রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

৬. সালাম-মুসাফাহার আদব

হাদীস নং: ৮৭৭
সালাম-মুসাফাহার আদব
পরিচ্ছেদ:১২ হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বললে শ্রোতা কর্তৃক ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা আলহামদুলিল্লাহ না বললে ইয়ারহামুকাল্লাহ না বলা এবং হাঁচি দেওয়া ও হাই তোলা সংক্রান্ত অন্যান্য আদব
হাঁচি দেওয়া ও হাই তোলার ক্ষেত্রে করণীয়
হাদীছ নং: ৮৭৭

হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা (বান্দার) হাঁচি পসন্দ করেন ও হাই তোলা অপসন্দ করেন। তোমাদের কেউ যখন হাঁচি দেয় এবং আল্লাহর প্রশংসা করে, তখন তা শুনতে পায় এমন প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্যকর্তব্য ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা। হাই তোলা সম্পর্কে কথা হল এটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। তোমাদের কারও যখন হাই আসে, তখন যথাসম্ভব তা ফেরানোর চেষ্টা করবে। কেননা তোমাদের কেউ যখন হাই তোলে, তখন শয়তান তাকে নিয়ে হাস্য করে। -বুখারী
(সহীহ বুখারী: ৬২২৩; জামে' তিরমিযী: ২৭৪৭; সুনানে আবু দাউদ: ৫০২১; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৯৯৭৩; সুনানে ইবন মাজাহ: ৯৬৮; মুসনাদে আহমাদ: ৭৫৯০; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা : ৬৬২৭; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ৩৫৭৫; মুসনাদে আবু দাউদ তয়ালিসী: ২৪৩৪)
كتاب السلام
باب استحباب تشميت العاطس إِذَا حمد الله تَعَالَى وكراهة تشميته إذا لَمْ يحمد الله تَعَالَى وبيان آداب التشميت والعطاس والتثاؤب
877 - عن أَبي هريرة - رضي الله عنه: أنَّ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «إنَّ الله يُحِبُّ العُطَاسَ، وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ، فَإذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ وَحَمِدَ الله تَعَالَى كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَهُ أَنْ يَقُولَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللهُ، وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإذَا تَثَاءبَ أحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ، فَإنَّ أحَدَكُمْ إِذَا تَثَاءبَ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ». رواه البخاري. (1)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটিতে হাঁচি দেওয়া ও হাই তোলা সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাঁচি সম্পর্কে বলা হয়েছে- إنَّ اللهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ 'আল্লাহ তা'আলা (বান্দার) হাঁচি পসন্দ করেন'। বস্তুত হাঁচি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকেই হয়। তিনি তাঁর কুদরতী কারিগরি কুশলতায় শরীরের ভেতর স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাঁচি আসার ব্যবস্থা রেখে দিয়েছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞান মতে একজন মানুষের ফুসফুসে থাকে অজস্র বায়ুথলি। ৭০০ মিলিয়ন বা ৭০ কোটিরও অধিক। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে তা সংকুচিত ও সম্প্রসারিত হয়। অন্যথায় আমরা নিঃশ্বাস গ্রহণ করতে পারতাম না। বায়ুমণ্ডল অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসে ভরে রয়েছে। শ্বাসের সাথে সেগুলো নাক দিয়ে আমাদের শরীরে ঢুকে যায়। তবে তার অনেকগুলোই পথিমধ্যে মারা যায়। তা মারা যায় শ্বাসতন্ত্র থেকে বের হওয়া এক প্রকার বিষাক্ত রসের আঘাতে। কিছু ভাইরাস খুবই শক্তিশালী। সেগুলো আরও সামনে এগিয়ে যায়। তারা নাকের ভেতরের সিলিয়া নামক এক প্রকার কোষ দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়। কোষগুলো দেখতে চুলের মতো। এদের কাজ শরীরের বাইরের বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান শনাক্ত করে মস্তিষ্কে সতর্ক সংকেত পাঠানো। তো উল্লিখিত ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের অনুপ্রবেশে সে কোষগুলো উদ্দীপ্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় যে, নাকের ভেতর খারাপ কিছু ঢুকেছে। মস্তিষ্ক দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়। প্রয়োজনীয় স্নায়ুসমূহও সক্রিয় করে তোলে। অমনি আমরা একটি বড় শ্বাস নিই। তারপর আমরা দম আটকে ফেলি। এতে করে বুকের পেশিগুলো টান টান হয়ে যায়। ফুসফুসের উপর কঠিন চাপ পড়ে। পরক্ষণেই সেখান থেকে বের হয়ে আসে প্রবল হাওয়া। তার গতি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০ কি.মি. পর্যন্ত। প্রবল গতিতে ছুটে আসা সে বাতাসেরই নাম হাঁচি। এ হাঁচির মাধ্যমে ওই ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াগুলো বের হয়ে যায়। আমরা বেঁচে যাই। এ আমাদের জীবনরক্ষার এক বিশাল আয়োজন। জীবনের সচলতা রক্ষা ও শক্তি সঞ্চয়েরও আয়োজন বটে। অতিরিক্ত কাজের চাপে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে আসে। হাঁচির প্রবল ধাক্কায় মস্তিষ্কে যে কম্পন সৃষ্টি হয়, তাতে সে দুর্বলতা কেটে যায়। কোষগুলো ফের শক্তি সঞ্চয় করে। আর এভাবে মস্তিষ্ক সারা দেহে বিস্তৃত স্নায়ুরাশিকে সবল ও সজীব করে তোলে। এতে করে আলস্য দূর হয়ে সারাটা দেহ হালকা ও ঝরঝরে হয়ে ওঠে। ফলে কাজকর্মে স্ফুর্তি আসে। তখন ইবাদত-বন্দেগী করতে ভালো লাগে। এই যে এত উপকারী হাঁচি, এতে আপনি কোনও ভূমিকা রাখছেন না। আল্লাহর সৃষ্টিকৌশল্যে এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হচ্ছে আপনি কোন আপনি এর সুফল ভোগ করছেন। কাজেই হাঁচি অতি বড় একটি নি’আমত। তাই হাঁচিদাতার কর্তব্য হাঁচি দেওয়ার পর আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা অর্থাৎ আলহামদুলিল্লাহ বলা। আলহামদুলিল্লাহ শোকর আদায়ের ভাষা। হাঁচিদাতা যখন আলহামদুলিল্লাহ বলবে, তখন শ্রোতার উপর একটি কর্তব্য এসে যায়। সে সম্পর্কে হাদীছটিতে ইরশাদ হয়েছে-
كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِم سَمِعَهُ أَنْ يَقُولَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللهُ
‘তা শুনতে পায় এমন প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্যকর্তব্য يَرْحَمُكَ الله বলা’।

