রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৩. আহার-পানীয় গ্রহণের আদব
হাদীস নং: ৭৩৬
২ খাদ্যের দোষত্রুটি না ধরা ও তার প্রশংসা করা
হাদীছ নং: ৭৩৬
হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিবার- পরিজনের কাছে ব্যঞ্জন চাইলেন। তারা বলল, আমাদের কাছে সিরকা ছাড়া কিছু নেই। তিনি তাই আনতে বললেন। তারপর এই বলে খেতে শুরু করলেন যে, সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ২০৫২; সুনানে আবু দাউদ: ৩৮২০; জামে তিরমিযী: ১৯৪৫; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩৩১৭; সুনানে নাসাঈ ৩৭৯৬; মুসনাদে আহমাদ: ১৪৮০৭)
হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিবার- পরিজনের কাছে ব্যঞ্জন চাইলেন। তারা বলল, আমাদের কাছে সিরকা ছাড়া কিছু নেই। তিনি তাই আনতে বললেন। তারপর এই বলে খেতে শুরু করলেন যে, সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ২০৫২; সুনানে আবু দাউদ: ৩৮২০; জামে তিরমিযী: ১৯৪৫; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩৩১৭; সুনানে নাসাঈ ৩৭৯৬; মুসনাদে আহমাদ: ১৪৮০৭)
باب لا يَعيبُ الطّعام واستحباب مَدحه
736 - وعن جابر - رضي الله عنه: أنَّ النَّبيَّ - صلى الله عليه وسلم - سَأَلَ أهْلَهُ الأُدْمَ، فقالوا: مَا عِنْدَنَا إِلاَّ خَلٌّ، فَدَعَا بِهِ، فَجَعَلَ يَأكُلُ، ويقول: «نِعْمَ الأُدْمُ الخَلُّ، نِعْمَ الأُدْمُ الخَلُّ». رواه مسلم (1).
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি দ্বারা আমরা অনুমান করতে পারি নবী-পরিবারে খাদ্যের কেমন অভাব ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে তাঁর খাওয়ার জন্য রুটি রাখা হয়েছিল, যেমন কোনও কোনও বর্ণনায় আছে। কিন্তু সে রুটি খেতে হলে সঙ্গে কিছু একটা লাগবে তো। তাই তিনি ব্যঞ্জন চাইলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন জানাল, ব্যঞ্জন বলতে কিছুই ঘরে নেই। না গোশত, না সবজি, না অন্য কিছু। আছে কেবল সিরকা। তিনি সে সিরকাই নিয়ে আসতে বললেন। তা-ই আনা হল। তিনি কি কোনও আক্ষেপ করলেন? তরকারি দেওয়া হল না বলে বিরক্তি প্রকাশ করলেন? মোটেই না। তিনি পরম আনন্দে সিরকা দিয়ে রুটি খেতে শুরু করলেন এবং সিরকার প্রশংসা করে বলতে লাগলেন, সিরকা বেশ ভালো ব্যঞ্জন। এই কৃতজ্ঞতাবোধ, এই গুণগ্রাহিতা, এই মহানুভবতা নবীচরিত্রেরই বিশেষত্ব। সিরকা দিয়ে রুটি খাওয়াকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা নয়। এক উপাদেয় খাবাররূপেই তিনি তা গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তা'আলার প্রতিটি নি'আমত মহামূল্যবান। খাবার, তা যতই সাধারণ হোক না কেন, মানুষের প্রাণরক্ষার উপকরণ। সামান্য একটু সিরকাও মৃতপ্রায় অভুক্তের প্রাণরক্ষার কারণ হতে পারে। তাই প্রকৃতপক্ষে তুচ্ছ নয় কোনও খাবারই। সুতরাং তাচ্ছিল্য করা নয়; বরং মূল্য দিতে হবে প্রতিটি খাবারেরই। সে শিক্ষাই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ আচরণের মধ্যে আমরা পাই। তিনি এর মাধ্যমে আমাদেরকে দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হওয়ারও তা'লীম দিয়েছেন। দুনিয়ার কোনওকিছুর প্রতি লোভী হয়ো না। দামি খাবারের লোভে সাধারণ খাবারকে হেলা করো না। বরং লোভ সংবরণ করে সাধারণ খাবারো সন্তুষ্ট থাকো। আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যখন যা আসে, পরমানন্দে তাই গ্রহণ করো। ইহজীবনের সুখ এরই মধ্যে নিহিত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবারকে হেলা করতে নেই। সবই আল্লাহ তা'আলার নি'আমত। তাই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা গ্রহণ করা ও তার প্রশংসা করা উচিত।
খ. নিজ গরিবী হালের কারণে আক্ষেপ করতে নেই। আল্লাহ তা'আলা যখন যে অবস্থায় রাখেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকা চাই।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও খাবারকে হেলা করতে নেই। সবই আল্লাহ তা'আলার নি'আমত। তাই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা গ্রহণ করা ও তার প্রশংসা করা উচিত।
খ. নিজ গরিবী হালের কারণে আক্ষেপ করতে নেই। আল্লাহ তা'আলা যখন যে অবস্থায় রাখেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
