রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
২. বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৭২৬
বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
১৬ মর্যাদাপূর্ণ সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া
মাথা মুণ্ডন ও চুল ছাঁটা ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত
হাদীছ নং: ৭২৬
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় আসলেন। তারপর জামরায় এসে পাথর নিক্ষেপ করলেন। তারপর মিনায় তাঁর অবস্থানস্থলে ফিরে আসলেন এবং কুরবানী করলেন। তারপর মাথা মুণ্ডনকারীকে বললেন, নাও এখান থেকে শুরু করো। এ বলে তিনি ডানদিকে ইশারা করলেন। তারপর বামদিকে ইশারা করলেন। তারপর লোকদের মধ্যে সে চুল বিতরণ করতে থাকলেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ১৭১; সহীহ মুসলিম: ১৩০৫; জামে তিরমিযী: ৯১২; সুনানে আবু দাউদ: ১৯৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান ১৩৭১; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৯৪০০; শারহুস সুন্নাহ: ১৯৬২)
অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি পাথর নিক্ষেপ করে কুরবানীর পশু জবাই করলেন এবং মাথা মুণ্ডন করলেন। মুণ্ডনকালে ক্ষৌরকারকে মাথার ডানদিক পেতে দিলেন। সে তা মুণ্ডন করল। তারপর তিনি আবূ তালহা আনসারীকে ডাকলেন। তাকে সে চুল দিলেন। তারপর ক্ষৌরকারকে মাথার বামদিক পেতে দিলেন। বললেন, মুণ্ডন করো। সে তা মুণ্ডন করল। তিনি সে চুল আবু তালহাকে দিয়ে বললেন, এগুলো লোকদের মধ্যে বণ্টন করে দাও।
হাদীছ নং: ৭২৬
হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় আসলেন। তারপর জামরায় এসে পাথর নিক্ষেপ করলেন। তারপর মিনায় তাঁর অবস্থানস্থলে ফিরে আসলেন এবং কুরবানী করলেন। তারপর মাথা মুণ্ডনকারীকে বললেন, নাও এখান থেকে শুরু করো। এ বলে তিনি ডানদিকে ইশারা করলেন। তারপর বামদিকে ইশারা করলেন। তারপর লোকদের মধ্যে সে চুল বিতরণ করতে থাকলেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ১৭১; সহীহ মুসলিম: ১৩০৫; জামে তিরমিযী: ৯১২; সুনানে আবু দাউদ: ১৯৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান ১৩৭১; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৯৪০০; শারহুস সুন্নাহ: ১৯৬২)
অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি পাথর নিক্ষেপ করে কুরবানীর পশু জবাই করলেন এবং মাথা মুণ্ডন করলেন। মুণ্ডনকালে ক্ষৌরকারকে মাথার ডানদিক পেতে দিলেন। সে তা মুণ্ডন করল। তারপর তিনি আবূ তালহা আনসারীকে ডাকলেন। তাকে সে চুল দিলেন। তারপর ক্ষৌরকারকে মাথার বামদিক পেতে দিলেন। বললেন, মুণ্ডন করো। সে তা মুণ্ডন করল। তিনি সে চুল আবু তালহাকে দিয়ে বললেন, এগুলো লোকদের মধ্যে বণ্টন করে দাও।
كتاب الأدب
باب استحباب تقديم اليمين في كل مَا هو من باب التكريم
726 - وعن أنس - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - أتى مِنىً، فَأتَى الْجَمْرَةَ فَرَمَاهَا، ثُمَّ أتَى مَنْزِلَهُ بِمِنَىً ونحر، ثُمَّ قَالَ لِلحَلاَّقِ: «خُذْ» وأشَارَ إِلَى جَانِبهِ الأَيْمَنِ، ثُمَّ الأَيْسَرِ، ثُمَّ جَعَلَ يُعْطِيهِ النَّاسَ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
وفي رواية: لما رمَى الجَمْرَةَ، وَنَحَرَ نُسُكَهُ وَحَلَقَ، نَاوَلَ الحَلاَّقَ شِقَّهُ الأَيْمَنَ فَحَلَقَهُ، ثُمَّ دَعَا أَبَا طَلْحَةَ الأنْصَارِيَّ - رضي الله عنه - فَأعْطَاهُ إيَّاهُ، ثُمَّ نَاوَلَهُ الشِّقَّ الأَيْسَرَ، فَقَالَ: «احْلِقْ»، فَحَلَقَهُ فَأعْطَاهُ أَبَا طَلْحَةَ، فَقَالَ: «اقْسِمْهُ بَيْنَ النَّاسِ».