হাঁচিদাতা হাঁচির নি'আমতের দরুন আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করেছে। আল্লাহ তা'আলা শোকরগুযার বান্দাকে পসন্দ করেন। তাকে ভালোবাসেন। তাই অন্যদেরও উচিত তাকে ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার দাবি তার জন্য দু'আ করাও। তাছাড়া শোকর আদায় করে সে শ্রোতাকেও শোকর আদায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। শ্রোতা নিজেও আল্লাহ তা'আলার হাজারও নি'আমতের মধ্যে ডুবে আছে। হাঁচিদাতার শোকর তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, তারও উচিত আপনি নি'আমতসমূহের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা। এভাবে হাঁচিদাতা তার এক রকম উপকার করল। এজন্য উচিত তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো। এ দু'আ সে কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। এমনিভাবে আলহামদুলিল্লাহ বলাটা আল্লাহ তা'আলার যিকিরও বটে। একজনের যিকির শুনলে শ্রোতার ভেতরেও যিকিরের আগ্রহ পয়দা হওয়া উচিত। যেহেতু হাঁচিদাতার যিকির শুনে তার মধ্যে যিকিরের আগ্রহ পয়দা হয়েছে, তাই তার কর্তব্য হাঁচিদাতার জন্য يَرْحَمُكَ اللهُ দু'আর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার যিকির করা। দু'আও যিকিরই বটে।

