীসটি আমি অন্য কোথাও পাইনি, তবে বুখারী ও মুসলিম ইবন্ মাসউদ থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।)
كتاب التوحيد
(4) باب فيما جاء في نعيم الموحدين وثوابهم ووعيد المشركين وعقابهم
(24) وعن ابي ايوب الانصاري رضي الله عنح قال سمعت رسول الله صلي الله عليه وسلم يقول من مات لا يشرك بالله شيئا دخل الجنة

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনওকিছুকে শরীক করবে না অর্থাৎ তাঁকে তাঁর সত্তা ও গুণাবলীতে এক জানবে এবং একমাত্র তাঁকেই ইবাদতের উপযুক্ত বলে বিশ্বাস করবে, তাঁর সত্তা ও গুণাবলীতে কাউকে শরীক করবে না এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কারও বা তাঁর সঙ্গে অন্য কারও ইবাদতও করবে না আর এ অবস্থায় মারা যাবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। যদি সে কবীরা গুনাহ না করে থাকে, তবে তো শুরুতেই জান্নাতে যাবে। আর যদি কবীরা গুনাহ করে থাকে, তবে তার বিষয়টি আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছাধীন থাকবে। আল্লাহ তা'আলা চাইলে নিজ অনুগ্রহে তাকে ক্ষমা করবেন। ফলে শুরুতেই সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। আর চাইলে আল্লাহ তা'আলা তাকে তার গুনাহ পরিমাণ শাস্তিও দান করতে পারেন। সে শাস্তিভোগের পর জান্নাত লাভ করবে।

জাহান্নাম অবধারিতকারী বিষয় সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে কোনও কিছুকে শরীক করা অবস্থায় মারা
যায়, সে অনন্তকাল জাহান্নামবাস করবে। সে কখনওই জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না। এরূপ ব্যক্তি কিতাবী হোক বা মূর্তিপূজারী কিংবা অন্য কোনও কাফের
সম্প্রদায়ের লোক হোক, সবার ক্ষেত্রেই একই বিধান যে, তাকে স্থায়ীভাবে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।

আরেক শিরক হচ্ছে খফী বা গুপ্ত শিরক। ইবাদত-বন্দেগীতে যদি মানুষকে দেখানোর নিয়ত থাকে, তবে সেটাই গুপ্ত শিরক। পরিভাষায় একে রিয়া বলে। রিয়াকার ব্যক্তি গুনাহগার মুমিন। কাজেই তার জাহান্নামের শাস্তিভোগ স্থায়ী হবে না। একসময় সে ঈমানের বদৌলতে অবশ্যই মুক্তি পাবে।
যে ব্যক্তি মুনাফিক, অন্তরে ঈমান নেই অথচ মানুষকে দেখানোর জন্য ইবাদত-বন্দেগী করে, প্রকৃতপক্ষে সে কাফের। দুনিয়ার বিচারে তাকে মুসলিম গণ্য করা হলেও আখিরাতে সে স্থায়ীভাবে জাহান্নামেই থাকবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

এ হাদীছ দ্বারা শিরক না করার গুরুত্ব ও শিরকে লিপ্ত হওয়ার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে জানা গেল। সুতরাং জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতলাভের আশায় আমরা অবশ্যই মৃত্যু পর্যন্ত সর্বপ্রকার শিরক পরিহার করে চলব। আল্লাহ তা'আলা তাওফীক দান করুন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান