রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

৩. আহার-পানীয় গ্রহণের আদব

হাদীস নং: ৭৫৮
আহার-পানীয় গ্রহণের আদব
পরিচ্ছেদ : ১২ পানি পান করার আদব, পাত্রের বাইরে তিনবার নিঃশ্বাস ফেলা (মুস্তাহাব), পাত্রের ভেতর নিঃশ্বাস ফেলা (মাকরূহ), পর্যায়ক্রমে নিজের ডানদিকে পাত্র হাতবদল করতে থাকা (মুস্তাহাব)
হাদীছ নং: ৭৫৮
হযরত আবু কাতাদা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৬৩০; সহীহ মুসলিম: ২৬৭; সুনানে নাসাঈ ৪৮; জামে' মা'মার ইবন রাশিদ: ১৯৫৮৪; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৫৬০১)
كتاب أدب الطعام
باب أدب الشرب واستحباب التنفس ثلاثًا خارج الإناء وكراهة التَّنَفُّس في الإناء واستحباب إدارة الإناء عَلَى الأيمن فالأيمن بعد المبتدئ
758 - وعن أَبي قَتَادَة - رضي الله عنه: أنَّ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - نَهَى أَنْ يُتَنَفَّسَ في الإناءِ. متفق عَلَيْهِ. (1)
يعني: يتنفس في نفس الإناءِ.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করার কারণ এ হতে পারে যে, তাতে পাত্রের ভেতর থুথু বা শ্লেষ্মা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এরপর সে পাত্র থেকে পান করতে নিজেরই খারাপ লাগবে। অন্যের তো অরুচি লাগবেই।

চিকিৎসা শাস্ত্রীয় গবেষণা অনুযায়ী পাত্রে নিঃশ্বাস ত্যাগ করাটা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর। কেননা মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে যখন নিঃশ্বাস গ্রহণ করে, তখন বায়ুমণ্ডল থেকে তার ভেতরে অক্সিজেন প্রবেশ করে। আর যখন নিঃশ্বাস ছাড়ে, তখন কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হয়ে আসে। তার ভেতর দেহের দূষিত বাষ্প ও রোগ-জীবাণু থাকে। পাত্রে নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে খাবার বা পানির সঙ্গে তা মিশে যায়। সেই খাবার বা পানি যখন খাওয়া হয়, তখন ওই দূষিত বাষ্প ও রোগ-জীবাণু পুনরায় শরীরে প্রবেশ করে। ফলে নানা রোগ-ব্যাধি জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সুতরাং তিন নিঃশ্বাসে যে পানি পান করতে বলা হয়েছে, তার উপর আমল করতে হবে এভাবে যে, একবার পানি পান করে পাত্র থেকে মুখ সরাতে হবে। তারপর নিঃশ্বাস ফেলে দ্বিতীয়বার পান করতে হবে। এভাবে তিনবার। পাত্রে দম ফেলা যেমন নিষেধ, তেমনি ফুঁ দেওয়াও নিষেধ।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

পানি বা পানীয় পান করার সময় পাত্রের ভেতর নিঃশ্বাস ত্যাগ করা যাবে না। নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় পাত্র থেকে মুখ সরিয়ে নিতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)