হাঁচিদাতা আলহামদুল্লিাহ বললে তার জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা ওয়াজিব। সেখানে একাধিক লোক থাকলে তাদের পক্ষ থেকে যে-কোনও একজন এটা বললে সকলের পক্ষ থেকে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, অনেকে মনে করে কোনও কাজ শুরু করার আগে হাঁচি দেওয়া অশুভ। এরূপ ক্ষেত্রে সেই কাজ করতে নেই। করলে তাতে অকল্যাণ হয়। এটা সম্পূর্ণই কুসংস্কার। যেই হাঁচির এতটা উপকার এবং যে হাঁচি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, সেই হাঁচি কীভাবে অশুভ হতে পারে? এরূপ ধারণাকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। এরূপ ধারণা করা কঠিন গুনাহ। এর থেকে বিরত থাকতে হবে।

হাই তোলা সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
وَأَمَّا التَّثَاؤُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ
‘হাই তোলা সম্পর্কে কথা হল এটা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়’।
অর্থাৎ শয়তান এটা পসন্দ করে। শয়তান মানুষকে হাই তোলা অবস্থায় দেখতে চায়। কেননা তাতে মানুষের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। শয়তান মানুষের জাতশত্রু। সে মানুষের আকৃতি ও প্রকৃতিগত যে-কোনওরকম বিকৃতি পসন্দ করে। হাই তোলার সময় মানুষের চেহারা বিকৃত হয় বলে সে খুব খুশি হয়। 'শয়তানের পক্ষ থেকে হয়' বলে শয়তানের এই কামনা ও তার খুশি হওয়ার বিষয়টি বোঝানো উদ্দেশ্য। এটাও অসম্ভব নয় যে, হয়তো শয়তান মানবদেহে এমন কোনও হস্তক্ষেপ করে, যদ্দরুন শরীরে আলস্য দেখা দেয়, ক্লান্তি আসে বা ঘুম পায় আর এ কারণে তার থেকে হাই বের হয়ে আসে। মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে হাই তুলতে পারে না। কেন মানুষের হাই আসে, এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। বিজ্ঞান আজও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। কেবল এসবই বলা হচ্ছে যে, এটা আলস্য, ক্লান্তি, ঘুম, অবসন্নতা, বিরক্তি প্রভৃতি শারীরিক অবস্থাজনিত প্রতিক্রিয়ার ফল। তা কারণ যাই হোক না কেন, হাদীছের ভাষ্য অনুযায়ী এর সঙ্গে শয়তানের কোনও না কোনও রকমের সম্পৃক্ততা আছে। কোনও কোনও ব্যাখ্যাকার বলেন, শয়তান মানুষকে তার খাহেশাত অর্থাৎ মনের অনুচিত চাহিদা পূরণে উৎসাহ যোগায়। তার মধ্যে একটা হল অতিরিক্ত খাওয়া। উদরপূর্তি করে খেলে শরীর ছেড়ে দেয়। তখন কাজকর্মের আগ্রহ থাকে না। মস্তিষ্ক অবসন্ন হয়ে পড়ে। হাই তোলার দ্বারা সে অবসন্নতার প্রকাশ পায়। শয়তান চায় মানুষ অবসন্ন হয়ে পড়ুক। সে হাই তুলুক। ইবাদত-বন্দেগী করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলুক। শয়তানের সে চাওয়া যাতে পূর্ণ হতে না পারে, সেই চেষ্টা আমাদের করা উচিত। এর জন্য প্রথম কাজ পরিমিত পানাহার করা। তারপরও অন্য কোনও কারণে অবসন্নতা দেখা দিতে পারে আর সেজন্যও হাই আসতে পারে। যে কারণেই হাই আসুক না কেন, এর সঙ্গে যেহেতু শয়তানের এক রকম সংশ্লিষ্টতা আছে, তাই হাদীছটিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে-
فَإِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ
‘তোমাদের কারও যখন হাই আসে, তখন যথাসম্ভব তা ফেরানোর চেষ্টা করবে’।

