রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৩. আহার-পানীয় গ্রহণের আদব
হাদীস নং: ৭৪৪
পরিচ্ছেদ: ৮ পাত্রের কিনারা থেকে খাওয়ার আদেশ এবং মাঝখান থেকে খেতে মানা
হাদীছ নং: ৭৪৪
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাযি. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি পাত্র ছিল। সেটিকে গারা বলা হত। চারজন লোক সেটি বহন করত।(একদিনকার কথা) যখন চাশতের সময় হল এবং লোকজন চাশতের নামায পড়ল, তখন সেই পাত্রটি আনা হল। তার মধ্যে তৈরি করা ছারীদ ছিল। সকলে সেটির চারপাশে বসে গেল। লোকজন বেশি হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন। এক বেদুঈন বলল, এটা কেমন বসা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বান্দা বানিয়েছেন। আমাকে উদ্ধত সীমালঙ্ঘনকারী বানাননি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা পাত্রের চারপাশ থেকে খাও। তার চূড়া (মাঝখানটা) রেখে দাও। তাতে বরকত নাযিল করা হয়। -আবু দাউদ
(সুনানে আবু দাউদ: ৩৭৭৩; সুনানে ইবন মাজাহ ৩২৬৩; মুসনাদে আহমাদ: ১৭৬৭৮; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ৬৭৩০; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৪৬৫৩; শুআবুল ঈমান : ৫৪৬১)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাযি. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি পাত্র ছিল। সেটিকে গারা বলা হত। চারজন লোক সেটি বহন করত।(একদিনকার কথা) যখন চাশতের সময় হল এবং লোকজন চাশতের নামায পড়ল, তখন সেই পাত্রটি আনা হল। তার মধ্যে তৈরি করা ছারীদ ছিল। সকলে সেটির চারপাশে বসে গেল। লোকজন বেশি হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন। এক বেদুঈন বলল, এটা কেমন বসা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বান্দা বানিয়েছেন। আমাকে উদ্ধত সীমালঙ্ঘনকারী বানাননি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা পাত্রের চারপাশ থেকে খাও। তার চূড়া (মাঝখানটা) রেখে দাও। তাতে বরকত নাযিল করা হয়। -আবু দাউদ
(সুনানে আবু দাউদ: ৩৭৭৩; সুনানে ইবন মাজাহ ৩২৬৩; মুসনাদে আহমাদ: ১৭৬৭৮; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ৬৭৩০; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৪৬৫৩; শুআবুল ঈমান : ৫৪৬১)
باب الأمر بالأكل من جانب القصعة والنهي عن الأكل من وسطها
744 - وعن عبد الله بن بُسْرٍ - رضي الله عنه - قَالَ: كَانَ للنَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَصْعَةٌ يُقَالُ لَهَا: الغَرَّاءُ يَحْمِلُهَا أرْبَعَةُ رجالٍ؛ فَلَمَّا أَضْحَوْا وَسَجَدُوا الضُّحَى أُتِيَ بِتِلْكَ الْقَصْعَةِ؛ يعني وَقَدْ ثُردَ [ص:239] فِيهَا، فَالتَفُّوا عَلَيْهَا، فَلَمَّا كَثُرُوا جَثَا رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم. فَقَالَ أعرابيٌّ: مَا هذِهِ الجِلْسَةُ؟ فَقَالَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّ اللهَ جَعَلَنِي عَبْدًا كَريمًا، وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا عَنِيدًا»، ثُمَّ قَالَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم: «كُلُوا مِنْ حَوَالَيْهَا، وَدَعُوا ذِرْوَتَها يُبَارَكْ فِيهَا». رواه أَبُو داود بإسنادٍ جيد. (1)
«ذِرْوَتها»: أعْلاَهَا بكسر الذال وضمها.
