রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ
২. বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৭২০
বিবিধ আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়
মর্যাদাপূর্ণ সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া
যেমন ওযু করা, গোসল করা, তায়াম্মুম করা, কাপড় পরা, জুতা, মোজা ও পায়জামা পরা, মসজিদে প্রবেশ করা, মিসওয়াক করা, সুরমা লাগানো, নখ কাটা, গোফ কাটা, বগল পরিষ্কার করা, মাথা মুণ্ডানো, নামাযে সালাম ফেরানো, খাওয়া, পান করা, মুসাফাহা করা, হাজারে আসওয়াদে চুমু খাওয়া, হাম্মাম থেকে বের হওয়া, গ্রহণ করা, প্রদান করা এবং এ জাতীয় অন্যান্য কাজ। এসব কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া মুস্তাহাব। এর বিপরীত কাজে বাম দিককে প্রাধান্য দেওয়া মুস্তাহাব। যেমন নাক পরিষ্কার করা, থুথু ফেলা, হাম্মামে প্রবেশ করা, মসজিদ থেকে বের হওয়া, মোজা, জুতা, পায়জামা ও জামা খোলা, শৌচ করা, ময়লা পরিষ্কার করা এবং এ জাতীয় অন্যান্য কাজ।
‘মর্যাদাপূর্ণ সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া’ সম্পর্কিত দুটি আয়াত
এক নং আয়াত
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ (19)
অর্থ: অতঃপর যাকে আমলনামা দেওয়া হবে তার ডান হাতে সে বলবে, হে লোকজন! এই যে আমার আমলনামা, তোমরা পড়ে দেখো।(সূরা আল-হাক্কা (৬৯), আয়াত ১৯)
ব্যাখ্যা
পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশের পর তাতে উত্তীর্ণ ছাত্র যেমন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে আশপাশের লোকজনকে তার রেজালকার্ড দেখায় আর বলে, দেখো, দেখো, আমার প্রাপ্ত নম্বর পড়ে দেখো, তেমনি হাশরের দিনের মহাবিচারে যারা উত্তীর্ণ হবে এবং ডানহাতে আমলনামা পাবে, তারা আনন্দের উচ্ছ্বাসে আশপাশের মানুষকে বলবে, নাও, আমার আমলনামা পড়ে দেখো। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। না হয় সেদিন যারা নাজাত পাবে, যাদের ডানহাতে আমলনামা বা মুক্তিপত্র দিয়ে দেওয়া হবে, তারা যে কী খুশি হবে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সে খুশির সঙ্গে দুনিয়ার কোনও মুক্তি বা বড় থেকে বড় কোনও প্রাপ্তির আনন্দকে তুলনা করা যায় না। এ হল দুনিয়ার সীমিত ও ক্ষণস্থায়ী অর্জন। আর ওটা পরকালের অনন্ত জীবনের অফুরন্ত প্রাপ্তির হুকুমনামা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও সে মহানন্দের জন্য কবুল করে নিন।
আয়াত দ্বারা জানা গেল, আখিরাতে নেককারদেরকে তাদের আমলনামা বা মুক্তিপত্র দেওয়া হবে ডান হাতে। এর দ্বারা বোঝা গেল, মর্যাদাপূর্ণ বিষয়ের প্রদান-গ্রহণের জন্য ডানহাতের ব্যবহারই বাঞ্ছনীয়।
আয়াতটির শিক্ষা
আমরা যে-কোনও উৎকৃষ্ট কাজে ডানহাত ব্যবহার করব।
দুই নং আয়াত
فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (8) وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ (9)
অর্থ: সুতরাং যারা ডান হাত বিশিষ্ট, আহা কেমন যে সে ডান হাত বিশিষ্টগণ! আর যারা বাম হাত বিশিষ্ট, কী (হতভাগ্য) সে বাম হাত বিশিষ্টগণ!(সূরা ওয়াকিয়া (৫৬), আয়াত ৮, ৯)
ব্যাখ্যা
أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ ‘ডান হাত বিশিষ্টগণ’। এর আরেক অর্থ হতে পারে 'ডান দিকের দল' এর দ্বারা সেই ভাগ্যবান মুমিনদের বোঝানো হয়েছে, যারা ডান দিকের পথ অনুসরণ করে। যে পথ মানুষকে জান্নাতে পৌঁছায়। তারা তাদের ডান হাতে আমলনামা লাভ করবে। সেটা প্রমাণ করবে যে, তারা ঈমানদার এবং তারা জান্নাতে যাবে। তারা আরশের ডান দিকে থাকবে। মানবসৃষ্টির সূচনায় প্রতিশ্রুতি গ্রহণকালে তাদেরকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের ডান পাঁজর থেকে বের করা হয়েছিল। এদের সম্পর্কে মি‘রাজের হাদীছে আছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম তাঁর ডান দিকে তাকিয়ে খুশিতে হাসছিলেন।
مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (আহা কেমন যে সে ডান হাত বিশিষ্টগণ)! এটি একটি বিস্ময়জ্ঞাপক বাক্য। বোঝানো উদ্দেশ্য, আল্লাহ তা'আলার কাছে তাদের মর্যাদা কত বড়! তারা কতইনা ভাগ্যবান! তারা হবে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত। তারা জাহান্নামের আযাব থেকে রেহাই পেয়ে যাবে। লাভ করবে অকল্পনীয় সুখ-শান্তির অনন্তকালীন জান্নাত।
এর দ্বারা বোঝা গেল 'ডান' শব্দের ব্যবহার হয় প্রশংসনীয় ক্ষেত্রে।
أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ ‘বাম হাতবিশিষ্ট বা বাম দিকের দল’। এর দ্বারা সেই হতভাগাদের বোঝানো হয়েছে, যাদের আমলনামা দেওয়া হবে তাদের বাম হাতে। এটা হবে তাদের কুফরের আলামত। তারা আরশের বাম দিকে থাকবে। প্রতিশ্রুতি গ্রহণকালে তাদেরকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের বাম পাঁজর থেকে বের করা হয়েছিল। এদেরই সম্পর্কে মিরাজের হাদীছে আছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম যখন তাঁর বাম দিকে তাকাচ্ছিলেন, তখন মনের বেদনায় কাঁদছিলেন।
مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ ‘কী (হতভাগ্য) সে বাম হাত বিশিষ্টগণ’! এ বাক্য দ্বারা আক্ষেপ প্রকাশ করা উদ্দেশ্য। বোঝানো হচ্ছে, আহা! এ দলের লোক ইহকালে কুফরীকর্ম ও পাপাচারে লিপ্ত থাকার দরুন সেদিন কতইনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে! তারা আল্লাহ তা'আলার অসন্তুষ্টি ও ক্রোধের পাত্রে পরিণত হবে। তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। সেখানে তারা কঠোর-কঠিন শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
এ আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, 'বাম' শব্দের ব্যবহার হয় নিন্দনীয় ক্ষেত্রে।
আয়াতটির শিক্ষা
আমরা প্রশংসনীয়, সম্মানজনক বা রুচিকর কাজে ডান হাত ব্যবহার করব এবং বামের উপর ডানকে প্রাধান্য দেব।
যেমন ওযু করা, গোসল করা, তায়াম্মুম করা, কাপড় পরা, জুতা, মোজা ও পায়জামা পরা, মসজিদে প্রবেশ করা, মিসওয়াক করা, সুরমা লাগানো, নখ কাটা, গোফ কাটা, বগল পরিষ্কার করা, মাথা মুণ্ডানো, নামাযে সালাম ফেরানো, খাওয়া, পান করা, মুসাফাহা করা, হাজারে আসওয়াদে চুমু খাওয়া, হাম্মাম থেকে বের হওয়া, গ্রহণ করা, প্রদান করা এবং এ জাতীয় অন্যান্য কাজ। এসব কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া মুস্তাহাব। এর বিপরীত কাজে বাম দিককে প্রাধান্য দেওয়া মুস্তাহাব। যেমন নাক পরিষ্কার করা, থুথু ফেলা, হাম্মামে প্রবেশ করা, মসজিদ থেকে বের হওয়া, মোজা, জুতা, পায়জামা ও জামা খোলা, শৌচ করা, ময়লা পরিষ্কার করা এবং এ জাতীয় অন্যান্য কাজ।
‘মর্যাদাপূর্ণ সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া’ সম্পর্কিত দুটি আয়াত
