রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৭. রোগীর শুশ্রূষা ও মাইয়্যেতের প্রতি কর্তব্য
হাদীস নং: ৯১৪
পরিচ্ছেদ:৬ রোগীর এ কথা বলার বৈধতা যে, আমি অসুস্থ বা প্রচণ্ড অসুস্থ অথবা আমি জ্বরে ভুগছি কিংবা আহা! আমার মাথা গেল ইত্যাদি। ক্ষোভ ও অস্থিরতা প্রকাশের জন্য না হলে এরূপ বলায় কোনও দোষ না থাকা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিজ রোগের তীব্রতার কথা প্রকাশ করে অসিয়ত সম্পর্কে হযরত সা'দ রাযি.-এর মাশওয়ারা চাওয়া
হাদীছ নং: ৯১৪
হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. বলেন, আমার একটা রোগ তীব্র হয়ে ওঠায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি বললাম, আমার যে অবস্থা হয়েছে, আপনি তা দেখছেন। আমি সম্পদশালী। আমার ওয়ারিছ হবে আমার একমাত্র মেয়ে। এরপর তিনি পূর্ণ হাদীছটি বর্ণনা করেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৬৬৮; সহীহ মুসলিম: ১৬২৮: মুআত্তা মালিক: ২৮২৪: মুসনাদে আব্ ইয়া'লা: ৮৩৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৬০২৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ১২৫৬৫: বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৫৯; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৫২২২)
হাদীছ নং: ৯১৪
হযরত সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রাযি. বলেন, আমার একটা রোগ তীব্র হয়ে ওঠায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি বললাম, আমার যে অবস্থা হয়েছে, আপনি তা দেখছেন। আমি সম্পদশালী। আমার ওয়ারিছ হবে আমার একমাত্র মেয়ে। এরপর তিনি পূর্ণ হাদীছটি বর্ণনা করেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৬৬৮; সহীহ মুসলিম: ১৬২৮: মুআত্তা মালিক: ২৮২৪: মুসনাদে আব্ ইয়া'লা: ৮৩৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৬০২৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ১২৫৬৫: বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৫৯; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৫২২২)
باب جواز قول المريض: أنَا وجع، أَوْ شديد الوجع أَوْ مَوْعُوكٌ أَوْ وارأساه ونحو ذلك. وبيان أنَّه لا كراهة في ذلك إِذَا لَمْ يكن عَلَى سبيل التسخط وإظهار الجزع
914 - وعن سعدِ بن أَبي وقاصٍ - رضي الله عنه - قَالَ: جَاءني رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - يَعُودُنِي مِنْ وَجَعٍ اشْتَدَّ بِي، فقلتُ: بَلَغَ بِي مَا تَرَى، وَأنَا ذُو مَالٍ، وَلاَ يَرِثُنِي إِلاَّ ابْنَتِي .. وذَكر الحديث. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এটি একটি দীর্ঘ হাদীছের অংশবিশেষ। বিস্তারিত বর্ণনাসমূহ দ্বারা জানা যায়, হযরত সা'দ রাযি. হিজরী ১০ম সনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিদায় হজ্জে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মক্কা মুকাররামায় কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখতে যান। হযরত সা'দ রাযি. তাঁকে দেখে কেঁদে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমার ভয় হচ্ছে না জানি আমি যে ভূমি থেকে হিজরত করেছি সেখানেই আমার মৃত্যু হয়। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে তাঁর কপালে নিজের পবিত্র হাতখানি রাখেন। তারপর সে হাত তাঁর বুক ও পেটে বুলিয়ে দেন আর দু'আ করতে থাকেন- اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا (সা'দকে আরোগ্য দান করুন)। হযরত সা'দ রাযি. বলেন যে, তখন থেকে এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমি আমার বুকের ভেতর তাঁর হাতের শীতলতা অনুভব করছি।
হযরত সা'দ রাযি. খুব সম্পদশালী ছিলেন। তাঁর তখন সন্তান বলতে কেবল এক কন্যাই ছিল। তাঁর নাম আয়েশা। এজন্য তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন- بلغ بی ما ترى (আপনি দেখতে পাচ্ছেন আমার রোগ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে)। এই বলে তিনি নিজ রোগের তীব্রতা সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহ এলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। এর দ্বারা বোঝা গেল প্রয়োজনে নিজ রোগ-ব্যধির কথা অন্যকে জানানো যায়। সে প্রয়োজন দু'আ পাওয়া, চিকিৎসা বা অন্য কোনও বিষয়ে পরামর্শ করা হতে পারে। অর্থাৎ দু'আ পাওয়ার জন্য কাউকে নিজ অসুস্থতার কথা জানানো যেতে পারে। তা জানানো যেতে পারে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য চিকিৎসককে বা চিকিৎসা বিষয়ে কারও সঙ্গে পরামর্শ করার জন্যও। এমনিভাবে যদি মৃত্যুর ভয় দেখা দেয়, তখন সম্পত্তি সম্পর্কে অসিয়ত করা বা পারিবারিক অন্য কোন বিষয়ে মাশওয়ারার জন্যও নিজ অসুস্থতার কথা কারও কাছে প্রকাশ করা যেতে পারে। হযরত সা'দ রাযি.-এর আশঙ্কাবোধ হয়েছিল না জানি এ রোগে তাঁর মৃত্যু হয়ে যায়। তাই নিজ রোগের তীব্রতার কথা জানিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সম্পত্তি সম্পর্কে অসিয়তের বিষয়ে মাশওয়ারা চেয়েছিলেন। তিনি একজন সম্পদশালী মানুষ ছিলেন। আর তখন তাঁর ওয়ারিছ ছিল তাঁর একমাত্র কন্যা। এ অবস্থায় অসিয়ত করতে চাইলে তাঁর করণীয় কী তা জানাই ছিল তাঁর মাশওয়ারার উদ্দেশ্য।
