রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৭. রোগীর শুশ্রূষা ও মাইয়্যেতের প্রতি কর্তব্য
হাদীস নং: ৯৩৮
রোগীর শুশ্রূষা ও মাইয়্যেতের প্রতি কর্তব্য
পরিচ্ছেদ:১৪ জানাযার নামাযে কী পড়া হবে
জানাযার আরও একটি দু'আ
হাদীছ নং: ৯৩৮
হযরত ওয়াছিলা ইবনুল আসকা' রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে জনৈক মুসলিমের জানাযার নামায পড়েন। তখন আমি তাঁকে বলতে শুনি–
اللَّهُمَّ إِنَّ فُلَانَ ابْنَ فُلَانٍ فِي ذِمَّتِكَ، وَحَبْلِ جِوَارِكَ، فَقِهِ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ النَّارِ، وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحمد، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
(হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মায় এবং আপনার আশ্রয়ের রজ্জুতে রয়েছে। তাকে কবরের ফিতনা ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা পূরণকারী ও প্রশংসার অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার প্রতি রহমত করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহাক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু)। -আবু দাউদ
(সুনানে আবূ দাউদ : ৩২০২; সুনানে ইবন মাজাহ: ১৪৯৯; মুসনাদে আহমাদ : ১৬০১৮; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩০৭৪)
হাদীছ নং: ৯৩৮
হযরত ওয়াছিলা ইবনুল আসকা' রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে জনৈক মুসলিমের জানাযার নামায পড়েন। তখন আমি তাঁকে বলতে শুনি–
اللَّهُمَّ إِنَّ فُلَانَ ابْنَ فُلَانٍ فِي ذِمَّتِكَ، وَحَبْلِ جِوَارِكَ، فَقِهِ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ النَّارِ، وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحمد، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
(হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মায় এবং আপনার আশ্রয়ের রজ্জুতে রয়েছে। তাকে কবরের ফিতনা ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা পূরণকারী ও প্রশংসার অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার প্রতি রহমত করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহাক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু)। -আবু দাউদ
(সুনানে আবূ দাউদ : ৩২০২; সুনানে ইবন মাজাহ: ১৪৯৯; মুসনাদে আহমাদ : ১৬০১৮; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩০৭৪)
كتاب عيادة المريض وتشييع الميت والصلاة عليه وحضور دفنه والمكث عند قبره بعد دفنه
باب مَا يقرأ في صلاة الجنازة
938 - وعن وَاثِلَة بنِ الأَسْقَعِ - رضي الله عنه - قَالَ: صَلَّى بِنَا رسول الله - صلى الله عليه وسلم - عَلَى رَجُلٍ مِنَ المُسْلِمِينَ، فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إنَّ فُلانَ ابْنَ فُلانٍ في ذِمَتِّكَ وَحَبْلِ جِوَارِكَ، فَقِهِ فِتْنَةَ القَبْرِ، وَعذَابَ النَّار، وَأَنْتَ أهْلُ الوَفَاءِ وَالحَمْدِ؛ اللَّهُمَّ فَاغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ، إنَّكَ أنْتَ الغَفُورُ الرَّحيمُ». رواه أَبُو داود. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে জানাযার আরও একটি দু'আ উল্লেখ করা হয়েছে। এ দু'আটিও অত্যন্ত সারগর্ভ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যে কাজের যে দু'আ বর্ণিত হয়েছে, তার প্রত্যেকটিই গভীর অর্থবোধক। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দু'আর অর্থ না বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষাতেই দু'আটি পড়া উচিত। দু'আ পড়ার পরিপূর্ণ ফায়দা ও বরকত তাতেই নিহিত। যাহোক এ দু'আটিতে বলা হয়েছে-