وفي رواية: لما رمَى الجَمْرَةَ، وَنَحَرَ نُسُكَهُ وَحَلَقَ، نَاوَلَ الحَلاَّقَ شِقَّهُ الأَيْمَنَ فَحَلَقَهُ، ثُمَّ دَعَا أَبَا طَلْحَةَ الأنْصَارِيَّ - رضي الله عنه - فَأعْطَاهُ إيَّاهُ، ثُمَّ نَاوَلَهُ الشِّقَّ الأَيْسَرَ، فَقَالَ: «احْلِقْ»، فَحَلَقَهُ فَأعْطَاهُ أَبَا طَلْحَةَ، فَقَالَ: «اقْسِمْهُ بَيْنَ النَّاسِ».
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হজ্জ পালনের অংশবিশেষ বর্ণিত হয়েছে। তিনি মিনার জামারাতে আসেন এবং জামারাতুল কুবরায় পাথর নিক্ষেপ করেন। তারপর কুরবানী করেন। তারপর মাথা মুণ্ডন করেন। তিনি মাথা মুণ্ডন কীভাবে করেছেন তাও হাদীছটিতে বর্ণিত হয়েছে। তিনি প্রথমে মাথার ডানদিক পেতে দেন এবং ক্ষৌরকারকে সেদিক মুণ্ডাতে বলেন। সেদিক মুণ্ডানো শেষ হলে বামদিক পেতে দেন। এভাবে তিনি মাথা মুণ্ডানোর কাজ শেষ করেন।
হাদীছটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুণ্ডিত চুল সাহাবীদের মধ্যে বিতরণ করা। হাদীসে আছে, তাঁর মাথার ডানদিক মুণ্ডন করা শেষ হলে তিনি হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে ডাকলেন এবং পবিত্র সেই চুল তাঁকে দিলেন। তারপর মাথার বামদিক কামানো হল। তিনি সেদিকের চুল আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে দিয়ে বললেন, এগুলো লোকদের মধ্যে বিতরণ করে দাও। তিনি তা বিতরণ করে দিলেন।
কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, ডানদিকের চুল সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল আর বাম দিকেরগুলো হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে দেওয়া হয়েছিল।
এ বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায় হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ স্নেহের দৃষ্টিতে দেখতেন। বলা যায় আনসারদের মধ্যে তিনি তাঁর সর্বাপেক্ষা বেশি প্রিয়দের একজন ছিলেন। তাঁর অতটা ঘনিষ্ঠতা হয়তো বহু মুহাজিরও লাভ করতে পারেননি। সে ঘনিষ্ঠতার নিদর্শন যে, পবিত্র মাথার ডানদিকের মুবারক চুল বিশেষভাবে তাঁকেই দিলেন। তারপর বাম দিকেরগুলো সাধারণভাবে সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তবে হাঁ, কাউকে বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়ার দ্বারা সামগ্রিকভাবে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয় না। এটা একটা শাখাগত শ্রেষ্ঠত্ব। নয়তো আশারায়ে মুবাশশারাসহ বহু সাহাবী মর্যাদায় আরও অনেক উপরে রয়েছেন।
এ হাদীছটি দ্বারা তাবাররুকের প্রমাণ পাওয়া যায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি জিনিসই ছিল বরকতময়। তাঁর চুল, তাঁর থুথু, তাঁর ঘাম, তাঁর জামা, তাঁর জুতো সবই বরকতময়। কেউ যদি বরকতের উদ্দেশ্যে এসব নিজের কাছে রাখে, তবে এ হাদীছ দ্বারা তা বৈধ প্রমাণিত হয়। বরং এর বৈধতায় কোনও সন্দেহ নেই, যেহেতু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাঁর মুণ্ডিত চুল বিতরণ করেছেন, যাতে সাহাবায়ে কেরাম তা দ্বারা বরকত গ্রহণ করতে পারেন।
বস্তুত নিজের কাছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত রাখতে পারাটা অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। এর দ্বারা বুযুর্গানে দীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনওকিছুকে তাবাররুক হিসেবে সংরক্ষণ করার বৈধতাও প্রমাণিত হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জামারায় পাথর নিক্ষেপ করা হজ্জের একটি অবশ্যপালনীয় বিধান (ওয়াজিব)।