«ذِرْوَتها»: أعْلاَهَا بكسر الذال وضمها.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
الْغَرَّاءُ এর অর্থ উজ্জ্বল, শুভ্র। যে-কোনও দামি ও উৎকৃষ্ট বস্তুকেও الْغَرَّاءُ বলা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাত্রটিকে الْغَرَّاءُ বলা হতো সম্ভবত সেটির উজ্জ্বলতার কারণে। অথবা বড় হওয়ায় সেটির প্রতি মানুষের খুব আগ্রহ ছিল। বিশেষ প্রয়োজনে সেটি ব্যবহার করা যেত। তাই এটি দামি ও উৎকৃষ্ট পাত্ররূপে গণ্য হত।
يَحْمِلُهَا أَرْبَعَةُ رِجَالٍ (চারজন লোক সেটি বহন করত)। অর্থাৎ সেটি বেশ বড় পাত্র ছিল। যে কারণে সেটি বহন করতে চারজন লোকের দরকার হত। মুসনাদে আহমাদের এক বর্ণনায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাযি. থেকেই বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চার আংটা বিশিষ্ট একটি পাত্র ছিল। সম্ভবত তা দ্বারা এ পাত্রটিই বোঝানো হয়েছে। চারটি আংটা থাকার দ্বারাও পাত্রটির বড় হওয়া বোঝা যায়। চারটি আংটা থাকায় সেই পাত্রটি বহনে চারজন লোকের প্রয়োজন হত।
فَلَمَّا أَضْحَوْا وَسَجَدُوا الضُّحُى (যখন চাশতের সময় হল এবং লোকজন চাশতের নামায পড়ল)। সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর ইশরাকের ওয়াক্ত হয়। তারপর যখন রোদ চড়া হয়ে ওঠে, সেই সময়টাকে চাশত বলা হয়। এ সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল নামায পড়তেন। এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায় সাহাবায়ে কেরামও এ নামায পড়তেন। তাদের চাশতের নামায পড়া শেষ হলে সেই পাত্রটি আনা হল।
وَقَدْ ثُرِدَ فيها (তার মধ্যে তৈরি করা ছারীদ ছিল)। ছারীদ হল ঝোল মাংসের সাথে রুটি টুকরো টুকরো করে মিশিয়ে প্রস্তুত করা খাদ্য। তো ছারীদ ভরা সেই ডিশটি আনা হলে সকলে তার চারদিকে গোল হয়ে বসে গেলেন।
فَلَمَّا كَثُرُوا جَثا رَسُوْلُ اللَّهِ ﷺ (লোকজন বেশি হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন)। جَثا এর অর্থ দুই হাঁটু বিছিয়ে এবং দুই পা খাড়া করে তার উপর বসা। এভাবে বসলে অল্প জায়গায় অনেক লোক বসা যায়। লোকের ভিড় হওয়ার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বসলেন। যাতে অল্প স্থানে সকলের সংকুলান হয়ে যায়।
فَقَالَ أَعْرَابِيٌّ : مَا هَذِهِ الْجِلْسَةُ؟ (এক বেদুঈন বলল, এটা কেমন বসা)? অর্থাৎ তার দৃষ্টিতে এভাবে বসাটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য বেমানান লাগছিল। তিনি সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি আসন দিয়ে শান-শওকতের সঙ্গে বসবেন। এমন তুচ্ছ ভঙ্গিতে বসাটা তাঁর জন্য মানায় নাকি!