এক নং আয়াত
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ (19)
অর্থ: অতঃপর যাকে আমলনামা দেওয়া হবে তার ডান হাতে সে বলবে, হে লোকজন! এই যে আমার আমলনামা, তোমরা পড়ে দেখো।(সূরা আল-হাক্কা (৬৯), আয়াত ১৯)
ব্যাখ্যা
পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশের পর তাতে উত্তীর্ণ ছাত্র যেমন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে আশপাশের লোকজনকে তার রেজালকার্ড দেখায় আর বলে, দেখো, দেখো, আমার প্রাপ্ত নম্বর পড়ে দেখো, তেমনি হাশরের দিনের মহাবিচারে যারা উত্তীর্ণ হবে এবং ডানহাতে আমলনামা পাবে, তারা আনন্দের উচ্ছ্বাসে আশপাশের মানুষকে বলবে, নাও, আমার আমলনামা পড়ে দেখো। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। না হয় সেদিন যারা নাজাত পাবে, যাদের ডানহাতে আমলনামা বা মুক্তিপত্র দিয়ে দেওয়া হবে, তারা যে কী খুশি হবে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সে খুশির সঙ্গে দুনিয়ার কোনও মুক্তি বা বড় থেকে বড় কোনও প্রাপ্তির আনন্দকে তুলনা করা যায় না। এ হল দুনিয়ার সীমিত ও ক্ষণস্থায়ী অর্জন। আর ওটা পরকালের অনন্ত জীবনের অফুরন্ত প্রাপ্তির হুকুমনামা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও সে মহানন্দের জন্য কবুল করে নিন।
আয়াত দ্বারা জানা গেল, আখিরাতে নেককারদেরকে তাদের আমলনামা বা মুক্তিপত্র দেওয়া হবে ডান হাতে। এর দ্বারা বোঝা গেল, মর্যাদাপূর্ণ বিষয়ের প্রদান-গ্রহণের জন্য ডানহাতের ব্যবহারই বাঞ্ছনীয়।
আয়াতটির শিক্ষা
আমরা যে-কোনও উৎকৃষ্ট কাজে ডানহাত ব্যবহার করব।
দুই নং আয়াত
فَأَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (8) وَأَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ (9)
অর্থ: সুতরাং যারা ডান হাত বিশিষ্ট, আহা কেমন যে সে ডান হাত বিশিষ্টগণ! আর যারা বাম হাত বিশিষ্ট, কী (হতভাগ্য) সে বাম হাত বিশিষ্টগণ!(সূরা ওয়াকিয়া (৫৬), আয়াত ৮, ৯)
ব্যাখ্যা
أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ ‘ডান হাত বিশিষ্টগণ’। এর আরেক অর্থ হতে পারে 'ডান দিকের দল' এর দ্বারা সেই ভাগ্যবান মুমিনদের বোঝানো হয়েছে, যারা ডান দিকের পথ অনুসরণ করে। যে পথ মানুষকে জান্নাতে পৌঁছায়। তারা তাদের ডান হাতে আমলনামা লাভ করবে। সেটা প্রমাণ করবে যে, তারা ঈমানদার এবং তারা জান্নাতে যাবে। তারা আরশের ডান দিকে থাকবে। মানবসৃষ্টির সূচনায় প্রতিশ্রুতি গ্রহণকালে তাদেরকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের ডান পাঁজর থেকে বের করা হয়েছিল। এদের সম্পর্কে মি‘রাজের হাদীছে আছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম তাঁর ডান দিকে তাকিয়ে খুশিতে হাসছিলেন।
مَا أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (আহা কেমন যে সে ডান হাত বিশিষ্টগণ)! এটি একটি বিস্ময়জ্ঞাপক বাক্য। বোঝানো উদ্দেশ্য, আল্লাহ তা'আলার কাছে তাদের মর্যাদা কত বড়! তারা কতইনা ভাগ্যবান! তারা হবে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত। তারা জাহান্নামের আযাব থেকে রেহাই পেয়ে যাবে। লাভ করবে অকল্পনীয় সুখ-শান্তির অনন্তকালীন জান্নাত।
এর দ্বারা বোঝা গেল 'ডান' শব্দের ব্যবহার হয় প্রশংসনীয় ক্ষেত্রে।
أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ ‘বাম হাতবিশিষ্ট বা বাম দিকের দল’। এর দ্বারা সেই হতভাগাদের বোঝানো হয়েছে, যাদের আমলনামা দেওয়া হবে তাদের বাম হাতে। এটা হবে তাদের কুফরের আলামত। তারা আরশের বাম দিকে থাকবে। প্রতিশ্রুতি গ্রহণকালে তাদেরকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের বাম পাঁজর থেকে বের করা হয়েছিল। এদেরই সম্পর্কে মিরাজের হাদীছে আছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম যখন তাঁর বাম দিকে তাকাচ্ছিলেন, তখন মনের বেদনায় কাঁদছিলেন।
مَا أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ ‘কী (হতভাগ্য) সে বাম হাত বিশিষ্টগণ’! এ বাক্য দ্বারা আক্ষেপ প্রকাশ করা উদ্দেশ্য। বোঝানো হচ্ছে, আহা! এ দলের লোক ইহকালে কুফরীকর্ম ও পাপাচারে লিপ্ত থাকার দরুন সেদিন কতইনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে! তারা আল্লাহ তা'আলার অসন্তুষ্টি ও ক্রোধের পাত্রে পরিণত হবে। তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। সেখানে তারা কঠোর-কঠিন শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
এ আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, 'বাম' শব্দের ব্যবহার হয় নিন্দনীয় ক্ষেত্রে।
আয়াতটির শিক্ষা
আমরা প্রশংসনীয়, সম্মানজনক বা রুচিকর কাজে ডান হাত ব্যবহার করব এবং বামের উপর ডানকে প্রাধান্য দেব।
পানাহার ও পোশাক-আশাক পরিধানে ডান হাত ও ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া
হাদীছ নং: ৭২০
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া পসন্দ করতেন- পবিত্রতা অর্জনে, দাঁড়ি-চুল আঁচড়ানোতে ও জুতা পরায়। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ১৬৮; সহীহ মুসলিম: ২৬৮; সুনানে আবু দাউদ: ৪১৪০; জামে তিরমিযী: ৬১৪; সুনানে ইবন মাজাহ: ৪০১; সুনানে নাসাঈ ৪২১; মুসনাদে আহমাদ: ২৪৬২৭; সহীহ ইবনে হিব্বান: ১০৯১; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৪০৪; শু'আবুল ঈমান ৬০৪৭)
হাদীছ নং: ৭২০
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সকল কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দেওয়া পসন্দ করতেন- পবিত্রতা অর্জনে, দাঁড়ি-চুল আঁচড়ানোতে ও জুতা পরায়। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ১৬৮; সহীহ মুসলিম: ২৬৮; সুনানে আবু দাউদ: ৪১৪০; জামে তিরমিযী: ৬১৪; সুনানে ইবন মাজাহ: ৪০১; সুনানে নাসাঈ ৪২১; মুসনাদে আহমাদ: ২৪৬২৭; সহীহ ইবনে হিব্বান: ১০৯১; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৪০৪; শু'আবুল ঈমান ৬০৪৭)
كتاب الأدب
باب استحباب تقديم اليمين في كل مَا هو من باب التكريم
كالوضوءِ وَالغُسْلِ وَالتَّيَمُّمِ، وَلُبْسِ الثَّوْبِ وَالنَّعْلِ وَالخُفِّ وَالسَّرَاوِيلِ وَدُخولِ الْمَسْجِدِ، وَالسِّوَاكِ، وَالاكْتِحَالِ، وَتقليم الأظْفار، وَقَصِّ الشَّارِبِ، وَنَتْفِ الإبْطِ، وَحلقِ الرَّأسِ، وَالسّلامِ مِنَ الصَّلاَةِ، وَالأكْلِ، والشُّربِ، وَالمُصافحَةِ، وَاسْتِلاَمِ الحَجَرِ الأَسْوَدِ، والخروجِ منَ الخلاءِ، والأخذ والعطاء وغيرِ ذَلِكَ مِمَّا هُوَ في معناه. ويُسْتَحَبُّ تَقديمُ اليسارِ في ضدِ ذَلِكَ، كالامْتِخَاطِ وَالبُصَاقِ عن اليسار، ودخولِ الخَلاءِ، والخروج من المَسْجِدِ، وخَلْعِ الخُفِّ والنَّعْلِ والسراويلِ والثوبِ، والاسْتِنْجَاءِ وفِعلِ المُسْتَقْذرَاتِ وأشْبَاه ذَلِكَ.