اللَّهُمَّ إِنَّ فُلَانَ ابْنَ فُلَانٍ فِي ذِمَتكَ (হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মায় রয়েছে)। সম্ভবত বর্ণনাকারী ওই মায়্যিত ও তার পিতার নাম ভুলে গিয়েছিলেন। সে কারণেই তাদের নাম না বলে অমুকের পুত্র অমুক বলে উল্লেখ করেছেন। নচেৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু'আয় এটাই স্বাভাবিক যে, সেই ব্যক্তি ও তার পিতার নামই উল্লেখ করেছিলেন। কাজেই আমরা যারা এ দু'আটি পড়ব, মায়্যিতের নাম ও তার পিতার নাম উল্লেখ করেই দু'আটি পড়ব।
আল্লাহ তা'আলার যিম্মায় থাকা মানে তাঁর হেফাজত ও নিরাপত্তায় থাকা। মৃত্যুর পর মানুষ দুনিয়ার সবরকম হেফাজত ও নিরাপত্তার বাইরে চলে যায়। তখন সে সম্পূর্ণরূপেই আল্লাহ তা'আলার হেফাজতে থাকে। নেককার হলে তো সে আল্লাহ তা'আলার রহমতের আশ্রয়েই চলে যায়। তার প্রতি দয়া ও মমত্বের আচরণ করা হয়। ফিরিশতাগণ তাকে সঙ্গ দেয়। তাকে আশার বাণী শোনায়।
وحبل جوارك (এবং আপনার আশ্রয়ের রজ্জুতে রয়েছে)। حبل শব্দটির মূল অর্থ রশি। শব্দটি প্রতিশ্রুতি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইবনুল জাযারী রহ. বলেন, আরবদের নিয়ম ছিল যে, তারা একে অন্যকে সুরক্ষা দিত। তাদের কেউ যখন সফরে যেত, তখন প্রত্যেক গোত্রের নেতার কাছ থেকে নিরাপত্তার অঙ্গীকার গ্রহণ করে নিত। যতক্ষণ সে ওই নেতার এলাকার মধ্যে থাকত, ততক্ষণ সে তার গোত্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পেত। তারপর যখন অন্য গোত্রের এলাকায় প্রবেশ করত, তখনও এরূপ করত। এটাকে বলা হয় নিরাপত্তার রজ্জু। তো এখানে বোঝানো উদ্দেশ্য যে, মায়্যিত দুনিয়ার সফর শেষ করে আখিরাতের সফরে পাড়ি জমিয়েছে। এখন তার বিশেষ নিরাপত্তা দরকার। তাকে সে নিরাপত্তা আল্লাহ তা'আলা ছাড়া আর কেউ দিতে পারে না। আল্লাহ তা'আলা যদি তার পাপরাশি ক্ষমা করেন ও তার প্রতি দয়া করেন, তবে সে কবরে সবরকম আযাব ও কষ্ট থেকে নিরাপত্তা পাবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু'আর মাধ্যমে মায়্যিতের জন্য সে নিরাপত্তাই প্রার্থনা করেছেন।
فَقِهِ فِتْنَةَ القَبْرِ وَعَذَابَ النَّار (তাকে কবরের ফিতনা ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন)। অর্থাৎ তাকে মুনকার-নাকীরের সওয়ালে সুরক্ষা দান করুন। যাতে তার প্রতি নম্রতার সঙ্গে সওয়াল করা হয় এবং যাতে সে উত্তমরূপে সে সওয়ালের জবাব দিতে সক্ষম হয়। এমনিভাবে তাকে সুরক্ষা দিন কবরের সকল কষ্ট হতে, যাতে তার কবর প্রশস্ত হয়ে যায়, অন্ধকার দূর হয়ে যায় এবং নিঃসঙ্গতার ভীতি কেটে যায়। সেইসঙ্গে তাকে জাহান্নামের আযাব থেকেও নিরাপদ রাখুন। যাতে পুনরুত্থানের পর যখন হিসাব- নিকাশের সম্মুখীন হবে, তখন আপনার পক্ষ থেকে সহুলত ও সহজতার আচরণ পায় এবং প্রথমবারেই জান্নাতবাসী হয়ে যায়।
وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحَمْدِ (আপনি ওয়াদা পূরণকারী ও প্রশংসার অধিকারী)। আপনার পক্ষ থেকে ওয়াদা রয়েছে যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে মারা যাবে, সে নাজাত পাবে। আপনি ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। বরং পরিপূর্ণভাবে ওয়াদা রক্ষা করে থাকেন। আমাদের জানামতে এই মায়্যিত একজন ঈমানদার। সুতরাং আপনি তাকে নাজাত দান করুন এবং সবরকম আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনিই সকল মহৎগুণের অধিকারী। ফলে আপনিই সকল প্রশংসার হকদার। আপনারই সমস্ত প্রশংসা।