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : إِنَّ اللَّهَ جَعَلَنِي عَبْدًا كَرِيمًا (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বান্দা বানিয়েছেন)। অর্থাৎ আমি আল্লাহর বান্দা। এভাবে বসার দ্বারা বন্দেগী ও বিনয় প্রকাশ পায়। আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বানিয়েছেন। ভদ্রতার দাবি এমনভাবে বসা, যাতে সকলের বসতে সুবিধা হয়। নিজে বেশি জায়গা দখল করে অন্যদের বসায় অসুবিধা ঘটানো ভদ্রতার পরিচায়ক নয়। সেজন্যই আমি এভাবে বসেছি।
وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا عَنِيْدًا (আমাকে উদ্ধত সীমালঙ্ঘনকারী বানাননি)। যে ব্যক্তি উদ্ধত, অন্যকে কেয়ার করে না, তার সবকিছুতেই অহমিকা প্রকাশ পায়। বসার বেলায়ও সে তার ইচ্ছামতো বসে। অন্যে বসতে পারল কি পারল না, তার কোনও তোয়াক্কা সে করে না। এমনিভাবে যে ব্যক্তি সীমালঙ্ঘনকারী, তারও সকল আচার-আচরণ হয় স্পর্ধার সঙ্গে। অন্যের অসুবিধা ঘটিয়ে নিজের সুবিধা করে নেয়। কিন্তু আমি তো সেই চরিত্রের নই। আল্লাহ তা'আলা আমাকে ওরকম বানানইনি। কাজেই আমার বসা তাদের বসার মতো হবে কেন? তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
كُلُوا مِنْ حَوَالَيْهَا، وَدَعُوْا ذِرْوَتَهَا يُبَارَكْ فِيهَا তোমরা পাত্রের চারপাশ থেকে খাও। তার চূড়া (মাঝখানটা) রেখে দাও। তাতে বরকত নাযিল করা হয়'। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ তা'আলার নাম নিয়ে আপন আপন সম্মুখ থেকে খাও। প্রথমে মাঝখানটায় হাত দেবে না। কেননা বরকত নাযিল হয় খাদ্যের মাঝখানটায়। তাই বরকত নাযিলের জন্য তা রেখে দেবে। শুরুতে পাশ থেকে খাবে এবং মাঝখানটা খাবে সবশেষে। যাতে পূর্ণ সময়টা তোমরা বরকত লাভ করতে থাক।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বেশি লোকের খাওয়ার সুবিধার্থে ঘরে বড় পাত্র রাখা ভালো।
খ. চাশতের সময় নফল নামায আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম এ সময় নফল নামায পড়তেন।
গ. একপাত্রে একাধিক ব্যক্তির খাওয়া সুন্নত।
ঘ. আল্লাহর বান্দারূপে সকল কাজে বিনয় প্রদর্শন বাঞ্ছনীয়। এমনকি বসার ক্ষেত্রেও।
ঙ. পাত্রের কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করা উচিত। মাঝখান থেকে নয়, যেহেতু মাঝখানে বরকত নাযিল হয়।
يَحْمِلُهَا أَرْبَعَةُ رِجَالٍ (চারজন লোক সেটি বহন করত)। অর্থাৎ সেটি বেশ বড় পাত্র ছিল। যে কারণে সেটি বহন করতে চারজন লোকের দরকার হত। মুসনাদে আহমাদের এক বর্ণনায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাযি. থেকেই বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চার আংটা বিশিষ্ট একটি পাত্র ছিল। সম্ভবত তা দ্বারা এ পাত্রটিই বোঝানো হয়েছে। চারটি আংটা থাকার দ্বারাও পাত্রটির বড় হওয়া বোঝা যায়। চারটি আংটা থাকায় সেই পাত্রটি বহনে চারজন লোকের প্রয়োজন হত।
فَلَمَّا أَضْحَوْا وَسَجَدُوا الضُّحُى (যখন চাশতের সময় হল এবং লোকজন চাশতের নামায পড়ল)। সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর ইশরাকের ওয়াক্ত হয়। তারপর যখন রোদ চড়া হয়ে ওঠে, সেই সময়টাকে চাশত বলা হয়। এ সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল নামায পড়তেন। এ হাদীছ দ্বারা বোঝা যায় সাহাবায়ে কেরামও এ নামায পড়তেন। তাদের চাশতের নামায পড়া শেষ হলে সেই পাত্রটি আনা হল।
وَقَدْ ثُرِدَ فيها (তার মধ্যে তৈরি করা ছারীদ ছিল)। ছারীদ হল ঝোল মাংসের সাথে রুটি টুকরো টুকরো করে মিশিয়ে প্রস্তুত করা খাদ্য। তো ছারীদ ভরা সেই ডিশটি আনা হলে সকলে তার চারদিকে গোল হয়ে বসে গেলেন।
فَلَمَّا كَثُرُوا جَثا رَسُوْلُ اللَّهِ ﷺ (লোকজন বেশি হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন)। جَثا এর অর্থ দুই হাঁটু বিছিয়ে এবং দুই পা খাড়া করে তার উপর বসা। এভাবে বসলে অল্প জায়গায় অনেক লোক বসা যায়। লোকের ভিড় হওয়ার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বসলেন। যাতে অল্প স্থানে সকলের সংকুলান হয়ে যায়।
فَقَالَ أَعْرَابِيٌّ : مَا هَذِهِ الْجِلْسَةُ؟ (এক বেদুঈন বলল, এটা কেমন বসা)? অর্থাৎ তার দৃষ্টিতে এভাবে বসাটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য বেমানান লাগছিল। তিনি সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি আসন দিয়ে শান-শওকতের সঙ্গে বসবেন। এমন তুচ্ছ ভঙ্গিতে বসাটা তাঁর জন্য মানায় নাকি!
