রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
৩. আহার-পানীয় গ্রহণের আদব
হাদীস নং: ৭৩৩
১ খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ ও শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা
দস্তরখান তোলার দু‘আ
হাদীছ নং: ৭৩৩
হযরত আবু উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দস্তরখান উঠাতেন তখন বলতেন- الْحَمْدُ الله حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ غَيْرَ مَكْفِيٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبُّنَا (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। প্রভৃত, পবিত্র ও বরকতপূর্ণ প্রশংসা। হে আমাদের প্রতিপালক! এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন নিঃশেষ হয়ে যায়নি। একে আমরা বিদায় জানাচ্ছি না। এর প্রতি আমরা অনপেক্ষ নই)। -বুখারী
(সহীহ বুখারী: ৫৪৫৮; সুনানে আবূ দাউদ: ৩৮৪৯; জামে তিরমিযী: ৩৭৫৯; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩২৮৪; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৬৮৯৭; মুসনাদে আহমাদ: ২২১৬৮; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫২১৭; সুনানে দারিমী ২০৬৬; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৭৪৬৯)
হাদীছ নং: ৭৩৩
হযরত আবু উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দস্তরখান উঠাতেন তখন বলতেন- الْحَمْدُ الله حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ غَيْرَ مَكْفِيٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبُّنَا (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। প্রভৃত, পবিত্র ও বরকতপূর্ণ প্রশংসা। হে আমাদের প্রতিপালক! এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন নিঃশেষ হয়ে যায়নি। একে আমরা বিদায় জানাচ্ছি না। এর প্রতি আমরা অনপেক্ষ নই)। -বুখারী
(সহীহ বুখারী: ৫৪৫৮; সুনানে আবূ দাউদ: ৩৮৪৯; জামে তিরমিযী: ৩৭৫৯; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩২৮৪; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৬৮৯৭; মুসনাদে আহমাদ: ২২১৬৮; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫২১৭; সুনানে দারিমী ২০৬৬; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৭৪৬৯)
باب التسمية في أوله والحمد في آخره
733 - وعن أَبي أُمَامَة - رضي الله عنه: أنَّ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - كَانَ إِذَا رَفَعَ مَائِدَتَهُ، قَالَ: «الْحَمْدُ للهِ حَمدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَاركًا فِيهِ، غَيْرَ مَكْفِيٍّ، وَلاَ مُوَدَّعٍ، وَلاَ مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا». رواه البخاري. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে দস্তরখান তোলার দু‘আ বর্ণিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দস্তরখান তোলার সময় দু‘আটি পড়তেন। দু'আটি খুবই সারগর্ভ। এতে তাৎপর্যপূর্ণ কয়েকটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। শব্দগুলো দ্বারা একদিকে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করা হয়েছে, অন্যদিকে বান্দার অক্ষমতা ও মুখাপেক্ষিতার স্বীকারোক্তি করা হয়েছে। নিচে শব্দগুলোর ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে।
الْحَمْدُ الله حَمْدًا كَثِيْرًا (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। প্রভূত প্রশংসা)। অর্থাৎ মাখলুকের পক্ষ থেকে যত রকম প্রশংসা হয়ে থাকে ও হতে পারে, প্রকৃতপক্ষে তা সব আল্লাহ তা'আলারই প্রশংসা। সে প্রশংসা অতি বিপুল, যেমনটা বিপুল আল্লাহ তা'আলার দান ও অনুগ্রহ।
طَيِّبًا (পবিত্র প্রশংসা)। অর্থাৎ রিয়া ও নামডাক থেকে মুক্ত প্রশংসা। আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এমনসব গুণ থেকে মুক্ত প্রশংসা। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র। তিনি পবিত্র বিষয়ই কবুল করেন।
مُباركًا فِيهِ (বরকতপূর্ণ প্রশংসা)। অর্থাৎ এমন প্রশংসা, যা স্থায়ী হবে। কখনও বন্ধ হবে না।
غَيْرَ مَكْفِيٍّ (এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন নিঃশেষ হয়ে যায়নি)। অর্থাৎ এই খাবার, যা আমরা এখন খেলাম, এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। আমরা যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন খাদ্যেরও প্রয়োজন হবে। অথবা এর অর্থ- এই যে প্রশংসা করা হল, তোমার প্রশংসা হিসেবে এটা যথেষ্ট নয়। তোমার যথাযথ প্রশংসা করার ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমরা কেবল আমাদের সাধ্যমতোই প্রশংসা করে থাকি। কিন্তু তোমার যা প্রশংসা প্রাপ্য, তা এর অনেক ঊর্ধ্বে।