যদি অসুস্থতার কথা প্রকাশ করা নিষেধ বা অপসন্দনীয় হত, তবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত সা'দ রাযি.-কে বারণ করতেন। তিনি তাঁকে বারণ করেননি। বরং অসিয়ত সম্পর্কে মাশওয়ারা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর সুস্থতার জন্য দু'আ করেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু'আয় বলেছিলেন- হে আল্লাহ! তুমি আমার সঙ্গীদের হিজরত কার্যকর করো। তাদেরকে তাদের পেছন দিকে ফিরিয়ে দিয়ো না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দু'আ কবুল হয়েছিল। হযরত সা'দ রাযি. সুস্থ হয়ে মদীনা মুনাউওয়ারায় ফিরে যান। অতঃপর আরও ৪০ বছর তিনি জীবিত থাকেন। তিনি তখন আরও কয়েকটি বিবাহ করেন এবং তাঁর বহু সংখ্যক সন্তান-সন্ততি জন্ম নেয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও অসুস্থতার সংবাদ পেলে তাকে দেখতে যাওয়া উচিত।
খ. অসুস্থ ব্যক্তি কোনওকিছু বললে তা মনোযোগ সহকারে শোনা দরকার।
গ. দু'আ পাওয়া বা অন্য কোনও প্রয়োজনে নিজ রোগ-ব্যাধির কথা প্রকাশ করা যায়।
ঘ. কোনও বিষয়ে কারও কাছে পরামর্শ চাইলে সে বিষয়ে তার কাছে নিজ অবস্থা ভালোভাবে খোলাসা করে দেওয়া চাই।
হযরত সা'দ রাযি. খুব সম্পদশালী ছিলেন। তাঁর তখন সন্তান বলতে কেবল এক কন্যাই ছিল। তাঁর নাম আয়েশা। এজন্য তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন- بلغ بی ما ترى (আপনি দেখতে পাচ্ছেন আমার রোগ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে)। এই বলে তিনি নিজ রোগের তীব্রতা সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহ এলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। এর দ্বারা বোঝা গেল প্রয়োজনে নিজ রোগ-ব্যধির কথা অন্যকে জানানো যায়। সে প্রয়োজন দু'আ পাওয়া, চিকিৎসা বা অন্য কোনও বিষয়ে পরামর্শ করা হতে পারে। অর্থাৎ দু'আ পাওয়ার জন্য কাউকে নিজ অসুস্থতার কথা জানানো যেতে পারে। তা জানানো যেতে পারে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য চিকিৎসককে বা চিকিৎসা বিষয়ে কারও সঙ্গে পরামর্শ করার জন্যও। এমনিভাবে যদি মৃত্যুর ভয় দেখা দেয়, তখন সম্পত্তি সম্পর্কে অসিয়ত করা বা পারিবারিক অন্য কোন বিষয়ে মাশওয়ারার জন্যও নিজ অসুস্থতার কথা কারও কাছে প্রকাশ করা যেতে পারে। হযরত সা'দ রাযি.-এর আশঙ্কাবোধ হয়েছিল না জানি এ রোগে তাঁর মৃত্যু হয়ে যায়। তাই নিজ রোগের তীব্রতার কথা জানিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সম্পত্তি সম্পর্কে অসিয়তের বিষয়ে মাশওয়ারা চেয়েছিলেন। তিনি একজন সম্পদশালী মানুষ ছিলেন। আর তখন তাঁর ওয়ারিছ ছিল তাঁর একমাত্র কন্যা। এ অবস্থায় অসিয়ত করতে চাইলে তাঁর করণীয় কী তা জানাই ছিল তাঁর মাশওয়ারার উদ্দেশ্য।
যদি অসুস্থতার কথা প্রকাশ করা নিষেধ বা অপসন্দনীয় হত, তবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত সা'দ রাযি.-কে বারণ করতেন। তিনি তাঁকে বারণ করেননি। বরং অসিয়ত সম্পর্কে মাশওয়ারা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর সুস্থতার জন্য দু'আ করেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দু'আয় বলেছিলেন- হে আল্লাহ! তুমি আমার সঙ্গীদের হিজরত কার্যকর করো। তাদেরকে তাদের পেছন দিকে ফিরিয়ে দিয়ো না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দু'আ কবুল হয়েছিল। হযরত সা'দ রাযি. সুস্থ হয়ে মদীনা মুনাউওয়ারায় ফিরে যান। অতঃপর আরও ৪০ বছর তিনি জীবিত থাকেন। তিনি তখন আরও কয়েকটি বিবাহ করেন এবং তাঁর বহু সংখ্যক সন্তান-সন্ততি জন্ম নেয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও অসুস্থতার সংবাদ পেলে তাকে দেখতে যাওয়া উচিত।
খ. অসুস্থ ব্যক্তি কোনওকিছু বললে তা মনোযোগ সহকারে শোনা দরকার।
গ. দু'আ পাওয়া বা অন্য কোনও প্রয়োজনে নিজ রোগ-ব্যাধির কথা প্রকাশ করা যায়।
ঘ. কোনও বিষয়ে কারও কাছে পরামর্শ চাইলে সে বিষয়ে তার কাছে নিজ অবস্থা ভালোভাবে খোলাসা করে দেওয়া চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