اللَّهُمَّ فَاغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ (হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার প্রতি রহমত করুন)। আপনি যেহেতু ওয়াদা পূরণকারী ও সমস্ত প্রশংসার মালিক, তখন আমরা আপনার কাছে মাগফিরাত ও রহমতেরও আশা রাখতে পারি। সেই আশা নিয়েই আমরা এ মায়্যিতের জন্য ক্ষমা ও দয়া ভিক্ষা করছি। আপনি নিজ দয়ায় তার যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দিন।
إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيمُ (নিশ্চয়ই আপনি মহাক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু)। অর্থাৎ আপনি আপনার আদেশ অমান্যকারীদের প্রতি অশেষ ক্ষমাশীল। আপনি কঠিন থেকে কঠিন পাপও ক্ষমা করে থাকেন। ক্ষমা করেন অবিরত। সেইসঙ্গে আপনি অশেষ দয়ালুও বটে। আপনার আদেশ পালন করতে গিয়ে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে আপনি তা উপেক্ষা করেন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও আপনি তা কবুল করে নেন। সুতরাং এ মায়্যিতের প্রতিও আপনি সেই আচরণ করুন। নিজ মাগফিরাতের গুণে তার পাপরাশি ক্ষমা করে দিন এবং নিজ রহমতে তার যাবতীয় সৎকর্ম কবুল করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মৃত্যুর পর মানুষ সম্পূর্ণরূপেই আল্লাহ তা'আলার হেফাজতে চলে যায়। তখন জীবিতদের পক্ষে তার জন্য দু'আ করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।
খ. মৃতব্যক্তির নাজাতের জন্য জীবিতদের উচিত তার জন্য প্রাণভরা মমতায় আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আ ও ইস্তিগফার করা।
গ. কবরের সওয়াল সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি।
ঘ. কবরের আযাবও সত্য। এতেও বিশ্বাস রাখতে হবে।
ঙ. ইস্তিগফার ও দু'আর শুরুতে আল্লাহ তা'আলার হামদ ও ছানা করা মুস্তাহাব।
اللَّهُمَّ إِنَّ فُلَانَ ابْنَ فُلَانٍ فِي ذِمَتكَ (হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মায় রয়েছে)। সম্ভবত বর্ণনাকারী ওই মায়্যিত ও তার পিতার নাম ভুলে গিয়েছিলেন। সে কারণেই তাদের নাম না বলে অমুকের পুত্র অমুক বলে উল্লেখ করেছেন। নচেৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু'আয় এটাই স্বাভাবিক যে, সেই ব্যক্তি ও তার পিতার নামই উল্লেখ করেছিলেন। কাজেই আমরা যারা এ দু'আটি পড়ব, মায়্যিতের নাম ও তার পিতার নাম উল্লেখ করেই দু'আটি পড়ব।
আল্লাহ তা'আলার যিম্মায় থাকা মানে তাঁর হেফাজত ও নিরাপত্তায় থাকা। মৃত্যুর পর মানুষ দুনিয়ার সবরকম হেফাজত ও নিরাপত্তার বাইরে চলে যায়। তখন সে সম্পূর্ণরূপেই আল্লাহ তা'আলার হেফাজতে থাকে। নেককার হলে তো সে আল্লাহ তা'আলার রহমতের আশ্রয়েই চলে যায়। তার প্রতি দয়া ও মমত্বের আচরণ করা হয়। ফিরিশতাগণ তাকে সঙ্গ দেয়। তাকে আশার বাণী শোনায়।
وحبل جوارك (এবং আপনার আশ্রয়ের রজ্জুতে রয়েছে)। حبل শব্দটির মূল অর্থ রশি। শব্দটি প্রতিশ্রুতি, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইবনুল জাযারী রহ. বলেন, আরবদের নিয়ম ছিল যে, তারা একে অন্যকে সুরক্ষা দিত। তাদের কেউ যখন সফরে যেত, তখন প্রত্যেক গোত্রের নেতার কাছ থেকে নিরাপত্তার অঙ্গীকার গ্রহণ করে নিত। যতক্ষণ সে ওই নেতার এলাকার মধ্যে থাকত, ততক্ষণ সে তার গোত্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পেত। তারপর যখন অন্য গোত্রের এলাকায় প্রবেশ করত, তখনও এরূপ করত। এটাকে বলা হয় নিরাপত্তার রজ্জু। তো এখানে বোঝানো উদ্দেশ্য যে, মায়্যিত দুনিয়ার সফর শেষ করে আখিরাতের সফরে পাড়ি জমিয়েছে। এখন তার বিশেষ নিরাপত্তা দরকার। তাকে সে নিরাপত্তা আল্লাহ তা'আলা ছাড়া আর কেউ দিতে পারে না। আল্লাহ তা'আলা যদি তার পাপরাশি ক্ষমা করেন ও তার প্রতি দয়া করেন, তবে সে কবরে সবরকম আযাব ও কষ্ট থেকে নিরাপত্তা পাবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু'আর মাধ্যমে মায়্যিতের জন্য সে নিরাপত্তাই প্রার্থনা করেছেন।