খ. কিরান বা তামাত্তু' হজ্জকারীর জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব। একে 'দমে শোকর' বলে
গ. হজ্জের ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মুণ্ডন করা বা চুল ছাঁটা জরুরি।
ঘ. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত।
ঙ. এ হাদীছ দ্বারা তাবাররুকের বৈধতা প্রমাণিত হয়।
হাদীছটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণিত হয়েছে। তা হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুণ্ডিত চুল সাহাবীদের মধ্যে বিতরণ করা। হাদীসে আছে, তাঁর মাথার ডানদিক মুণ্ডন করা শেষ হলে তিনি হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে ডাকলেন এবং পবিত্র সেই চুল তাঁকে দিলেন। তারপর মাথার বামদিক কামানো হল। তিনি সেদিকের চুল আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে দিয়ে বললেন, এগুলো লোকদের মধ্যে বিতরণ করে দাও। তিনি তা বিতরণ করে দিলেন।
কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, ডানদিকের চুল সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল আর বাম দিকেরগুলো হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে দেওয়া হয়েছিল।
এ বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায় হযরত আবূ তালহা আনসারী রাযি.-কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ স্নেহের দৃষ্টিতে দেখতেন। বলা যায় আনসারদের মধ্যে তিনি তাঁর সর্বাপেক্ষা বেশি প্রিয়দের একজন ছিলেন। তাঁর অতটা ঘনিষ্ঠতা হয়তো বহু মুহাজিরও লাভ করতে পারেননি। সে ঘনিষ্ঠতার নিদর্শন যে, পবিত্র মাথার ডানদিকের মুবারক চুল বিশেষভাবে তাঁকেই দিলেন। তারপর বাম দিকেরগুলো সাধারণভাবে সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
তবে হাঁ, কাউকে বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়ার দ্বারা সামগ্রিকভাবে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয় না। এটা একটা শাখাগত শ্রেষ্ঠত্ব। নয়তো আশারায়ে মুবাশশারাসহ বহু সাহাবী মর্যাদায় আরও অনেক উপরে রয়েছেন।
এ হাদীছটি দ্বারা তাবাররুকের প্রমাণ পাওয়া যায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি জিনিসই ছিল বরকতময়। তাঁর চুল, তাঁর থুথু, তাঁর ঘাম, তাঁর জামা, তাঁর জুতো সবই বরকতময়। কেউ যদি বরকতের উদ্দেশ্যে এসব নিজের কাছে রাখে, তবে এ হাদীছ দ্বারা তা বৈধ প্রমাণিত হয়। বরং এর বৈধতায় কোনও সন্দেহ নেই, যেহেতু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাঁর মুণ্ডিত চুল বিতরণ করেছেন, যাতে সাহাবায়ে কেরাম তা দ্বারা বরকত গ্রহণ করতে পারেন।
বস্তুত নিজের কাছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত রাখতে পারাটা অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। এর দ্বারা বুযুর্গানে দীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনওকিছুকে তাবাররুক হিসেবে সংরক্ষণ করার বৈধতাও প্রমাণিত হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জামারায় পাথর নিক্ষেপ করা হজ্জের একটি অবশ্যপালনীয় বিধান (ওয়াজিব)।
খ. কিরান বা তামাত্তু' হজ্জকারীর জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব। একে 'দমে শোকর' বলে
গ. হজ্জের ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মুণ্ডন করা বা চুল ছাঁটা জরুরি।
ঘ. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত।
ঙ. এ হাদীছ দ্বারা তাবাররুকের বৈধতা প্রমাণিত হয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)