قَالَ الله تَعَالَى: {فَأَمَّا مَنْ أوتِيَ كِتَابَهُ بيَمينِهِ فَيْقُولُ هَاؤُمُ اقْرَأوا كِتَابِيْه} [الحاقة: 19] الآيات، وقَالَ تَعَالَى: {فَأصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أصْحَابُ المَيْمَنَةِ وَأَصْحابُ المَشْئَمَةِ مَا أصْحَابُ المَشْئَمَةِ} [الواقعة: 8 - 9].
كالوضوءِ وَالغُسْلِ وَالتَّيَمُّمِ، وَلُبْسِ الثَّوْبِ وَالنَّعْلِ وَالخُفِّ وَالسَّرَاوِيلِ وَدُخولِ الْمَسْجِدِ، وَالسِّوَاكِ، وَالاكْتِحَالِ، وَتقليم الأظْفار، وَقَصِّ الشَّارِبِ، وَنَتْفِ الإبْطِ، وَحلقِ الرَّأسِ، وَالسّلامِ مِنَ الصَّلاَةِ، وَالأكْلِ، والشُّربِ، وَالمُصافحَةِ، وَاسْتِلاَمِ الحَجَرِ الأَسْوَدِ، والخروجِ منَ الخلاءِ، والأخذ والعطاء وغيرِ ذَلِكَ مِمَّا هُوَ في معناه. ويُسْتَحَبُّ تَقديمُ اليسارِ في ضدِ ذَلِكَ، كالامْتِخَاطِ وَالبُصَاقِ عن اليسار، ودخولِ الخَلاءِ، والخروج من المَسْجِدِ، وخَلْعِ الخُفِّ والنَّعْلِ والسراويلِ والثوبِ، والاسْتِنْجَاءِ وفِعلِ المُسْتَقْذرَاتِ وأشْبَاه ذَلِكَ.
قَالَ الله تَعَالَى: {فَأَمَّا مَنْ أوتِيَ كِتَابَهُ بيَمينِهِ فَيْقُولُ هَاؤُمُ اقْرَأوا كِتَابِيْه} [الحاقة: 19] الآيات، وقَالَ تَعَالَى: {فَأصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ مَا أصْحَابُ المَيْمَنَةِ وَأَصْحابُ المَشْئَمَةِ مَا أصْحَابُ المَشْئَمَةِ} [الواقعة: 8 - 9].