তা ফেরাতে পারলে শয়তান ব্যর্থ হবে। শয়তান চায় হাই তোলার দ্বারা মানুষের মুখ বিকৃত হোক, যাতে সেই বিকৃত মুখ নিয়ে সে তামাশা করতে পারে। সে তার বন্ধুদের নিয়ে হাসাহাসি করতে পারে। হাদীছটির শেষের বাক্যে বলা হয়েছে- কেননা তোমাদের কেউ যখন হাই তোলে, তখন শয়তান তাকে নিয়ে হাস্য করে। হাই ফেরাতে পারলে তার হাসাহাসি করার সুযোগ হবে না। উল্টো মন খারাপ করে দূর হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, অনেকে মনে করে হাই তোলার পর لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ বলতে হয়। কিন্তু এর কোনও ভিত্তি নেই। ভিত্তিহীন কোনও বিষয়কে শরী'আতের নিয়ম বানানো উচিত নয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কেউ কেউ হাই তোলার সময় এমন আওয়াজ করে, যা বিভিন্ন পশুর আওয়াজের সঙ্গে মিলে যায়। ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ আওয়াজ করা কোনও মানুষের জন্য শোভা পায় না। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ কেন তার মুখ দিয়ে কোনও পশুর আওয়াজ তুলবে? হাদীছে যেখানে হাই আসলে তা নিবারণ করার হুকুম দেওয়া হয়েছে, সেখানে উল্টো বিকৃত আওয়াজে এবং মানুষকে জানান দিয়ে হাই তোলাটা কতইনা ন্যাক্কারজনক। এ বিষয়ে সকলের সতর্ক হওয়া উচিত। হাদীছেও এটা নিষেধ করা হয়েছে। যেমন এক রেওয়ায়েতে আছে-
إِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَضَعْ يَدَهُ عَلَى فِيهِ، وَلاَ يَعْوِي، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَضْحَكُ مِنْهُ
'যখন তোমাদের কেউ হাই তোলে, তখন যেন মুখের উপর হাত রাখে এবং আওয়াজ না করে। কেননা শয়তান তাতে হাসে। (সুনানে ইবন মাজাহ: ৯৬৮)

يَعْوِي শব্দটির উৎপত্তি عواء থেকে। কুকুর ও নেকড়ের ডাককে عواء বলে। অনেকে হাই তোলার সময় এরকমের আওয়াজ করে। যে আওয়াজ কুকুর ও নেকড়ের মুখ থেকে বের হয়, মানুষের কি সে আওয়াজ করা সাজে? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি রোসাল্লাম হাই তোলার সময় আওয়াজ করতে স্পষ্টভাবেই নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন-
فَإِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ، وَلَا يَقُلْ هَاهُ هَاهُ، فَإِنَّمَا ذَلِكُمْ مِنَ الشَّيْطَانِ يَضْحَكُ مِنْهُ
'তোমাদের কেউ যখন হাই তোলে, সে যেন যথাসম্ভব তা ফেরায় আর 'হা...' 'হা...' আওয়াজ না করে। কেননা সেটা শয়তান থেকে হয়। সে তাতে হাসে’। (সুনানে আবু দাউদ: ৫০২৮)

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. হাঁচি বান্দার জন্য আল্লাহ তা'আলার একটা বড় নি'আমত। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আলহামদুলিল্লাহ বলা উচিত।

খ. হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ বললে শ্রোতার কর্তব্য তাকে লক্ষ্য করে يَرْحَمُكَ اللهُ বলা।

গ. হাই তোলায় শয়তানের সংশ্লিষ্টতা থাকে। তাই হাই আসলে যথাসম্ভব তা ফেরানো উচিত।

ঘ. শয়তান মানুষের জাতশত্রু। মানুষের যে-কোনও শ্রী-ভ্রষ্টতা তাকে খুশি করে। তাই যা-কিছুতে শয়তান খুশিহয় তা থেকে মানুষের বেঁচে থাকা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
রিয়াযুস সালিহীন - হাদীস নং ৮৭৭ | মুসলিম বাংলা