فَقِهِ فِتْنَةَ القَبْرِ وَعَذَابَ النَّار (তাকে কবরের ফিতনা ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন)। অর্থাৎ তাকে মুনকার-নাকীরের সওয়ালে সুরক্ষা দান করুন। যাতে তার প্রতি নম্রতার সঙ্গে সওয়াল করা হয় এবং যাতে সে উত্তমরূপে সে সওয়ালের জবাব দিতে সক্ষম হয়। এমনিভাবে তাকে সুরক্ষা দিন কবরের সকল কষ্ট হতে, যাতে তার কবর প্রশস্ত হয়ে যায়, অন্ধকার দূর হয়ে যায় এবং নিঃসঙ্গতার ভীতি কেটে যায়। সেইসঙ্গে তাকে জাহান্নামের আযাব থেকেও নিরাপদ রাখুন। যাতে পুনরুত্থানের পর যখন হিসাব- নিকাশের সম্মুখীন হবে, তখন আপনার পক্ষ থেকে সহুলত ও সহজতার আচরণ পায় এবং প্রথমবারেই জান্নাতবাসী হয়ে যায়।
وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحَمْدِ (আপনি ওয়াদা পূরণকারী ও প্রশংসার অধিকারী)। আপনার পক্ষ থেকে ওয়াদা রয়েছে যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে মারা যাবে, সে নাজাত পাবে। আপনি ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। বরং পরিপূর্ণভাবে ওয়াদা রক্ষা করে থাকেন। আমাদের জানামতে এই মায়্যিত একজন ঈমানদার। সুতরাং আপনি তাকে নাজাত দান করুন এবং সবরকম আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনিই সকল মহৎগুণের অধিকারী। ফলে আপনিই সকল প্রশংসার হকদার। আপনারই সমস্ত প্রশংসা।
اللَّهُمَّ فَاغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ (হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার প্রতি রহমত করুন)। আপনি যেহেতু ওয়াদা পূরণকারী ও সমস্ত প্রশংসার মালিক, তখন আমরা আপনার কাছে মাগফিরাত ও রহমতেরও আশা রাখতে পারি। সেই আশা নিয়েই আমরা এ মায়্যিতের জন্য ক্ষমা ও দয়া ভিক্ষা করছি। আপনি নিজ দয়ায় তার যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দিন।
إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيمُ (নিশ্চয়ই আপনি মহাক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু)। অর্থাৎ আপনি আপনার আদেশ অমান্যকারীদের প্রতি অশেষ ক্ষমাশীল। আপনি কঠিন থেকে কঠিন পাপও ক্ষমা করে থাকেন। ক্ষমা করেন অবিরত। সেইসঙ্গে আপনি অশেষ দয়ালুও বটে। আপনার আদেশ পালন করতে গিয়ে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে আপনি তা উপেক্ষা করেন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও আপনি তা কবুল করে নেন। সুতরাং এ মায়্যিতের প্রতিও আপনি সেই আচরণ করুন। নিজ মাগফিরাতের গুণে তার পাপরাশি ক্ষমা করে দিন এবং নিজ রহমতে তার যাবতীয় সৎকর্ম কবুল করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মৃত্যুর পর মানুষ সম্পূর্ণরূপেই আল্লাহ তা'আলার হেফাজতে চলে যায়। তখন জীবিতদের পক্ষে তার জন্য দু'আ করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।
খ. মৃতব্যক্তির নাজাতের জন্য জীবিতদের উচিত তার জন্য প্রাণভরা মমতায় আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আ ও ইস্তিগফার করা।
গ. কবরের সওয়াল সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি।
ঘ. কবরের আযাবও সত্য। এতেও বিশ্বাস রাখতে হবে।
ঙ. ইস্তিগফার ও দু'আর শুরুতে আল্লাহ তা'আলার হামদ ও ছানা করা মুস্তাহাব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