720 - وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: كَانَ رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم - يُعْجِبُهُ التَّيَمُّنُ في شَأنِهِ كُلِّهِ: في طُهُورِهِ، وَتَرَجُّلِهِ، وَتَنَعُّلِهِ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আল্লাহ তা'আলা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মানবজাতির জন্য আদর্শ করে পাঠিয়েছেন। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ
বস্তুত রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ- এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের আশা রাখে।(সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ২১)
আমরা আল্লাহ তা'আলার উপর বিশ্বাস রাখি এবং আখিরাতে মুক্তির আশা রাখি। তাই আমাদেরকে অবশ্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তা করতে হবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে। কোন কাজ কীভাবে করব, কোন অঙ্গের কেমন ব্যবহার করব, সে ক্ষেত্রেও আমাদের কর্তব্য তাঁকে অনুসরণ করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনি পবিত্রতা অর্জন, মাথা আঁচড়ানো, জুতা পরিধান ও খানা খাওয়ায় ডান দিককে প্রাধান্য দিতেন। অর্থাৎ ওযু করতে প্রথমে ডান হাত ধুইতেন, তারপর বাম হাত। প্রথমে ডান পা, পরে বাম পা। মাথা আঁচড়াতে শুরুটা করতেন ডানদিক থেকে। পানাহার তো ডান হাতেই করতেন। এমনকি জুতা পরার ক্ষেত্রেও তাই করতেন- প্রথমে ডান পায়ে পরতেন, তারপর বাম পায়ে।
বাম হাত ব্যবহার করতেন কোন কোন কাজে? এ সম্পর্কে হাদীসে আছে- وَكَانَتِ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ وَمَا كَانَ مِنْ أَذَى (আর বাম হাত ছিল হাম্মামের কাজ ও ময়লা পরিষ্কার করার জন্য)। অর্থাৎ তিনি শৌচকর্ম করতেন বাম হাতে। এমনিভাবে নাক পরিষ্কার করা, শরীরে কোনও ময়লা বা নাপাকি লাগলে এমনিভাবে কোথাও কোনও ময়লা বা নাপাকি পড়ে থাকলে তা পরিষ্কার করার কাজে বাম হাত ব্যবহার করতেন।
ইদানীং অন্যদের দেখাদেখি মুসলিমসমাজ থেকেও ডান ও বাম হাত ব্যবহারের এ প্রভেদ অনেকটা দূর হয়ে গেছে। নির্বিচারে যে-কোনও কাজে যে-কোনও হাত ব্যবহার করতে লক্ষ করা যায়। বরং পানাহারে ডান হাতের পরিবর্তে বাম হাতের ব্যবহারই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাই যেন ভদ্রতা। নামাযী-কালামী মানুষকে পর্যন্ত বাম হাতে পানি ও চা পান করতে দেখা যায়। তারা অসংকোচে এটা করছে। দীনী মজলিসে পর্যন্ত বাম হাতে চা পান করতে দ্বিধাবোধ করছে না। কারণ তারা এতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এটা খুবই আফসোসের কথা। বড়ই লজ্জার কথা। আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ভুলে অমুসলিমদের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। প্রতিদিন কত বার খাবার খাওয়া, পানি পান করা, চা পান করা, ওষুধ খাওয়া বা অন্য কিছু মুখে নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবারই তা করা হচ্ছে বাম হাতে। তাহলে এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন কতবার সুন্নতের খেলাফ করা হচ্ছে? এক পানাহারের ক্ষেত্রে আমরা রোজ কতবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ-পরিপন্থী কাজ করছি? এতে আমরা বিবেকের কোনও তাড়না বোধ করছি না। আমাদের দীনী অবক্ষয় কতটা গভীরে পৌঁছে গেছে! এ কেবল ডান হাতের স্থলে বাম হাতের ব্যবহার করা নয়। এটা অবিরত সুন্নতের বরখেলাফ কাজ। এটা দীনী অবক্ষয় ও ঈমানী অধঃপতনের পরিচায়ক। এর থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আমাদের দীনী চেতনা জাগ্রত করতে হবে। ঈমান বলীয়ান করতে হবে। আর তা করা যাবে সুন্নতের অনুসরণ দ্বারা। সুন্নতের অনুসরণ বাদ দিয়ে আমরা কোনওদিনই ঈমানী বলে বলীয়ান হতে পারব না। সুতরাং অন্যান্য সুন্নতের মতো হাতের ব্যবহারেও আমাদেরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দি করতে হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. আমরা অবশ্যই পানাহার ও পোশাক-আশাক পরিধানসহ প্রতিটি উত্তম ও রুচিকর কাজে ডানহাতের ব্যবহার করব।