وَلَا مُوَدَّعٍ (একে আমরা বিদায় জানাচ্ছি না)। অর্থাৎ এই খাবারকে আমরা শেষ খাবার মনে করি না। তুমি যতদিন হায়াতে রাখ, ততদিন এর প্রয়োজন হবে। এর প্রতি আমাদের চাহিদা থেকে যাবে। এর প্রয়োজন ফুরাবে কেবল মৃত্যুর দ্বারা। অথবা এর অর্থ- এই যে তোমার প্রশংসা করলাম, এটাই আমাদের শেষ প্রশংসা নয়। আমরা তোমার প্রশংসা করতে চাই নিরবচ্ছিন্নভাবে, আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ যেমন নিরবচ্ছিন্ন।
وَلَا مُسْتَغْنًى (এর প্রতি আমরা অনপেক্ষ নই)। অর্থাৎ তোমার দেওয়া খাদ্য এমন নয় যে, তার প্রতি আমাদের কোনও মুখাপেক্ষিতা নেই। আমরা তোমার দুর্বল সৃষ্টি। আমরা সর্বদাই তোমার অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী। আমাদের ক্ষুধা লাগে। তাই খাওয়ার প্রয়োজন হয়। যতদিন তুমি বাঁচিয়ে রাখ, ততদিন এর প্রতি আমাদের মুখাপেক্ষিতাও অব্যাহত থাকবে। অথবা এর অর্থ- আমরা সর্বদাই তোমার প্রশংসা করার এবং তোমার শোকর আদায়ের মুখাপেক্ষী, যাতে আমাদের প্রতি তোমার দেওয়া নি'আমত ও অনুগ্রহ অব্যাহত থাকে এবং যাতে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ আরও বৃদ্ধি পায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খানা খাওয়ার পর প্রাণভরে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা চাই।
খ. খাবার আল্লাহ তা'আলার দান। নিজেকে এর মুখাপেক্ষী মনে করতে হবে।
গ. দস্তরখান তোলার সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে আমরাও এ দু'আটি পড়ব।
الْحَمْدُ الله حَمْدًا كَثِيْرًا (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। প্রভূত প্রশংসা)। অর্থাৎ মাখলুকের পক্ষ থেকে যত রকম প্রশংসা হয়ে থাকে ও হতে পারে, প্রকৃতপক্ষে তা সব আল্লাহ তা'আলারই প্রশংসা। সে প্রশংসা অতি বিপুল, যেমনটা বিপুল আল্লাহ তা'আলার দান ও অনুগ্রহ।
طَيِّبًا (পবিত্র প্রশংসা)। অর্থাৎ রিয়া ও নামডাক থেকে মুক্ত প্রশংসা। আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এমনসব গুণ থেকে মুক্ত প্রশংসা। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র। তিনি পবিত্র বিষয়ই কবুল করেন।
مُباركًا فِيهِ (বরকতপূর্ণ প্রশংসা)। অর্থাৎ এমন প্রশংসা, যা স্থায়ী হবে। কখনও বন্ধ হবে না।
غَيْرَ مَكْفِيٍّ (এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন নিঃশেষ হয়ে যায়নি)। অর্থাৎ এই খাবার, যা আমরা এখন খেলাম, এর প্রতি আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। আমরা যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন খাদ্যেরও প্রয়োজন হবে। অথবা এর অর্থ- এই যে প্রশংসা করা হল, তোমার প্রশংসা হিসেবে এটা যথেষ্ট নয়। তোমার যথাযথ প্রশংসা করার ক্ষমতাও আমাদের নেই। আমরা কেবল আমাদের সাধ্যমতোই প্রশংসা করে থাকি। কিন্তু তোমার যা প্রশংসা প্রাপ্য, তা এর অনেক ঊর্ধ্বে।
وَلَا مُوَدَّعٍ (একে আমরা বিদায় জানাচ্ছি না)। অর্থাৎ এই খাবারকে আমরা শেষ খাবার মনে করি না। তুমি যতদিন হায়াতে রাখ, ততদিন এর প্রয়োজন হবে। এর প্রতি আমাদের চাহিদা থেকে যাবে। এর প্রয়োজন ফুরাবে কেবল মৃত্যুর দ্বারা। অথবা এর অর্থ- এই যে তোমার প্রশংসা করলাম, এটাই আমাদের শেষ প্রশংসা নয়। আমরা তোমার প্রশংসা করতে চাই নিরবচ্ছিন্নভাবে, আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ যেমন নিরবচ্ছিন্ন।
وَلَا مُسْتَغْنًى (এর প্রতি আমরা অনপেক্ষ নই)। অর্থাৎ তোমার দেওয়া খাদ্য এমন নয় যে, তার প্রতি আমাদের কোনও মুখাপেক্ষিতা নেই। আমরা তোমার দুর্বল সৃষ্টি। আমরা সর্বদাই তোমার অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী। আমাদের ক্ষুধা লাগে। তাই খাওয়ার প্রয়োজন হয়। যতদিন তুমি বাঁচিয়ে রাখ, ততদিন এর প্রতি আমাদের মুখাপেক্ষিতাও অব্যাহত থাকবে। অথবা এর অর্থ- আমরা সর্বদাই তোমার প্রশংসা করার এবং তোমার শোকর আদায়ের মুখাপেক্ষী, যাতে আমাদের প্রতি তোমার দেওয়া নি'আমত ও অনুগ্রহ অব্যাহত থাকে এবং যাতে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ আরও বৃদ্ধি পায়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. খানা খাওয়ার পর প্রাণভরে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা চাই।
খ. খাবার আল্লাহ তা'আলার দান। নিজেকে এর মুখাপেক্ষী মনে করতে হবে।
গ. দস্তরখান তোলার সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে আমরাও এ দু'আটি পড়ব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