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : إِنَّ اللَّهَ جَعَلَنِي عَبْدًا كَرِيمًا (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বান্দা বানিয়েছেন)। অর্থাৎ আমি আল্লাহর বান্দা। এভাবে বসার দ্বারা বন্দেগী ও বিনয় প্রকাশ পায়। আল্লাহ তা'আলা আমাকে ভদ্র বানিয়েছেন। ভদ্রতার দাবি এমনভাবে বসা, যাতে সকলের বসতে সুবিধা হয়। নিজে বেশি জায়গা দখল করে অন্যদের বসায় অসুবিধা ঘটানো ভদ্রতার পরিচায়ক নয়। সেজন্যই আমি এভাবে বসেছি।
وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا عَنِيْدًا (আমাকে উদ্ধত সীমালঙ্ঘনকারী বানাননি)। যে ব্যক্তি উদ্ধত, অন্যকে কেয়ার করে না, তার সবকিছুতেই অহমিকা প্রকাশ পায়। বসার বেলায়ও সে তার ইচ্ছামতো বসে। অন্যে বসতে পারল কি পারল না, তার কোনও তোয়াক্কা সে করে না। এমনিভাবে যে ব্যক্তি সীমালঙ্ঘনকারী, তারও সকল আচার-আচরণ হয় স্পর্ধার সঙ্গে। অন্যের অসুবিধা ঘটিয়ে নিজের সুবিধা করে নেয়। কিন্তু আমি তো সেই চরিত্রের নই। আল্লাহ তা'আলা আমাকে ওরকম বানানইনি। কাজেই আমার বসা তাদের বসার মতো হবে কেন? তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
كُلُوا مِنْ حَوَالَيْهَا، وَدَعُوْا ذِرْوَتَهَا يُبَارَكْ فِيهَا তোমরা পাত্রের চারপাশ থেকে খাও। তার চূড়া (মাঝখানটা) রেখে দাও। তাতে বরকত নাযিল করা হয়'। অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ তা'আলার নাম নিয়ে আপন আপন সম্মুখ থেকে খাও। প্রথমে মাঝখানটায় হাত দেবে না। কেননা বরকত নাযিল হয় খাদ্যের মাঝখানটায়। তাই বরকত নাযিলের জন্য তা রেখে দেবে। শুরুতে পাশ থেকে খাবে এবং মাঝখানটা খাবে সবশেষে। যাতে পূর্ণ সময়টা তোমরা বরকত লাভ করতে থাক।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বেশি লোকের খাওয়ার সুবিধার্থে ঘরে বড় পাত্র রাখা ভালো।
খ. চাশতের সময় নফল নামায আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম এ সময় নফল নামায পড়তেন।
গ. একপাত্রে একাধিক ব্যক্তির খাওয়া সুন্নত।
ঘ. আল্লাহর বান্দারূপে সকল কাজে বিনয় প্রদর্শন বাঞ্ছনীয়। এমনকি বসার ক্ষেত্রেও।
ঙ. পাত্রের কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করা উচিত। মাঝখান থেকে নয়, যেহেতু মাঝখানে বরকত নাযিল হয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