খ. শৌচকর্ম এবং নাপাকি ও ময়লা পরিষ্কার করব বামহাত দিয়ে।
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ
বস্তুত রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ- এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের আশা রাখে।(সূরা আহযাব (৩৩), আয়াত ২১)
আমরা আল্লাহ তা'আলার উপর বিশ্বাস রাখি এবং আখিরাতে মুক্তির আশা রাখি। তাই আমাদেরকে অবশ্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তা করতে হবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে। কোন কাজ কীভাবে করব, কোন অঙ্গের কেমন ব্যবহার করব, সে ক্ষেত্রেও আমাদের কর্তব্য তাঁকে অনুসরণ করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনি পবিত্রতা অর্জন, মাথা আঁচড়ানো, জুতা পরিধান ও খানা খাওয়ায় ডান দিককে প্রাধান্য দিতেন। অর্থাৎ ওযু করতে প্রথমে ডান হাত ধুইতেন, তারপর বাম হাত। প্রথমে ডান পা, পরে বাম পা। মাথা আঁচড়াতে শুরুটা করতেন ডানদিক থেকে। পানাহার তো ডান হাতেই করতেন। এমনকি জুতা পরার ক্ষেত্রেও তাই করতেন- প্রথমে ডান পায়ে পরতেন, তারপর বাম পায়ে।
বাম হাত ব্যবহার করতেন কোন কোন কাজে? এ সম্পর্কে হাদীসে আছে- وَكَانَتِ الْيُسْرَى لِخَلَائِهِ وَمَا كَانَ مِنْ أَذَى (আর বাম হাত ছিল হাম্মামের কাজ ও ময়লা পরিষ্কার করার জন্য)। অর্থাৎ তিনি শৌচকর্ম করতেন বাম হাতে। এমনিভাবে নাক পরিষ্কার করা, শরীরে কোনও ময়লা বা নাপাকি লাগলে এমনিভাবে কোথাও কোনও ময়লা বা নাপাকি পড়ে থাকলে তা পরিষ্কার করার কাজে বাম হাত ব্যবহার করতেন।
ইদানীং অন্যদের দেখাদেখি মুসলিমসমাজ থেকেও ডান ও বাম হাত ব্যবহারের এ প্রভেদ অনেকটা দূর হয়ে গেছে। নির্বিচারে যে-কোনও কাজে যে-কোনও হাত ব্যবহার করতে লক্ষ করা যায়। বরং পানাহারে ডান হাতের পরিবর্তে বাম হাতের ব্যবহারই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাই যেন ভদ্রতা। নামাযী-কালামী মানুষকে পর্যন্ত বাম হাতে পানি ও চা পান করতে দেখা যায়। তারা অসংকোচে এটা করছে। দীনী মজলিসে পর্যন্ত বাম হাতে চা পান করতে দ্বিধাবোধ করছে না। কারণ তারা এতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এটা খুবই আফসোসের কথা। বড়ই লজ্জার কথা। আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ভুলে অমুসলিমদের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। প্রতিদিন কত বার খাবার খাওয়া, পানি পান করা, চা পান করা, ওষুধ খাওয়া বা অন্য কিছু মুখে নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবারই তা করা হচ্ছে বাম হাতে। তাহলে এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন কতবার সুন্নতের খেলাফ করা হচ্ছে? এক পানাহারের ক্ষেত্রে আমরা রোজ কতবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ-পরিপন্থী কাজ করছি? এতে আমরা বিবেকের কোনও তাড়না বোধ করছি না। আমাদের দীনী অবক্ষয় কতটা গভীরে পৌঁছে গেছে! এ কেবল ডান হাতের স্থলে বাম হাতের ব্যবহার করা নয়। এটা অবিরত সুন্নতের বরখেলাফ কাজ। এটা দীনী অবক্ষয় ও ঈমানী অধঃপতনের পরিচায়ক। এর থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আমাদের দীনী চেতনা জাগ্রত করতে হবে। ঈমান বলীয়ান করতে হবে। আর তা করা যাবে সুন্নতের অনুসরণ দ্বারা। সুন্নতের অনুসরণ বাদ দিয়ে আমরা কোনওদিনই ঈমানী বলে বলীয়ান হতে পারব না। সুতরাং অন্যান্য সুন্নতের মতো হাতের ব্যবহারেও আমাদেরকে অবশ্যই সুন্নতের পাবন্দি করতে হবে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. আমরা অবশ্যই পানাহার ও পোশাক-আশাক পরিধানসহ প্রতিটি উত্তম ও রুচিকর কাজে ডানহাতের ব্যবহার করব।
খ. শৌচকর্ম এবং নাপাকি ও ময়লা পরিষ্কার করব বামহাত দিয়ে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)